রুপার হাতে হিমুর নীলপদ্ম
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০১৮
লেখকঃ vickycherry05

 3,693 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ vickycherry05

গল্প লেখকঃ
Rubaya Akter Luna
(এপ্রিল – ২০১৮)
………………

হাতের সাথে হাত ছোঁয়া লাগতেই শক্ত হয়ে যায় রুপার হাত। কিন্তু সে হাত সরিয়ে নেয় না। যেন সে চাচ্ছে আবার ছোঁয়া লাগুক।
পাশাপাশি হেটে যাচ্ছে দুজন। বাক্যহীন মুখে, দৃষ্টি সামনের দিকে। হঠাৎ হঠাৎ হাতের সাথে লেগে যাচ্ছে হাত। কিন্তু কেউ হাত সরিয়ে নিচ্ছে না। প্রতিটি ছোঁয়া হিমুর বুকে হাতুড়ির বারি মারছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে রুপার। তবুও কেউ হাত সরিয়ে নিচ্ছে না।
হিমু যদি তাকাতো, দেখতো রুপার দুগালে ফুটেছে রক্তজবা, চোখে ভালবাসার ঢেউ।

মেঘাচ্ছন্ন পরন্ত বিকেল। ঠাণ্ডা বাতাসে উড়ছে নীল শাড়ীর আঁচল, মেঘকালো চুল।
হলুদ পাঞ্জাবির সুতো ভেদ করে শিহরন ছরিয়ে দিচ্ছে হিমুর শরীরে।
টিপটিপ বৃষ্টি তে হালকা ভেজা রাস্তা শীতলতা মাখিয়ে দিচ্ছে হিমুর খালি পায়ে।
নীল চুড়ির রুনুঝুনু শব্দে কানের পেছনে চুল গুজে দেওয়া যেন রুপার এক শিল্পকর্ম।

টিপটিপ বৃষ্টিকে ছেরে, ঝমঝমানো বৃষ্টিকে ছেরে দিলো আকাশ।
হাতের ছোঁয়াছুঁয়ি খেলার ইতি টেনে, রুপার হাত ধরে হিমু ঠাই নিলো কদম গাছের নিচে।
বর্ষাকালের গাছ ভর্তি কদম থেকে পাঁচটি ফুল পেরে নিলো হিমু।
হিমুর একহাতে দৃশ্যমান কদম, অন্যহাতে অদৃশ্য পাঁচটি নীলপদ্ম। দশটি ফুলই সে তুলে দিলো রুপার হাতে।

ভিজে গেছে দুজন, হাঁটছে পাশাপাশি। শক্ত লম্বা আঙুলের মাঝে রুপার নরম চেকন আঙুল গুলো গেথে নিয়েছে হিমু।
মাথা থেকে গড়িয়ে পড়া বৃষ্টিতে চুল লেপটে গেছে রুপার গালে। হিমু জানেনা, রুপার চোখের কাজল লেপটে দেয়ার অপরাধটা বৃষ্টির পানির চেয়ে বেশি করেছে নোনা জল।
রুপাও দেখেনি, আজ হিমুর ঠোঁটে সিগারেটের তৃষ্ণা নেই, আছে ভালোবাসার তৃপ্তি।

হেটে যাচ্ছে দুজন নদীর পথে। ঘাটে নৌকা বাধা আছে। পথ এখনো অনেক বাকি।
হ্যাঁ, হিমু জানে, আজ বৃষ্টি হলেও জোছনা হবে। এমন জোছনা গত কয়েক যুগেও হয়নি।
হিমু রুপা তাদের হেটে যাওয়া পথে এঁকে দিয়ে গেছে ভালোবাসার দাগ।

মাঝ নদীতে নৌকা ভাসছে দুজন ভালোবাসাকে নিয়ে।
হিমুর হাতে রুপার হাত, রুপার হাতে হিমুর পাঁচটি নীলপদ্ম।
হিমুর চোখে পবিত্র ভালোবাসা, রুপার চোখে সুখের জল।

এই নীলপদ্ম হারাবে না,
হারাবে না নীল শাড়ী,
রয়ে যাবে হলুদ পাঞ্জাবি,
থাকবে খালি পায়ের পদ চিহ্ন,
ফুটে যাবে কদম ফুল,
বয়ে যাবে বৃষ্টি,
সুধু গড়ে উঠবে না হিমু রুপার নতুন লেখা,
“কারন গল্পের জাদুকর হারিয়ে গেছে”

অসম্পূর্ণ হিমু ও রুপার গল্প মনে হতাশা সৃষ্টি করে। তাই নিজের মনের হতাশা দূর করলাম। হিমুকে তার বাবার শিক্ষা ভুলিয়ে দিয়ে রুপার ভালোবাসা ধরিয়ে দিলাম।

বেঁচে থাকুক হিমু,
বেঁচে থাকুক রুপার ভালোবাসা,
বেঁচে থাকুক হুমায়ুন আহমেদ স্যার,
বেঁচে থাকুক সকল ভালবাসা।

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

০ Comments

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *