লেখিকাঃ নুশরাত রুমু
মোবাইলের রিংটোনের শব্দে ধড়মড় করে উঠে বসল তৌসিফ। বনির ফোন এল। হাই তোলা চেপে গিয়ে কোনমতে বলল- হ্যালো দোস্ত। ওপাশের কথাটা শোনার আগেই কালবৈশাখীর মতো মা এসে বকা শুরু করলো। আমি এতক্ষণ ধরে ডাকছি তুই জাগলিনা। কি এক ঝুনঝুনি রাখিস সাথে, সেটার বাজনায় উঠে গেলি। কী জীবন শুরু হলো। কাগজের বই রেখে যন্ত্রের মধ্যে বই বের হয়েছে “ফেসবুক “!! পড়ালেখা লাটে তুলে ঐ পড়ে পড়ে তেনারা সারারাত হয়রান; সকালে ঘুম ভাঙতে কী কষ্ট —–। আকীকা করে হুজুর দিয়ে নাম রেখেছি তৌসিফ আলম। সেটা জবাই দিয়ে ফেসবুকে আইডি বানালি –” টর্নেডো আলম” কি কপাল আমার!! বকার ফাঁকে তৌসিফ বাথরুমে ঢুকলো। কত চিন্তা মাথায় এখন। আগামী কাল পহেলা বৈশাখ। কত প্ল্যান করেছে বন্ধুরা। মুখে একগাল দাড়ি হয়ে গেছে, জুলফিটা সেট করে সেলফি তুলতে হবে। বনিকে বৈশাখী পাঞ্জাবী কেনার কথা বলেছিল, বোধহয় সেটা জানাতেই ফোন করেছিল। মায়ের বকার ভাইরাসে সাউন্ড সিস্টেম এরর হয়ে গেল। মা এখনো বলে চলেছেন। জানালা দিয়ে পাশের বাড়ির জেঠিমাকে দেখে কথায় আরো বলক উঠেছে। —আরে ভাবী শুনুন না আমরাও পড়াশুনা করেছিলাম,বৈশাখ পালন করেছি। আহা টাটকা ইলিশের কী স্বাদ!! তোদের মত মোবাইলে ইলিশের ছবি দেখে মন ভরাইনিরে বেকুবের দল। জেঠিমা মাথা নেড়ে সায় দিলেন। তারপর চাপাস্বরে গুপ্ত খবরটা দিলেন, জানেন ভাবী উত্তরের প্ল্যাটের ভাড়াটিয়ার মেয়েটা নিচতলার ভাবীর কাছ থেকে শাড়ি ধার নিয়েছিল। একটু আগে ছাদে ছবি তুলছিল, আমার মেয়েকে দেখে বলল — আমার বৈশাখী শাড়ি। ফেসবুকে ছবি আপলোপ দেব —- মায়ের গল্পের সুযোগে দ্রুত রেডি হয়ে তৌসিফ বেরিয়ে গেল। বাকিটা শোনা হলোনা……।
০ Comments