দৃষ্টিভঙ্গি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 1,200 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

শাহাদাত_আবিন

‘নারী’ ছোট একটা শব্দ । এটা কি শুধুই একটা শব্দ?’ নারী ‘ নামটা শুনলেই মনে হয়, তার ভেতর মায়া থাকবে, মনটা নরম হবে, সে সংসারী হবে, পুরুষের কথা ছাড়া এক পা ও নড়বে না , সবসময় ঘরের মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে , সে শুধুই সন্তান জন্ম দিবে এবং দেখাশোনা করবে । হ্যাঁ , আগের কালের মানুষের মতো বর্তমানের অনেক মানুষ এই ধরনের মতবাদ নিয়েই আছেন। নারীরা আজ সমান অধিকার পেয়েছে এমনটা শোনা যায় । কিন্তু কতটুকু স্বাধীনতা পেয়েছে? সেই স্বাধীনতা আদৌ কেউ দেখেছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায় । চলাফেরা, কথাবার্তায় আর তার ব্যক্তিত্বে – নারী প্রতিনিয়ত শিকলে আবদ্ধ এক নাম। ধর্ষণ, হত্যা , পূর্বের যুগের মতো এখনো হরহামেশা চলিতেছে। কেউ কেউ আবার বলে থাকেন – নারীর অবাধ চলাফেরা এবং পোশাকের কারনেই নাকি এসব হচ্ছে। নিচের প্রশ্নটা তাদের জন্যই:
তাহলে ২বছর বয়সী কিংবা ৬বছর বয়সী শিশুরা কেনো ধর্ষিত হচ্ছে? তাদের ও কি পোশাকের সমস্যা? তাহলে সমস্যা কোথায়? উত্তরটা আমিই বলে দিচ্ছি –নাহ, সমস্যা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির।
আজ ও প্রতিদিন ,প্রতিক্ষণে নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে । পুরুষশাসিত সমাজের চোখ দিয়ে ,মুখ দিয়ে , দেহ দিয়ে তাকে গলাধঃকরণ করা হচ্ছে ইচ্ছেমত।
কিছুদিন আগের ঘটনা:-
ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলাম , পাশেই একটা মেয়ে দোকানদারের কাছে সেনোরা (ন্যাপকিন) চাইলো ? আর পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা দু’টো ছেলে মুখ হাত দিয়ে মুচকি মুচকি হাসতেছে । আমার কাছে ব্যাপারটা খারাপ লাগলো , একবারও কি ভেবে দেখেছেন তাদের মন মানসিকতা কতোটা নিচু? কতোটা নিচুতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি? আরে ভাই, আমাদের প্রতিদিনের চলাফেরা কিংবা কর্মকান্ডের মতো এটাও একটা স্বাভাবিক একটা বিষয়, এটা তো মজার ব্যাপার না। কথাগুলো বলতে চেয়েছি কিন্তু পারিনি,
ওই যে , স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করিনি, নারীরা ও কি পারে স্বাচ্ছন্দ্য মতো চলতে কিংবা বলতে?
মেয়ে দেখলেই যে পুরুষের ঠোঁটের কোণে উচ্চারিত হয়”- ইসসসস,,, কি মাল! অথচ মেয়েটিকে ধর্ষণ করে হত্যা করার পর তারাই আন্দোলন করে, “আমার বোনের হত্যাকারীর বিচার চাই” আচ্ছা আগেই যদি তাকে বোনের চোখে দেখতো-( আমি , তুমি, তারা) তাহলে কি সে ধর্ষিত কিংবা খুন হতো?
ময়লা ধুলো মাখা শরীরের ভিক্ষুকটি যখন আপনার কাছে দু’টো টাকা ভিক্ষা চায়, তখন আপনি তার দিকে ঘৃনার চোখে তাকিয়ে তাকে ফিরিয়ে দেন , হেয় করেন কারন তার গায়ে ময়লা কিংবা গন্ধ । এই যে বৈষম্য, এই যে দৃষ্টিভঙ্গি, এটার কি পরিবর্তন করতে পেরেছেন আপনি? অথচ আপনিই দাবী করেন এই দেশ উন্নত হোক। এই আপনি কে? এই আপনি আমি, তুমি অথবা সে ।
সড়কে দূর্ঘটনা যেনো নৈমিত্তিক ব্যাপার ,কিছুদিন আগেও এই নিয়ে অনেক আন্দোলন,অনেক তোলপাড় হয়েছে । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমি , তুমি,তারা নিজেদের কতটুকু বদলাতে পেরেছি । এখনো দেখা যায়, ফুটওভারব্রিজগুলো ফাঁকা পড়ে আছে,আর মানুষ সড়কের মাঝ দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছে । আমরা চাই সমাজ বদলাতে, কিন্তু নিজেদের বদলাতে পেরেছি কি? পাল্টেছে কি দৃষ্টিভঙ্গি?
আমার লেখায় অনেকগুলো প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে ।পাঠক হয়তো বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন প্রশ্নগুলো দেখে । আসলে প্রশ্নগুলো পাঠকের উদ্দেশ্যে, আমার, তোমার,তার বিবেকের উদ্দেশ্যে । নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুন , উত্তর পেয়ে যাবেন । পরিশেষে আমরা চাই নারীর অধিকার নিশ্চিত হোক, মাথা উঁচু করে দাঁড়াক । কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন- “বিশ্বের যা কিছু মহান যা কিছু চিরকল্যানকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী , অর্ধেক তার নর ।” সমাজের মানুষগুলোর চিন্তা চেতনার পরিবর্তন ঘটুক, পরিবর্তন ঘটুক নিচু মন মানসিকতার । তাহলেই তো বদলাবে সমাজ , বদলাবে দেশ ।

সম্পর্কিত পোস্ট

যদি পাশে থাকো

যদি পাশে থাকো

তাসফিয়া শারমিন ** আজকের সকালটা অন্য রকম। সাত সকালে আম্মু বকা দিলো। মানুষের ঘুম একটু দেরিতে ভাঙতেই পারে। তাই বলে এত রাগার কী আছে ?একেবারে যে দোষ আমারও তাও নয়। মানুষ ঘুম থেকে উঠে ফোনে বা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে। কিন্তু আমি উঠি জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের আলো দেখে।কে জানে...

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

অনন্যা অনু 'আমিনা বেগম' মেমোরিয়াল এতিমখানার গেট খুলে ভেতরে ঢুকতেই ওমরের বুকটা ধুক ধুক করতে শুরু করে। ওমর ধীর গতিতে ভেতরে প্রবেশ করে। চারদিকে তখন সবেমাত্র ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ওমর গত রাতের ফ্লাইটে আমেরিকা থেকে এসেছে। সে এসেই সোজা আমিনা বেগম মেমোরিয়াল এতিমখানায়...

দাদাভাইকে চিঠি

দাদাভাইকে চিঠি

প্রিয় দাদাভাই, শুরুতে তোকে শরতের শিউলি ফুলের নরম নরম ভালোবাসা। কেমন আছিস দাদাভাই? জানি তুই ভালো নেই, তবুও দাঁতগুলো বের করে বলবি ভালো আছি রে পাগলী! দাদাভাই তুই কেন মিথ্যা ভালো থাকার কথা লেখিস প্রতিবার চিঠিতে? তুই কি মনে করিস আমি তোর মিথ্যা হাসি বুঝি না? তুই ভুলে গেছিস,...

২ Comments

  1. Tasnim Rime

    খুব সুন্দর বিষয় নির্বাচন করেছেন লেখার জন্য। লেখাও বেশ সাবলিল। কারো উক্তি দিলে সরাসরি বক্তা/ লেখক/ কবি যা বলছে তা তুলে ধরা উচিত অাপনার লেখা কবি নজরুলের উক্তিটা নিয়ে অামার মনে একটু দ্বন্দ্ব অাছে। ‘করিয়াছে নারী- গড়িয়াছে নারী’ হবে হয়তো। এছাড়া কিছু বানান ভুল অাছে,
    চলিতেছে- চলছে
    তাদের ও – তাদেরও
    অাজ ও- অাজও
    দু’টো- দু’জন ( টি/টা/ খানা/খানি বস্তু বোঝাতে ব্যবহৃত হয় মানুষের ক্ষেত্রে জন ব্যবহার করা উত্তম)
    দূর্ঘটনা- দুর্ঘটনা

    Reply
  2. আফরোজা আক্তার ইতি

    খুব ভালো লিখেছেন। হাতের লেখা বেশ পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর। প্রবন্ধে একইসাথে অনেকগুলো বিষয় তুলে ধরেছেন। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম এট নারী সম্পর্কিত প্রবন্ধ, পরে দেখলাম এখানে সড়ক দুর্ঘটনা, ভিক্ষাবৃত্তি এসব বিষয়ও তুলে ধরেছেন। যেহেতু শুরু করেছেন নারী প্রসঙ্গ দিয়ে, শেষ করেছেন নারী প্রসঙ্গ দিয়ে আমার মনে হয় এতে অন্য বিষয়গুলো টেনে না আনলেই ভালো হতো।
    খুবই সুন্দর লিখেছেন। আপনার ছুড়ে দেয়া প্রশ্নগুলো সত্যিই পাঠককে ভাবিয়ে তোলার মতো। তবে শুধু আমাদের ভাবলেই চলবে না, পদক্ষেপ নিতে হবে।
    বানানে কয়েকটা ভুল আছে।
    চলিতেছে- চলছে।
    কারনেই- কারণেই।
    ঘৃনার- ঘৃণার।
    দূর্ঘটনা- দুর্ঘটনা।
    শুভ কামনা।

    Reply

Leave a Reply to আফরোজা আক্তার ইতি Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *