পঞ্চরত্ন
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 2,010 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

কবিঃ SHAFIUR RAHMAN

দূঃখ, কষ্ট, কাতরময় উহার জীবনটি
কি অপরাধ করিয়াছে প্রভু, কী করিয়াছে ত্রুটি?
ক্রন্দনরত শুনিয়াছি আমি, তাহার জীবনী গল্প
ইহা নহে আমার আবেগের কথা নহে কোনো কল্প।
জন্ম যখন হইয়াছে শীলুর দরিদ্র পরিবারে
বয়স দুই-চার নাহি হইতে বাপেরে কলেরা মারে।
পিতৃ স্নেহহীন, অসুস্থ মাতা, ছিলনা কভু যত্ন
জ্যেষ্ঠ-কনিষ্ঠ পঞ্চ ভ্রাতা-ভগিনী, জননীর পঞ্চরত্ন।
পিতৃহীনতায়,অনাদি বসুধায়,দুরধিগম্যের সঙ্গী দৈন্য
জীবন সংগ্রামে বাঁচিবার তরে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাই সৈন্য।
পাঠশিক্ষা ডুবাইলো,সংসার-ধর্ম জ্ঞাপিলো তাহার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা
পঞ্চরত্ন, মাতৃকার, আহার্যের তিনিই বহুমাত্রিক দাতা।
বিষয়-আশয় সবই লইলো, পিতৃব্য তাহা করিয়া চতুর
হীরে-মানিকেরা পথে বসিয়াছে, ছলনাতে হইয়াছে ফতুর।
মাতা কহিল,”রাজ,করিলে কেনো মোদের সহিত এরূপ মীরজাফরি?
তোমার সহিত আমার রইলো জনমের তরে আড়ি।”
“তোমার উঠোনে তবে আমি বলিয়া যাইতেছি আজি,
একদা তুমি নিঃস্ব হইবে,পথে-ঘাটে ভিখ মারিবে এই মোর বাজি!”
পর দিবসে শমন লইলো পঞ্চ’মায়ের লাশ
রাজ কহিল,”মোর লগে লইলে বাজি, হইবে এমন বিনাশ। ”
প্রগাঢ় রজনীতে পঞ্চরত্ন গ্রাম ছাড়িয়া চলে
এমত সময় শুনিতে পারিলো,কে যেনো “জল,জল” চেঁচিয়া বলে!
আহত মনুষ্য পরিয়া রয়েছে, করিয়া অনুসন্ধান
বলিল সে পথিক,”বাঁচাও আমারে, আমি গ্রাম-প্রধান।”
আঁচল খুলিয়া শিলু আনিলো পুকুর হইতে সলিল,
পথিক বলিল,”নবগ্রামের পতি আমি, মোর নাম জলিল।
আসিয়াছি এ গাঁয়ে করিতে বিচার জমি লইয়া দ্বন্দ্ব
করিলাম ভাগাভাগি দু’পক্ষেরি, করিয়া খন্ড খন্ড।”
“আসিলো দাবি অন্যায় বিচারে পাইবো আমি ঘুষ
বলিলাম, এজীবনে ঘুস লইব না, এখনো হারায়নি হুঁশ।
বিচার শেষে প্রথম পক্ষ তথাপি করিয়াছে তাড়া,
পথিমধ্য মার লাগিয়াছে, লোক করিয়াছে ভাড়া।”
“সবই শুনিলে তোমরা, এইবার কহ দেখি বাছা
এই নিশি-কালে বাহিরে কেন, ছাড়িয়া মাতৃ খাঁচা?”
“আশ্রয়হীন অনাথ মোরা, করিতেছি আশ্রয়ের খোঁজ
দিবারাত্রি ভুখ রয়েছি, অন্বেষণ করিতেছি ভোজ।”
“চলো তবে বাছা, খোদার করুণায় মোর অত্যাধিক ঘর-বাড়ি
চাহিলে তোমরা, সেথায় আমি থাকিতে দিতে পারি।”
“এমনি মোরা থাকিবনা, যদ্যপি করিতে দেন কাজ
তবে আপনার নিবাসে থাকিতে, মোদের নাহি লাজ।”
ছুটিয়া চলিলো ভ্রাতৃস্কন্ধে তাহাদের জীবন রথ,
কঠোর চিত্তে একতা হইয়া ওষ্ঠে ফুটিলো শপথ।
“বলো হে ভ্রাতা-ভগিনী, বলো হে উদাত্ত কণ্ঠস্বরে,
জীবনের তরে বাঁচিবার চাহি, নহে বৃথা জনম এ সংসারে”।
“একতা হইয়া করিলে কার্য, গড়িতে পারিবো নিকেতন
যেখানে সেবিবো মোদের ন্যায় অনাথ-এতিমরে যতন।”
অধ্যবসায়কে মানিয়া লইয়া সফল হওয়ার যন্ত্র,
সেথা হইতেই সূচনা হইলো পঞ্চরত্নের মন্ত্র।
(সংক্ষেপিত)

সম্পর্কিত পোস্ট

নির্বাক_পাখি

নির্বাক_পাখি

হে কবি,      শক্ত করে ধরো,       তোমার অস্ত্র। আবারো,      তোমার অস্ত্রের মধ্য দিয়ে,      রক্তে রঞ্জিত করে দাও,      এই শুভ্র ময়দান। হে কবি,     শক্ত করে ধরো,     তোমার অস্ত্র। যেভাবে,     কবি নজরুল ধরেছিল,      ইংরেজদের বিরুদ্ধে। যেভাবে,    কবি সুকান্ত চেয়েছিল,  ...

তুলসী বনের বাঘ

তুলসী বনের বাঘ --আল-মুনতাসির। চিনলে নাকো তাকে সে যে তুলসী বনের বাঘ ! ছদ্মবেশে ছড়িয়ে দিলো বিষম বিষের নাগ। ইচ্ছে করে কামড় খেলে, ভরলে হৃদয় বিষের নীলে কী করে আর দেখবে প্রিয় কৃষ্ণচুড়ার বাগ ? চিনলে নাকো তাকে সে যে তুলসী বনের বাঘ ! চোখে তোমার বিষের তেজে পর্দা এলো নেমে, জগত...

ভালোবাসা রং বদলায়

: ভালোবাসা রং বদলায় লেখা: অদ্রিতা জান্নাত ছোট মেয়েটা খুব করে কেঁদে কেঁদে অনুরোধ করেছিল আমি যেন একটি হলেও তার কাছ থেকে ফুল কিনে নেই, ঠিক যতবার আমি তাকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলাম সে যেন ঠিক ততটাই আমার পিছু ছুটতে লাগল। আচ্ছা, এই যে শিশুটা যে কিছু টাকার বিনিময়ে আমাকে...

৮ Comments

  1. আরাফাত তন্ময়

    সেরার পুরস্কার অবশ্যই এই কবিতার পাওয়া উচিত বলে আমার মনে। এখানে মন্তব্য করার যোগ্যতা এখনো আমার হয়ে উঠেনি।
    অগ্রিম অভিনন্দন।

    Reply
    • SHAFIUR RAHMAB

      ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কাব্যটি নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার জন্য।

      Reply
    • Shafiur Rahman

      ধন্যবাদ প্রিয়, কবিতাটি সম্পর্কে আপনার মনোভাব ব্যক্ত করার জন্য।

      Reply
  2. Shafiur Rahman

    ধন্যবাদ প্রিয়,কাব্যটি নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার জন্য।

    Reply
  3. আফরোজা আক্তার ইতি

    এতো সুন্দর একটি কবিতা পুরোটাই পড়তে ভালো লাগছিল,আমি তো রীতিমতো আবৃতি করে পড়ছিলাম। সংক্ষেপিত কেন দিলেন,পুরোটাই দিতেন। অসাধারণ একটি কবিতা! কবিতাটি সম্পর্কে যতই বলব ততই কম হবে।
    দূঃখ- দুঃখ।
    ঘুস- ঘুষ।
    অনেক শুভ কামনা রইল।

    Reply
    • Shafiur Rahman

      অসংখ্য ধন্যবাদ আপু কবিতাটি সম্পর্কে আপনার মনোভাব ব্যক্ত করার জন্য।
      সময় সল্পতার কারনে পুরো কবিতাটি লেখা হয়নি।
      ইনশাআল্লাহ খুব শিঘ্রই সমাপ্ত করবো।
      বিঃদ্রঃ “ঘুষ” বানানটি নির্ভুল।

      Reply
  4. Halima tus sadia

    বয়স যখন দুই কিংবা চার হয় তখনই শিলুর বাবা কলেরায় মারা যায়।বাবা ছাড়া প্রতিটা সন্তানই এতিম।এতো আত্মীয় স্বজন,ভ্রাতা,ভগ্নি যতোই থাকুক না কেনো পিতৃের মতো আদর করে না।

    সুন্দর একটি কবিতা। খুব ভালো লাগলো।
    শব্দগুলোও খুব সন্দরভাবে ছন্দে মিলিয়েছেন।
    বানানে ভুল নেই তেমন
    দূঃখ–দুঃখ
    ঘুস-ঘুষ
    শুভ কামনা রইলো।

    Reply
    • Shafiur Rahman

      ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না।????

      Reply

Leave a Reply to Halima tus sadia Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *