বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসা
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০১৮
লেখকঃ আওয়ার ক্যানভাস

আওয়ার ক্যানভাস বই প্রেমীদের মিলন মেলা। লেখকদের লেখা পাঠকের কাছে বই আকারে পৌঁছে দেওয়া, আওয়ার ক্যানভাসের সাথে জড়িতদের সম্মানজনক জীবিকার ব্যবস্থা করার স্বপ্ন নিয়েই আমাদের পথ চলা।

 2,851 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ আওয়ার ক্যানভাস

শরিফুল ইসলাম
বন্ধুত্ব হল মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। বন্ধুত্ব শব্দের মাঝে মিশে আছে নির্ভরতা আর বিশ্বাস। বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসা এ যেন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ । দুটি সম্পর্ক একই সুতোয় গাথা । বন্ধুত্ব মানেই যেন হৃদয় এর সবটুকু আবেগ নিংড়ে, ভালবাসা দিয়ে মন খুলে কথা বলা। আত্নার শক্তিশালী বন্ধন হল বন্ধুত্ব। হয়তো শব্দ দুটি ভিন্ন , কিন্তু সম্পর্কের দায়িত্ব গুলো প্রায় একই । তারপর ও রয়েছে দুটি সম্পর্কের মাঝে ভিন্নতা এবং পার্থক্য । কিন্তু সে পার্থক্য অনেক সময় ধরা যায় না। বন্ধুকে অনেকে প্রেমের সঙ্গে বা ভালবাসার সাথে গুলিয়ে ফেলেন। বন্ধুত্ব ও ভালবাসা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, একটা কথা আছে— প্রেম মন্দির ও বন্ধুত্ব বাসস্থান। মন্দির হইতে যখন দেবতা চলিয়া যায় তখন সে আর বাসস্থানের কাজে লাগিতে পারে না, কিন্তু বাসস্থানে দেবতা প্রতিষ্ঠা করা যায়।
কার কাছে কোন সম্পর্ক টি বেস্ট তা আমি জানিনা । তবে আমার কাছে বন্ধুত্ব ই বেস্ট মনে হয় । কারন, বন্ধুত্ব মচকায় কিন্তু সহজে ভাংগেনা । কিন্তু ভালোবাসা!
তা মচকায় কম , বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই ভেঙ্গে যায় । তাহলে চলুন দেখে নেই দুটি সম্পর্কের সংজ্ঞা –
বন্ধুত্বঃ বন্ধুত্ব হলো সেই সম্পর্ক যেই সম্পর্কে নেই কোন নিয়ম নীতি ।করা লাগেনা কথা বলার সময় ভাবনা, চিন্তা । আপনার যখন যা ইচ্ছা তাই বন্ধুকে বলতে পারবেন । আপনার মনের সবগুলো কথা ভেঙ্গে ভেঙ্গে বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে পারবেন আপনার লাইফের গোপন যত কথাই থাকুক , সব শেয়ার করতে পারবেন আপনার বন্ধুর সাথে ।
তাই তো নিটসে বলেছে,
“বিশ্বস্ত বন্ধু হচ্ছে প্রাণরাকারী ছায়ার মতো। যে তা খুঁজে পেলো, সে একটি গুপ্তধন পেলো।”
বন্ধু বুঝবে আপনার মনের আনন্দ বা দুঃখ । কখনো সিরিয়াস কোন কথা নিয়েও মজা করবে আবার মজা করা শেষে দিবে আপনাকে শান্তনা ।
তাইতো বন্ধুত্বের জন্য গেয়ে ওঠা যায়,
হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে,
দেখা হবে তোমার-আমার অন্য দিনের ভোঁরে।
বন্ধুত্ব করা যায় সবার সাথেই, যেখানে থাকেনা কোন বয়সভেদ বা লিঙ ভেদাভেদ । আপনার যাকে ভালো লাগে তার সাথেই বন্ধুত্ব করতে পারবেন । আপনি যেকোন সমস্যার সমাধান পাবেন আপনার বন্ধুটির কাছে । আপনার জীবনে যদি কয়েকজন বন্ধু থাকে তাহলেই আপনি অনেক সুখী । তাই তো কবিগুরু বলেছেন,
“বন্ধুত্ব বলিতে তিনটি পদার্থ বুঝায়।দুই জন ব্যক্তি ও একটি জগৎ। অর্থাৎ দুই জনে সহযোগী হইয়া জগতের কাজ সম্পন্ন করা।
আর, প্রেম বলিলে দুই জন ব্যক্তি মাত্র বুঝায়,আর জগৎ নাই। দুই জনেই দুই জনের জগৎ। অতএব বন্ধুত্ব অর্থে দুই এবং তিন,
প্রেম অর্থে এক এবং দুই।
কারন , এই বন্ধুগুলোর জন্য আপনার মনটা কখনো খারাপ হওয়ার সুযোগ পায়না । সবসময় আড্ডা আর বিনোদন এর মাঝেই জীবন টা কেটে যায় । আপনি ইচ্ছে করলেই অনেকের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারবেন। সময়ের প্রয়োজনে বা ভাগ্যের খেলায় বন্ধু দূরে সরে যেতে পারে কিন্তু ম্নের দূরত্ব কখনোই তৈরি হয় না। স্কুল শুরুর দিনে যে ছেলেটি বা মেয়েটি আপনার পাঁশে বসেছিল তাঁকে কি ভোলা যায় সহজে?
তাই তো জীবনানন্দ দাশ বলেছিলেন,
” যদি থাকে বন্ধুর মন গাং পাড় হইতে কতক্ষন।”
ভালোবাসাঃ যা নির্ভর করে আত্নবিশ্বাসের উপর। ভালোবাসা বা প্রেম হলো সেই সম্পর্ক যেই সম্পর্কে থাকে অনেক নিয়ম নীতি । কথা বলার সময় অনেক ভেবে-চিন্তে কথা বলতে হয় । কথা বলার আগেই ভাবতে হয় এটা বললে আবার ও রাগ করবে না তো ! আপনার যখন যা ইচ্ছা তা শেয়ার করতে পারবেন না । কারন, সেই মানুষটি আপনার সব কথা সাধারণ ভাবে নাও নিতে পারে । মাঝে মাঝে দেখা যাবে আপনার অতি সাধারণ কথায় সেই মানুষটি রাগ করে ফেলতে পারে । আপনি হয়তো মাঝে মাঝে তার কাছ থেকে শান্তনা পেতে পারেন । তবে অনেক সময় ঝাড়ি ও খাওয়া লাগতে পারে । এই সম্পর্ক টা হয় সাধারনত , দুটি ছেলে-মেয়ের মাঝে । দুজনের থাকে বয়সের পার্থক্য । বা অনেক সময় সমবয়সী কারো সাথেও হতে পারে । সম্পর্কটা গড়ে ওঠার পর থেকেই আপনার মনে বাসা বাঁধতে পারে তাকে হারানোর ভয় । এই সম্পর্ক টি একই সাথে অনেকের সাথে করা যায়না (যারা করে তারা প্রকৃতভাবে ভালোবাসেনা কাউকেই) । সেই মানুষটির কারনে অনেক সময় আপনার মন ভালো থাকতে পারে আবার অনেক সময় মন খুবই খারাপ থাকতে পারে ।(যার কারনে আত্মহত্যার মত মহাপাপ করতেও দ্বিধাবোধ হয়না) । ভালবাসা কি? তা এক কথায় বলা জীবন সাথী আর বন্ধুত্ব মানে কাছের একজন মানুষ। যার সাথে দুঃখ এমনকি ভালবসার মানুষের সাথে মনমালিন্য হলে সেই কথাও বন্ধুর সাথে অনায়াসে সেয়ার করা যায় যা অন্য কারো সাথে করা যায় না। মানুষের জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটে, এমন কিছু কথা আছে যা কাউকে বলা যায় না এমনকি জীবন সাথীকেও না কিন্তু বন্ধুর সাথে তা ঠিক ই সেয়ার করা যায়। তাই আমার কাছে সব মিলিয়ে বন্ধুত্ব সম্পর্কটা ই বেস্ট মনে হয় ।
বিঃদ্রঃ উপরোক্ত কথা গুলো শুধুই আমার চিন্তা-ধাঁরা থেকে লিখা । অনেকের ই ভিন্ন ধারনা থাকতে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট

যদি পাশে থাকো

যদি পাশে থাকো

তাসফিয়া শারমিন ** আজকের সকালটা অন্য রকম। সাত সকালে আম্মু বকা দিলো। মানুষের ঘুম একটু দেরিতে ভাঙতেই পারে। তাই বলে এত রাগার কী আছে ?একেবারে যে দোষ আমারও তাও নয়। মানুষ ঘুম থেকে উঠে ফোনে বা দেওয়াল ঘড়িতে সময় দেখে। কিন্তু আমি উঠি জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের আলো দেখে।কে জানে...

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন

অনন্যা অনু 'আমিনা বেগম' মেমোরিয়াল এতিমখানার গেট খুলে ভেতরে ঢুকতেই ওমরের বুকটা ধুক ধুক করতে শুরু করে। ওমর ধীর গতিতে ভেতরে প্রবেশ করে। চারদিকে তখন সবেমাত্র ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। ওমর গত রাতের ফ্লাইটে আমেরিকা থেকে এসেছে। সে এসেই সোজা আমিনা বেগম মেমোরিয়াল এতিমখানায়...

দাদাভাইকে চিঠি

দাদাভাইকে চিঠি

প্রিয় দাদাভাই, শুরুতে তোকে শরতের শিউলি ফুলের নরম নরম ভালোবাসা। কেমন আছিস দাদাভাই? জানি তুই ভালো নেই, তবুও দাঁতগুলো বের করে বলবি ভালো আছি রে পাগলী! দাদাভাই তুই কেন মিথ্যা ভালো থাকার কথা লেখিস প্রতিবার চিঠিতে? তুই কি মনে করিস আমি তোর মিথ্যা হাসি বুঝি না? তুই ভুলে গেছিস,...

১২ Comments

  1. আফরোজা আক্তার ইতি

    খুবই সুন্দর লিখেছেন। পড়ে অনেক ভালো লাগল। একমাত্র বন্ধুত্বের সম্পর্কই সকল সম্পর্কের মধ্যে বিরাজমান করতে পারে, বাবা মা-সন্তান, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন সকল সম্পর্কের মাঝেই লুকিয়ে থাকে বন্ধুত্ব নামের আরো একটি সম্পর্ক। তাই সবদিক থেকেই বন্ধুত্ব সম্পর্কের মর্যাদাই আলাদা।
    বানানে সামান্য কিছু ভুল আছে।
    গাথা- গাঁথা।
    আত্নার- আত্মার।
    লিঙ- লিঙ্গ।
    কারন- কারণ।
    স্নের দূরত্ব- স্নেহের দূরত্ব।
    পাঁশে- পাশে।
    ধাঁরা- ধারা।
    ধারনা- ধারণা।
    শুভ কামনা।

    Reply
    • Shoriful Islam

      শুকরিয়া আপু, জাযাকিল্লাহ।
      অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

      Reply
  2. মাহফুজা সালওয়া

    সুন্দর চিন্তাভাবনা আপনার।
    খুব যত্ন করে তুলে ধরেছেন প্রবন্ধে।
    কিন্তু বেশ কিছু বানান ভূল আছে, শোধরে নেবেন।
    আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, আলাদা আলাদাভাবে সম্পর্কগুলো পবিত্র।
    কিন্তু, এই উভয়সম্পর্কই একে অপরের উপর নির্ভর করে।
    আর ভালবাসা বলতে আপনি যে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার ভালবাসাই বুঝিয়েছেন, বিষয়টা কিন্তু একদম ভূল। ভালবাসা হতে পারে বাবা-মেয়ের, মা-ছেলের, হতে পারে ভাই-বোনের মাঝে!
    এমনকি ভালবাসা ছাড়া বন্ধুত্ব ও কল্পনা করা যায়না। আর স্বাভাবিকভাবেই একটা মানুষ যখন আরেকটা মানুষের সাথে ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায়, তখন আপনাতেই তাঁদের মাঝে বন্ধুত্ব হয়ে আসে!
    যাইহোক, এটা শুধুমাত্র একটা মন্তব্য ছিলো। আপনার জন্য শুভকামনা।

    Reply
    • Shoriful Islam

      ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য, জাযাকিল্লাহ। কিন্তু আপু আমি এখানে শুধু তরুণ-তরুণীদের বন্ধুত্ব এবং ভালবাসা নিয়ে লিখেছি, আবারো ধন্যবাদ।

      Reply
  3. Tasnim Rime

    নিজের মতো করে সংগা দেবার চেষ্টা করলেও মোটামোটি ভালো ছিল লেখাটা। তবে ভালোবাস সৃষ্টির প্রথম শর্ত বন্ধুত্ব। কেননা বন্ধু ভাবাপন্ন না হলে ভালোবাসা জন্ম নেয় না। বানান গুলো দেখে নিবেন।
    গাথা- গাঁথা
    অাত্নার- অাত্মার
    তারপর ও- তারপরও
    ভাংগেনা- ভাঙেনা
    বন্ধুত্বঃ – বন্ধুত্ব : (বিসর্গ এর পরিবর্তে কোলন হবে)
    প্রাণরাকারী (এমন কোন শব্দ অাছে কিনা জানা নাই) – প্রেরণাকারী (হবে হয়তো)
    ভোঁরে- ভোরে
    ভালোবাসাঃ – ভালোবাসা :
    লিঙ- লিঙ্গ
    ম্নের- মনের
    পাঁশে- পাশে
    সেয়ার- শেয়ার (ইংরেজি শব্দ পরিহার করার চেষ্টা করবেন এতে লেখার প্রাঞ্জলতা হারায়)
    ধাঁরা- ধারা

    Reply
    • Shoriful Islam

      ধন্যবাদ, জাযাকিল্লাহ।

      Reply
  4. AKRAMUL islam

    খুব সুন্দর লিখেছেন। অনেক ভালো লাগলো প্রতিযোগিতার জন্য এই প্রবন্ধটা প্রথম হবে ইনশাল্লা……

    Reply
    • Shoriful Islam

      শুকরিয়া ভাই

      Reply
  5. Shoriful Islam

    সংজ্ঞা বানান টা এভাবে হবে আপু।

    Reply
  6. Rifat

    ‘ভালবাসা কি? তা এক কথায় বলা জীবন সাথী আর বন্ধুত্ব মানে কাছের একজন মানুষ’
    অসাধারণ লিখেছেন। আজকাল এধরনের ভালোবাসার খুবই অভাব।
    কিছু বানান ভুল ছিল। সেসব আগে কমেন্টেই দেখিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই আমি আর ধরিয়ে দিলাম না। এ ব্যাপারে সতর্ক হবেন।
    শুভ কামনা।

    Reply
  7. Naeemul Islam Gulzar

    অনেক ভালো লাগলো লেখাটা।খুবই সুন্দরভাবে লেখক বন্ধুত্বের সংজ্ঞা দিয়েছেন।শুভকামনা

    Reply
  8. shahrulislamsayem@gmail.com

    আসলে বন্ধুত্বের বেশ উপকারি কিছু ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে, সেই হিসেবে অত্যন্ত চমৎকার প্রবন্ধ তবে বানানের ক্ষেত্রে যত্নশীল হওয়া উচিৎ ছিল

    Reply

Leave a Reply to Rifat Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *