Moniruzzaman Sarkar
নাবহান ঢাকায় এসেছে। তার নানা বড় আশা করে নাম রেখেছিলেন নাবহান। আজ ওর চাকুরির ভাইবা। কালো প্যান্ট আর ঘিয়া রঙের ফুলহাতা শার্ট ইন করে রাস্তা দিয়ে সে হেঁটে চলেছে। পায়ে সদ্য কালি করা জুতো। এই গরমে ফর্মাল ড্রেসে সে ঘেমে-নেয়ে একাকার। তার ডাক পরতে প্রায় দৌড়ে গিয়ে সাক্ষাতকার রুমে প্রবেশ করলো: সিনেমা-নাটকে সে দেখেছে ভাইবা বোর্ডের সদস্যরা হয় ভুঁড়িওয়ালা। তারা চেয়ারে হেলান দিয়ে আড় চোখে তাকিয়ে প্রার্থীকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে। কিন্তু আজ ঘটনা ঠিক তার উল্টো। তাদের সকলকেই তার পুরোদস্তুর ভদ্রলোক বলেই মনে হলো। বোর্ড: নাম কী? – জ্বি, মোঃ নাবহান। নামের পিছে আর কিছু নাই? – জ্বিনা। নাবহান অর্থ কী? -খ্যাতিমান। আপনি তো বাংলায় পড়াশুনা করেছেন। আচ্ছা বলুন তো রবীন্দ্রনাথ এর স্ত্রী প্রমিলা দেবী কত সালে মারা যান? -স্যার উনি তো নজরুলের স্ত্রী। ও, তাহলে বলুন প্রমীলা দেবী কত খ্রিস্টাব্দে মারা যান? – দুঃখিত স্যার, এটা বলতে পারছি না। (আরেক জন সদস্যের দিকে তাকিয়ে) বুঝলেন, সাদেক সাহেব এই যুগের পোলাপান তো পড়াশোনা কিছু করে টরে না। খালি মোবাইল নিয়া টেপাটেপি। অন্যজন ঘাড় নেড়ে সায় জানালেন। বলুন তো দেখি নাসার বর্তমান প্রধানের নাম কী? – দুঃখিত স্যার। তাহলে বলুন তো দেখি ব্রহ্মপুত্র নদের দৈর্ঘ্য কত? – এতক্ষণে নাবহান যা বোঝার বুঝে ফেলেছে। সে একবার প্রশ্ন করতে চাইলো সিলেকশন কী আগেই হয়ে গেছে? কিন্তু ভাইবা বোর্ডে তো এসব কথা বলা নিষেধ। রুম থেকে বেরুনোর সময় নাবহানের কানে ভেসে আসলো: আজকালকার পোলাপান কি আর পড়াশোনা করে? (অন্যজন সায় দিয়ে) ঠিকই বলেছেন। নাবহান ট্রেনে বাড়ি ফিরছে। ট্রেনের অনবরত আওয়াজ যেন তার নেশা ধরিয়ে দিয়েছে। খটখট খটখট খটখট খটখট…..
০ Comments