জাকারিয়া আল হোসাইন, জুলাই, ১৮।
–
সবুজ শ্যামল মাঠ।আঁকাবাঁকা মেঠো পথ।
পাশ দিয়ে ছুটে চলেছে নদী। সব মিলে
দারুণ পরিবেশে ঘেরা ছোট্ট এই
গ্রামটি । হাসান ও জামিল। দু’জন পরস্পর
ভালো বন্ধু। এই গ্রামেই ওদের বাড়ি।
নিজ বাড়ি থেকে প্রায় দুই
কিলোমিটার দূরে পাশের গ্রামের
প্রাইমারী স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়ে
ওরা। দু’জনেই ভালো ছাত্র বটে। কিন্তু,
দুষ্টুমিতেও দারুণ পাকা।
স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে
মানুষের বাগানের ফুল ছেড়া,
অকারণে গাছের ডাল ভাঙ্গা, পাখির
বাসা ভেঙ্গে দেওয়া, ছোট
বাচ্চাদের খেলাধুলায় দৃষ্টাব করা
তাদের দু’জনের নিত্য দিনের বদভ্যাস।
সামান্য কারণে বন্ধুদের সাথেও ঝগড়া
বাধে ওদের। তাদের দু’জনের মধ্যে
তুলনামুলক ভাবে জামিল একটু বেশি
দুষ্টুমি করে। একবার বইয়ে নাম লেখা
নিয়ে রফিক নামের এক বন্ধুর মাথা
থেকে রক্ত ঝরিয়েছিলো সে। এ
নিয়ে হেডস্যার শাস্তিও
দিয়েছিলো তাকে। কিন্তু একটুও হুস হয়
নি তার।
প্রতিদিনের মত আজও স্কুলে
যাচ্ছে ওরা। পথিমধ্যে হঠাৎ দেখতে
পেলো একটি পাখি। পাখিটি তার
বাচ্চাদের জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছে।
তা দেখে মন্দ একটা বুদ্ধি চাপলো
তাদের মাথায়। তারা দু’জনে বলল যে,
আজ আর স্কুলে যাবো না। আজ গাছ
থেকে পাখির বাচ্চা পাড়বো। কিন্তু
হাসানের একটু ভয় হলো। কারণ,
হেডস্যার এই রাস্তা দিয়েই স্কুলে
যায়। যদি দেখে ফেলে। তাহলে তো
খবর হবে। তাই সে জামিলকে বললো,
এখন চল আগে স্কুলে যাই। ফেরার পথে
না হয় পাড়বো। কিন্তু কে শোনে কার
কথা। জামিল বলল, আরে বোকা কেউ
দেখবে না। হেডস্যার এতক্ষণে চলে
গেছে। আর কালকে বলবো যে, নদীর
উপর দেয়া সাঁকোটা ভেঙ্গে
গিয়েছিলো। তাই আসতে পাড়িনি।
হাসান তখন বলল, গুড। ভালো আইডিয়া।
চল তাহলে। … আজ আর স্কুলে যাবো না।
অবশেষে দু’জনে ছুটলো পাখির
পিছুপিছু। ওরা দেখলো
পাখিটি একটি বড় আমগাছে গিয়ে
পরলো। অমনি ওরা দৌঁড় দিলো গাছটি
দিকে। কিন্তু হাসানের চিন্তা
বেড়ে গেলো। কারণ, গাছটি রাস্তার
পাশেই। যদি হেডস্যার দেখে ফেলে।
ওদিকে জামিলের এ নিয়ে কোন
চিন্তা নেই। ওর দৃষ্টি শুধু পাখির দিকে।
ফলে হাসানও ওসব চিন্তা ছেড়ে
দিয়ে পাখির নেশায় মত্ত হলো।
জামিল ততক্ষণে গাছে
উঠেছে। দুর থেকে পাখির বাসা
দেখতে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা
হলো জামিল। হাসান তখন বলল, তুই
বাচ্চাগুলো নিয়ে নেমে আয়। আমি
নিচে আছি। আচ্ছা থাক, আমি পেড়ে
আনতেছি ডেকে ডেকে বলল জামিল।
পাখির বাচ্চাগুলো হাতে নিতেই মা
পাখিটা চিৎকার করতে শুরু করলো।
চেঁচামেঁচিতে ভরে গেলো পুরো আম
গাছটা। মা পাখিটা জামিলের
মাথার উপর উড়ছে আর চিৎকার করছে।
তারাতারি নেমে আয় জামিল। বলল,
হাসান।
কিন্তু ঘটে গেলো আরেক কাহিনী।
ওদের দু’জনের দৃষ্টি পাখির বাচ্চার
দিকে। আর এদিকে ততক্ষনে হেডস্যার
এসে দাড়িয়ে আছে ওদের পাশে।
সেদিকে ওদের কোন দৃষ্টি নেই।
হেডস্যার হঠাৎ সাইকেলের বেল
বাঁজালো। আর অমনি চমকে উঠলো
হাসান।
– ভয় ভয় স্বরে, আচ্ছালামু আলাইকুম। স্যার
আপনি !
ওয়ালাইকুম আচ্ছালাম। জি, আমি। তো
কি হচ্ছে এখানে ? খুব শান্ত গলায় বলল
হেডস্যার।
গাছ থেকে জামিলও শুনতে পেলো
হেডস্যারের কথাগুলো।
কিন্তু খটকা লাগলো জামিলের মনে।
স্যার তো এভাবে এত শান্ত মেজাজে
কথা বলে না। এই শান্তগলার পরিনাম
কী হবে তা একটু পরে হারেহারে টের
পাবো।
দ্রুত নিচে নেমে আসো? বললেন
হেডস্যার।
ভয় ভয় করে গাছ থেকে নেমে আসলো।
ভয়তো পাওয়ারি কথা। কারণ,
হেডস্যারের কাছে একবার ধোলাই
খেয়েছে জামিল।
-স্কুল না গিয়ে এসব কী করছো হচ্ছে
তোমাদের ? বললেন হেডস্যার।
জামাল ও হাসান মাথা নিচু করে
পাখির বাচ্চা হাতে দাড়িয়ে আছে।
-কী হলো কথা বলছো না কেন ?
দুষ্টুমিতো ভালোই করতে পারো
দেখছি। সেদিন রাস্তার পাশের এক
বাড়িওয়ালা তোমাদের দুষ্টুমির কথা
আমাকে বলেছিলো। আমি বিশ্বাস
করিনি। কিন্তু আজ নিজের চোখে
দেখলাম।
পিতামাতা কী এজন্যই তোমাদের
স্কুলে পাঠিয়েছে?
তোমরা কী এখনো ওয়ান টুর বাচ্চা যে
হাত ধরে বোঝাতে হবে?
এরকম অনেক প্রশ্ন ছুড়ে দিলো হেডস্যার
জামিল ও হাসানের দিকে।
ওদের দু’জনের মাথা নিচু তো নিচুই
আছে। মাথা উঠানোর সাহস নেই ওদের।
কারণ, হেডস্যারকে ওরা খুব ভয় পায়।
-এসব করা ঠিক নয় বুঝলে। এখন তোমরা বড়
হচ্ছো।
ভালোকিছু শিখবা ভালোকিছু করবা
এটাই পিতামাতার চাওয়া আমাদের
চাওয়া। কিন্তু তা না। স্কুল ফাকি যত
সব ফালতু কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছ ছোট
বাচ্চাদের মত।
আর হ্যা, এই যে হাতে পাখির বাচ্চা।
এগুলো কেন পেড়েছো ? মা পাখিটা
কত চিৎকার করছে শুনছো না দেখছো
না।
– জি স্যার, এতক্ষনে মুখ খুললো জামিল
ও হাসান।
শোন একটা কথা বলি,
তোমাদের
পিতামাতার সামনে থেকে যদি
কেউ তুলে নিয়ে যায়
তাহলে পিতামাতা কাঁদবে নাকি
হাসবে।
-কাঁদবে স্যার।
চিল্লাহাল্লা করবে না ?
-করবে স্যার।
তোমরা যে পাখির বাচ্চাগুলো তুলে
আনলে। এখন তাহলে মা পাখিটার মন
কেমন করছে? চিল্লাহাল্লা
চেঁচামেচিঁ কেন করছে বুঝছো না?
হেডস্যারে দীর্ঘ বক্তব্য শুনে জামিল ও
হাসানের হুশ আসলো। কিন্তু এই মুহুর্তে
কি করবে বুঝতে পারছে না।
হঠাৎ হেডস্যার বললো, এই বাচ্চাগুলো
দ্রুত রেখে আসো?
-জি স্যার। রেখে আসছি।
রেখে আসছি নয়। এখনি রেখে আসো?
কোন কুল খুঁজে না পেয়ে বাচ্চাগুলো
রেখে আসতে বাধ্য হলো ওরা।
ওরা যখন নিচে এলো তখন হেডস্যার
তাদের মাথায় হাত দিয়ে বললো,
এতক্ষণে কী বুঝলে, বলতো?
– জি স্যার।
আমাদের ভুল হয়ে গেছে। আমাদের
কাজের গভীরতা যে এত নির্মম তা
বুঝতে পাড়ি নাই। মাথা নিচু করে
বললো জামিল ।
– আমরা আর এরকম ভুল করবো না স্যার।
আমাদের ক্ষমা করে দিন। বলল, হাসান।
হেডস্যার তখন বললেন, তোমাদের
কর্মকান্ডের ভুল বুঝতে পাড়ায় আমি
সত্যিই আনন্দিত। আশা করি অন্তত
তোমরা আর এসব দুষ্টুমির কাজ করবা
ইনশাআল্লাহ্।
-জি স্যার। ইনশাআল্লাহ্ আর এসব দুষ্টুমি
করবো না। দোয়া করবেন স্যার।
আচ্ছা ফি আমানিল্লাহ্। আজ তবে
বাড়ি যাও। এখন আর স্কুলে যাওয়ার
দরকার নেই।
ঠিক আছে স্যার।
অবশেষে হেডস্যারের কাছে জামিল
ও হাসান ওদের দুষ্টুমির উচিৎ জবাব
পেয়ে অনুতপ্ত মন নিয়ে বাড়ির দিকে
রওনা হলো।
দৃষ্টাব-ডিস্টার্ব*
হয় নি -হয়নি*
পেলো-পেল*
এগুলো সহ আরও কিছু বানান ভুল আছে।দেখে নিবেন।গল্পে আরেকটু কাহিনী আনলে ভাল্লাগতো।শুভ কামনা। 🙂
গল্পে বানান বা টইপিং মিস্টেক থাকলেও, গল্পটা শিক্ষনীয় ছিল।
ছেড়া→ ছেঁড়া
দৃষ্টাব→ ডিস্টার্ব
হুস→ হুঁশ
যদি দেখে ফেলে।→ দেখে ফেলে (!)
কর্মকান্ড→ কর্মকাণ্ড
বুঝতে পাড়ি নাই→ পারিনি।
জি→ জ্বি
পাড়া→ পারা।।
….
শিক্ষণীয় গল্প তবে একদম সাদামাটা। প্রতিযোগিতায় শিক্ষণীয় গল্পের ভার অনেক তবে সেটা গল্পাকারে ফুটিয়ে তুলতে হবে। কিন্তু সেদিক থেকে আপনি ব্যর্থ। তবে চমৎকার থিম বেছে নিয়েছিলেন।
এভাবে আরো গল্প উপহার দিন এই কামনাই করি । তবে বিস্তর উপস্থাপন এবং সাবলীল গল্প।
বানান এবং যতিচিহ্নের দিকে বিশেষ নজর দিবেন। মনে রাখবেন, সেগুলোই গল্পকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
শুভ কামনা
শিক্ষণীয় গল্প।
ছোটবেলায় যখন কেউ এভাবে পাখির বাসা ভাঙ্গে তখন স্যারের মতো অবশ্যই বোঝাতে হবে।
না বুঝালে কিভাবে বুঝবে পাখির বাসা ভাঙ্গলে বাচ্চাগুলো কষ্ট পাবে।
ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেলে।
দুষ্টমি করলে অবশ্যই বাঁধা দিতে হবে।তবেই শিশুরা বিরত থাকবে।
বানানে ভুল আছে
দৃষ্টার্ব-ডিস্টার্ব
হুস-হুঁস
ছেড়া–ছেঁড়া
প্রাইমারী–প্রাইমারি
বদভ্যাস–বদঅভ্যাস
তুলনামুলক–তুলনামূলক
তারাতারি–তাড়াতাড়ি
কাহিনী–কাহিনি
কী করছো হচ্ছো –কী করা হচ্ছে
দাড়িয়ে-দাঁড়িয়ে
দুর–দূর
বানানের প্রতি যত্নশীল হবেন।
শুভ কামনা রইলো।