সংস্কৃতি বনাম অপসংস্কৃতি
লেখা : সাইফুল কবির সোহাগ
.
একসময় বাঙালি নারীর পোশাক ছিল শাড়ি আর থ্রি পিছ। মেয়েদের বুকে থাকতো দুই-আড়াই গজ কাপড়ের ওড়না। আপত্তিকর হলেও বলতে হচ্ছে যে, ওড়না এখন হাই সোসাইটিতে বিলুপ্ত প্রায়। গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের বেশ ভূষা মার্জিত থাকলেও শহরে মার্জিত পোশাকের মেয়েদের চেয়ে অমার্জিতদেরই দেখা মিলে বেশি। শুধু কি মেয়েরাই উদ্ভট হয়ে গেছে? ছেলেরা হয়নি? এই যে ছেলেরা ছেঁড়া প্যান্ট পড়ছে, ছেঁড়া অংশ দিয়ে তাদের হাঁটু উড়ু সহ পায়ের বিভিন্ন অংশ দেখা যাচ্ছে, এটাই বা কতটুকু মার্জিত? কানের দুল আগে কেবল মেয়েরাই পড়তো। হাস্যকর হলেও সত্যি যে ছেলেরাও এখন কানে দুল পড়ে। কিছু কিছু ছেলের চুলের কাটিং দেখলে মাথা ঝিম ধরে যায়। এগুলোর নাম এখন আধুনিকতা। এগুলো আসলে কিসের ফল? কেন হচ্ছে এমন? এই আধুনিকতার নামে হাস্যকর কার্যকলাপগুলো কীভাবে বাংলা সংস্কৃতির সাথে মিশলো? এগুলো আসলে অপসংস্কৃতির প্রভাব। বিদেশি সংস্কৃতি তথা পাশ্চাত্যের সংস্কৃতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই প্রজন্মের কাছে হাস্যকর ফ্যাশনগুলোর নাম আধুনিকতা আর স্মার্টনেস হয়ে গেছে। বিদেশি উদ্ভট সংস্কৃতিগুলো মিশে গেছে আমাদের হাজার বছরের পুরনো সংস্কৃতির সাথে। আর কথায় আছে শত মণ দুধের সাথে এক ফোঁটা গোবর মিশলে পুরোটাই নষ্ট। বাঙালি সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। এই চিরায়ত সংস্কৃতির সাথে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি মিশে নষ্ট করে দিচ্ছে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে। অপসংস্কৃতির প্রবেশ ঘটেছে সোনার সংস্কৃতিতে।
অপসংস্কৃতি হচ্ছে সংস্কৃতির উল্টো পিঠ। সংস্কৃতি হলো একটি জাতির নিজস্ব ঐতিহ্য। এটা পুরোপুরিভাবে একটি মানবীয় ব্যাপার। ব্যক্তির মানবিক গুণাবলী ও জীবনযাত্রার মধ্য দিয়ে নিজের পরিবেশ, সমাজ ও পারিপার্শ্বিক সকলকিছুকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করার যে প্রচেষ্টা তার মধ্যেই লুকায়িত থাকে সংস্কৃতির চেতনা। যে সংস্কৃতি মানুষের স্বাভাবিক জীবনবোধ এবং সুষ্ঠ মানসিক বিকাশে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, তারই নাম অপসংস্কৃতি। সমাজে অপসংস্কৃতির প্রভাব ভয়ানক। মানুষের সকল চিন্তা, কর্ম ও কৃষ্টিই তার নিজস্ব সংস্কৃতির বাহন। ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সমাজজীবনে সংস্কৃতি হিসেবে বিকশিত হয়। কোনো সমাজ যখন ঐক্যবদ্ধভাবে একটি রাষ্ট্র গঠন করে, তখন সেই জাতি ও তার সংস্কৃতি সেই রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করে। আর সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটে দৈনন্দিন কার্যকলাপে। ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক পরিবেশ, ধর্মীয় রীতিনীতি, শিক্ষা, দর্শন ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে একটি দেশের সংস্কৃতি। একটি জাতির মূল সত্তা লুকায়িত থাকে তার সংস্কৃতিতে। প্রতিটি সংস্কৃতির নিজের মতো করে সম্প্রসারিত ও বিকশিত হওয়ার অধিকার আছে। এক দেশ থেকে অন্য দেশে সংস্কৃতি আদান-প্রদানের মাধ্যমে সংস্কৃতি প্রভাবিত এবং সমৃদ্ধ হয়। তবে দেশ ও জাতিভেদে সংস্কৃতির উপাদান পৃথক হয়। পাশ্চাত্যের সংস্কৃতি আর বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে বিস্তর ফারাক। পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের দেশের যুবপ্রজন্ম কিছুটা বিপথে চলে যাচ্ছে। কিন্তু তাই বলে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি মানেই খারাপ নয়। যে সংস্কৃতি মানুষের চিন্তা-চেতনাকে কলুষিত করে মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটায় এবং যার মাধ্যমে সর্বোপরি নৈতিকতার উন্নয়ন বিপথে পরিচালিত হয় তাই অপসংস্কৃতি। সংস্কৃতির বিকৃত রুপ হচ্ছে অপসংস্কৃতি।আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির রয়েছে সুবিশাল ঐতিহ্য। গ্রহণ-বর্জনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে নানা রুপ রুপান্তরের মধ্য দিয়ে তা বর্তমান অবস্থায় এসেছে। প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল বাংলার পরিবেশ প্রকৃতি ও জীবনবোধকে ঘিরে। এর সাথে যুক্ত হয়েছিল আবার ব্রাক্ষ্মণ, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রভাব। দ্রাবিড়-অস্ট্রিক প্রভৃতি জাতির মেলবন্ধনও ঘটেছিল বাঙালির প্রাচীন সংস্কৃতিতে। মধ্যযোগে এতে যোগ হলো ইসলামি সংস্কৃতিও৷ বিশেষ করে এসময় বাঙালি সংস্কৃতিতে সুফিতত্বের ভাবধারা মিশ্রিত হলো। প্রাচীন ও মধ্যযুগের পর বাঙালি সংস্কৃতি প্রভাবিত হয় পাশ্চাত্যের সংস্কৃতির দ্বারা। বর্তমানে বাঙালি সংস্কৃতিতে প্রবেশ করেছে অসৌন্দর্য। উনিশ শতকের প্রথম থেকে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির কুপ্রভাব বাঙালি সংস্কৃতিতে পড়েছে। কিন্তু পাশ্চাত্য সংস্কৃতি পুরোপুরি গ্রাস করতে পারেনি বাঙালির হাজার বছর ধরে চলে আসা সংস্কৃতিকে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ভালো দিকগুলো গ্রহণ করে উন্নত জীবনধারা গড়ে তুলতে চেয়েছিল বাঙালি। এই ব্যাপারটি কিছুটা সমৃদ্ধ করেছিল বাঙালি সংস্কৃতিকে। কিন্তু কিছু অসৎ মানুষের কর্মে পাশ্চাত্যের সংস্কৃতি বাঙালির চিরায়ত সংস্কৃতিতে প্রবেশ করছে। বিদেশী জীবন-যাপন চর্চা, পোশাক পরিচ্ছেদ, আচার-আচরণ অনুকরণ উগ্র মানসিকতার বাঙালির ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। আর এটার প্রভাবে সমাজ জীবন থেকে সুস্থ বিবেকবোধ আর সততা যেন হারিয়ে যেতে বসেছে দিনকে দিন। বিনোদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে বাঙালির উপর পাশ্চাত্য সংস্কৃতি। বিনোদন মানে যেন উৎকট সঙ্গীত, উদ্দাম নৃত্য, অশ্লীল চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের কাহিনীগুলো হিংস্রতায় পরিপূর্ণ৷ উগ্র ভোগবিলাসী জীবনধারা, কুৎসিত সংলাপ আর স্থূল হাস্যরসে ভরপুর এসব চলচ্চিত্রে স্বাভাবিক জীবনবোধের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। জীবন থেকে সুন্দর আর শুভবোধ যেন ক্রমশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আর এই হীন মনোবৃত্তির পেছনে কাজ করছে পাশ্চাত্যের পুঁজিবাদী শোষক শ্রেণী। বাংলাদেশের লোভী পুঁজিপতিদের সাথে রয়েছে এদের নিবিড় যোগাযোগ। কৌশলে এরা সুস্থ সংস্কৃতির উপর আঘাত হানতে চায়। সততা ন্যায় আর সুন্দরের উপর অসত্য আর অসুন্দর বাসা বেঁথে নিয়েছে। অপসংস্কৃতি তারুণ্যের সুন্দর বিকাশের ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংস্কৃতি হলো মানুষের জীবন চেতনার পরিশ্রুতি। সংস্কৃতি চর্চার নানান দিক আছে, নানান পথ আছে। সাহিত্য, সঙ্গীত, নাচ ইত্যাদি সংস্কৃতির অঙ্গ। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতা, হিংসা, কুটিলতা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা অপসংস্কৃতির মূল উৎস। আমরা বাঙালি। আমাদের নিজস্ব একটি সংস্কৃতি রয়েছে। এ সংস্কৃতির বাইরে অন্য সংস্কৃতি হতে আমরা যেটা ধারণ করি, সেটা যদি আমার সংস্কৃতির সাথে বেমানান হয়, তাহলে সেটা অপসংস্কৃতির পর্যায়ে পড়ে। তাই কোনোকিছুকে গ্রহণ করার আগে বিবেচনা করা উচিত তা আমাদের জীবনের উন্নতিতে সহায়ক হবে কি না। আমাদের চিন্তা চেতনাকে আরও উদার এবং মহৎ করবে কি না। যদি না করে তবে তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়। কাজেই বিদেশি সংস্কৃতি মানেই অপসংস্কৃতি নয়, যদি তা আমাদের জীবনকে বিপথে পরিচালিত না করে। বর্তমানে আমাদের দেশে সংস্কৃতির অবক্ষয় বা অপসংস্কৃতি দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সমাজের সর্বস্তরে প্রসারিত বিকৃত জাতিকে যেন গ্রাস করতে উদ্যত। সাহিত্যের নামে কুরুচিপূর্ণ কিছু রচনা বাজার ছেয়ে ফেলছে। এ প্রসঙ্গে ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, রহমানে শয়তানে যে তফাৎ, মুক্তি ও বন্ধনে যে তফাৎ, আসল সাহিত্য ও নকল সাহিত্যে সেই তফাৎ। হায়! অবোধ পাঠক জানে না সাইরেনের বাঁশরীর সুরের ন্যায় এ অসাহিত্য তাকে ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে সৎকার্য ও সৎচিন্তার মধ্য দিয়ে প্রকৃত ধর্মকার্য আজ অনুপস্থিত। ধর্মের নামে লোক দেখানো আচার অনুষ্ঠানের প্রাধাণ্য লক্ষ্যের চেয়ে উপলক্ষ্যকে বড় করে তুলেছে। এছাড়া শিক্ষার নামে কুশিক্ষা, সমাজসেবার নামে দলাদলি, সঙ্গীতের নামে সঙ্গীতহীন কতক হৈ চৈ এগুলো হাস্যকর সংস্কৃতির রুপ। বলা হয়ে থাকে যে আজকের তরুণরাই দেশের আগামী দিনের অমূল্য সম্পদ। তারাই দেশের ভবিষ্যৎ। কিন্তু অপসংস্কৃতি তাদের জীবনকে ধ্বংসের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তারা এমন কিছু বিষয়ের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা জীবনকে সুন্দর করে বিকাশের ক্ষেত্রে মোটেই সহায়ক নয়। বর্তমান সময়ের যুবকদের প্রতি দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পাই যে, সংস্কৃতির চেয়ে অপসংস্কৃতিকেই তারা মনে প্রাণে লালন করতে পছন্দ করছে। সত্য ও সুন্দরকে বিসর্জন দিয়ে তরুণরা উগ্র জীবনবোধে মাতাল হয়ে উঠেছে। দেশীয় সংস্কৃতির বাহিরে কিছু করতে পারলেই তারা নিজেদের ধন্য মনে করে। তাদের পোশাক থেকে শুরু করে মাথার চুল পর্যন্ত থাকে অপসংস্কৃতির ছোঁয়া। এই জন্য স্যাটেলাইট টিভি অনেকাংশে দায়ী। বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির সাথে পরিচিতি লাভের সুযোগ পায়।
এসব চ্যানেলে যেসব ছবি প্রদর্শন করা হয়, সে ছবি তাদের দেশের সংস্কৃতিতে উপযোগী হলেও আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে অনেক ক্ষেত্রেই বেমানান। তাছাড়া টেলিভিশন ও প্রেক্ষাগৃহের রুপালি পর্দায় এখন যে সমস্ত ছবি দেখানো হচ্ছে তার অধিকাংশ আমাদের সমাজ ও মন-মানসিকতার সাথে সঙ্গতিপূর্ন নয়। দিনে দিনে এমন সব অশ্লীল ছবি আমাদের জীবনের সাথে এমনভাবে সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়ছে যে, অচিরই এর একটা ভয়ঙ্কর পরিণতি শুরু হয়ে যাবে। কাজেই আমাদের যুবসমাজকে অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করে নিজস্ব সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের সকলের। নিমিষেই বা অল্প সময়ে একটা পুরো যুবসমাজকে অন্য দেশের সংস্কৃতি থেকে ফিরিয়ে আনা দুঃসাধ্য কাজ বটে। তাই এর একটা বিকল্প সমাধান রয়েছে। আমরা যদি অপসংস্কৃতির খারাপ দিকগুলো বর্জন করে ভালো দিকগুলো গ্রহণ করি তাহলে কিছুটা সুবাতাস প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একটা কথা চিরন্তন সত্য যে, সংস্কৃতি যেমন জীবনকে সুন্দর করে বাঁচার গৌরব দেয়, অপসংস্কৃতি তেমন জীবনকে বিষিয়ে তুলে। অপসংস্কৃতি স্থায়ী নয়, তা ক্ষণিকের ও চমকের। আর এজন্যই এটা বেশি ক্ষতিকর। প্রকৃত সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের অনুশীলনের মাধ্যমে লব্ধ সুন্দরের অনুদান। এখান থেকে বিচ্যুত হলেই অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটে আর একটা বিরাট ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। কোনো জাতির জীবনে অপসংস্কৃতির একবার অনুপ্রবেশ ঘটলে তা নির্মূল করা কঠিন। এটা বিবেককে ধ্বংস করে দেয় আর মূল্যবোধের মৃত্যু ঘটায়। আমাদের পুরো সমাজটাই আজ অপসংস্কৃতির বিষবাষ্পে উত্তপ্ত ও বিষময় হয়ে পড়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুবই জরুরি।
এই জন্য উচিত সর্বাগ্রে সকলের আন্তরিক হওয়া। সমাজ থেকে অপসংস্কৃতির প্রাদুর্ভাব দূর করে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এই ব্যাপারে শিক্ষিত শ্রেণীর দায়িত্ব অনেক বেশি। বিদেশি সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে পড়ার আগে বিবেচনা করতে হবে এটা আমার জন্য উপযুক্ত কি না। একটা সংস্কৃতি উন্নত দেশে প্রচলিত বলেই যে সেটা আমাদের গ্রহণ করতে হবে না হয় আমরা ব্যাকডেটেড হয়ে যাবো, এই ধারণা পরিহার করতে হবে। আমাদের ছেলেরা ছেঁড়া ফাঁড়া প্যান্ট পড়ে, কানে মেয়েদের মতো দুল পড়ে, অশালীন চুলের ছাঁট দেয়। এগুলো কী আদৌ ঠিক? না, ঠিক নয়। এক্ষেত্রে গার্জিয়ানকে সচেতন থাকতে হবে । তাদের ছেলেমেয়েদের এসব নোংরা অভ্যাস থেকে বিরত রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, অনুকরণ প্রবণতা খারাপ কিছু নয়, তবে তা অবক্ষয়ী বা জীবনধ্বংসী হওয়া মোটেও বাঞ্চনীয় নয়। অপসংস্কৃতিরোধে সরকার অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। চলচ্চিত্রে অশ্লীলতা রোধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ প্রশংসনীয়। একটা সময় অশ্লীল চলচ্চিত্রে ভরে গিয়েছিল আমাতের চলচ্চিত্র জগৎ। এখন সেটা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। ২০০৭ সালে সরকার আকাশ সংস্কৃতি রোধে ৮০ টি স্যাটেলাইট চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু তবুও এদিক থেকে সরকারি তৎপরতা সফল হয়নি। কারণ এখনও ভারতীয় টিভি চ্যানেল সহ কিছু বিদেশি টিভি চ্যানেল আমাদের সংস্কৃতিকে দমিয়ে রেখে তাদের উছৃঙ্খল সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিচ্ছে আমাদের মাঝে। এক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের নিজেদের সচেতনতা আবশ্যক। আমরা যদি বাজে সংস্কৃতির উৎসগুলো এঁড়িয়ে চলি তবেই টিকে থাকবে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আর দূর হবে সকল অপসংস্কৃতি।
যদি পাশে থাকো
তাসফিয়া শারমিন ** আজকের সকালটা অন্য রকম। সাত সকালে আম্মু বকা দিলো। মানুষের ঘুম একটু দেরিতে ভাঙতেই পারে। তাই বলে এত রাগার কী আছে ?একেবারে যে দোষ আমারও তাও নয়। মানুষ ঘুম থেকে উঠে ফোনে বা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে। কিন্তু আমি উঠি জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের আলো দেখে।কে জানে...
আমরা বর্তমানে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমাদের নিজেদেরও যে নিজস্ব একটা সংস্কৃতি নিজস্ব পরিচয় রয়েছে একথা মনে হয় ভুলেই গেছি। দুয়েকটা বানানে ভুল রয়েছে। লেখকের জন্য শুভ কামনা।
এই প্রবন্ধটা আমার দারুণ লেগেছে। বর্ণনাভঙ্গি বেশ ভালো। লেখার ধরণ উন্নতমানের আর আলোচনাও ডিটেইলস। সত্যিই অপসংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে দিয়েছি আমরা। এটা পরিহার করা উচিৎ। শুভকামনা আপনার জন্য। সেরা তিনে থাকবেন আশা করি।
আমি মনে করি বিদেশীে চ্যানেলগুলো এই অপসংস্কৃতির মূল উৎস। সত্যি আমাদের সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির তলে চাপা পড়ে।
সুন্দর লেখা। বাংলা সংস্কৃতিতে অপসংস্কৃতি প্রবেশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। আমরা হারিয়ে ফেলছি আমাদের সংস্কৃতি।
পশ্চিমা আর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান দেখে তাদের অনুসরণ করতে গিয়ে আমরা নিজেদের পরিচয় ভুলে যাচ্ছি।
বানান…
উড়ু~ ঊরু
অসঙ্গতিপূর্ন~ অসঙ্গতিপূর্ণ
উছৃঙ্খল~ উচ্ছৃঙ্খল
এঁড়িয়ে~ এড়িয়ে
চমৎকার একটা বিষয়ে লিখেছেন। আধুনিকতার নাম এখন অশ্লীলতা। আমাদের নিজেদের সচরতনতা সবার আগে প্রয়োজন অপসংস্কৃতি দূর করতে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনই আমাদের এই ভয়াল অপসংস্কৃতির থাবা থেকে মুক্ত করতে পারে।
আপনার শব্দচয়ন দেখে আমি অভিভূত। একটু বেশীই গুছিয়ে লিখেছেন বর্তমানে ছড়াতে থাকা উছৃঙ্খল সংস্কৃতি নিয়ে। যুগোপযোগী প্রবন্ধ।
এমন করে ভাবিনি কখনও। লেখাটা পড়ার পর ভাবলাম। একটা প্রবন্ধে অনেক কিছু উঠে এসেছে। অপসংস্কৃতি রোধ হলে ধর্মীয় ভাবটাও ফিরে আমবে বলে আমার ধারণা।
সমাজজীবনে-সমাজ জীবনে(যেহেতু দুইটা শব্দ তাই আলেদা বসবে)
কি না-কিনা
বাহ্ অসাধারণ ছিল লেখাগুলো, পড়ে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আর সব চেয়ে সব কথা সবকিছু বিস্তারিতভাবে ফুটেছ উঠেছে। আসলে আমাদের নিজেদেরকেই সচেতন হতে হবে, তাহলেই অপসংস্কৃতি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। বানানে তেমন ভুল নেই, মাত্র কয়েকটা যা একজন বলে দিয়েছে। তবে শুভ কামনা রইল
আরও দুইটা প্রবন্ধ পড়েছি। মোটামুটি ছিল। এইবার ধর্মীয় বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছে কয়েকজন। হয়তো পুরস্কার লাভের বাসনায়। আপনি আপনার প্রবন্ধে একইসাথে অনেক কিছু প্রকাশ করেছন। আপনি অনুমতি দিলে এটা আমার টাইমলাইনে শেয়ার করা উচিৎ। এই প্রবন্থটা ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়া উচিৎ বলে মনে করি আমি।
দারুণ লিখেছেন সাইফুল। মাঝেমাঝে এমন প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে লিখবেন আশা করি।
অনেক সুন্দর লিখেছেন।
বর্ণনা বর্তমান অবস্থার কথা।
আমাদের দেশটা এখন অপসংস্কৃতিতে ভরপুর।
বিদেশি চ্যানেলগুলো দেখে আমাদের দেশের মানুষ তা ফলো করে কিন্তু তা আদৌ শিক্ষণীয় নয়।
আর মেয়েরাতো এখন ওরনাই পড়ে না।
আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী বদলাতে হবে।সচেতন হতে হবে।
লেখক অনেক কিছু তুলে ধরেছেন।
বানানে কিছু ভুল আছে।
শুভ কামনা রইলো।
আসসালামু আলাইকুম।
বেশ ভালো লেগেছে আমার। উপস্থাপনা ভঙ্গি ভালো লাগার মতোই। এভাবেই লিখে যান।
শুভ কামনা।