রচনা
প্রকাশিত: অগাস্ট ৪, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 2,514 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

লেখক- রবিউল হোসেন

আমি এখন একটা রচনা লিখব। উপরে লেখা গল্প, গল্পের নাম রচনা। আবার গল্পের শুরুতেই বলছি, আমি একটা রচনা লিখব। পাঠকরা নিশ্চয় বিভ্রান্ত। আমি নিজেই এই বিষয়টা নিয়ে বিভ্রান্ত! প্রকৃতি বিভ্রান্তি পছন্দ করে, তাই মানুষের জীবনে অবধারিত ভাবে বিভ্রান্তকর মুহূর্ত আসে।
আমার রচনার (নাকি গল্প!) নাম “আমার প্রিয় ব্যক্তি”। সাহিত্যিকরা প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পরে জীবনি লিখে। আমি প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আগেই আমার জীবন নিয়ে গল্প লিখছি, এই জন্য সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
কলেজে ভর্তি হয়েছি দেড় বছরের মত হবে। প্রতিদিন কলেজে যাই, কিন্তু ক্লাস করি মাত্র একটা। ইংরেজী ক্লাস ছাড়া কোনো ক্লাস করি না, সারাক্ষন কলেজের লিছু গাছের নিচের চত্বরে আড্ডা দেই।
কলেজের পরিক্ষা শুরু হয়ে গেল, বাংলা ২য় পত্র পরিক্ষা দিচ্ছি। আমার সব সময় নির্ধারিত সময়ের আগেই লেখা শেষ হয়, আজকেও তাড়তাড়ি লেখা শেষ। সময় বাকি আছে ৪৫ মিনিট, আর মাত্র একটা রচনা লেখা বাকি আছে। আমি সিলেক্ট করলাম “আমার প্রিয় ব্যক্তি” রচনাটি লিখব। বাইরে মন খারাপ করা ফোটা ফোটা বৃষ্টি পড়ছিল, তাই পরিক্ষা হলে আমার অদ্ভুত খারাপ লাগা কাজ করছিল।
পুরো রচনাটা আমার মনে না থাকাই স্বাভাবিক, তবে আপনাদের জন্য আমার ঐ দিনের রচনার সারমর্ম লেখার চেষ্টা করছি।
আমার প্রিয় ব্যক্তি হচ্ছে আমার মা। অনেকের প্রিয় ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথ, হুমায়ূন আহমেদ, আইনস্টাইন, মাদার তেরেসা ইত্যাদি বিখ্যাত ব্যক্তি। আমি খুব সাধারন একটা ছেলে, ঐসব বিখ্যাত ব্যক্তি আমাকে স্পর্শ করে না। আমার কাছে আমার মা ই প্রিয়। কেন মা আমার প্রিয় ব্যক্তি সেটা জানাচ্ছি একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করে।
ঘটনা-১
মাত্র দুই মাস আগে আমার দুই বছর বয়সি ছোট বোন রেখা ডেঙ্গু জ্বরে মারা গেল, আর এখন আমার গায়ে জ্বর। আমার বাবা প্রবাসি, তবে দেশের সংসারের প্রতি তার টান নেই। তিন চার মাস পরপর বাবা একবার টাকা পাঠান, তাও খুব অল্প পরিমানে। এই তিন চার মাসে দোকান বাকি চলে, ঘরভাড়া, স্কুল বেতন বাকি থাকে, আনুসাঙ্গিক প্রায় সব কিছুই আমাদের বাকিতে চলে। তাই ঘরে হঠাৎ করো অসুখ হলে আমার মা মহা সমস্যায় পড়ে যায়। যেদিন বাবার টাকা আসে সেদিন রাতেই সব বাকি টাকা পরিশোধ করে মায়ের হাত প্রায় খালি থাকে, তারপরেও দেখা যায় এক মাসের ঘর ভাড়া কম দিতে হয়েছে।
বাবার টাকা এসেছে আরো দুইমাস আগে, মায়ের হাত এখন একদম খালি। জ্বর আসার আগের দিন একটা চিপস খেতে চেয়েছিলাম, মা আমাকে একটা ধমক দিয়ে করুণ মুখ করে চলে গিয়েছিল।
আমার জ্বরের আজ ২য় দিন। সকাল থেকেই মাকে কেমন অস্থির অস্থির লাগছে, দুপুরে মা আমাকে নিয়ে বের হলেন। স্বর্নকারের দোকানে গিয়ে নাকের নাকফুল খুলে দিয়ে টাকা নিলেন, আমাকে সোজা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলেন ভর্তি করাতে। সামান্য জ্বরের কারনে ডাক্তাররা রোগি ভর্তি নিতে চাচ্ছেন না, মা ডাক্তারের সাথে ঝগড়া করে আমাকে ভর্তি করালেন।
আমাকে ভর্তি করে ওয়ার্ডে এসেই মা দেখলেন আমার বয়সি একটা ছেলের লাশ নিচে পড়ে আছে, লাশের আশেপাশে কেউ নেই। মা আমাকে কোলে তুলে নিয়ে হঠাৎই দৌড়াতে শুরু করলেন। রিক্সা নিলেন না, দৌড়ে দৌড়েই মেডিকেল থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত চলে আসলেন।
এখনও হঠাৎ হঠাৎ আমি মাঝ রাতে স্বপ্ন দেখি, ২৭-২৮ বছরের একজন মা তার ৯-১০ বছরের একটা শিশুকে বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে দৌড়াচ্ছেন। আশেপাশের মানুষ অবাক হয়ে তাকে দেখছে, সেদিকে তার খেয়াল নেই। তার সমস্ত জগৎ তার ছেলে, যেভাবেই হোক- তার ছেলেকে সে বাঁচাবেই।
এমন আরো অনেক ঘটনা আছে, আমার এমন মা ই আমার প্রিয় ব্যক্তি। এখন মাঝ রাতে বারান্দায় বসলে মনে পড়ে ঐসব নানা ঘটনা। বুকের ভেতর কেমন যেন অস্থিরতা কাজ করে। একজন মা শুধু একজন মা নন, একটা পৃথিবী!

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

৬ Comments

  1. Halima tus Sadia

    যদিও গল্পের নাম রচনা।তবে রচনার মতোই হয়ে গেছে।
    এটা প্রতিযোগিতার গল্পের মধ্যে পরে না।
    আরও ভালো লিখার চেষ্টা করবেন।

    মা শব্দটি অতি মধুর।মায়ের তুলনা হয় না এ জগতে।আমারও প্রিয় মানুষ মা।

    বানানে ভুল আছে..

    মত–মতো
    সারাক্ষন–সারাক্ষণ
    পরিক্ষা —পরীক্ষা
    লিছু—লিচু
    তাড়তাড়ি–তাড়াতাড়ি
    ফোটা ফোটা—ফোঁটা ফোঁটা।

    শুভ কামনা রইলো।

    Reply
  2. Anamika Rimjhim

    বানান ভূল গুলো দেখে নিবেন। আর গল্প প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহণ করলে উপযোগী গল্পই লেখা উচিত। অন্য কিছুনা 🙂
    তবে ভাল ছিল।লেখার উন্নতি কামনা করছি।

    Reply
  3. আফরোজা আক্তার ইতি

    গল্পের মেইন থিম অত্যন্ত সুন্দর। মা নিয়ে গল্প সবসময়ই সুন্দর। তবে এভাবে গল্পটা না লিখে সাধারণ কোন গল্পের ন্যায় লিখেও অসাধারণ গল্প তৈরি করতে পারেন। যেহেতু গল্পের নাম রচনা দিয়েছেন,তাই গল্পটিও সেভাবেই লিখেছেন বুঝতে পেরেছি। মা সর্বদাই শেষ্ঠ। তাঁর তুলনা কখনোই হয় না। বানানের ভুল রয়েছে অনেক।
    লিছু- লিচু।
    পরিক্ষা- পরীক্ষা।
    ফোটা- ফোঁটা।
    সাধারন- সাধারণ।
    প্রবাসি- প্রবাসী।
    পরিমানে- পরিমাণে।
    দোকান বাকি চলে- দোকান বাকিতে চলে।
    করো- কারো।
    স্বর্নকারের- স্বর্ণকারের।
    কারনে- কারণে।
    রোগি- রোগী।
    দৌড়াতে- দৌঁড়াতে।

    Reply
  4. জুয়েল ইসলাম

    ম- মা(হবে)।আরো ভুল আছে যা উপরে সাদিয়া ও ইতি আপু দেখিয়েছেন।আশা করি সংশোধন করে নিবেন। থিমটা ভালো ছিলো,তবে গল্পটা আরো ভালো করা যেতো।ধন্যবাদ।

    Reply
  5. Sajjad alam

    আগে কিছু ভুল দেখে নেই,
    কলেজে ভর্তি হয়েছি দেড় বছরের মত হবে। ____ মতো
    .
    জীবনি___ জীবনী
    সারাক্ষন___ সারাক্ষণ
    লিছু___ লিচু
    পরিক্ষা___ পরীক্ষা
    তাড়তাড়ি____ তাড়াতাড়ি
    সাধারন___ সাধারণ
    .
    বয়সি___ বয়সী
    প্রবাসি____ প্রবাসী
    রোগি___ রোগী
    কারনে___ কারণে
    .
    নামকরণটা নিয়ে অারো ভাবতে পারতেন।
    কী থেকে কী হয়ে গেল কিছু বুঝতে পারলাম না।
    খুবই নিম্মমানের গল্প।
    কাচা হাতের লেখা মনে হলো। লেখক/লেখিকার প্রতি অনুরোধ থাকবে বেশি বেশি বই পড়ুন।
    শুভ কামনা রইলো।

    Reply
  6. Mahbub Alom

    এভাবে লিখে লেখক রচানা লিখেও যোগা খিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেছেন।

    মা শব্দটির কোন মানে হয়না,কোন শব্দ দিয়ে সেই অনুভূতি প্রকাশ করা যায়না।
    মমতাময়ী এই মাকে ঘিরে তৈরি হয় হাজারো গল্প।সেই গল্পের লেখিকা মা।

    ঘটনাটা অনেক ভালো লেগেছে।
    আর কিছু নয়।

    Reply

Leave a Reply to Mahbub Alom Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *