লেখা: জুবায়ের আহমেদ
যুগের পর যুগ যাচ্ছে নতুন নতুন ফিতনার আবির্ভাব হচ্ছে। আমরা কি পৃথিবী থেকে আবারো ইসলামকে বিদায় দিচ্ছি। নাকি পরিণত হচ্ছি কারো দাবার গুটিতে।
বলা হয়ে থাকে কামাল আতাতুর্কের মাধ্যমে খেলাফতে উসমানিয়্যার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ইসলামকে বিদায় দেয়া হয়েছিলো। তবে কি আমরা আবারো সেই দাবার গুটিতে পরিণত হচ্ছি। মডারেট ইসলাম হলো কালের এক ভয়াবহ ফিতনা। যাদের অনলাইনে বিস্তর বিচরণ রয়েছে তারা অবশ্য এই ফিতনার ব্যপারে অবগত রয়েছেন।
পৃথিবীতে যত ফিতনারই আবির্ভাব হয়েছে আহলে হক্ক উলামায়ে কেরামগন সজাগ ও সচেতন। যেমন: কাদিয়ানী ফেতনা, মওদুদী ফেতনা, দেওয়ানবাগী ফিতনা ইত্যাদি।
তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই কি এই মডারেট ইসলাম! কি তাদের উদ্দেশ্য? এর পেছনে রয়েছে কাদের ক্রিড়ানক চক্রান্ত? রেন্ড কর্পোরেশন আমেরিকান গ্লোবাল পলিসি থিংক ট্যাংক নামে সারা বিশ্বে পরিচিত। এটি আমেরিকান একটি এন,জি,ও সংস্থার নাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৬ সালে জেনারেল হেনরী হাপ আর্নল্ড আমেরিকাকে এক পরাশক্তিতে পরিণত করার লক্ষ্যে এই সংস্থার সূচনা করেন।
আলোর মুখ দেখতে তাদের বেশি দিন যেতে হয়নি। মহাকাশে রকেট উৎক্ষেপণ করে তারা পুরো বিশ্বকে তাঁক লাগিয়ে দেয়।
কিছুদিন পর তারা মহাকাশে স্পাই ক্যামেরা ও উৎক্ষেপণ করে। তারা এই প্রযুক্তিগত যুদ্ধে না থেকে কীভাবে বিনাযুদ্ধে জাতিগত বিবেধ বাঁধিয়ে জয়লাভ করা যায় তার প্রতি মনোনিবেশ করে। এবং সফল ও হয়। তাদের কাজ হলো বন্ধু বেশে শত্রুর মতো।
বর্তমান মুসলিম দেশগুলোতে যে জাতিগত বিরোধ রয়েছে সবই তাদের পরিকল্পনার অংশ,ধর্মীয় ব্যাপারে সামান্য বিবেধ সৃষ্টি করে দেয়া ব্যস কেল্লা ফতেহ। শুধু তাই নয় কোন মুসলিম রাষ্ট্র যাতে কোনো পরাশক্তিতে পরিণত না হতে পারে সে দিকেও তাদের নজর বিদ্যমান। এখন আসি মডারেট ইসলাম নিয়ে।
মুসলমানদের মধ্যে ফাটল তৈরী করার লক্ষ্যে তারা মুসলমানকে ৪ টি ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে।
১)কট্টর পন্থি মুসলিম, বা মৌলবাদী মুসলিম। তারা কুরআন হাদিস অনুযায়ী জীবন গঠন করতে চায়। ইসলাম একটি আদর্শিক জীবন ব্যবস্থা এটা তারা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে। অন্য ধর্মের উপর ইসলামকে বিজয়ী রাখতে চায়। তারা হলো মুজাহিদ।
২) ঐতিহ্যবাদী মুসলিম, তারা নিজ ঐতিহ্যের উপর অটুট থাকতে চেষ্টা করে।তারা হলো এমন মুসলিম যাদের কাজ হলো শুধু মাদ্রাসা, মসজিদ, খানকা আর পীর মুরিদী, বাইরের জগৎ নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আর
হ্যাঁ যদি তারা কোনোভাবে প্রথম প্রকার অর্থাৎ কট্টর পন্থি মুসলিমদের সাথে মিশে যায় তাহলে তা হবে আমেরিকানদের প্রধান হুমকির কারন হবে।
৩) নাস্তিক্যবাদী মুসলিম, তারা তো মুসলমানই নয়। যদিও তারা তাদের ভাষ্যমতে মুসলিম দাবী করে থাকে। তারা ইসলামের অকাট্য বিধান অস্বীকার করে। তাদের ব্যপারে উলামায়ে কেরামদের বিভিন্ন মতানৈক্য রয়েছে। তাদের ব্যপারে রেন্ড কর্পোরেশন এর কোনো মাথা ব্যথা নেই। কারন তারা তো তাদের পকেটেই রয়েছে।
৪) মডারেট ইসলাম, এটা হলো মূল বিষয়। মডারেট ইসলাম ইসলাম ধর্মের একটি বিকৃত ভার্সন। এটা বাদশাহ আকবরের দ্বীনে এলাহী থেকে ও ভয়ংকর। কেননা এটা মানুষ সহজেই বুঝতে পেরেছে। কিন্তু এটা নিজ চাহিদানুযায়ী হওয়াতে বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। তারা ইসলামকে আদি ও সেকেলে মনে করে। যা তাদের মনঃপুত নয় তা মানতে নারাজ। ইসলামকে তারা যুগের সাথে মিলিয়ে ব্যবহার করতে চায়। যেমনঃ ইসলামী গান, ইসলামী সিনেমাহল, ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী গঠনতন্ত্র, ইসলামী সমাজতন্ত্র ইত্যাদি।
ইসলামকে তারা পাশ্চাত্য ধারার সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন করে ব্যবহার করতে চায়। ইসলামকে যদি নিজ চাহিদানুযায়ী ব্যবহার করা হয় তাহলে সেটা আর ইসলাম থাকবে না। হয়ে যেতে পারে কোন কুফরি ধর্ম।উদাহরণস্বরূপ : যদি মদকে শরবতের গ্লাসে শরবত বলে যতই পরিবেশন করা হয় না কেন তা মদই থাকবে, শরবত হবেনা। নিজ চাহিদানুযায়ী হওয়াতে মানুষ এটা নিয়ে ততটা মাথা ঘামায়না। আর এই ফিতনার সম্মুখীন হচ্ছেন কিছু ভার্সিটি পড়ুয়া, কিছু সরলমনা যুবক ভাইয়েরা। তাদের কাজের হাতিয়ার ও হতে পারেন কোনো সময়। তাদের কাজের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছেন কিছু স্বার্থবাদী মৌলভী। তারা স্বার্থের জন্য নিজ আদর্শকেও বিলিয়ে দিতে কুন্ঠাবোধ করেনা। এমনকি মুসলিম উম্মাহকে ধ্বংস করতেও যাদের হাত কাঁপবেনা। কিন্তু পরে আফসোস করতে হবে। যেমনিভাবে আবু আব্দুল্লাহ স্পেন ধ্বংস করার পর আফসোস করেছিলেন। এক কথায় বিশ্ব থেকে মুসলিম নিধনে তারা এক দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। দাজ্জালের পথকে সুগম করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে।
করণীয় : নতুন ফিতনা আবির্ভাবের শুরুতেই তার সাথে মানুষের পরিচয় করিয়ে দেয়া উলামায়ে কেরামসহ বিজ্ঞজনের ইমানী দায়িত্ব। যাতে মানুষজন ফিতনা সম্বন্ধে অবগত হয়। বিধর্মীরা যদি ইসলামের কোনো বিধানকে বিকৃত করে তাহলে বিজ্ঞজনের ও গুরুদায়িত্ব হলো তা খণ্ডন করে তার সমুচিত জবাব দেয়া। আমাদের করণীয় হলো উলামায়ে কেরামদের সংস্পর্শে এসে তা নিরসনের চেষ্টা করা।
ইসলাম চির অম্লান, ইসলামকে কোনো কুফরি শক্তি বিদায় করতে পারবেনা।∑
বর্তমানে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে এই ফিতনা করা হচ্ছে। কঠোর সত্য ছিলো লেখাটায়। এমন লেখায় ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে ভুল ধরা আমার পক্ষে সম্ভব না। তবে না শব্দ মূল শব্দ থেকে আলাদা বসে। এই বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
নিঃসন্দেহে চমৎকার একটি লেখা পড়লাম। আমি অনক কিছুই জানতে পারলাম এই প্রবন্ধটি পড়ে। এই শিক্ষণীয় প্রবন্ধটি সকলের পড়া উচিৎ। লেখনশৈলী মনোমুগ্ধকর। প্রতিটি কথাই ভালো লাগার মতো। আপনাকে ধন্যবাদ এমন চমৎকারভাবে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।
লেখক বানানে কিছু ভুল আমার নজরে পড়ল। তা শুধরে দিচ্ছি।
ক্রিড়ানক- ক্রীড়ানক।
বিবেধ- বিভেদ।
কারন- কারণ।
আন্তরিক শুভ কামনা রইল।
আপু টাইপিং মিসটেক, গঠনতন্ত্র নয় গনতন্ত্র হবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এমন কিছু কথা জানতে পেরেছি, যেটা আগে জানতাম না। লেখক খুব সুন্দর করে বিষয়টি ফুটিয়ে তুলেছেন। সামান্য কয়েকটি ত্রুটি চোখে পড়লেও লিখার সহজবোধ্যতা সেগুলো আড়াল করে দিয়েছে।
খুব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন।
আমাদের সমাজে এখন বিভিন্ন ফিতনায় ভরে যাচ্ছে।
তাই আলেমগনের প্রতিবাদ করতে হবে।
তবেই এসব ফিতনা ফাসাদ দূর করা সম্ভব।
মুসলিমদেরও সচেতন হতে হবে।
না মূল শব্দের সাথে বসে না।
আপনি অনেক জায়গায় এ ভুলটা করেছেন
শুভ কামনা রইলো।
কি-কী(যেহেতু ব্যাখ্যা বুঝিয়েছে এক জায়গাতে আর ব্যাখ্যা করেছেনও)
বিবেদ-বিভেদ
কারন-কারণ
হবেনা-হবে না(না আলাদা বসে যেহেতু শব্দ)
কোন-কোনো
ঘামায়না-ঘামায় না
সরলমনা-সরল মনের
করেনা-করে না
কাঁপবেনা-কাঁপবে না
পারবেনা-পারবে না
বাহ্ অসাধারণ ছিল লেখাটা, মনোমুগ্ধকর বলা যায়। পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছি যেগুলো অজানা ছিল। এই বিষয়ে লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আসলে সত্যিই মুসলিমদেরকে মুছে ফেলার জন্য আমেরিকানরা অনেক কিছু করছে। একমাত্র আল্লাহ্ তার বান্দাদের সাথে আছে বলে কিছু করতে পারছে না। এই ক্ষেত্রে সকল মুসলিমদের সচেতন হতে হবে। কিছু ভুল আগামীতে খেয়াল রাখবেন আশা করি যেগুলো উল্লেখ করেছি। অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।