লেখকঃ
সোহানা রহমান
(মে – ২০১৮)
………………
নাবিলা এই প্রথম হাসিবের সাথে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে অাসলো!
নাবিলা হাসিবের সংসার জীবন প্রায় অাট বছরে পা রাখলো ঝগড়া প্রায় হয় তবে নাবিলা বাড়ি ছাড়েনি কখনো। অাজ প্রথম রাগ করে বড় বোনের বাসায় গিয়ে ওঠলো!
বড় বোন রেহানা জানে তাদের ব্যাপারটা তাই এখানেই নাবিলর অাসা হলো।
রেহানাঃ দুর সেই কবে থেকে এসে মুখ গোমড়া করে বসে অাছিস বলি এমন করলে কি সব ঠিক হবে?
নাবিলা বললো দেখ অাপা অামি কি কম চেষ্টা করেছি? মানত করেছি। বিভিন্ন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করেছি। চিকিৎসা নিয়েছি। সন্তান কি গাছের পাতা যে ছিড়ে ওকে দিয়ে দিবো। বিয়ের অাট বছর হলো বুঝলাম তাই অামার দোষ। সমস্যা হাসিবেরও থাকতে পারে ও কখনো নিজেকে টেস্ট করেনি। করতে বললে অামাকেই দোষ দেয়। ছেলেদের সমস্যা হয়না এডুকেটেড ছেলে হয়ে কি করে এমন বলে?
রেহানাঃ থাক ও যেহেতু বুঝেনা থাক অার কিছুদিন যাক দেখি কি হয়।
নাবিলা হাসিবের ভালোবেসে বিয়ে তবে অশান্তি হলো তাদের অতি অাশার অালো করে ঘরে কোন সন্তান হয় না
এ নিয়ে তাদের জগড়া।
এম্নিতে দুজন দুজনকে বেশ ভালোবাসে।
দুজন দুজন কে ছাড়া একা থাকতে কষ্ট এই প্রথম হাসিব একা ভাবছে বসে কি করবে?
কোথায় গেলো রাগের মাথায় কিছু করে বসেনিতো অাবার?
দুর কেন যে লাগতে গেলাম?
কি করি এখন মোবাইল টাও সুইচ অফ- দেখাচ্ছে…!
যাবেই বা কোথায় বড় অাপার বাসায় যায়নি তো?
যেতেও পারে বড় অাপাকে বেশ ভালোবাসে সে। তাহলে বড় অাপার বাসায় ফোন দিয়ে দেখি ওখানে গেলো কিননা?
এই ভেবে ফোন দিলো….
রিং………..রিং……….
হ্যাঁলো…….!!
জ্বী অাসসালামু অালাইকুম…!
রেহানা বেগম ফোনটি ধরেছিলো বুঝে গেলো হাসিব
কে হাসিব?
হ্যাঁ অাপা!
অাপা মানে নাবিলা কি অাপনার এখানে?
রেহানা বললো হ্যাঁ শুনলাম তুমি নাকি বকেছো?
তাই চলে এলো!
হ্যাঁ মানে না! হলো কি বুঝতে পারেনা ঠিক অামাকে তেমন। তাই এক দুই কথায় যায় হোক তাই বলে কি অামাকে একা রেখে চলে যাবে?
হাহা হা রেহানা হেসে বললো তোমরা অাসলেই পাগল!!!
অাপা নাবিলাকে একটু দেন না অামি সরি বলি?
অার অামি অাসছি।
হুম ঠিক অাছে অা… তবে এখন তো ফোন ধরবে না রেগে আছে। তুমি অাসো সব ঠিক হয়ে যাবে।
অাচ্ছা অাপা অামি অাসছি।
হাসিব বুঝতে পারলো নাবিলা ছাড়া বড় একা সে চারপাশ টা শূন্যতা!
না না অামি হয়তো বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি নাবিলাকে।
সন্তান না হবার সমস্যা তো অামারো হতে পারে। অামি যাবো ডাক্তার দেখাবো।
সেদিন অাপার বাসায় গিয়ে অালোচনা করে নাবিলা হাসিব দুজন ডাক্তার কাছে গেলো। পরিচিত ডাক্তার তাদের সব বললো ডাক্তার তাদের দুজনকে টেস্ট করার জন্য বললো। তারা উভয়ে টেস্ট করালো। গত দুদিন ধরে তারা ব্যস্ত টেস্ট নিয়ে। অাজ রবিবার টেস্ট এর রিপোর্ট দিবে সকাল সকাল যেতে হবে। দুজনেরই বুক ধকধক করছে। কে জানে কি হয়। নাবিলা এর অাগে টেস্ট করিয়েছে তার সমস্যা ধরা পরেনি। তাহলে সমস্যাটা কি হাসিবের মাঝে?
যায় হোক ডাক্তার তাদের ডাকলো অার বললো,
অাপনারা শান্ত হয়ে অামার কথা শুনবেন। অাপনাদের যে সমস্যা তা অনেক অাগে অাশার দরকার ছিল, তাহলে এতদিন অপেক্ষা করা লাগতো না।
অাপনাদের দুজনের মাঝে হাসিব সাহেবের সমস্যা একটু বেশি, তবে চিকিৎসা অাগে নিলে এমনটা হতো না।
ছোট একটা সমস্যা। অাপনাদের অবেহেলার কারণে বড় পর্যায়ে নিয়ে বসে অাছেন।
এ যুগের মানুষ হয়েও যে ভুলটা করলেন তার মাশুল এতদিন ধরে দিলেন।
যাই হোক অাশা করি অাপনার খুব দ্রুত মা বাবা হবেন।
অামি কিছু নিয়ম দিচ্ছি তা মেনে নিবেন ঔষধ খাবেন নিয়মিত।
হাসিব বুঝতে পারলো তার ভুলটা।
বাসায় এসে নাবিলাকে সরি বললো।
অাসলে অামার বুঝার ভুলে এমন হল। অারো অাগে অামি যদি যেতাম তাহলে এমনটা হতো না। একটু অবহেলায় অাটটি বছর শাস্তি পেতো হলো। তোমাকে না জেনে বলেছি অনেক কথা।
অার এমনটি হবেনা প্লিজ অামাকে মাফ করে দাও!
বাবুর বাবা হিসেবে।
হাহা্হ নাবিলা হাসিবের দুষ্টুমীর ছলে মাফ করে দিলো।
দুজন অানন্দে অাবার সুখে দিন কাটার প্রতিশ্রুতি নিলো।
সত্যি অবেহেলায় অনেক ত্যাগ দিতে হয় তা সময়ে বুঝতে হয়।
০ Comments