গল্প লেখকঃ
সুর্বনা ইসলাম
(মার্চ – ২০১৮)
……………
তিবু একটা বিদঘুটে সাইন্স ফিকশন পরছিল। সে বিজ্ঞান বোঝে না। না বোঝলেও তার সেটা নিয়ে কোন মাথা ব্যাথাও নেই। কারন তার কাছে মনে হয় বই পড়ার জন্য সেটা নিয়ে আগ্রহ থাকলেই সেটা পড়া যায়। তাতে কিছু জিনিস না বুঝলেও কোন ক্ষতি নেই। তিবু এভাবে অনেক কিছু না বুঝেই বিদঘুটে বই টা পড়ে শেষ করল। কেন জানি না যেকোন বই পড়ার পরই তার অনেক ঘুম পায়।
সে বালিশের ওপর হেলান দিয়ে ঝিমুতে থাকল। যেই না সে তার চোখ দুটো বন্ধ করল অমনি চোখের উপর ঠান্ডা কিছু একটা অনুভব করলো। পরে সেটা আস্তে আস্তে তরল কিছু বেয়ে পরার মত অনুভব করলো। অনেক বেশি ভয় পেয়ে গেল সে। একটা চিৎকার দিতে চাইল কিন্তু ভয়ে তার মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হলো না।কিছুক্ষন পর ঠান্ডা মত জিনিসটা মরিচের মত জলতে শুরু করলো। সে এবার সত্যিই একটা চিৎকার দিয়ে উঠল।
তার চিৎকার শুনে মা দৌড়ে এলো। মা দেখল তিহানের হাতে অনেক গুলো বরফের টুকরা। আরেক দিকে তিবু চোখ ধরে বসে আছে।
তিহান তিবুর ছোট ভাই কিন্তু মারাত্মক রকমের ভয়ানক। যেকোন সময়ে যেকোন কিছু ঘটিয়ে ফেলতে পারে সে।
তিবুর মা’র আর কিছু বুঝতে বাকি রইল না। যে তিহান তিবুর চোখে বরফ দিয়ে কিছু একটা করেছে।
আর দেরি না করে সে তিবুকে বাথরুমে নিয়ে গেল, ওর চোখ ধুয়ে দিল।
তিবুর চোখ খানিকটা ঠিক হয়ার পর। মা তিহানের কান ধরে অন্য রুমে নিয়ে গেলো। মা অনেকটা দানবের মত মুখ করে তিহানের দিকে তাকিয়ে রইলো। কিন্তু তিহানকে দেখে মনে হলো তার চেয়ে ভাল এই দুনিয়ায় আর কেউ নেই। সে স্বাভাবিকভাবে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। তাকে দেখে বুঝার উপায় নেই যে কিছুক্ষন আগে সে কিছু একটা সাংঘাতিক কাজ করেছে।
তিহান সরলতার সাথে তার মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। তিহান কিছু একটা করতে যাচ্ছিলো এই সময়ে তার মা বলে উঠলো।
-তিহান!!!
তিহান চুপ করে রইল। মা আবার বললো।
-তুমি কেনো এটা করেছ?
তিহান বলল,
– তোমার ছেলে পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। আমি ভাবলাম সামনে ওর পরিক্ষা। ও যাতে ভালো মত রাত জেগে পড়তে পার, ওর যাতে ঘুম না আসে তাই। তুমি যদি চাও তাহলে পরেরও বার আমি বরফের সাথে মরিচ দিয়ে ওর চোখে ডলে দিতে পারি। এতে ওর কখনোই ঘুম আসবে বলে মনে হয় না। তিহান এটা বলে দাত বের করে একটা শয়তানি হাসি দিলো।(যদিও তার সামনে দুইটা দাত নেই)
মা তিহানের কথা শেষ হওয়া মাত্রই তার কান ধরে এমন জোড়ে টান দিলো মনে হলো তার কানটা ছিড়ে চলে আসবে। কিন্তু আসলো না। আর তাকে মারাত্মক ভাবে সাবধান করে দিলো। যাতে জীবনে আর কোন দিনও এই কাজ না করে। যদি করে তাহলে মা তিহানের চোখে বরফ এর সাথে শুকনা মরিচ, গুড়া মরিচ, কাচা মরিচ সব এক সাথে লাগিয়ে ডলে দেবে। সে তার মায়ের দিকে হতাশ ভাবে তাকিয়ে রইল। পরক্ষণেই মায়ের বলা উপাদানগুলো মনে গেঁথে নিয়ে আবার একটা হাসি দিলো। অত্যন্ত ভয়ংকর সেই হাসি।
০ Comments