কবিতা:টোকাই
লেখা :নিলয় রসুল
আমার সদা চলতে নেই
খাবার পানে তাঁকাতে নেই
পরিষ্কার জায়গায় থাকতে নেই
কারন আমি টোকাই।
আমার ভদ্রের ন্যায় কথা বলতে নেই
ভদ্রের ন্যায় হাসতে নেই
আমার শরীরে যে ওরা বসিয়ে দিয়েছে সিলমোহর
আমি নাকি টোকাই!
আমার ভাল কাপড় পরতে নেই
পঁচা ছাড়া খাবার খেতে নেই,
আহ্লাদ করে মা বলে ডাকতে নেই
কারন টোকাইদের বলে আনন্দ করতে নেই!
আচ্ছা ভেবে দ্যাখো তো তোমরা,
টোকাই বুঝি আমি সাধে হয়েছি,
কীভাবে ভুলে গেলে তুমি
এ যে তোমারই রাতের ভোগের অবৈধ ফসল।
আজ তব কেন এ ভেদাভেদ
কেন এ অত্যাচার, নির্যাতন
তোমাতে তুমি, আমাতে আমি
অবৈধ আমি নই,অবৈধ তোমার পুরুষাঙ্গ।
আমাকে বুঝি এখন প্রহার করবে
কর না, নিষেধ করছে কে?
টোকাইরে দূর্বল, করিও না বোধ
ধ্বংস হবে,নিপাত যাক তোমার ওই শক্তি,ওই পুরুষাঙ্গ।
অবৈধ হতে পারে আমার মতো টোকাই, তোমার মতো নরপিশাচদের পুরুষাঙ্গ, অবৈধ নয় কোন ময়ের মাতৃগর্ভ, যেখান থেকে তোমার আমার জন্ম!
হোয়াট এ টপিক! অসাধারণ!
চরম বাস্তবতা লিখে ফেলেছেন কয়েক লাইনে।
“আজকের টোকাই রা নিষিদ্ধ পল্লীর রাতের অগোছালো বিছানার ফসল। পরিচয়হীন জাতি তারা। ফুটপাত, রেলওয়েস্টেশন, বস্তির কুঁড়েঘরে তাদের বসবাস।
হারামি, টোকাই নামের পেছনের কারন, কোন অবৈধ অঙ্গের।
অবশেষে মাতৃগর্ভকে পবিত্রতার সম্মান।”
এতো সুন্দর করে কিভাবে লিখলেন কথাগুলো?
আমার রেটিং অনুযায়ী ৭.৫+ পেতে পারেন।
অসাধারণ একটি কবিতা।
পড়ে ভালো লাগলো।চমৎকার লিখেছেন।
টোকাই বলে আজ কতো শিশু অবহেলিত,নির্যাতিত।
সমাজে তাদের বোন মূল্যে নেই।তাদের হেয় চোখে দেখে।তবে তাদের জন্ম দিয়েছে কে…
সেটাইতো কথা।তবুও সেই পুরুষরাই তাদের টোকাই বলে দেখে।
চরম বাস্তবতা ফুটে উঠেছে কবিতায়।
শুভ কামনা রইলো।
‘টোকাই বলে ডেকো না ভাই দুঃখ পাব
লাত্থি উষ্টা মেরো না ভাই কষ্ট পাব।
তোমরাও মানুষ ও ভাই আমরাও মানুষ
তোমরা বড় আমরা ছোট এটাই পরিচয়’
অসাধারণ কবিতা।
বেশ কিছু বছর আগে পেপারে একটা কবিতা পড়েছিলাম।কবিতাটা ছিল এমন-
টোকাই আমি ছোট ছেলে
কাগজ কুঁড়ি রাস্তায়।
খুঁজে ফিরে টুকরো কাগজ
ওজন বাড়াই বস্তায়।
আজ অনেকদিন বাদে টোকাইদের নিয়ে লেখা কোনো কবিতা পড়লাম। বলবো না খুব ভালো লেগেছে। মোটামুটি লেগেছে। বেশ কিছু ভুল রয়েছে যেটা না থাকলে বেশি ভালো লাগতো। ভুলগুলো নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম :
তাঁকাতে – তাকাতে
কারন – কারণ
দ্যাখো – দেখো (যেহেতু পুরো কবিতায় চলিত ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে)
তব – তবে ( তব মূলত সাধু ভাষায় ব্যবহার হয় বলে জানি। তাই এটাও বেমানান)
দূর্বল – দুর্বল
কোন – কোনো ( কোন দ্বারা মূলত প্রশ্ন করা বোঝায়। যেমন – তোমার বাড়ি কোন জায়গায়?
আর তুমি কোনো কাজই পারো না। এখানে প্রশ্ন করা বোঝায় না। সরল বাক্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে।)
কর – করো (তুই সম্বোধনের ক্ষেত্রে কর। আর তুমি সম্বোধনের ক্ষেত্রে করো)
চিহ্ন ব্যবহারে ভুল রয়েছে। তাছাড়া কবিতার শেষের দিকে বাক্যগুলো সাজানোও ঠিক নেই। যেমন-
অবৈধ হতে পারে আমার মতো টোকাই, তোমার
মতো নরপিশাচদের পুরুষাঙ্গ, অবৈধ নয় কোন
মায়ের মাতৃগর্ভ, যেখান থেকে তোমার আমার জন্ম।
লাইনগুলো হবে এমন –
অবৈধ হতে পারে আমার মতো টোকাই,
তোমার মতো নরপিশাচদের পুরুষাঙ্গ।
অবৈধ নয় কোনো মায়ের মাতৃগর্ভ,
যেখান থেকে তোমার আমার জন্ম।
তাছাড়া চলিত ভাষার কবিতায় প্রহার শব্দটা ব্যবহার করাও আমার কাছে ঠিক মনে হয়নি।
আগামীর জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
তাঁকাতে-তাকাতে
কারন-কারণ
ভাল-ভালো
দ্যাখো -দেখো
তব-তবে
এ-এই
মতো-মত
দূর্বল-দুর্বল
কোন -কোনো(কোন দিয়ে প্রশ্ন বোঝায়)
কর-করো
বাহ্ ভালো লিখেছেন টোকাই আর সমাজ অবস্থা নিয়ে। তবে কিছু জায়গাতে কমা, দাড়ি, প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যবহার করার দরকার ছিল। যা ব্যবহার হয়নি। তবে বানানে ভুল দেখে নিবেন আর শুভ কামনা রইল।
একজন টোকাইয়ের মনের ভাবার্থ বেশ দারুণ ফুটিয়ে তোলেছেন। টোকাইদের জীবন সত্যি অনেক কষ্টের। শুভকামনা আপনার জন্য।