ঘুরে দাড়ানো নাজমুল
প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 1,428 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

লেখিকা:ইশরাত তাবাসসুম , ।জুলাই,১৮।

মাস তিনেক হলো চা বিক্রি করছেন নাজমুল। দিনে ক্লাস করেন। সন্ধ্যার পর ভ্যান নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চা বিক্রি করেন। প্রতিদিন দুই থেকে তিন শ টাকা আয় হয়।
এই নিয়ে যাচ্ছে রোজকার জীবন। নাজমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত আছেন। ২০১২ সালে নদী ভাঙনের কারণে তাদের পাড়ি দিতে হয় শহরে। মা বাবা সহ চার ভাই-বোন তারা। শহরে এসে তাদের অনেক কষ্টে দিনযাপন করতে হয়। তার বাবা ছোট্ট একটা মুদি দোকান নিয়ে বসে। যা দিয়ে কোনোরকম তাদের সংসার চলে। নদী ভাঙনের আগে নিজ এলাকা থেকে মাধ্যমি,উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে নাজমুল। অভাব-অনটনে এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেই আর পড়াশুনা করবেনা।কিন্তু পরে ভাবে না যেভাবেই হোক পড়াশুনা করে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার চ্যান্স পাওয়াটা হইতো ভাগ্য ছাড়া আর কিছুইনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সে থাকতো। টিউসনি করে কোনোরকম নিজের পড়াশুনাটা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নাজমুল বেশিদিন টিউসনি করাতে পারেনি।যার কারণে তাকে কাজের অন্যপথ হিসেবে বেঁচে নিতে হয়েছে
মোবাইল রিচার্জের দোকান।
কিন্তু তাও বেশিদিন করতে পারে নি, কারণ সে যেখানে থাকে দোকানটা তার থেকে অনেক দূরে। যার কারণে শেষমেশ কাজটা করেনা। এরপর নাজমুল ভাবে, যে কাজে নিজের স্বাধীনতা আছে ওই কাজই করবে। ইচ্ছে হলে করবে না হলে করবেনা ব্যাপার টা এইরকম, কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। তারপর সে ভাবলো সে ‘চা’ খুব ভালোই বানাতে পারে, এই নিয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলে তারাও তাকে সাহায্য করে। যার কারণে সে এখন ‘চা’ বিক্রি করে। সে যে হলে থাকে ওই হলের আশেপাশেই চা বিক্রি করে। যাই হোক তা নিয়ে সে সন্তুষ্টি। যখন সে অসুস্থ থাকে তখন ২,১দিন কাজ করেনা। কেউ তো আর চাকরি দিবেনা তাই এই নিয়ে যতোদূর সম্ভব কাঁটিয়ে দিবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই হলে যারা আশে তারা নাজমুল এর সম্পর্কে জেনে অবাক হয়। অনেকে তাকে আবার তাকে অনেক কথা ও বলে, কেউ আবার তাকে সাহায্য করবে বলে। কিন্তু নাজমুল কারো কথায় কান না দিয়ে নিজের মনের কথামতো চা বিক্রির কাজটা কেই বেঁচে নিয়েছেন। অনেকে অনেক কথা বলবে সবার কথায় কান দিতে হবে এমন তো নই।তাই নাজমুল কারো কথায় কান না দিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। কারণ পৃথিবীতে কোনো কাজই ছোট নই, সৎ পথে কাজটা করে যাওয়াই জীবনের স্বার্থকতা।
পরিবারে কে একটু আধটু সাহায্য করে যত টুকু সম্ভব হয় । ‘চা বিক্রি করে টাকা জমিয়ে তা দিয়ে একটা মোটরসাইকেল কিনবে নাজমুল।তারপর আর ‘চা’ বিক্রি করবেনা নাজমুল। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে যাত্রী যাতায়াতের সার্ভিসিং জব টা করবো। তা নিয়ে সে তার পড়ালেখা এবং পরিবার কে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে। হয়তো একদিন নাজমুল অনেক দূরে এগিয়ে যাবে,যেদিন থাকবেনা তাদের অভাব
অনটন। সেইদিন হয়তো সবার মুখে মুখে থাকবে নাজমুল। কারো বেঁচে থাকার প্রেরণা বা কারো সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা হবে নাজমুল।
জীবন মানে সংগ্রাম। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি সংগ্রাম করবা ততক্ষণ পর্যন্তই টিকে থাকবে। পৃথিবীতে কেউ কারো নই তোমার যা আছে তা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাও। আর ভরসা রাখো উপর আল্লাহর প্রতি। তোমার ইচ্ছা, অদম্য শক্তি আর কঠোর পরিশ্রম তোমায় সফলতা এনে দিতে বাধ্য। তাই এগিয়ে যাও নাজমুলের মতো। একদিন নাজমুলেরা হবে হাজার হাজার নাজমুলের সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।

সম্পর্কিত পোস্ট

যদি পাশে থাকো

যদি পাশে থাকো

তাসফিয়া শারমিন ** আজকের সকালটা অন্য রকম। সাত সকালে আম্মু বকা দিলো। মানুষের ঘুম একটু দেরিতে ভাঙতেই পারে। তাই বলে এত রাগার কী আছে ?একেবারে যে দোষ আমারও তাও নয়। মানুষ ঘুম থেকে উঠে ফোনে বা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে। কিন্তু আমি উঠি জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের আলো দেখে।কে জানে...

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

অনন্যা অনু 'আমিনা বেগম' মেমোরিয়াল এতিমখানার গেট খুলে ভেতরে ঢুকতেই ওমরের বুকটা ধুক ধুক করতে শুরু করে। ওমর ধীর গতিতে ভেতরে প্রবেশ করে। চারদিকে তখন সবেমাত্র ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ওমর গত রাতের ফ্লাইটে আমেরিকা থেকে এসেছে। সে এসেই সোজা আমিনা বেগম মেমোরিয়াল এতিমখানায়...

দাদাভাইকে চিঠি

দাদাভাইকে চিঠি

প্রিয় দাদাভাই, শুরুতে তোকে শরতের শিউলি ফুলের নরম নরম ভালোবাসা। কেমন আছিস দাদাভাই? জানি তুই ভালো নেই, তবুও দাঁতগুলো বের করে বলবি ভালো আছি রে পাগলী! দাদাভাই তুই কেন মিথ্যা ভালো থাকার কথা লেখিস প্রতিবার চিঠিতে? তুই কি মনে করিস আমি তোর মিথ্যা হাসি বুঝি না? তুই ভুলে গেছিস,...

৩ Comments

  1. Anamika Rimjhim

    মাধ্যমি-মাধ্যমিক*
    বেঁচে নিয়েছে -বেছে নিয়েছে।
    শব্দসং্খ্যা নিয়মের চেয়ে অনেক কম। লেখার উন্নতি কামনা করি।

    Reply
  2. Jannatul Ferdousi

    মাধ্যমি→ মাধ্যমিক

    সিদ্ধান্ত নেই→ নেয়

    চ্যান্স→ চান্স

    টিউসনি→ টিউশনি

    বেঁচে → বেছে
    তা নিয়ে সে সন্তুষ্টি → সন্তুষ্ট

    [ টা, টি, নি এসব মূল শব্দের সাথে বসে]

    ( না মূল শব্দ থেকে আলাদা বসে)

    আরেকটা বিষয় খেয়াল করলাম, প্রথমে নাজমুলকে সম্মান দিয়েছিলেন। মানে যাবেন না, করববেন না এইভাবে। কিন্তু পরে তা ধরে রাখেননি। যাবে না, করবে না এভাবে লিখেছিলেন। সেদিকে খেয়াল দিবেন।
    আপনার গল্পটা অনুপ্রেরণা বটে তবে শাজিয়ে তুলতে পারেননি ঠিকমতো। আরেকটু গুছিয়ে টুইস্ট আনতে পারলে গল্পটা ভালো হতো।
    তবুও দিন দিন চর্চা করুন, দেখবেন সফলতা আসবে। সেদিনের অপেক্ষায়….
    শুভ কামনা

    Reply
  3. Halima Tus Sadia

    অনুপ্রেরণামূলক গল্প।

    গল্পের নাজমুলের মতো কতো নাজমুল আছে বাস্তবে।
    কতো কষ্ট করে পড়াশোনা করে। পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের জন্য কিছু করে।

    তবুও তাদের সফলতা বয়ে আনুক।জীবনে কিছু একটা করুক।স্বপ্নগুলো পূরণ হোক এই কামনা।

    বানানে ভুল আছে।

    মাধ্যমি–মাধ্যমিক
    চ্যান্স-চান্স
    টিউসনি-টিউশনি
    বেঁচে–বেছে নিয়েছে
    ভাঙনের–ভাঙ্গনের
    করবেনা–করবে না
    পারে নি–পারেনি ( নি একসাথে হবে)
    ছোট নই–ছোট নয়
    পরিবারেকে–পরিবারকে
    সিদ্ধান্ত নেয়–নেই হবে।

    বানান ভুল হলে পাঠকের পড়তে ভাল্লাগে না।
    বানানের প্রতি যত্নশীল হবেন।
    অনেক শুভ কামনা রইলো।

    Reply

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *