মানুষ ও কুকুর
প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 2,208 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

হেমন্তের সকালের কাঁচা-মিঠা রোদের হালকা ছটা মুখের উপর পড়তেই নিষুপ্তি ভেঙে গেলো। আড়মোড়া ভাঙতেই কানে এলো ঢাকের বাদ্যি আর কাঁসরের ঢং ঢং আওয়াজ। মূর্হুতেই মনে পরে গেলো আরে আজ তো দশমী!! মা দূর্গার বিসর্জন। ৫ দিনের বাপের বাড়ী বেড়ানো শেষে মা আজ স্বামীগৃহে প্রত্যাবর্তন করবেন। কথাটা মনে হতেই আমার মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। মা আজ নেই। গতবছর দুইদিনের এক অসুখে ভুগে মা আমাকে ছেড়ে চিরদিনের মত হারিয়ে গেল। যে চারটা বছর মাকে পেয়েছিলাম প্রতি বছরই মায়ের সাথে দূর্গা পূজা দেখতে বেড়াতাম। আমরা মা-ছেলে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে বেড়াতাম আর প্রতিমা দেখতাম। আমার কি যে ভালো লাগত মা দূর্গার দীপ্তিময়ী মুখখানি দেখতে ! সবচেয়ে ভালো লাগত অষ্টমীর দিন। ঐদিন যে প্যান্ডেলে যেতাম সেখানেই খিচুড়ি খেতে দিত। অর্পূব লাগত খেতে সেই খিচুড়ি!
খিচুড়ির কথা মনে হতেই পেটের ভিতরটা মুচড়িয়ে উঠলো। মনে পড়ল আরে গতকাল রাত থেকে তো পেটে কোন দানা-পানিই পড়ে নি। শরীরের একজায়গায় ঘা হওয়াতে দুইদিন ধরে জরে শরীরটা বড্ড কাহিল। এইবার মা দূর্গার মুখটাও দর্শন করা হয় নি। তাই উঠে বসলাম যাই মা দূর্গার বিদায়ের দিনে তার মুখটা দর্শন করে আসি আর যদি কিছু খাবার পাই তাও পেটে দিয়ে আসি।
হাঁটতে হাঁটতে একটা প্যান্ডেলের কাছাকাছি এসে দেখি পূজা শেষে সবাই প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে যে যার গন্তব্যে পা বাড়াচ্ছে। ভিড়টা কমতেই মায়ের মুখ দর্শনের আশায় প্যান্ডেলের আরো একটু কাছাকাছি আসতেই একটা তীব্র শোরগোল আমার কানে আসলো। হঠাৎ দেখি দুই-তিনজন মানুষ হাতে লাঠি আর ইটের টুকরা নিয়ে আমার দিকে তেড়ে আসছে আর বলছে, “এই শালা কুত্তাটা কই থেকে আসলো? এই শালাকে মার নাহলে কুত্তাটা প্যান্ডেলে ঢুকে সবকিছু নষ্ট করে দিবে”। আমার পাঁচবছরের ছোট্ট জীবনে মানুষের এমন ভয়াল মুর্তি আর দেখি নি। গায়ে কিছু ইটের টুকরা লাগতেই ক্লান্ত শরীরটাকে কোনমতে টেনে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসলাম। সেই মূর্হুতে ভারী রাগ হল মা দূর্গার আর মানুষ নামক হিংস্র জন্তুটার উপর। আমার মা বলেছিল, “দূর্গা নাকি সকল সৃষ্টির মা” । কিন্তু কই আজ যখন প্যান্ডেলে ঢুকলাম মায়ের মুখ দর্শন করতে তাহলে তখন কেন মায়ের সন্তান মানুষ নামক দুইপেয়ে জন্তুরা আমাকে মারতে তেড়ে আসলো? আমি কি তবে মা দূর্গার সন্তান নই!
আমরা কুকুর তো, তাই মানুষ হতে পারি না। তোমরা মানুষ কি না, তাই কুকুর হতে খুব পারো।

সম্পর্কিত পোস্ট

যদি পাশে থাকো

যদি পাশে থাকো

তাসফিয়া শারমিন ** আজকের সকালটা অন্য রকম। সাত সকালে আম্মু বকা দিলো। মানুষের ঘুম একটু দেরিতে ভাঙতেই পারে। তাই বলে এত রাগার কী আছে ?একেবারে যে দোষ আমারও তাও নয়। মানুষ ঘুম থেকে উঠে ফোনে বা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে। কিন্তু আমি উঠি জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের আলো দেখে।কে জানে...

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

অনন্যা অনু 'আমিনা বেগম' মেমোরিয়াল এতিমখানার গেট খুলে ভেতরে ঢুকতেই ওমরের বুকটা ধুক ধুক করতে শুরু করে। ওমর ধীর গতিতে ভেতরে প্রবেশ করে। চারদিকে তখন সবেমাত্র ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ওমর গত রাতের ফ্লাইটে আমেরিকা থেকে এসেছে। সে এসেই সোজা আমিনা বেগম মেমোরিয়াল এতিমখানায়...

দাদাভাইকে চিঠি

দাদাভাইকে চিঠি

প্রিয় দাদাভাই, শুরুতে তোকে শরতের শিউলি ফুলের নরম নরম ভালোবাসা। কেমন আছিস দাদাভাই? জানি তুই ভালো নেই, তবুও দাঁতগুলো বের করে বলবি ভালো আছি রে পাগলী! দাদাভাই তুই কেন মিথ্যা ভালো থাকার কথা লেখিস প্রতিবার চিঠিতে? তুই কি মনে করিস আমি তোর মিথ্যা হাসি বুঝি না? তুই ভুলে গেছিস,...

৭ Comments

  1. robiul hossain

    সুন্দর হয়েছে।

    Reply
  2. Anamika rimjhim

    দাদা,শব্দ সং্খ্যা ১-৩ হাজার হতে হবে।কিন্তু আপনার লেখায় ৩৩৯..প্রতিযোগিতার নিয়ম গুলো ত মেনে চলতে হবে তাইনা?
    তবে লেখার কথা বলতে গেলে অনবদ্য! খুব সুন্দর চিন্তা।

    Reply
  3. anamika das rimjhim

    দাদা,শব্দ সং্খ্যা ১-৩ হাজার হতে হবে।কিন্তু আপনার লেখায় ৩৩৯..প্রতিযোগিতার নিয়ম গুলো ত মেনে চলতে হবে তাইনা?
    তবে লেখার কথা বলতে গেলে অনবদ্য! খুব সুন্দর চিন্তা।

    Reply
  4. Md Alamgir

    খুব সুন্দর একটা বার্তা ছিল লেখাটায়। বিশেষ করে শেষের কথাটি খুবই সুন্দর ছিল, “আমরা কুকুর তো, তাই মানুষ হতে পারি না। তোমরা মানুষ কি না, তাই কুকুর হতে খুব পারো।”

    লেখাটি প্রতিযোগিতার রুলসের মধ্যে পড়েনি হয়তো। অনেক ছোট গল্প। কিন্তু সুন্দর প্লট ছিল। আরও বড় করলে হয়তো ভালো কিছু হতো। কিছু বানান ভুল আছে,

    গেলো * গেল
    মূর্হুতেই * মুহূর্তেই
    বাড়ী * বাড়ি
    পড়ে নি * পড়েনি
    হয় নি * হয়নি
    দেখি নি * দেখিনি
    কোনমতে * কোনোমতে

    “আমার কি যে ভালো লাগত” এখানে “কী” হবে।

    Reply
  5. Jannatul Ferdousi

    আমার কি যে ভালো লাগত! → আমার কী যে ভালো লাগত! (মাথা ঝুঁকিয়ে উত্তর হলে কি হয়)
    পড়ে নি→ পড়েনি(নি, টা এগুলো সব সময় শব্দের সাথে বসে)
    ভারী রাগ হল→ হলো(হল মানে বড় ঘর)
    ….
    আপনার লেখার হাত চমৎকার। গল্পটি যদি বড় করতেন তবে আরো ভালো হতো। আর থিমটুকুও দারুণ ছিল।
    বিশেষ করে শেষ লাইনটা অনেক কিছুই বুঝিয়েছে…..
    শুভ কামনা রাইটার…????

    Reply
  6. Learner

    বানানে প্রচুর ভুল ছিলো উপরের কমেন্টে তা ধরিয়ে দেয়া হয়েছে আমিও কিছু ধরিয়ে দিলাম।
    বাদ্যি → বাদ্য
    পরে → পড়ে
    দীপ্তিময়ী → দীপ্তিময়
    জরে→ জ্বরে
    হল→ হলো

    লেখার মধ্যে বার্তাটা খুব সুন্দর ছিলো তবে আরেকটু সাজানো গুছানো লেখা হলে পড়তে আরো ভালো লাগতো ♥ শুভ কামনা।

    Reply
  7. Halima Tus Sadia

    এটা প্রতিযোগিতার গল্পের মধ্যেই পড়ে না।
    তবে লেখাটা খুব ভালো ছিল।

    শেষের লাইনটা আরও ভালো লেগেছে।
    শব্দ সংখ্যা এতো কম হলে প্রতিযোগিতার রুলসের বাহিরে পরে যায়।

    বানান ভুল আছে।

    বাদ্যি–বাদ্য

    হয় নি-হয়নি

    দেখে নি–দেখেনি
    মূহুর্তে–মুহূর্তে
    মুর্তি–মূর্তি
    জরে–জ্বরে

    শুভ কামনা রইলো।

    Reply

Leave a Reply to robiul hossain Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *