প্রবন্ধ: নির্বাচন ও আমাদের ছেলেমেয়েরা
আমেরিকার বিখ্যাত প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন গনতন্ত্রের সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে,”গনতন্ত্র হচ্ছে জনগনের,জনগনের জন্য,জনগন দ্বারা নির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা”। গনতন্ত্রের একটা মৌলিক বিষয় হলো নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া যেমন গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা চিন্তা করা যায় না। তেমনি রাজনৈতিক দল ছাড়া নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় না।আমাদের দেশের সাধারন জনগনের গনতন্ত্র সম্পর্কে ধারণা না থাকলেও নির্বাচন সম্পর্কে তারা যথেষ্ট বিজ্ঞ।এমনকি যারা ১৮ বছরের নিচে,তারাও নির্বাচনের সাথে নিবিড় ভাবে জড়িত।নির্বাচন আসলেই কিছু অল্প বিদ্যা ভয়ংকর স্বভাবের মানুষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে উঠে পড়ে লাগে।থাক সেসব কথা,ওসবে আমার মাথাব্যথা নেই। কারন মত প্রকাশের অধিকার সবার আছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় তখনই,যখন সেসব ভয়ংকর স্বভাবের মানুষ নিজেদের পাশাপাশি তাদের ছোট্ট ছেলেমেয়েদেরকে টেনে নিয়ে যায় রাজনীতি নামক ভয়ংকর জিনিসটার মধ্যে।রাজনীতিকে আমি ভয়ংকর নামেই আখ্যায়িত করলাম কারন টা আমরা কমবেশি সবাই জানি। এই রাজনীতিই পারে একজনকে জীবন দান করতে,আবার এই রাজনীতিই পারে একজনের জীবন কেড়ে নিতে। কিন্তু একটা আজব ব্যাপার হলো, এই রাজনীতি তখনই প্রাণ ফিরে পায়, যখন আমাদের দেশে নির্বাচনের ঘন্টা বেজে উঠে। গনতন্ত্রে একটা কথা আছে, ”আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব”। এই কথাটাকে আমি বড্ড ভালোবাসি, কারন আমাদের এই রাজনীতির দেশে এই কথাটির গুরুত্ব অপরিসীম।
কিছুদিন আগে কয়েকটা ছেলেকে দেখলাম,যাদের বয়স ১৪এর বেশি হবে না। তারা হাতে পোস্টার,লিফলেট নিয়ে প্রার্থীর সমর্থন আদায় করে বেড়াচ্ছে। সেই দলে আমার ছোট্ট ভাতিজাকে দেখে চমকে উঠলাম। ভাতিজাকে কাছে ডেকে বললাম,” কি রে, তুই এখানে কি করিস?” উত্তরে ভাতিজা আমার ভাষণ দেওয়ার মতো বলতে লাগল,”চাচ্চু,তুমি জানো না? সামনে ভোট, তাই আমাদের অনেক কাজ। নেতার জন্য সবার কাছ থেকে দোয়া চাইতে হবে।” আমি বললাম,” তোর তো সামনে বার্ষিক পরীক্ষা। পড়ালেখা নাই”? ভাতিজা আমার প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে দিল ভোঁ দৌড়। আমি কিছুটা বিচলিত হলাম ভাতিজার ভবিষ্যৎ নিয়ে। কারন, রাজনীতির শিকর মধুর হলেও ফলটা যে বিষাক্ত এটা ভাতিজা জানে না। এরকম হাজারটা ভাতিজা ঘুরে বেড়াচ্ছে হাতে পোস্টার নিয়ে কোনো এক নেতার সমর্থন আদায়ের জন্য। ভাবতে অবাক লাগে। তবে কি আমরা একেই বলব ডিজিটাল যুগ? আমরা কি এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি? যদি একেই বলে ডিজিটাল, তবে চাই না এমন ডিজিটাল বাংলাদেশ। চাই না এমন বাংলাদেশ,যে বাংলাদেশের আগামীর ভবিষ্যতরা যাচ্ছে রসাতলে। অথচ আজ আমরা নিরব দর্শকের মতো এসব দেখে যাচ্ছি। আজ যেন আমরা বোবা,বধির। আমরা রাজনীতির ভয়ংকর পরিণতি জেনেও আমাদের ছেলেমেয়েদের এসব কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য উৎসাহ দিচ্ছি।আজ আমাদের ছেলেমেয়েরা স্কুল ফাঁকি দিয়ে নেতার সমর্থন আদায় করে বেড়াচ্ছে।অথচ তারা জানেই না নির্বাচন কি, কাকে বলে? মাঝে মাঝে এসব ছেলেমেয়েরা রাজনীতির মধ্যে এতটাই ডুবে থাকে যে,কিছুতেই বেড়িয়ে আসতে চায় না।বর্তমানে খেলার মাঠের চেয়ে রাজনীতির বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ছেলেমেয়েদের উপস্থিতি বেশি। তবে কি এটাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ? ভাবতেই শরীর শিহরিত হয়ে যায়।আমি আরো একটা ব্যাপার উপলব্ধি করেছি।আজকাল আমাদের ছেলেমেয়েরা নেতাদের নিয়ে এতটাই মশগুল থাকে যে, তারা তাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মানটুকু ও দিতে চায় না। শিক্ষকদের দেখলেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যায়। ব্যাপারটা এইরকম হয়েছে যে, শিক্ষকদের বসার আসন কেড়ে নিয়ে নেতাদের বসতে দেওয়া। অথচ শিক্ষকদের স্থান মা-বাবার পরে দেওয়া হয়েছে।একজন নেতা তিনিও আমাদের কাছে মর্যাদাবান ব্যক্তি, বিন্তু একজনকে মাথার উপর অপরজনকে পায়ের তলায় রাখলে কেমন দেখায় বলুন তো আমি সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকি যাতে, শিক্ষকরা রাগের বশে এসব ছেলেমেয়েদের অভিশাপ না দেয়।কারন ছোটরা না জানলেও আমরা জানি একজন শিক্ষকের অভিশাপ কতটা শক্তিশালী।আজকাল খবরের কাগজ হাতে নিলেই চোখে পড়ে, কিশোর কিশোরীর মৃতদেহ। শিরোনামে লেখা থাকে,” রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন”। ভাবতে পারেন? কতটা ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশে।আজকে তারা খেলার মাঠকেও রাজনৈতিক প্রাঙ্গনে পরিণত করেছে। ছোটবেলায় আমরা খেলার মাঠে চুপটি করে বসে, মুখে শাহাদত আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে খেলা দেখতাম। আহ! কি চমৎকার সেই মহূর্তগুলো।কিন্তু এখন খেলার মাঠেের এক কোণায় দেখা যায়,ছেলেমেয়েরা আলোচনা করছে রাজনৈতিক দল নিয়ে। এখানে একটা মজার বিষয় হলো, যারা ভিন্ন দলকে সমর্থন করে তাদেরকে গালি দিয়ে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়।আমাদের উচিত এই ভয়ংকর পরিস্থিতিকে শক্ত হাতে দমন করা। এখনই আমাদের উচিত এসব ছেলেমেয়েদেরকে ফিরিয়ে আনা।কারন খাঁচার পাখি একবার আকাশে উড়াল দিলে তাকে ধরা যেমন কঠিন,
তেমনি আমাদের ছেলেমেয়েরা একবার রাজনীতির সাথে পুরোপুরি জড়িয়ে গেলে তাদেরকে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।এমনকি হয়তো আর কখনোই তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে পারব না।আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। আমাদেরকে পুনরায় সচেতন হতে হবে।কারন আমাদের ছেলেমেয়েরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমাদেরকে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে আমাদের ছেলেমেয়েদের হাতে বইয়ের পরিবর্তে রাজনীতির পোস্টার, লিফলেট না উঠে। জানি চেষ্টা করলে আমরা অবশ্যই সফল হবো!!!!!
বিঃদ্রঃ আমি কোনো রাজনৈতিক দলকে অবজ্ঞা করে এই প্রবন্ধ লেখি নি। তাই অনুগ্রহ করে এটাকে রাজনীতিতে জড়াবেন না।
ধন্যবাদ সবাইকে
প্রথমত আপনার লেখাটা খুবই ছোট । এত ছোট পরিসরে প্রবন্ধ হয় কি না সেটা আমার জানা নেই। আর লেখাটা প্রতিবেদন টাইপ হয়ে গেছে। শুকামনা আপনার জন্য।
সাধারন-সাধারণ
মাথাব্যথা -মাথা ব্যথা (যেহেতু দুইটি শব্দ তাই আলেদা বসবে)
কারন-কারণ
কি-কী(ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে কী হয়)
বিন্তু-কিন্তু
কারন-কারণ
মহূর্তগুলো-মুহূর্তগুলো
কারন-কারণ
যাইহোক ভালো ছিল, তবে অনেক জায়গাতে প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেওয়ার দরকার ছিল, যা ব্যবহার হয়নি। আর কারণের ক্ষেত্রে ণ ব্যবহার হবে। পড়ে ভালোই লেগেছ আর বানান ঠিক করে দিলাম। শুভ কামনা রইল।
আসসালামু আলাইকুম।
সমসাময়িক সময় নিয়ে লিখেছেন। বেশ ভালোই লেগেছে পড়ে। তবে আর কিছুটা বড় হলে আরও ভালো লাগতো। বানানে কিছু কিছু ভুল রয়েছে। চিহ্নের ব্যবহারেও আরও খেয়াল রাখা উচিত ছিল।
কারন – কারণ
কারন টা – কারণটা
কমবেশি – কম বেশি
ছেলেমেয়েদের – ছেলে মেয়েদের
বিন্তু – কিন্তু
মহূর্তগুলো – মুহূর্তগুলো
আগামীর জন্য শুভ কামনা।
পোষ্টটা মুলত নির্বাচন নিয়ে হয়নি, হয়েছে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে। অবশ্য যে টুকু লিখেছেন ভালই লিখেছেন।
ছাত্ররা রাজনীতি করুক এটা কখনোই কাম্য নয়। ছাত্রদের দায়িত্ব পড়াশোনা করার, কিন্তু ছাত্ররা করছে রাজনীতি। বই খাতা ফেলে নেতাগিরি কে প্রাধান্য দিচ্ছে। সমাজ উন্নতির বদলে অবনতির দিকে যাচ্ছে।
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা উচিৎ।