গল্প লেখকঃ
রেজাউল করিম
(এপ্রিল – ২০১৮)
…………..
ময়মনসিংহ জেলাসদর থেকে অদূরে অবস্থিত ফুলবাড়িয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত একটি গ্রামের একটি পরিবার মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার কল্পকাহিনী ও বাস্তবিক সংমিশ্রণ করে এই গল্পটি রচনা করলাম।
২৬-শে মার্চ ১৯৭১
ফযরের নামাজ শেষ করে তাহেরাবিবি…
-খুকি ও খুকি, আসমা…
-উঠ মা ভোর হইয়্যা আইলো। সূর্য উইট্যা যাইতাছে। উঠ এইবার চুলায় আগুন দে…
সুতি শাড়ী পড়া আসমা একটু চোখ কচলিয়ে এলোকেশ বেঁধে নিয়ে এক চিমটা ছাই দাঁতে গুঁজে মাঝতে মাঝতে পুকুরপাড়ের দিকে যেতে লাগলো আর কুলকুচা করে যখনি ঘরে ফিরছে তখনি সে দেখতে পায় দূরের গ্রামে অনেক কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে এটা দেখে আসমা কিছুক্ষণ থমকে থাকলো কিন্তু সে ব্যাপারটা আমলে না নিয়ে পরক্ষণে আবার সে রসাইঘরে চলে গেল।
খানিকক্ষণ পর তাহেরাবিবির একমাত্র ছেলে আর আসমার একমাত্র শ্যামল সুঠামদেহী ছোটভাই ১৯ বছর বয়সের ইন্টারমিডিয়েট ২য় বর্ষে পড়ুয়া যুবা হিমেল ঘর থেকে দাওয়ায় বেড়িয়ে এসে
-মা…. ও মা। বুবু ….
-কিছু খাওন দেও। বেলা হইয়া আইলো, দোকান খুলতে হইবো গিয়া।
বাবা মারা যাওয়ার পর হিমেলই তার পরিবারের কর্তা। তার ছোট্ট দোকানের আয় দিয়েই তার মা ও বুবুকে নিয়ে বাবার রেখে যাওয়া একমাত্র সম্বল ভিটেতে তারা বেশ সুখেই দিনযাপন করছে। চাচা একরাম মুন্সি থাকলেও তার সাথে হিমেলেদের সম্পর্ক একেবারেই ভালো না। দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ভালো নাই তাই হিমেলের কলেজের ক্লাস গত ১সপ্তাহ ধরে স্থগিত আছে। এতে হিমেলের অবশ্য একটা ফায়দা হচ্ছে যে, সে লম্বা সময় দোকান খোলা রাখতে পারছে আর আয়ও বেশি হচ্ছে। সর্বোপরি হিমেলই তার পরিবারের ত্রাতা।
আসমা রসাইঘর থেকে ৪টা রুটি আর এক বাটি মিষ্টিকুমড়ার ভাজি হিমেলকে দিল। হিমেল ঝটপট খেয়ে নিয়ে একটা জামা আর একখানা পুস্তক হাতে নিয়ে ..
– মা আমি দোকানে গেলাম।
-সাবধানে যাইস খোকা।
-আইচ্ছা ঠিক আছে।
হিমেল যখন কিছু দূরে গেল রাস্তার মাঝে হঠাৎ পাশের বাড়ির রহমান চাচার সাথে দেখা।
-আরে হিমেল বাপ কেমন আছো? দেশের অবস্থা কিচ্ছু জানো?
-হ চাচা ভালোই আছি।
ক্যান চাচা দেশের আবার কি হইছে?
-আরে বাজান তুমি দেখি কিচ্ছু জানো না।
রাইতে, গেল রাইতে পাক হানারা আমাগো দেশের উপ্রে হামলা করছে, মাইর্যা ফেলছে অনেক ঘুমাইন্যা মানুষরে, পুড়ায়া ফেলছে অনেক গ্যারাম, আমাগো নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাহেবেরে জেলে নিয়া গেছে কিন্তু তিনি তার আগে যুদ্ধের আহবান কইরা গেছেন।
-কি কন চাচা এতকিছু ঘইট্যা গেছে!!
-হ বাজান সাবধান হইতে হইবো। যুদ্ধে যাইতে হইবো। শুনছি আমাগো পাশের শেরপুর জেলা আর আমাগো জেলাসদরে, আশেপাশের গ্যারামগুলাতেও মিলিটারি আইসা পরছে।
আমি যাই বাজান সবেরে জড়ো করতে হইবো, যুদ্ধে যাওনের পরিকল্পনা করতে হইবো। তুমি দোকানে গিয়া রেডিওটা শুনবার পারো।
নির্বাক হিমেল দোকানের দিকে চলে যেতে লাগলো, চারপাশ যেন তার অচেনা লাগছে, কেমন যেন একটা তিক্ত অনুভূতি তার মাঝে কাজ করছে, কিছুই যেন বিশ্বাস হচ্ছেনা তার। দোকান খুলেই প্রথমে রেডিও অন করে যা শুনল তাতে আর কিছু বোঝবার বাকি রইল না তার।
ঘন্টাখানেক পরে হিমেলের কয়েকজন বন্ধু তার দোকানে এলো
-বন্ধু আমরা সকলে চিন্তা করছি যুদ্ধে যামু। তুই কি যাবি আমাগো সাথে?
-হ যামু আমিও যুদ্ধে যামু।
-আমরা এখন বটতলায় খড়ের গাদার পাশে যাইতাছি রহমান চাচা অইহানে গ্যারামের কৃষক, শ্রমিক, মুজুর, ছাত্র সবাইরে ডাকছে যুদ্ধে যাওয়ার পরামর্শ করবো সবাই মিল্লা।
-তোরা একটু দাড়া আমিও আইতাছি দোকানডা বন্ধ কইরা।
বটতলায় গিয়ে সবাইকে দেখে হিমেলের যুদ্ধে যাওয়ার আবেগ আরও বেড়ে গেল।
রহমান চাচা পরামর্শ দিলেন…
– আমরা যারা যুদ্ধে যামু তারা আইজই বিকালে সওয়ারি নৌকা দিয়া সদর মুক্তিক্যাম্পে যাওনের লাইগ্যা রওনা দিমু। তোমরা কি কউ মিয়ারা……??
-হ হ ঠিক আছে আমরা যুদ্ধে যামু।
-আরেকটা কথা মিয়ারা যারা যুদ্ধে যাবানা তারা ৩-৪ দিনের মধ্যে গ্যারামের সবেরে নিয়া পুরাতন ব্রক্ষপুত্র নদী দিয়া ভারতের মেঘালয় প্রদেশে চইল্যা যাবা আর দেশ স্বাধীনের পরে আবার ফেরত আসবা।
আর ২-৪ জন গ্যারামে লুকায়া-চাপায়া থাকবা আমাগোরে গ্যারামের সংবাদ দিবা। ঠিক আছে…….?
-হ হ ঠিক আছে।
-তাইলে মিয়ারা যার যার বাড়ি যাও যুদ্ধের জন্য তৈয়ার হইয়া সময়মত ঘাটে চইল্যা আইসো।
হিমেল যখন বাড়ির আঙিনায় পা রাখলো তখনি মা এসে হাজির
-খোকা হুনলাম লোকে কয় দেশে নাকি যুদ্ধ হইবো? মিলিটারি নাকি আক্রমণ করছে? আগুন জ্বালাইয়া দিছে? মানুষ মাইরা ফেলছে?
– হ মা তুমি ঠিকই শুনছো। ওরা আমাগো দেশ কাইরা নিবার চায়। আমাগোরে সকলেরে মাইরা ফেলতে চায়। মা আমি যুদ্ধে যামু। এই দেশ স্বাধীন করমু, স্বাধীন পতাকা তুমারে আইন্না দিমু, পাক বাহিনীরে বিতাড়িত করমু।
-কিন্তু খোকা….
-কোনো কিন্তু নাই মা। তুমি আমারে দোয়া কইরা দেও আর বুবুর দিকে খিয়াল রাইখো। গ্যারামের সকলে যখন ভারত যাইবোগা তুমি আর বুবু ও যাইয়ো। মা আর বুবুকে এইভাবে কাঁদিয়ে হিমেল যুদ্ধে যাওয়ার জন্য পূর্বেকার ঠিক করা নদীর ঘাটে চলে যায়।সবাই জড়ো হয়ে ২৬শে মার্চ সন্ধাবেলা ২৭জন সর্বশ্রেণীর মানুষ রহমান চাচার ২খানা ডিঙি নৌকা দিয়ে ময়মানসিংহ জেলাসদর মুক্তিক্যাম্প এর উদ্দেশ্যে রওনা দিল হিমেল তার রেডিওটাও সাথে নিল।
২৭-শে মার্চ তারা সবাই মুক্তিবাহিনী ক্যাম্পে পৌঁছে গেল। তারা দেখতে পেল হাজারো সাধারণ জনগণ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে একজন সেনাবাহিনী মেজর এর কাছে। এইসব দেখে হিমেলরা মনে আরো মনোবল আর সাহস এর উদয় হল।
২৭-শে মার্চ কর্নেল মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষনা করেন। বাঙালী জাতিকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান করেন। সমগ্রদেশকে ভাগ করে দেওয়া হয় ১১টি সেক্টরে ময়মনসিংহ ১১নং সেক্টর এ পড়ে আর এর কমান্ডার হন মেজর এম আবু তাহের আর ১১নং সেক্টর ভাগ হয় ৮টি সাব সেক্টর এ।প্রত্যেক সাবসেক্টরে ভাগ হয়ে যায় ফুলবাড়িয়ার ২৭জন যোদ্ধা হিমেল আর তার দুই বন্ধুর যুদ্ধস্থান নির্ধারিত হয় মূল সদরের প্রধান সেক্টরেই।
শুরু হল যুদ্ধ। তুমুল যুদ্ধ।
তিন দিন পর
৩১-শে মার্চ ১৯৯৭১ঃ
গ্রামের সবার সাথে তাহেরাবিবি আর আর তার মেয়ে আসমা যখন ভারতে আশ্রয় নিতে বাড়ী ছেড়ে যেতে চাইল ঠিক তখনি হিমেলের চাচা একরাম মুন্সি এসে হাজির…
-ভাবীজান আপ্নাগো কোথাও যাইতে অইবো না।
-কিন্তু ভাইজান মিলিটারি তো গ্যারামে আসতে শুরু করছে, এইখানে আমার মাইয়া নিয়া আমি থাকমুনা।
-আরে হুনেন তিনারা আমার পরিচিত লোক কোনো সমস্যা অইবো না আপ্নাগো।
-না চাচাজান আমরা সবার সাথে গ্যারাম চাইরা যামু।
-আরে ভাস্তি। আমি আছিনা কিচ্ছু অইবোনা কিন্তু যদি যাইবার চাও তাইলে ক্ষতি হইবার পারে।
নিরব হয়ে তাহেরা বিবি আর আসমা যাওয়া থেকে বিরত হয়ে যায়।
এখানে যেতে বাধাঁ দেওয়ার কারণ হচ্ছে একরাম মুন্সি তাদের কাছ থেকে হিমেল আর মুক্তিক্যাম্প অবস্থান জানতে চায়।
এভাবে প্রায়শই মুন্সি জিজ্ঞেস করতো হিমেল এর খোঁজ তার মা বোন জানে কিনা কিন্তু তাদের একটাই জবাব তারা কিছুই জানেনা।
১মাস ৬দিন পর
৬-এপ্রিল ১৯৭১
হিমেলরা যুদ্ধ করছে,
পাক হানাদের কলে কৌশলে একে একে শেষ করছে তাদের সহযোদ্ধারাও প্রাণ দিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় হঠাৎ এপ্রিলের ৬ তারিখে হিমেল খবর পায় তার মা আর বুবুকে তার চাচা একরাম মুন্সি ভারত যেতে দেয়নি কিন্তু এটা শুনে নিজেকে স্বান্তনা দিতে পারলো যে তারা এখনো অক্ষত আছে কিন্তু তার চাচা পাক হানাদের সাথে হাত মিলিয়েছে তাই সে কোনোমতেই নিজেকে বুঝাতে পারছেনা যে যেকোনো সময় তাদের ক্ষতি হতে পারে।।
কিন্তু এখন তার কিছুই করার নাই তাই যুদ্ধে আসার মুহূর্তটাতে মা আর বুবুর চেহারা কল্পনা করে আর আল্লাহর কাছেই সব সপে দিয়ে প্রাণপনে যুদ্ধ চালিয়ে গেল।
১মাস ১১দিন পর
১৭-ই মে ১৯৭১
বরাবরের মতো এবারো একরাম মুন্সি তাহেরাবিবির ঘরে এসে হাজির এবার তার ভিন্ন উদ্দেশ্য তার যুবতি ভাতিজিকে মিলিটারিদের কাছে তুলে দিবে বিনিময়ে সে হাজারকয়েক টাকা পাবে।
মিলিটারিরা ঘরে ঢুকল। তাহেরাবিবিকে বন্ধুকের বাট দিয়ে দিল এক ধাক্কা আর এতেই বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে রইলেন তিনি।
-লাড়কি ব্যাহাত আচ্চাহে ইস্কো ক্যাম্পমে লিকেচালও মজা আয়েগা।
টেনে হিছড়ে নিয়ে গেল আসমাকে গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে এখানেই তাদের ক্যাম্প। রাক্ষুসে ক্ষুধার্ত বাঘের মতন তাকে ভোগ করল সবে মিলে।
পাথরের মত বুক আর মারবেলের মত চোখ হয়ে যাওয়া আসমাকে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়ে দিল এক কামড়ায় তালাবন্ধ করল কামড়া।আসমা তার মতন আরও কয়েকটি মেয়েকে দেখতে পেল ঘুঁটিসুটি বসে আছে কিন্তু সবাই বাকরুদ্ধ।
হিমেলের যুদ্ধ বেশ ভালোই চলছে, মা আর বুবুকেও বেশ মনে পড়ছে। সে চিন্তা করছে কবে যে দেশ স্বাধীন করবে আর মা আর ভুভুর কাছে ফিরে যাবে।
ঐদিকে মায়ের যখন জ্ঞান ফিরলো তখন তিনি পাগলী মা। নিজের জ্ঞানে নেই ছেলে আর মেয়ের সাথে একা একা কথা বলেন আর ওদের আদর করেন এভাবেই চলছে।
৪ মাস ১দিন পর
১৮-ই অক্টোবর ১৯৭১
আসমাসহ সব মেয়েরাই অনেকদিন যাবত রাক্ষুসেদের অত্যাচার এর স্বীকার হয়ে আসছে কিন্তু আসমা সব মেয়েদেরকে মুক্ত করার জন্য অনেকদিন ধরেই সুযোগ খুঁজছে কিন্তু সে সুযোগ তার কাছে কোনোভাবেই আসছিলোনা। ১৮ অক্টোবর তারিখে যেন আসমা সেই সুযোগটা পেয়ে গেল। তার হাতের রান্না ভালো তাই মিলিটারি ক্যাম্পে প্রায়শই তাকে রান্না করতে বলতো আর এই দিনে সে লক্ষ করল ব্যান্ডেজ এর সাথে কয়েকটি কাছের ওষধি বোতল সে বিচক্ষণতার সাথে ঐ ওষধি খাবারে মিশিয়ে দিল আর তার ঠিক ১ঘন্টা পরেই সে লক্ষ করল একে একে সব মিলিটারি সদস্য শেষ হতে শুরু করল। সাথে সাথে বাহিরে অবস্থান করা মিলিটারিরা আসার আগেই আসমা সব মেয়েকে ছাড়িয়ে দিল কিন্তু সে গেলনা…
সে তার সব হারিয়ে ফেলছে। অবৈধ সন্তান পেটে ধারণ করছে। মাকে মেরে ফেলছে, ছোট যুদ্ধ থেকে আসলে কি জবাব দিবে?সমাজের কাছে কিভাবে মুখ দেখাবে? এইসব চিন্তা করে ভাই আর মায়ের মুখ কল্পনা করতে করতে নিজের ওড়নাতে গলা পেছিয়ে নিজেই কেড়ে নিল নিজের প্রাণপাখি।
১মাস ৬দিন পর
২৪শে নভেম্বর ১৯৭১
দেশের অনেকাংশ স্বাধীন।
অনেকাংশ পাক বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত পেলেও হিমেলদের অঞ্চলে এখনো সমানুপাতিকভাবে যুদ্ধ অব্যাহত আছে।
হিমেলের কেন জানি মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে আর বুবুর হাতের রান্না খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সে এই ভেবে নিজেকে স্বান্তনা দিচ্ছে যে আর কয়েকটা দিন পরেই হয়ত সে তার নিজ ঘরে স্বাধীনতার মিছিল নিয়ে যেতে পারবে আর মাকে স্বাধীন দেশের স্বাধীন পতাকা উপহার দিবে। এমন অবস্থায় হিমেলের বাহুতে একটি গুলি আঘাত করে হিমেল কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পরে কিন্তু যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চেষ্টা করে কিন্তু পরক্ষণে আবারো আরেকটি গুলি তার বুক ঝাঁঝড়া করে দেয় আর সে সাথে সাথে মাটিতে লুটে পড়ে। তার পাশে থাকা বন্ধুটি তাকে ঝাপটে ধরে আর কিচ্ছু হইবোনা বলে মিথ্যা আশ্বাস দেয়।
কান্নাকাতুর হিমেল বলে…
-আমার মা আমার জন্য অপেক্ষা করবো। এই পতাকাটা আমার মারে দিও বন্ধু আর কইয়ো এই পতাকায় আমি মিশশা থাকমু
চোখের জল মুছতে থাকা বন্ধু নির্বাক শুধু চেয়ে থাকে আর কাদঁতে থাকে।
হিমেল দেশের জন্য তার প্রাণ উৎসর্গ করে চলে যায় না ফেরার দেশে। মায়ের কোলে শুয়ার স্বপ্ন উড়ে যায় অদূর আকাশে।
২২দিন পর
১৬-ই ডিসেম্বর ১৯৭১
দেশ স্বাধীন।
চারদিকে জয় বাংলা জয়ধ্বনি। বিজয়ের গান। চারদিকে নতুন আনন্দ। মুক্ত স্বাধীন মা, মাটি, মানুষ।
বিজয়ের গান আর মিছিলে মেতে ফুলবাড়ির ৮জন মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে ফিরলেন কিন্তু তাদের সহযোদ্ধারা নেই। তারা যেন অনেকটাই ফাঁকা অনুভব করছে কিন্তু তাদের আত্মত্যাগ এনে দিয়েছে স্বাধীন দেশে স্বাধীন লাল সবুজের পতাকা। এটা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট আর গর্বিত।
হিমেলের সেই বন্ধুটি, তার দেওয়া পতাকা নিয়ে যখন তাদের বাড়ি গেল তখন মা এসে…
-খোকা তুই আইছোস খোকা?
-তোর বুবু কই? ওরে আনছ নাই?
-তুই আমারে ফালায়া আর যাবিনাতো বাজান?
হিমেলের কান্নাতোর বন্ধু কোনো কথা না বলে পতাকাখানা পাগলী মায়ের হাতে দিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে সে আঙিনা ছেড়ে চলে গেল।
অসাধারণ।
Thanks
just mind blowing
অসাধারণ লাগলো। এমন নতুন নতুন মুক্তিযুদ্ধের আরো গল্প পড়তে চাই।
পইরা বাক্কা ভালা লাগছে। আগামিতে আরও কিছু চাইরাম।