লেখকঃ
Sidratul Rafsana
……………
ময়মনসিংহ কে ক্ষণস্থায়ী বিদায় জানিয়ে আসার সময় নিয়ে আসি খুব শখের এক জোড়া পাখি। খুব ভালোবেসে দুটি নামও ঠিক করলাম-হিমু এবং নীলু।????
নায়িকা নীল বর্ণের হওয়ায় নামকরণ করা হয় নীলাঞ্জনা। সংক্ষিপ্ত করে নীলু। আর নায়ক হচ্ছে হলুদ বর্ণের,বুঝতেই পারছেন কি নাম হতে পারে! হ্যাঁ, হিমু।
ছোট একটি সংসার হিমু এবং নীলুর। একটি ছোট ঘর, দুটি খাবার বাটি, আর ছোট একটি হাঁড়ি।
সারাক্ষণ তাদের মধ্যে ভাব বিনিময় চলতেই থাকে। কিছুক্ষণ তুঁমুল ঝগড়া আর খুনসুটি,পরক্ষণেই আবার ভালোবাসার আদান-প্রদান।
দেখেলেই প্রাণ-জুড়ায়। ওদের নিয়ে বিকেল-ভ্রমন, কিছু ফটোসেশন করেই কিছুদিন কেটে যায়। আমার তখন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা চলছে, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির গড়মিলে চারদিকে হতাশার ঘন-কুয়াশা।
রুটিনহীন দিন কাটে, পাখিগুলোর তেমন খোঁজ নেয়া হতো না! ঘুম থেকে কখনোই সকালে ওঠা হয়ে উঠেনা। প্রতিদিনের মতো ঘুম থেকে ওঠে এক রুম থেকে অন্য রুমে যাওয়ার সময় আচমকা চোখ চলে যায় বারান্দায় ঝুলানো পাখির খাঁচায়। চিৎকার করে ‘মা’ কে ডাকলাম। আমার পাখি কই!!! আমার চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছা হচ্ছিলো। খাঁচায় জড়োসরো হয়ে নীলু বসে আছে। হিমু নেই! আশেপাশে অনেক খুঁজেও পেলাম না হিমুকে, হঠাৎ একবার দেখতে পেলাম কোন এক গাছের মগডালে, ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে। এরপর আর দেখতেও পাইনি।
সে আর ফিরে আসতে চায় না! কীভাবে হিমু বের হলো সেটা আজও অজানা!! নীলু এখন খুব একা, সবসময় মন খারাপ থাকে, কিছু খায় না। উড়িয়ে দিতে চেয়েও দেয়া হয়নি, ভেবেছিলাম আর একটি হিমু নিয়ে আসবো। কিন্তু সে সময় আর নীলু আমাকে দিলোনা!হঠাৎ করে সেও মারা যায়। হিমুর উপর বিশাল অভিমান তার।
আর আমার উপর রাগ,অভিমান সব।
শুধু আমি পারিনি কারও উপর রাগ-অভিমান করতে,কষ্টটা প্রকাশ করতে।
আমার রাগ সবটাই যে নিজের উপর।
বাসার পাশেই নীলুর চির নিদ্রার স্থান।
হিমু নেই, নীলুও নেই, কিন্তু আজও পরে আছে “হিমু????নীলু”-হীন “শূন্য খাঁচা”।
Heart touching story apu