চাঁদনী নূর লামিয়া
কাল রাতে আমার পোষা কপোতটা মরে গেছে,
অদ্ভুত এক অস্থিরতায় সঙ্গিনী কপোতীটা বেঁচে আছে!
সাদা কালো ছোপের ডানা মেলে ওরা নীল আকাশটাতে উড়ত;
কয়েকটি পালক বাতাসে ভেসে ভেসে ঝরে পড়ত।
রিং পরানো পায়ে ওরা উঠোন জুরে হেঁটে বেড়াত,
খইগুলোর পাশে ঘুরঘুর করলেই–
দাদু লাঠি হাতে দৌড়াইত।
সঙ্গী হারিয়ে ব্যথিত হৃদয়ে খুপরিতে বসে আছে কপোতী;
বাকবাকম না ডেকে অচেনা এক শব্দ করে জানাচ্ছে মনের আকুতি।
মুঠো করে খই নিয়ে দাদু কপোতীকে খেতে দিল,
বিষাদের নীল যাতনায় কপোতী মুখ ফিরিয়ে নিল!
আজ বাড়ীর উঠোন শূন্য, আকাশে কত পাখি উড়ছে,
না ফেরার দেশে উড়ে যাওয়া,
কপোতের বিরহে —
কপোতী শোকে পুড়ছে।
ভালবাসাটা কেন এমন যন্ত্রণার হয়?
কী মানুষ কী পাখি সবেতে সমান অনুভূতির ঝড় বয়।
কিছুদিন পর,
দক্ষিণের লেবু গাছের পাতায় এক জোড়া টুনটুনি পেতেছে সংসার,
মধুর কিছু ঝগড়া আর মিষ্টি ডাকে উঠোনটা পূর্ণ হয়ে উঠেছে আবার।
তৃণলতা আর সবুজ ঘাসে বুনেছে ছোট্ট বাসা,
দিন রাত কত স্বপ্ন বুনে করে শত আশা।
সারাটি সময় কিচিরমিচির শব্দে কী জানি কথা কয়,
একোণ ওকোণ প্রতিটি কোণার সুখগুলি কুড়িয়ে লয়।
আরো কতকগুলি দিনের পর নতুন কিছু শব্দ শুনি,
সংসারে নতুন সদস্য আসাই খুশিতে ডানা মেলে উড়ছে টুনটুনি।
ছোট্ট বাসাতে ছোট্ট হৃদয়ে সইল না বুঝি এত সুখ,
কালবৈশাখী কেড়ে নিল সব,
শূন্য করে দিল টুনটুনির বুক।
তিনটি ছানা আর সঙ্গী হারিয়ে টুনটুনি দিশেহারা হয়ে উড়ছে উঠোনে,
মরীচিকা সুখের জায়গায় রিক্ততা জমেছে টুনটুনির মনে।
কত সহজে চলে গেল সুখ,
নিয়ে গেল সব যা কিছু ছিল পূর্ণ,
কিচিরমিচির শব্দে ডুবে থাকা
উঠোনটা পুনরায় হয়ে গেল শূন্য!
জীবন সংসার সুখ আশা স্বপ্ন
সবই তো ক্ষণিকের–
কাল যা কিছুর সূচনা হয়েছিল
তার শেষটা হয়তো আজকের।∞
এক কথায় বলা যায় খুব ভালো হয়েছে।
আমার হৃদয়েকবিতার জায়গা খুব কম, তবুও বলছি এই কবিতাটা হৃদয়েগেঁথেথাকার মত একটা কবিতা।
দৌড়াইত শব্দটি না দিয়ে বরং দৌড়াতো দিলে ভালো মানাতো। আর আরো না আরও হবে।
সত্যিই অসাধারণ একটি কবিতা।
হ্নদয় ছুঁয়ে গেল।
এক সাথে অনেক দিন থাকার পর যদি কেউ হঠাৎ চলে যায় অর্থ্যাৎ সঙ্গীহীন হয়ে খারাপ লাগবেই।
তেমনি কপোত কপোতী।
কপোত চলে যাওয়ার পর খাবার খেতে চায় না।
মুখ গুরিয়ে নেয়।
শুভ কামনা রইলো।
আমি যাস্ট মুগ্ধ, এককথায় মুগ্ধ হয়ে গেলাম! কবিতার রেশ মনের মধ্যে এখনও রয়ে গেছে।
কবিতাটা শুধু পশুপাখিদের জন্যই নয়, মানুষের জন্যও। সঙ্গীনিকে হারিয়ে অন্য সঙ্গী দিশেহারা হয়ে যায়, মর্মান্তিকভাবে প্রিয় মানুষটিকে হারালে সে কষ্ট সহ্য করতে পারে না কেউই। কপোত-কপোতীর দুঃখ কতো সুন্দরভাবেই না তুলে ধরলেন। টুনটুনিটা সংসার পেতে, ছানাপোনা নিয়ে ঘর সাজিয়েও তা কালবোশেখির ঝড়ে হারাতে হলো।
সুন্দর লিখেছেন আপনি।
কিছু বানান ভুল আছে।
জুরে- জুড়ে।
বাকবাকম- বাকবাকুম।
শুভ কামনা অনেক।
কপোতটা-কবুতরটা(আমি যতটুকু জানি কপোত নামে কোনো পাখি নেই)
কপোতীটা-কবুতরটি
বাকবাকম -বাকবাকুম
জুরে-জুড়ে
ছোট্ট -ছোট
বাহ্ বেশ চমৎকার লিখেছেন। কবিতার মাঝে বিরহ আর সুখ প্রকাশ হয়েছে পাখির। যেমন প্রথমে কবুতরে সঙ্গী মরে যাওয়ার কারণে সে আর আগের মতো নেই। আবার টুনটুনির ঝরে সব কেড়ে নিল। ঠিক তেমনিভাবে মানুষেরও মিল আছে । তবে নামের ক্ষেত্রে স্পর্শ দেওয়া জুরুরী, না হলে পাঠক বুঝবে কীভাবে কী পাখি উল্লেখ করেছেন। যদিও আমি বুঝেছি, কিন্তু অন্য কেউ নাও বুঝতে পারে। যাইহোক পড়ে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। শুভ কামনা রইল অনেক আপনার জন্য।