“পথশিশু”, নাম টা শুনলেই আমদের মস্তিষ্কের ভিতর যে কল্পচিত্র ফুটে ওঠে তা হলোঃ
রাস্তার পাশে বসে থাকা ফুটফুটে কিছু বাচ্চা, হয়তো পথে পড়ে থাকা কাগজ, প্লাস্টিক কুড়াচ্ছে এমন কিছু বাচ্চা, কেউ বা হাতে ফুল নিয়ে চার রাস্তার মোড়ে অপেক্ষা করছে কখন ট্রাফিক সিগন্যাল দেয় এমন কিছু বাচ্চা, আবার কেউ বা হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করছে অথবা এমন কিছু বাচ্চা যারা আপনার কাছে সরাসরি হাত পেতে টাকা চায়।
আপনি হয়তো কখনও দেখবেন যে,
কোনো কোনো শিশু ডাস্টবিন থেকে খাবার তুলে খাচ্ছে আর পাশেই সেই খাবার কয়েকটি কুকুরও খাচ্ছে। আবার সেই ডাস্টবিনেই সেই শিশুরাই কাগজ, প্লাস্টিক কুড়ায়। এরা সারাদিন এইখান থেকে সেইখানে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজেই এসব কাজ করে। এদের সব কিছুই ওই রাস্তায়। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় সবকিছু উপেক্ষা করেই এরা টিকে থাকে। সারাদিনে যে টাকা আয় করে এতে হয়তো কারও কখনও বা এক বেলার খাবারও জোটে না। তবুও এরা জীবনের সাথে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার জন্য।
এসব শিশুদের মধ্যে কারও আবার ও মা নেই, কারও বাবা নেই আবার কারোর বা মা-বাবা কেউই নেই। কোথা থেকে কিভাবে এসেছে তাও জানে না এরা৷ এরা ছোট থেকেই রাস্তায় মানুষ। তাই আমরা সুশীল সমাজ এদের নাম দিয়েছি “পথশিশু”।
কত টা কষ্ট করে আধা বেলা অথবা অভুক্ত থেকেই এরা দিনযাপন করে একবার কি ভেবে দেখেছি আমরা?
এসব শিশুরা বড় হয়ে কী করে? কোথায় যায় এসব নিয়ে কি ভেবেছি? হয়তো জানবেন যে,
হয় এরা টোকাই, না হয় বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এরা প্রায়ই বিভিন্ন বেআইনি কাজ করে থাকে। এরাই দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে।
আর মেয়ে শিশু?
ওরা ছোটবেলাতেই হয় কোথাও পাচার হয়ে যায় না হয় আমাদের মত সভ্য মানুষের দ্বারা যৌন হয়রানি হয়ে পতিতালয়ে চলে যায়। অন্তত সেখানে গেলে কিছু টাকা মেলে।
আচ্ছা, আমরা কি পারি না এদের কোন ব্যবস্থা করতে?
প্রতি বছর বিভিন্ন সংস্থ্যা, দেশ থেকে এসব শিশুদের জন্য অনেক অর্থ আসে অথচ আমাদের মত সভ্য মানুষরাই সেটার সুষ্ঠু বন্টন করি না। দেশেও অনেক সংস্থা আছে তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ফলে ঐ সব শিশুদের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তারা প্রয়োজন মত সাহায্য পাচ্ছে না।
এসব শিশুদের চাইলেই জনশক্তিতে রুপান্তর করা সম্ভব। তাদের প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করে অন্তত তারা যেন কিছু একটা করতে পারে সেটা আমাদের সরকারের করা উচিত। তবে সরকার এ দিকে কর্ণপাত করেন না বললেই চলে।
কোটি টাকা দিয়ে যন্ত্র চালিত রোবট (রোবট সোফিয়া) আনার চাইতে সে টাকা কি সেই সব সুবিধা বঞ্চিত পথশিশুদের দেয়া যেতো না?
এতে অন্তত তাদের কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব হতো। এরা তো আমাদের দেশেরই সম্পদ তাহলে কেন আমরা এত অবহেলা করছি?
মায়ানমার থেকে আগতদের মাঝে সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থা সহ বাইরের দেশ থেকে ত্রাণ, অর্থ দিয়ে সরকার সাহায্য করলো, সরকারি ভাবে অনেক টাকা খরচ করে তাদের নির্বাসন, চিকিৎসা, বস্ত্র, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হলো অথচ দেশের সুবিধা বঞ্চিত এসব শিশুদের জন্য কখনোই কিছু করা হয় না। এরা সব সময়ই বঞ্চিত। আমরা সবাই এদের উপেক্ষা করে চলি অথচ নিজেকে মনবতার খেদমতকারী বলেও দাবি করি।
প্রতিবছর আমাদের দেশে বিভিন্ন র্যালি, শোভাযাত্রা সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আবার শিশু দিবস ও পালন করা হয় যেখানে উল্লেখ থাকে তাদের জন্য কিছু করার কথা। অথচ কখনোই সেসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হতে দেখা যায় না।
আচ্ছা, আমরা কি পারি না নিজ থেকে একটু এগিয়ে আসতে?
আমাদের কারও ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় যদি একটা পথশিশুরও ভাগ্য পরিবর্তন হয় তবে এটাই কি অনেক না?
আসুন সবাই নিজ থেকে এক’পা করে এগিয়ে আসি। দেশের আবর্জনা নামক পথশিশুদের জনশক্তিতে পরিণত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। আমাদের একটা উদার হাতই পারে এসব সুবিধা বঞ্চিত পথশিশুদের সুন্দর একটি জীবন দান করতে।
আসিফ_আহমেদ
যদি পাশে থাকো
তাসফিয়া শারমিন ** আজকের সকালটা অন্য রকম। সাত সকালে আম্মু বকা দিলো। মানুষের ঘুম একটু দেরিতে ভাঙতেই পারে। তাই বলে এত রাগার কী আছে ?একেবারে যে দোষ আমারও তাও নয়। মানুষ ঘুম থেকে উঠে ফোনে বা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে। কিন্তু আমি উঠি জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের আলো দেখে।কে জানে...
অাবার ও মা নেই- অাবার মা নেই… হবে
নিজেদের এগিয়ে অাসার সাথে যে সব বিদেশী সংস্থা অাছে বললেন তার কিছু নাম উল্লেখ করতে পারতেন। এছাড়া ছোটখাট কিছু পদক্ষেপ যা ব্যক্তি উদ্যোগে নেওয়া যায় তার সংক্ষিপ্ত অালোচনা করলে অারো ভালো হত।
শুভ কামনা