ভুলে যাওয়া ঐ তিমির আতঙ্ক
প্রকাশিত: অগাস্ট ২২, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 1,209 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

মেহেরাজ হোসেন©
.
এইতো সেদিন, রক্তিম অনুনাদে যখন ;
কম্পিত হয়েছিল ধানমণ্ডিে আশপাশ ।
মেঘতুঙ্গে আওয়াজ তোলে মেশিনগান,
পাশেই গজানো দেবদারু-বৃক্ষে,
ঘুমিয়ে পড়া শিশু-পাখিটিও আঁতকে ওঠে ।
বিষাদবেলা ঘনিয়ে আসে, আসে নব-প্রলয় মুহূর্ত ;
বুক খালি হয় বঙ্গমাতার,
দিগ্বিদিক রক্তের লালিমা, মেঝেতে ছোট্ট একটা চশমা,
তারই পাশে ছোট্ট এক বালক, কী গভীর ঘুমে নিমগ্ন সে !
দেখে মনে হয়, এই অপরূপ বাংলায় ;
তার ঘুমিয়ে পড়াটাই ভালো ছিল ।
আর বঙ্গবন্ধু ?
কোট-পরা সুদর্শন বৃদ্ধটি, ঐ নিশিতে ঘুমন্ত অবস্থায়,
ক্ষণিকেই বাংলার ইতিহাস বনে গিয়েছেন ।
দেয়ালে রক্ত-রঙ্গিন হাতের ছাপ,
মেঝেগুলি ছটপটানির প্রমাণে আচ্ছাদিত !
নিয়তি তখন বুক খুলে এক বাক্যই,
বলছে বারে বারে,”আজ এই হওয়ারই ছিল।”
এক বাঙালীর অধ্যায় এভাবেই শেষ হয় ।
নাটকের যবনিকা টানে, অতঃপর !
শুরু হয় রোষানল, হিংসার বেড়িকেড ।
ক্ষমতার রেষারেষি, সেনা অভ্যুত্থান, আন্দোলন ;
বহু-বহুতর দিন চলে যায় তারপর ।
নদ-প্লাবন, ঘুর্ণিঝড়ের মতো অশুভ’রা আসে ।
কৃত্রিমতার উদ্ভব, জনগণে হাহাকার !
অপরাহ্ন-কালে কোমল-দৃষ্ট দেশটিতে,
আবার ঐ সুদর্শন বৃদ্ধ কারিগরটির মৃত্যুতে,
শোকের দাবানল শুরু হয় ।
দু’ফোঁটা জলে চোখ ভিজায় খেয়ালী বাঙালী,
দিকে দিকে সভা-সেমিনারে করুণ নিষ্পেষণ,
আপ্লুত হওয়া ছাত্রটির শোকের ভাষণ,
সরকারি বিধানে নীরবতা পালন,
সব ঐ পনের’ই আগস্টের জন্যে !
তারপর, একদিন-দু’দিন যায় ।
দেশ আবার রক্তিম আভার ছায়াতলে,
শহুরে অস্থিরতা, কাণ্ডারীদের হুঁশিয়ারি,
চাকুরিজীবীদের দৌড়াদৌড়ি, সরকারি আড়ম্বরতা ;
দিগ্বিদিক শোকের আভাসমাত্র নেই ।
“চলে গিয়েছে যে দিন, তার জন্যে কি আর কাঁদা সাজে ?”
তারা ভুলে যায়,
দেশটার সতী-রক্ষার গুরুভার যে ঐ ভোলা মনগুলির উপরই চড়ায় !

সম্পর্কিত পোস্ট

নির্বাক_পাখি

নির্বাক_পাখি

হে কবি,      শক্ত করে ধরো,       তোমার অস্ত্র। আবারো,      তোমার অস্ত্রের মধ্য দিয়ে,      রক্তে রঞ্জিত করে দাও,      এই শুভ্র ময়দান। হে কবি,     শক্ত করে ধরো,     তোমার অস্ত্র। যেভাবে,     কবি নজরুল ধরেছিল,      ইংরেজদের বিরুদ্ধে। যেভাবে,    কবি সুকান্ত চেয়েছিল,  ...

তুলসী বনের বাঘ

তুলসী বনের বাঘ --আল-মুনতাসির। চিনলে নাকো তাকে সে যে তুলসী বনের বাঘ ! ছদ্মবেশে ছড়িয়ে দিলো বিষম বিষের নাগ। ইচ্ছে করে কামড় খেলে, ভরলে হৃদয় বিষের নীলে কী করে আর দেখবে প্রিয় কৃষ্ণচুড়ার বাগ ? চিনলে নাকো তাকে সে যে তুলসী বনের বাঘ ! চোখে তোমার বিষের তেজে পর্দা এলো নেমে, জগত...

ভালোবাসা রং বদলায়

: ভালোবাসা রং বদলায় লেখা: অদ্রিতা জান্নাত ছোট মেয়েটা খুব করে কেঁদে কেঁদে অনুরোধ করেছিল আমি যেন একটি হলেও তার কাছ থেকে ফুল কিনে নেই, ঠিক যতবার আমি তাকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলাম সে যেন ঠিক ততটাই আমার পিছু ছুটতে লাগল। আচ্ছা, এই যে শিশুটা যে কিছু টাকার বিনিময়ে আমাকে...

৬ Comments

  1. আফরোজা আক্তার ইতি

    অনেক সুন্দর লিখেছেন। শব্দচয়ন আর ছন্দমিল দু’টোই বেশ ভালো। বানানেও কোন ভুল পেলাম না। সুন্দর করে লিখেছেন। শুভ কামনা রইল।

    Reply
  2. Mahbub Alom

    বাংলায় চিরকাল সংগ্রাম চলেছে,এখনো চলছে।
    বাংলার জনককে মারা হয়েছে।আমরা আর তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব না।বরং এখন আমাদের উচিত আমরা তরুণরা তার আদর্শে বড় হয়ে দেশ গড়ার কাজে যোগ দেই।তাহলে দেশ থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যার দোষরদের শাস্তি হবে,দূর হবে দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা।
    শাস্তি হবে একাত্তরের দোষরদের।
    কবিতাটা অনেক সুন্দর হয়েছে।

    ধন্যবাদ

    Reply
  3. Halima tus sadia

    ভালো লাগলো।কবিতায় বাস্তব কিছু কথা ফুটে উঠেছে।
    চমৎকার লেখনী।বর্ণনাভঙ্গি ভালো ছিলো।

    এইতো সেদিনই ধানমন্ডি শহর কম্পিত হলো।কতো মানুষের জীবন গেলো।কতো মায়ের বুক খালি হলো।
    ক্ষমতার রেষারেষিতে কতো ছাত্র জনতার জীবনকে বিসর্জন দিতে হলো।
    এই বুঝি বাংলা।এটা দেখারই বাকি ছিলো।
    আপ্লুত হওয়া ছাত্রটাকেও শোকের ভাষণ দিতে হয়।
    সরকারি বিধানে নিরব থাকতে হয়।কিছুতো করার নেই।
    তাদের হাতে ক্ষমতা।
    সত্যিই সতী রক্ষার গুরুভার যে ঐ ভোলা মনগুলির উপর চালায়।
    ধানমন্ডিে–ধানমন্ডি
    আগস্টের–আগষ্টের
    শুভ কামনা রইলো।

    Reply
  4. Rahim Miah

    ধানমন্ডির হবে হয়তো
    কী-কি
    বাস্তব চিত্র দেখছি মাঝে তুলে ধরেছেন, শুভ কামনা।

    Reply
  5. Rabbi Hasan

    বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। খুব সুন্দর একটি কবিতা।

    Reply
  6. Sajjad alam

    দুটো ভুল,
    এইতো___ এই তো
    ধানমণ্ডিে___ ধানমণ্ডি
    .
    নামকরণটা যথার্থ।
    কনসেপ্টটা অসাধারণ।
    লেখনীও চমৎকার।
    .
    বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বলার অার কী বা আছে! যে মানুষের ওসিলায় পেয়েছি এই স্বাধীন বাংলা, স্বাধীন জাতি। তার সম্পর্কে যতই বলি না কেন কমই হয়ে যাবে। তিনি অমর হয়ে থাক বাংলাদেশের মাঠে, ঘাটে, পথে, প্রান্তরে কিংবা সোনালি অাঁশে।
    .
    খুব ভালো লেগেছে কবিতাটা।
    শুভ কামনা রইলো।

    Reply

Leave a Reply to Halima tus sadia Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *