ডিপ্রেশন’ বলতে সম্ভবত মানসিক হতাশাকে বোঝায়। ব্যক্তি কিংবা পারিবারিক উভয় জীবনে মানুষ নানা রকম মানসিক হতাশায় ভোগে। প্রতিটি মানুষের জীবনেই এক সময় এ ‘ডিপ্রেশন’ নামক শব্দটা আসে।
আমরা খুব অল্পতেই হতাশ হয়ে যাই। সামান্য এদিক-ওদিক হলেই ডিপ্রেশন নামক শব্দের সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি। মনে হয়, এই বুঝি মরে যাবো, আর মনে হয় বাঁচবো না!
অথচ আমি একটা সময় ‘ডিপ্রেশন’ শব্দটার মানেই বুঝতাম না! মাস কয়েক আগেও ডিপ্রেশনের ব্যপারে জানতে চেয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটা পোস্ট করেছিলাম। সেদিন ফ্রেন্ডলিস্টের একেক জন একেক ভাবে ডিপ্রেশনের সংজ্ঞা দিয়েছিলো আমায়।
দুঃখ-কষ্ট ছাড়া মানুষ পৃথিবীতে সম্ভবত নেই। যে মানুষটা আপনার অসময়ে আপনার পাশে এসে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেয়, আপনি ভাবেন তার হয়তো কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু দেখা যায়, দিনশেষে সে মানুষটিও একরাশ হতাশা আর কষ্ট নিয়ে বিছানায় নিজের গা লাগায়।
আমি যখন কখনো কখনো জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে যাই, ফেসবুকে হতাশমূলক স্ট্যাটাস আপডেট করি, তখন বড় ভাই আমাকে সাহস যোগায়। আমার ভেঙে পড়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। হাজারো মোটিভেশনাল কথা শোনায়। হয়তো কিছু সময়ের জন্য নিজেকে স্বাভাবিক করে তুলে ফেলি।
কিন্তু ভাইকে যখন ‘ডিপ্রেশন’ নামক শব্দে ডুবে যেতে দেখি, যখন দেখি প্রিয় ভাইটিও নিজেকে ব্যর্থ দাবি করে জীবনের উপর বিরক্তি প্রকাশ করছে, তখন রীতিমতো কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
কেউ কেউ নিজের জীবনের প্রতি এতই বিরক্ত হয় যে, ভাবে এই বুঝি আত্মহত্যা করে ফেলবো! হয়তো আত্মহত্যা-ই হতে পারে হাজারো ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির পথ। পরক্ষনেই আবার ভাবনায় আসে, আমার মতো আর কতজন এভাবে আত্মহত্যা করে মুক্তি পেতে পারবে? আত্মহত্যা কি সত্যিই সব সমস্যার সমাধান?
সম্ভবত দূর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি লাভের উপায় “আত্মহত্যা” হতে পারেনা। কেননা আত্মহত্যা যদি সব সমস্যার সমাধান হতো, তবে পৃথিবীতে মধ্যবিত্ত বলে কোনো পরিবার থাকতো না। সবগুলো পরিবার-ই আত্মহত্যা করে দূর্বিষহ জীবন থেকে মুক্ত করে নিতো নিজেকে।
আসলে চাইলেই এ সুন্দর জীবনটাকে নষ্ট করে দেয়া যায় না। জীবনের মায়া, বড় মায়া। এ সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে কেউ সহজে যেতে চায় না। সবাই চায় আরো ক’দিন বেশি বাঁচতে। তাহলে কতটা বিভীষীকার কাতারে দাঁড়ালে একজন মানুষ তার নিজের জীবনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে? একবারও কি এ কথা কারো মাথায় আসে?
তুমি যখন ডিপ্রেশনের চুড়ান্ত পর্যায়ে পরে আত্মহত্যার প্রিপারেশন নিচ্ছো তখন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া মানুষটা হয়তো স্রষ্টার কাছে আর দুটো দিন বেশি বাঁচার জন্য কাকুতি মিনতি করছে।
আচ্ছা, এতো শত করে কি হবে বল তো? মানুষ তো হাজার বছর বাঁচেনা। এই বড়জোর ৬০ কি ৭০ বছর, জীবনটাতো একদম ছোট। ফুঁস করে হাওয়ার মতো সময়টাও কোথা দিয়ে বেরিয়ে যাবে টেরই পাবে না।
এরচেয়ে বরং জীবনকে সাজানোর চেষ্টা কর। ব্যর্থ হওয়া সময়গুলোকে জীবন থেকে মুছে নতুন করে বাঁচার পরিকল্পনা কর। স্লিপিং পিলটা ফেলে দিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বলো, “মা খুব বিরিয়ানি খেতে মন চাচ্ছে” অথবা খুব বৃষ্টিতে ভাই বোনগুলির সাথে আড্ডা মেরে ঝালমুড়ি খেয়ে দেখতে পারো। দেখবে, কষ্ট সব নিমিষেই হজম হয়ে যাবে।
তোমায় বাঁচতে হবে, সেই দিনটা দেখার জন্য যেদিন তোমায় নিয়ে সকলে গর্ব করবে। অন্তত সেই দিনটা দেখার জন্য হলেও তোমায় বাঁচতে হবে যেদিন স্বয়ং মৃত্যুও তোমার হাসিমুখ দেখে লজ্জা পাবে। আর যদি তা না চাও, তবে তুমি মারাই যাও। পৃথিবীতে তুমি আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই না।
প্রবন্ধঃ ‘ডিপ্রেশন’ ও ‘আত্মহত্যা’
লিখাঃ রাকিব মাহমুদ
অনেক ভালো লিখেছেন।
চমৎকারভাবে হতাশার কথা তুলে ধরেছেন।পড়ে ভালো লাগলো।মনোমুগ্ধকর লেখা।
জীবনটা খুব ছোট।তাই ডিপ্রেশনকে আঁকড়ে ধরেই বাঁচতে হবে।জীবনের মায়া বড় মায়া।
শুভ কামনা রইলো।
লেখার হাত ভালো।
জীবনে উত্থান পতন অাসবেই তাই বলে হার মেনে নিজের জীবনকে বিপর্যস্ত করা ঠিক না। সুন্দর লেখনি, ভালো লাগলো।
আত্নহত্যা মহাপাপ আর সেইসাথে বোকামি। ভালো লিখেছেন। আরেকটু ডিটেইলস লিখলে আরও ভালো হত।
যাই-যায় (ই নিজের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় আর য় অন্যের ক্ষেত্রে, তাই যেহেতু অন্যের ক্ষেত্রে বলেছেন যায় হবে)
পরক্ষনেই-পরক্ষণেই
পারেনা-পারে না(না সব সময় আলেদা বসে)
কেননা-কেন না
নিতো-নিত
এতো-এত
বাঁচেনা -বাঁচে না
সত্যিই লেখাটা অসাধারণ হয়েছে। আমিও এক সময় ডিপ্রেশনে ছিলাম, কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়েছি। লেখাটা পড়ে আরো শক্তি পেলাম। কিছু ভুল ছিল ঠিক করে দিলাম আর আত্মহত্যা কখনো সমাধান হতে পারে না। শুভ কামনা রইল।
আসসালামু আলাইকুম।
বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করেছেন। বিষয়টাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে বানানে কিছুটা সমস্যা রয়েছে।
এতই – এতোই
পরক্ষনেই – পরক্ষণেই
পারেনা – পারে না
বাঁচেনা – বাঁচে না
চুড়ান্ত – চূড়ান্ত
পরে – পড়ে
এরচেয়ে – এর চেয়ে
কর – করো
আচ্ছা এতো শত করে কি হবে বল তো? – …… কী হবে বলো তো?
চিহ্নের ব্যবহারে আরও যত্নবান হতে হবে।
আপনার জন্য শুভ কামনা।