লেখিকাঃ কবি জোসেফাইন
‘GPA’ শব্দটি ইংরেজি কয়েকটি শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। যার পূর্ণ রূপ Grade Point Average .তিন অক্ষর এবং এক নম্বরের সম্বনিত এই ‘GPA 5’ কতিপয় শিক্ষার্থীর জীবনযাপন অসহনীয় করে তুলেছে।সাধারণত একজন শিক্ষার্থীর বোর্ড পরীক্ষায় প্রাপ্ত মোট নম্বরের গড় করাকেই GPA হিসেবে ধরা হয়।আমার আলোচনার বিষয় সেটি নয়।জিপিএ ৫ একজন ভালো শিক্ষার্থীই পাবে এটা আমরা ধারণা করি।যদিও পৃথিবীতে কোনো ভালো কিংবা খারাপ ছাত্রছাত্রী বলতে কিছু নেই।কেউ কম অভিজ্ঞ তার অর্থ এই নয় যে সে খারাপ শিক্ষার্থী ,হতে পারে সে এমন কিছু জানে যা তথাকথিত কিছু ভালো শিক্ষার্থীর জানা নেই।একজন শিক্ষার্থীকে তার পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে কখনোই ভালো কিংবা খারাপ শিক্ষার্থী উপাধি দেওয়া যায় না।শিক্ষার্থীকে জিপিএ ৫ এর নামে বাড়তি চাপ প্রয়োগের ফলে শিক্ষার্থীর ভীতি তৈরী হয়ে যায় পড়াশুনার প্রতি।সে মনযোগ হারিয়ে ফেলে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই।জিপিএ ৫ পাওয়া হলেই কি জীবনের সব কিছু পাওয়া হয়? যদি উত্তর আসে, না।তাহলে প্রশ্ন করতে চাই, তবে কেন অহেতুক জিপিএ ৫ এর নামে আপনার সন্তান কিংবা ভাই বোনকে চাপ প্রয়োগ করছেন?আপনার এই মানসিকতার কারণে তারা আশ্রয় নেয় প্রশ্নফাঁসের মত অপরাধযোগ্য একটি কাজের।জিপিএ ৫ দিয়ে যদি শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন করতে চান তবে হারিয়ে ফেলবেন বহু মেধা।আপনার সন্তান জিপিএ ৫ পায়নি? তো কি হয়েছে?জিপিএ ৫ না পেলেই কি ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়?এমন কাউকে দেখান যে প্রত্যাশিত জিপিএ ৫ না পাওয়ার কারণে ভবিষ্যৎ এ কিছুই করতে পারেনি।একজন শিক্ষার্থী যখন পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফলাফল করতে ব্যর্থ হয় তখন সে স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর মানুষ চাপে থাকে।আপনি যদি অভিভাবক হয়ে সে সময়ে তার প্রতি বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেন, তাহলে তার ভুল পথে পা দেওয়া কিংবা আত্মহত্যা করাটাকে অস্বাভাবিক ভাবে নিবেন না।দয়া করে কখনো নিজের সন্তানকে অন্যের সাথে তুলনা করবেন না।এতে আপনার সন্তান হীনমন্যতায় ভোগে।আপনার সন্তান জিপিএ ৫ অর্জন করলেই শুধু আপনার সম্মান বৃদ্ধি পাবে, আপনি গর্ব করতে পারবেন এমন তো নয়।একবারও কি ভেবে দেখেছেন যে আপনার সন্তানটি জিপিএ ৫ এর চক্করে পড়ে আদৌ মানুষ হচ্ছে কিনা।নিজেকে সচেতন অভিভাবক দাবী করেন,অথচ সন্তানের নিকট থেকে প্রত্যাশিত ফলাফল না পাওয়ায় সন্তানের প্রতি মানসিক চাপ সৃষ্টি করবেন তা কেমন দেখায়?আমি বলছি না আপনি আপনার সন্তানের নিকট জিপিএ ৫ আশা করবেন না।কিন্তু তাদের বাড়তি চাপ দিবেন না।স্বাভাবিক ভাবে আপনি আশা করতেই পারেন একজন অভিভাবক হিসেবে।সন্তান জিপিএ ৫ পাচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সচেতনা না বাড়িয়ে সন্তান মানুষ হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়ান।বাংলাদেশে প্রতি বছর বহু শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পায়,কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারে না।সেদিন এক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলছিলাম, সে বলল জিপিএ ৫ পেতেই হবে যে করেই হোক।এই ধরণের মানসিকতা নিশ্চয় আপনা আপনি সৃষ্টি হয়নি।হয় সামাজিক চাপ নয়তো পারিবারিক চাপের ফলেই এই ধারণার সূচনা হয়েছে।শিক্ষার্থীটি জিপিএ ৫ পাওয়ার জন্য যে কোনো কিছু করতে পারে।প্রশ্ন ফাঁসের আশ্রয় নিতেও কুন্ঠাবোধ করবে না। In Future, যদি ঐ শিক্ষার্থীটি জিপিএ ৫ না পায় তাহলে সে মানসিক ভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা তো তার কথার দ্বারাই প্রমাণিত।সকল অভিভাবকের নিকট একটিই অনুরোধ, আপনার সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করুন।জিপিএ ৫ অর্জনই গুনগত শিক্ষার মূল বিষয় নয়।আপনার সন্তানের কাছে আশা করুন তবে অবশ্যই ততটুকু প্রকাশ করুন যতটুকু প্রকাশে আপনার সন্তান আপনাকে বুঝতে সক্ষম হয়।এত কথা পড়ার পরেও যদি কোনো শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবক বলেন জিপিএ ৫ ই সব।তাই যে করেই হোক জিপিএ ৫ অর্জন করতে হবে। তাহলে সিলেটী ঢং এ একটায় প্রশ্ন করতে চাই তাদের ইতা জিপিএ ৫ দিয়ে খিতা খরতাম??
বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে সুন্দর একটি লেখা। আজকাল পরিবার, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী সবাই ছোট করে দেখে জিপিএ ৫ না পাওয়া ছেলে মেয়েকে।
অসাধারণ লিখেছেন।
বর্ণনাভঙ্গি দারুণ হইছে।
আজকাল কিছু মানুষ আছে জিপিএ কেই প্রাধান্য দেয়।ছাত্রী হিসেবে কেমন,পড়াশোনা কেমন সেটার আর দরকার হয় না।জিপিএ না পেলে প্রতিবেশি, আত্মীয় স্বজন ছোট করে দেখে।অনেক বাবা মা তো সন্তানদের অনেক বকে।যার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়।
শুভ কামনা রইলো।
বাহ্ চমৎকার ছিল জিপিএ 5 নিয়ে লেখা আর বানানেও কোনো ভুল চোখে পড়েনি। তবে বাংলাতে জিপিএ ৫না লিখে ইংরেজিতে ‘GPA5’লিখলে কিংবা জিপিএ 5লিখলে সুন্দর দেখাত। কারণ বাংলাতে যে লিখেছেন জিপিএ ৫, এইখানে এটাকে ৫পাঁচ বলা হয় 5না। তবে ভালোই ছিল। সমাজে তো যারা জিপিএ 5 পায়, মনে করে অনেকে যে মহা জ্ঞানের দলিল পেয়ে গেছে। শুভ কামনা রইল আগামীর জন্য।
সুন্দর একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন । যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারো মাথায় এগুলা ঢুকত, তাহলে হত। আপনার আমার লেখা তাদের কাছে পৌছাবে না। পৌছালেও গুরুত্বহীন।
আর, পরিবার কে দোষ দিয়েও লাভ হবে না। জিপিএ৫ ছাড়া মুখ দেখাতে পারা যাবে না। জিপিএ৫ না পেলেযেনো ফেল করে ফেলেছে।
লেখার হাত সুন্দর আক্সহে। শুভকামনা।
সমসাময়িক প্রেক্ষাপট নিয়ে দারুণ একটি লেখা। খুব সুন্দর বর্ণনা করেছেন বিষয়টার। বেশ ভালো লেগেছে আমার।
আপনার জন্য শুভ কামনা।