আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত; তাই আগামী দিনে যারা চালকের আসনে বসবে তাদের ছোট থেকে দীক্ষাদান করতে হবে। কেননা, ভিত্তি যদি নড়বড়ে হয় তাহলে এর পরিণাম ভালো হয় না। আর আল্লাহ মনোনীত দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ ধর্ম হলো ইসলাম, আর এর পূর্ণাঙ্গ বিধান হলো পবিত্র কোরআন। সর্বশ্রেষ্ঠ এই কিতাব মহানবী (স.)-এর উপর নাযিল হয়। পরকালে জান্নাত পেতে হলে আমাদের অবশ্যই মহান আল্লাহ’র আদেশ-নিষেধ এবং নবীর তরিকা অনুযায়ী চলতে হবে।
তোমাদের জন্য আল্লাহ’র রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে(সূরা: আহযাব-আয়াত ২১)
পৃথিবীর সেরা মানুষ নবীজী। সবার জন্য তিনি অনুপম আদর্শ। শিশুরা হলো আল্লাহর প্রদত্ত আমাদের জন্য নেয়ামত ও বরকত স্বরুপ। রসূল (স.) বলেছেন “শিশুরা হলো জান্নাতের প্রজাপতি”। অন্য হাদীসে আছে নবী করিম (স.) বলেন “শিশুরা আল্লাহর ফুল” (তিরমিযী)। এই ফুল একদিন প্রস্ফুটিত হয়ে সমাজকে মুখরিত ও আলোকিত করবে। আর এ জন্য কিশোর বয়স থেকেই সন্তানের দিকে বিশেষ খেয়াল করা দরকার। আপনার সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক তার দিকে আপনার সমান দৃষ্টি দিতে হবে। আপনার সন্তান কখন, কোথায় এবং কাদের সাথে সময় কাটায় সে দিকে আপনার বিশেষ খেয়াল দেওয়া দরকার। শিশুকাল থেকেই সন্তানদেরকে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন “সন্তানকে আদব কায়দা শিক্ষা দেয়া সম্পদ দান করা অপেক্ষা উত্তম” (বায়হাকি)। রসূল (স.) আরও বলেন “তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে উত্তম করে গড়ে তোলো এবং তাদের নৈতিকতা তথা শিষ্টাচার শিক্ষা দাও” (মুসলিম)। শিশুদের প্রতি রসূল (স.) ছিলেন অত্যন্ত লেহপ্রবণ। ছোটদের প্রহার করা সম্পর্কে রসূল (স.) অত্যন্ত কঠোর হুশিয়ারি করেছেন। রসূল (স.) শুধু ছোটদের আদরই করতেন না, বরং তাদের সাথে খেলাধুলা, হাসি ঠাট্টা করতেন এবং তাদের সালাম ও দিতেন। তাঁর জীবন-দর্শন আমাদের চেতনা, প্রেরণা ও পাথেয়। আজকের শিশু-কিশোরদের কাছেও মহানবীই (সা.) আদর্শ। শিশু-কিশোরদের জীবন-চরিত্রেও নবীজীই উপমা। নবীজীর জীবন অধ্যায়জুড়ে ছিল শিশু-কিশোরদের ভালোবাসা। শিশুদের জন্য আদর-সোহাগ। মহান রাব্বুল আল-আমিন পবিত্র কোরআনে বলেছেন: “রসূলের জীবনে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।” শিশু-কিশোরদের জন্য নবীজীর বাণী- “যারা ছোটদের আদর করে না এবং বড়দের সম্মান করে না তারা আমাদের আদর্শের অনুসারী নয়।” নবী-জীবনের গল্পে আছে, একদিন মহানবী (সা.) তাঁর নাতি হাসান (রা.)-কে আদর করে চুমু খাচ্ছিলেন। তা দেখে হজরত আকবা ইবনে হারিস নবীজীকে বললেন, ওগো নবী (সা.) আপনি কি এমনিভাবে শিশুদের আনন্দদান ও আনন্দ উপভোগ করেন? আমি তো আমার ছোটদের এত আদর করি না। নবীজী তাঁর জবাবে বললেন, তোমার অন্তর থেকে আল্লাহ যদি মমতা তুলে নিয়ে থাকেন, তার জন্য তো আমি দায়ী নই। নবীজী আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি শিশু-কিশোরদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করে না সে আমার উম্মত নয়। মুসলিম শরিফে আছে- একদিন আমাদের মহানবী (সা.) একদল শিশুর সঙ্গে আনন্দ করছেন। শিশুরাও নবীজীকে ঘিরে খুশিতে মেতে উঠেছিল। এমন সময় সেখানে এক বেদুঈন এসে উপস্থিত হয়। সে মহানবী (সা.)-কে উপলক্ষ করে বলল, শিশুদের নিয়ে এমন আমোদ-আহ্লাদ করা আমার পছন্দ নয়। এ কথা শুনে রসুল (সা.)-এর হাসি-খুশি মুখখানি মলিন হয়ে গেল। তিনি বললেন, যে ব্যক্তির হৃদয়ে মায়া নেই, আল্লাহ যেন তাকে দয়া করেন(মুসলিম)। রসুল (সা.) কখনো শিশুদের ওপর রাগ করতেন না। চোখ রাঙাতেন না। কর্কশ ভাষায় তাদের সঙ্গে কথা বলতেন না। তিনি ছোটদের আদর করে কাছে বসাতেন। তাদের সঙ্গে মজার মজার কথা বলতেন। ছোটদের দেখলে আনন্দে নবীজীর বুক ভরে যেত। তিনি তাদের বুকে জড়িয়ে ধরতেন। একদিন একটি সুন্দর শিশুকে দেখে তিনি জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, এই শিশুরাই তো আল্লাহর বাগানের ফুল। তিনি কখনো কোনো শিশুকে বিকৃত নামে ডাকতেন না। বিকৃত নামে কাউকে ডাকা কবিরা গুনাহ্। তিনি তাদের অর্থবোধক নাম রাখতেন এবং মিষ্টি সুরে সুন্দর নাম ধরে ডাকতেন। প্রিয় নবী ছোটদের যেমন আদর করতেন, তেমনি তাদের সঙ্গে রসিকতাও করতেন। একবার হযরত আনাস (রা.)-এর ছোট এক ভাইয়ের একটি পাখি মারা যায়। এতে তাঁর মন খারাপ হয়। নবীজী তখন তাকে আদর করে কাছে ডেকে নিলেন। বললেন, ইয়া আবা উমায়েরু/মা
কা-আলান নুগায়রু? অর্থাৎ হে আবু উমায়ের, তোমার পাখির ছানাটির কি হলো? তখন নবীজীর মুখে ছন্দ ও সুর শুনে হেসে ফেললেন (বুখারি ও মুসলিম)। শিশুকাল থেকে মহানবী অত্যন্ত সৎ, ভদ্র এবং নিষ্ঠাবান ছিলেন। আমাদের জীবনেও ছোট থেকেই নিজেদের ইসলামের নিবেদিত প্রাণ এবং মহান
রাব্বুল-আমিনের মন জয় করার জন্য কাজ করে যেতে হবে।
বর্তমানে জাতিসংঘসহ যারাই শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের কাছে আবেদন থাকবে মহানবী (সা.) এর শিশু-কিশোর ভাবনা নিয়ে অগ্রসর হওয়ার। আমার নবীর ভাষায়- শিশুরা জান্নাতি বাগানের ফুল। ওরা জান্নাতের ফুল। মানব বাগানেও শিশুরা ফুল। পৃথিবীর যে প্রান্তেই শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে ইসলামের দৃষ্টিতে তারা চরম অপরাধী। অন্তত আমি মনে করি, শিশুরা মানব বাগানের ফুল। তারা সবাই সমান। তাদের বংশ, দেশ ও ধর্ম পরিচয় থেকে বড় পরিচয় ওরা মানবফুল। নবীজীর ভালোবাসার প্রতীক। নতুন বছরের প্রথম প্রত্যাশা আগামীর পৃথিবী সুন্দর হোক; নিরাপদ হোক ছোটদের জন্য।
————-
written by: আরাফাত তন্ময়।
যদি পাশে থাকো
তাসফিয়া শারমিন ** আজকের সকালটা অন্য রকম। সাত সকালে আম্মু বকা দিলো। মানুষের ঘুম একটু দেরিতে ভাঙতেই পারে। তাই বলে এত রাগার কী আছে ?একেবারে যে দোষ আমারও তাও নয়। মানুষ ঘুম থেকে উঠে ফোনে বা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে। কিন্তু আমি উঠি জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের আলো দেখে।কে জানে...
মা শা আল্লাহ। এতো চমৎকার একটি প্রবন্ধ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আমাদের মহানবী (সাঃ) এর কখনই তুলনা হয় না। তিনি তাঁ্র সন্তানদের স্নেহের চোখে দেখতেন। ভুল করলেও কখনও তিনি চোখ রাঙিয়ে কারও সাথে কথা বলেন নি। বরং স্নেহের সাথের তাদের ভুল শুধরে দিতেন। এছাড়াও অন্যান্য শিশুকে তিনি নিজের সন্তানের চোখেই দেখতেন। তাঁর স্নেহের, ভালোবাসার সত্যিই কোনো তুলনা হয় না।
অনেকেই আছেন যারা বাচ্চাদের সহ্য করতে পারে না, তাদের দুষ্টুমি কলরবে বিরক্তবোধ করেন, গায়ে হাত তুলেন। দুঃখের বিষয় কিছু মানুষরূপী পিশাচ আছে যারা শিশুদের নির্যাতন করতেও ভয় করে না। তাদের প্রত্যেকের উচিৎ নবীজির আদর্শ ও চরিত্র হৃদয়ে ধারণ করা।
বানানে তেমন কোনো ভুল নজরে পড়ে নি। অনেক অনেক শুভ কামনা আপনাকে।
অনেক সুন্দর একটি প্রবন্ধ।
শিক্ষনীয় পোস্ট।
নবী করিম স: সব সময় শিশুদের আদর করতেন।
শিশুদের ভালোবাসতেন।
কখনো শিশুদের সাথে দূর্ব্যবহার করতেন না।
শিশুদেরকেও সালাম দিতেন।
শিশুরা হচ্ছে নিষ্পাপ।ফুলের মতো পবিত্র।
বাবা মার উচিৎ শিশুদেরকে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া।
রসূল–রাসূল
দীক্ষাদান—শিক্ষাদান
শুভ কামনা রইলো।
ভবিষ্যত- ভবিষ্যৎ
স্বরুপ- স্বরূপ
শুনে-শোনে
বাহ্ দারুণ লিখেছেন, সত্যিই আজকে শিশু আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। লেখাটা পড়ে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। তবে আরো কিছু দিক ফুটে তুললে আরো ভালো হতো।আমাদের নবীর সত্যিই শিশুদের প্রতি ভালোবাসা অসীম ছিল। যাইহোক অনেক অনেক শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।