লিখাঃ রাকিব মাহমুদ
পৃথিবীতে প্রতি বছর সুখী মানুষদের তালিকা করা হয়। সবচেয়ে ধনী মানুষেরও তালিকা করা হয়। কিন্তু সবচেয়ে দুঃখী আর সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের তালিকা করা হয় না। অথচ এ পৃথিবীতে সুখী মানুষ হতে গোনা কয়েক জন, আর দুঃখী মানুষ অগণিত!
আশ্চর্য্যের বিষয় কি জানেন? সুখী মানুষের তালিকায় যে মানুষটা এক নাম্বারে থাকে, খোঁজ নিলে দেখা যাবে তার মাঝেও কোনো না কোনো অপূর্ণতা রয়েছে। আরে সেই অপূর্ণতার গল্প শুধু সেই মানুষটি-ই জানে, আর কেউ না। কারন আমাদের দৃষ্টি সীমা সীমিত। আমরা মানুষরা অনেক কিছুই খালি চোখে দেখিনা।
আমরা মানুষরা কারো মুখে এক চিলতে হাসি দেখলে মনে করি লোকটি অনেক সুখে আছে। অথচ আমরা এটা ভুলে যাই যে মানুষ মনের কষ্ট লুকানোর জন্যও অনেক সময় প্রাণ খুলে হাসার চেষ্টা করে। এর দ্বারা হয়তো মনের তীব্র ব্যথাটা একটু হালকা হয়। আর আমরা মনে করি তার জীবনে অনেক সুখ, তাই সে প্রাণ খুলে হাসতে পারছে। আমার জীবনে অনেক দুঃখ, তাই আমি তার মতো প্রাণ খুলে হাসতে পারছি না।
আসলে এটাই সত্য। প্রতিটা মানুষ-ই জীবনের কোনো না কোনো সময় মনে করে সে পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃখী মানুষ। কারন যে মানুষটা সারাদিন পৃথিবীর মানুষকে আনন্দে রাখে, হাসি-খুশি রাখে, হতে পারে সেও একরাশ হতাশা আর কষ্ট নিয়ে রাতে বিছানায় যায়। নিজের বুকের কষ্ট পাথর চাপা দিয়ে সে নিজেকে পৃথিবীর কাছে সুখী মানুষ দাবি করে। খুব নিখুঁত অভিনয় করে সে। যাতে করে কেউ বুঝতে না পারে যে সে ভালো থাকার অভিনয় করছে।
আর পৃথিবীতে এমন অভিনয় করা মানুষই সবচেয়ে বেশি। নাটক-সিনেমা’র অভিনেতারা তো এ বাস্তব জীবনের অভিনেতাদের ধারে কাছেও নেই। কারন নাটক-সিনেমার কাহিনীগুলো তো বাস্তব জীবন থেকেই নেয়া। অথচ আমরা মানুষরা টিভির পর্দার অভিনয় দেখে চোখের পানি ফেলি, কিন্তু বাস্তবের অভিনেতাদের অভিনয়টা অনুমানই করতে পারিনা!
আসলে পৃথিবীটা সুন্দর হলেও সবগুলো মানুষের জীবন পৃথিবীর মতো সুন্দর হয় না। এখানে বুকের জমানো কষ্টকে পাথর চাপা দিয়ে সমাজে অভিনয় করে চলতে হয়। যার অভিনয় যতো পারফেক্ট হয়, এ সমাজ তাকে বাহ্ বাহ্ দেয়। আর যার অভিনয় যত নিখুঁত, তার কষ্টের পরিমানও তত বেশি। অথচ আমরা মানুষরা খালি চোখে দেখেই মানুষের সুখ-দুঃখ বিচার করি! সিস্টেমটা অনেক বেশি অদ্ভূত, তাই না??
কিন্তু দুঃখের বিষয়, টিভির অভিনেতাদের নোমিনেশন দিয়ে প্রতি বছর পুরস্কৃত করা হয়। আর বাস্তব জীবনের ট্র্যাজিক হিরোদের আমরা কখনো চোখেই দেখিনা। দেখবো কি করে? তারাতো এমন ভাবে অভিনয় করে, যাতে করে কেউ অনুমান করতে না পারে তার জীবনের পেছনে লুকানো একটি গল্প আছে। আর তাইতো তারা সুক্ষ্ম অভিনেতা। এজন্য পুরস্কারটা ওই টিভি অভিনেতারা না পেয়ে রিয়েল লাইফের অভিনেতাদের দেয়া উচিত!
হতে — হাতে (টাইপিং মিস্টেক সম্ভবত)
আরও টাইপিং মিস্টেক আছে।
খুব সুন্দরভাবে বাস্তবে অভিনয় করা মানুষগুলোর কথা লিখেছেন। অনেক মানুষ দুখের মাঝেও খুব সুন্দরভাবে ভালো থাকার অভিনয় করে।
শুভ কামনা।
খুব গভীর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, বিশয়বস্তু নির্বাচনটাও বেশ ভালো সেই সাথে লেখনির মানও বেশ ভালো