গল্প লেখকঃ
সাজাদ আহমদ
(মার্চ – ২০১৮)
…………
বাবা মায়ের একমাত্র আদরের ছেলে সোহেল। সোহেলকে তার বাবা মা অনেক ভালোবাসতেন। ছোটবেলায় মা মারা যান। ছেলের দেখাশুনার জন্য বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। সোহেলের সৎমা তাকে তেমন ভালোবাসতেন না, আদর যত্ন করতেন না। তার বাবার অনেক সহায় সম্পত্তি ছিলো। সোহেল এখন কলেজে পড়ে। তার
এখন অনেক বন্ধুবান্ধব। সে বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লো। সে তার জীবন নিয়ে ভাবা শুরু করলো, ব্যবসা করতে চাইলো কিন্তু বাবা তাকে কোনো টাকাপয়সা দিলেন না। পরবর্তীতে সে বিদেশ যাবার সিদ্ধান্ত নিলো কিন্তু তাতেও বাবা সাড়া দিলেন না। সে প্রায় সময় বাবার কাছে টাকা চাইতো কিন্তু বাবা তাকে অযথা টাকাপয়সা দিতেন না। তিনি সব সময় চাইতেন তার ছেলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একদিন বড় অফিসার হবে।
ধীরে ধীরে তার বাবার প্রতি তার ঘৃণা জন্ম নেয়। একদিন সে তার পরিবারের সমস্ত বিষয় একটা বন্ধুর কাছে সেয়ার করে। ঐ বন্ধুটি ছিলো খারাপ টাইপের, সে একটা সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলো।
সে আবার মাঝে মাঝে সোহেলের বাসায় আসতো। সোহেলের বাবা তাকে ভালোকরে চিনতেন। তাই সোহেলকে ওর সাথে চলাফেরা করতেও নিষেধ করতেন। অবশেষে ঐ বন্ধুটি সোহেলকে বললো যে, “দেখ সোহেল তোর বাবা তোকে ভালোবাসেন না তাই তোর কোনো কথা উনি রাখেন না। দেখবি তোর বাবা মারা যাবার পূর্বে উনার সমস্ত সম্পত্তি তোর সৎমার নামে লিখে দিয়ে যাবেন। তাই এখন তোর একটাই রাস্তা আছে যদি তুই তোর বাবাকে হত্যা করতে পারিস তাহলে উনার সমস্ত সম্পত্তির মালিক তুই হতে পারবি”।
সোহেল তার বন্ধুর কথায় রাজি হয়ে গেলো এবং হঠাৎ একদিন তার বাবাকে খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দিয়ে হত্যা করে ফেললো। প্রতিবেশীরা জানতে পারে উনি হার্ট এটাকে মারা যান।
কিছুদিন পর সে তার সম্পত্তির দলিল খুঁজতে লাগলো। হঠাৎ আলমারিতে রাখা দলিল পেলো।
দলিলে স্পষ্টভাবে লিখা দেখলো যে, বাবা উনার সমস্ত সম্পত্তি তার নামেই লিখে রেখেছেন। কারণ তিনি জানতেন তিনির মৃত্যুর পর সমস্ত সম্পত্তির একটা অংশও সৎমা সোহেলকে দিবে না। দলিল হাতে নিয়েই সোহেল কান্না শুরু করলো আর চিৎকার করে বলতে লাগলো, “বাবা আমি তোমাকে ভুল বোঝে হত্যা করে ফেলেছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও”।
চিৎকার শুনে তার সৎমা সবকিছু বোঝে ফেলেন এবং থানায় ফোন করে পুলিশ ডাকেন, পুলিশ এসে তাকে ধরে থানায় নিয়ে যায় এবং বাবার খুনের অপরাধে তাকে যাবতজীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। অবশেষে না সম্পত্তি পেলো না বাবাকে পেলো উভয়টাই হারালো, নিজের জীবনটাও শেষ হয়ে গেলো।
০ Comments