লিখা: সুস্মিতা শশী
“গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই নহে কিছু মহীয়ান।”
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। অন্যান্য সকল প্রাণীর চেয়ে মানুষের মর্যাদা অনেক উপরে। কিন্তু এই মানুষে মানুষে দেখা যায় কত ভেদাভেদ কত বৈষম্য। নারী পুরুষের বৈষম্য, সাদা কালোর বৈষম্য, ধনী গরীবের বৈষম্য সহ আরো নানা বৈষম্য।
প্রথমে আসি নারী পুরুষের বৈষম্যে।
বর্তমানে নারী অধিকার নিয়ে এত প্রচারণা চললেও দেখা যায় নারীরা সর্বক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। একটি পরিবারে সমবয়সী ছেলে ও মেয়ে থাকলে খাদ্য, বস্ত্র শিক্ষাসহ নানা বিষয়ে মেয়ের চেয়ে ছেলেকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। অথচ দুজনের চাহিদা সমান। কর্মক্ষেত্রে দেখা যায়, যে কাজ করে পুরুষেরা তিনগুণ টাকা পায় নারীরা পায় তার এক গুণ। প্রতিবাদ করার সাহসটাও নারীদের নেই, সব মুখ বুজে সহ্য করে নিতে হয়। কারণ সমাজব্যবস্থাটাই যে এমন।
মেয়েটা কালো বলে ওর কোনো বন্ধু নেই। ছেলে পক্ষ বারবার দেখে যায় কিন্তু বিয়ে হয়না। ছেলেটাকেও অনেক হেয় হতে হয়েছে তার চেহারার কারণে। এগুলো বর্তমানে অহরহ ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছু খন্ড চিত্র।
১৯৫৫ সাল থেকে নেলসন ম্যান্ডেলা লোকজনকে বর্ণবাদী আইনের বিরুদ্ধে উজ্জীবিত করে থাকলেও তার ৭০ বছর পরও কিন্তু এই বর্ণ বৈষম্য রয়েই গেছে। কারো গায়ের চামড়া সাদা মানেই সে সুন্দর। কালো চেহারার লোকজনকে তো অনেক জায়গায় অশুভ হিসেবে দেখা হয়। শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই পিছিয়ে রয়েছে কালো চামড়ার মানুষ। অথচ কালো চামড়ার এরাও যে রক্তে মাংশে গড়া, সাদা চামড়ার ওরাও সেই রক্ত মাংশেই গড়া। তাইতো কবি বলেছেন “কালো আর ধলো বাহিরে কেবল, ভিতরে সবাই সমান রাঙা।”
“আপনার সন্তানকে যে এ স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে এসেছেন আপনি কি জানেন না এখানে সব ধনী মানুষের ছেলেমেয়েরা পড়ে।” এরকম কথায় একজন গরীব বা মধ্যবিত্ত বাবার তার সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়ানোর স্বপ্ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। যার পয়সা আছে তাকে দেখলেই কত শদ্ধা প্রকাশ পায় সালামের উপর সালাম দিয়ে যাই পারলে যেন মাথায় তুলে নাচি, অথচ বৃদ্ধ রিকশাওয়ালা কে তুই তুকারি করতে এমনকি গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা বোধ করিনা। কারণ রিকশাওয়ালার পকেটে টাকা নেই।
ভালো জামা জুতা নেই বলে বন্ধুদের কাছে অপমানিত হয়ে বাসায় ফিরে গরীব ছেলেটা। টাকাওয়ালা কোনো আত্মীয় বেড়াতে আসলে তাকে কি থেকে কি দিয়ে আপ্যায়ন করবেন খুঁজে পাননা অথচ গরীব আত্নীয় আসলে এমন ব্যবহার করেন যেন আপনাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। আমাদের জন্যই হয়তো এই প্রবাদ বাক্যটা এসেছে “তেলা মাথায় ঢালো তেল, রুক্ষ মাথায় ভাঙো বেল।”
আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন আমাদের স্কুলে ঝুমা নামে একটা মেয়ে পড়তো। ওর সাথে কেউ মিশতো না কারণ ওর বাবা ছিলো মেথর। সুমন নামে আরেকটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলে ছিলো ওকে নিয়ে সবাই তামাশা করতো। এরকম অনেক উদাহরণ দেখা যাবে দেশের প্রতিটা স্থানে।
আচ্ছা মেথরের মেয়ে বলে কি ঝুমা মানুষ নয়? বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বলেই কি সুমনের দুঃখ কষ্ট নেই? ওরাও তো মানুষ, ওদেরও তো মন আছে, আবেগ, অনুভুতি আছে। তবে কেন আমরা এমন করি।
সামাজিক বৈষম্য আজ এতো টাই প্রকট যে আমাদের সকল উন্নতির পথ শুধু রোধই করছে না, সকল উন্নতিকেও ম্লান করে দিচ্ছে। এইসব বৈষম্যের কারণে আজ আমাদের নিজেদের সামাজিক জীব, মানুষ বলতে কষ্ট হয়। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। লিঙ্গ, বর্ণ, ধর্ম, আকৃতি ও অবস্থান নির্বিশেষে মানুষের প্রথম পরিচয় – সে মানুষ।
পুরুষ যতটা অধিকার ও সুবিধা লাভের দাবিদার নারীও ততটা অধিকার ও সুবিধা লাভ করবে। ধনীরা যতটা মানুষ গরীবেরাও ততটাই মানুষ।
প্রতিটি মানুষ স্বাধীনভাবে তার অধিকার চর্চা করার সুযোগ পাবে এটাই আমাদের কাম্য।
আমার লেখা প্রথম প্রবন্ধ এটা। পড়ে সবাই মতামত জানান।
একটা পরিচ্ছন্ন লেখা পড়লাম। মন ভালো করে দেওয়ার মতো বিষয়। বানান ভুল নাই বললেই চলে।
তবে অল্প কিছৃ ত্রুটি অাছে,
মাংশ – মাংস
শদ্ধা -শ্রদ্ধা
অনুভুতি – অনুভূতি
শুভ কামনা অাপনার জন্য
ককথায় দারুণ একটা প্রবন্ধ পড়লাম। যেখানে লেখকের অন্যায়ের প্রতি প্রতিবাদ ও আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠেছে। সামাজিক এই সমস্যাটি খুব সুন্দরভাবে তার লেখায় তুলে ধরেছেন। বৈষম্যের এই সমস্যাটি এখন শুধু সমাজেরই নয়, পারিবারিকভাবে এমনকি ব্যক্তিগত ভাবেও যন্ত্রণার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে আমাদেরই,প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমেই সমাজের এ ব্যধি সারানো সম্ভব।
বানানে কিছু ভুল আছে। তা সংশোধন করে দিচ্ছি।
দুজনের- দু’জনের।
বুজে- বুঁজে।
মাংশে- মাংসে।
শদ্ধা- শ্রদ্ধা।
পাননা- পান না।
আত্নীয়- আত্মীয়।
অনুভুতি- অনুভূতি।
শুভ কামনা রইল।
এককথায় দারুণ একটা প্রবন্ধ পড়লাম। যেখানে লেখকের অন্যায়ের প্রতি প্রতিবাদ ও আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠেছে। সামাজিক এই সমস্যাটি খুব সুন্দরভাবে তার লেখায় তুলে ধরেছেন। বৈষম্যের এই সমস্যাটি এখন শুধু সমাজেরই নয়, পারিবারিকভাবে এমনকি ব্যক্তিগত ভাবেও যন্ত্রণার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে আমাদেরই,প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমেই সমাজের এ ব্যধি সারানো সম্ভব।
বানানে কিছু ভুল আছে। তা সংশোধন করে দিচ্ছি।
দুজনের- দু’জনের।
বুজে- বুঁজে।
মাংশে- মাংসে।
শদ্ধা- শ্রদ্ধা।
পাননা- পান না।
আত্নীয়- আত্মীয়।
অনুভুতি- অনুভূতি।
শুভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য
“গাহি সাম্যের গান
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই নহে কিছু মহীয়ান।”
এই উক্তিটি যে ব্যবহার করেছেন এটা কি আপনি নিজে বলেছেন। নাকি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম?
অন্য কারও উক্তি ব্যবহার করলে অবশ্যই উক্তির নিচে সেই উক্তিদাতার নাম দিতে হবে।
আসলেই মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন বিষয়টি।
কিছু টাইপিং মিস্টেক ও বানান ভুল আছে। আশা করি পরেরবার আরও সতর্ক হয়ে লিখবেন।
শুভ কামনা।
দারুন একটা প্রবন্ধ পড়লাম।সত্যিই ভীষন ভাল লাগল। বৈষম্য-ভেদাভেদ বলতে কিছু যে নেই সেটা আমাদের আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।শুভকামনা????