লেখকঃ
Khairunnesa Sultana
(এপ্রিল – ২০১৮)
…………………
– হ্যালো!
– হ্যালো, সাবের সাহেব, সালামোলাইকুম!
– রাখো তোমার সালাম মিয়া! কি করে আসছো এটা তুমি?
– যা উচিত ছিলো তাই কইরা আসছি!
– একটা টাকাও পেমেন্ট পাবিনা তুই ইতরের বাচ্চা, কি ভাবসোস তুই এটা করে পার পেয়ে যাবি? তোকে পুলিশের হাতে ধরাতে আমার এক মিনিটও লাগবেনা! ”
– এত্তো কস্ট কইরেন না সাবের ভাই, ওই এলাকার সিসিক্যামেরায় আমি আমার চেহারাটা দেখাই আসছি, ওই এলাকা থেইকা পালাইয়া না গিয়া বরং একখ্খান রিকশা নিয়া আসছি, পুলিশ খুজলেই আমাকে সহজে পাইয়া যাবে, আমি চাই তারা আমারে খুইজা বাইর করুক আর কালকের সকালের পত্রিকায় আপনের বন্ধুর সাথে আমার বড় একখ্খান ছবি ছাপা হোক! আর হ্যাঁ এই ফোন নাম্বার দিয়া খুজলেও আমাকে পুলিশ সহজে ধরতে পারবে। তাই দেরি না কইরা আমার নাম্বারটা তাদের দিয়া দিয়েন, আইচ্ছা এখন রাখি, ক্ষিদা পাইসে আমার খুব! আগুন গরমে শরীর পুরা ভিইজা গেসে! আপনে এখন ফোনটা রাখতে পারেন।
মাথাটা গরম হয়ে যাচ্ছে সাবেরের! সে বিড়বিড় করে অনবরত গালি দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু কথায় কথায় একটা কথা সাবেরের মাথায় আসলে যে, নাহিদ নামের এই ছেলেটির সাথে কি তার আদৌ কথা বলা ঠিক হয়েছে কিনা। ঠিকই তো বলছিলো সে, যে এই ফোন কলটা দিয়েও তাকে ধরতে পারে পুলিশ, কিন্তু একইসাথে সাবেরও তো ফেসে যাবে! নাহ, কিচ্ছুতেই পুলিশকে কিছু বলা যাবেনা! বর্তমানে আইনের লম্বা হাতটার নাগাল সম্পর্কে জেনেও ছেলেটি এই অপরাধ করলো! ছেলেটির দুঃসাহসিকতার কথা ভেবে সাবের শিউরে উঠলো!
নাহিদ!
পেশা: খুন করা , সামান্য টাকার জন্য রাস্তার কুকুর থেকে নাম করা পলিটিশিয়ানকেও খুন করতে পারবে সে।
ঢাকা ভার্সিটিতে পড়ার কথা ছিলো এই ছেলেটির, পরীক্ষার প্রস্তুতিও বেশ ভালো ছিলো। কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া হলো না! সেটাও বেশ অদ্ভুত এক ঘটনা।
নাহিদ খুব শান্ত ছিলো, চরিত্রও ভালো। সিগারেট, মদ, অসৎ সঙ্গ এমন কিছুই তার ছিলো না। ভালো পরিবারের ভালো ছেলে যাকে বলে।
ভার্সিটি যুদ্ধ, কি টানটান উত্তেজনা সব পরীক্ষার্থীর মনে!
পরীক্ষার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি, কোচিংয়ে যেতে হবে পরীক্ষা দিতে হবে, এই সেই ভেবে নাহিদ হাটছে। তাড়াহুড়োতে একটা ছেলের সাথে ধাক্কা লেগে গেল!
“ইশ , দুঃখিত!”
নাহিদ ক্ষমা চেয়ে সামনে আগাতে গেলেই তার শার্টের কলারে একটা টান অনুভব করলো সে। পিছে ঘাড় ঘুরে তাকাতেই দেখে সেই ছেলেটি তার কলারটা টেনে ধরে আছে, সাথে তার পাশে দাড়িয়ে আছে আরও কজন ছেলে, মনে হচ্ছে বেশ ক্ষেপে গেছে সবাই! পাশের চায়ের দোকান থেকেও উঠলে আসলো আরও কজন ছেলে। নাহিদ সামান্য ঘাবড়ে গেল, কিন্তু স্বাভাবিক গলায় বলল, ” আমি ইচ্ছে করে ধাক্কাটা মারিনি, ব্যথা পেলে আমি দুঃখিত! ”
এটা শোনার সাথে সাথে নাহিদের গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো ছেলেটি, আর চিৎকার করতে লাগলো যে, ” জানোস আমরা কার লোক? কার গায়ে হাত দিসোস জানোস তুই? ”
নাহিদ ক্ষমা চাইলো, একবার না বারবার চাইলো। কিন্তু লাভ হচ্ছেনা, ইতোমধ্যেই নাহিদের গালে চার পাচঁটা চড়ের দাগ বসে গেছে। দশবারোজন ছেলে মিলে তার গাল লাল করে দিয়েছে …
নাহিদের ক্লাসের টাইমও চলে যাচ্ছে। রাগে, বিরক্তিতে নাহিদ ছেলেটিকে খুব জোরে একটা ধাক্কা দিলো। ছেলেটি সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেল, আর ছেলেটির দলবল নাহিদের উপর একপ্রকার ঝাপিয়ে পড়লো। এইসবের মধ্যে রাস্তার কেউ একজন বোধ হয় পুলিশকে কল দিয়েছিলো আর একটা সময় পর পুলিশ আসলো। পুলিশ এসে একসাথে সবাইকে থানায় নিয়ে গেল, নাহিদের মোবাইল, টাকা সবই জমা নিয়ে নিয়েছে পুলিশ যার ফলে নাহিদ কারও সাথে যোগাযোগও করতে পারছেনা। পুলিশের বড় অফিসার হাজির হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, নাহিদ জানতে পারে সে ছেলেটির নাম স্বপন, খুব বড় পলিটিশিয়ানের শালা হয়, নিজেও পলিটিকস করে, তাই নামডাক অনেক বেশি, এমনকি থানার সব পুলিশও তাকে স্যার স্যার করছিলো!
নাহিদ আবার ক্ষমা চাইলো, আর পুলিশ সব ঘটনা বুঝে ভদ্রঘরের ছেলে বলে তাকে মাফ করে দিলো কিন্তু স্বপন এতে খুব অপমান বোধ করলো …নাহিদকে হুমকি দিয়ে গেল যে এর পরিণতি ভালো হবেনা।
নাহিদ সেদিন আর কোথাও গেল না, চুপচাপ ঘরে এসে পড়লো কিন্তু বাসায় কাউকে কিছু বলল না।
দুইদিন পর রাত আটটা করে নাহিদের বাসায় পুলিশ আসলো, একটা দুইটা না বরং ডজনখানেক। বাইরে আরও এক গাড়িতে পুলিশ ছিলো। সবাই বন্দুক তাক করে নাহিদের ঘরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নাহিদের মা ভয়ে কান্না করছেন, বাবা হতভম্ব হয়ে সবাইকে জিজ্ঞেস করছেন তারা কেন এসেছেন, কিন্তু কেউ কোনো উওর দিচ্ছেন না, সবাই নাহিদের ঘরের দরজা দিয়ে ঢুকে কি সব খোঁজাখুঁজি করতে লাগলো, নাহিদকে কয়েকজন পুলিশ বন্দুক তাক করে দাড়িয়ে আছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর দুটো সাদা রঙের পাউডার ভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করলেন তারা। নাহিদ কিছু বুঝতে পারছেনা কিন্তু তাকে টেনে পুলিশের জিপে করে নিয়ে যাওয়া হলো। পিছে পিছে তার বাবা মাও থানায় গেলন। নাহিদ কাঁদছে, তার মা কাঁদছে।
কিছুক্ষণ পর থানার বড় সাহেব নাহিদের বাবা মাকে জানায় যে তাদের ছেলে নাহিদ একজন মাদক ব্যবসায়ী। আর আজকে গোপনসূত্রের খবর পেয়েই তারা তাকে আটক করেছেন। পরদিন শুক্রবার, এর পর শনিবার তার অর্থ আদালত বন্ধ, তাই তারা যদি নাহিদের জামিন করাতে চান তাহলে রবিবার করাতে পারবেন, বাকি দুইদিন তাকে এই থানায়ই থাকতে হবে ।
নাহিদের বাবার পায়ের নিচে যেন জমিন চলে গেল। সে কি বলবে বুঝতে পারছেন না, তার বিশ্বাস হচ্ছেনা এই পুরো ঘটনাটা। কিন্তু নিজে ছেলের প্রতি তার অনড় বিশ্বাসও এই পরিস্থিতিতে দোদুল্যমান! কান্নায় ভেঙে পড়ছে মা, অপমানে মাথা নত করে , তারা বাড়ি ফিরে গেলেন।
নাহিদ সারারাত হাজতে বসে ভাবতে লাগলো কিভাবে সম্ভব এমনটা হওয়া, কারন সে জানে সে নির্দোষ!
ভাবতে ভাবতে সকাল হলো আর তার আশ্চর্যের সীমা রইলো না যখন সে থানায় স্বপন নামের সেই ছেলেটিকে দেখলো। স্বপন নাহিদের কাছে এসে বল্লো, ” হিসাব মিলছে নাতো? মিলবেও না, কি চালটা দিলাম বলো তো! একেবারে বাজিমাত!
কিন্তু তোমাকে আমার বুদ্ধির তারিফ করতে হবে, তা নাহলে কি বৃহস্পতিবার রাতে আটক করাই তোমাকে? এখন আগামী দুইদিন তুমি এই জেলের বাসিন্দা আর ওইখানে তোমার পরিবারকে যা অপমান করা সম্ভব তা আমার ছেলেরা করবে, আর তোমার ভর্তি পরীক্ষা শনিবার ছিলো না? ” ….
অট্টহাসিতে থানার দেওয়ালগুলো যেন কাপছে! নাহিদের চোখ থেকে রাগে পানি পড়ছে, তার আর বুঝতে বাকি নেই যে এই লোকটি খুব জঘন্য ভাবে নাহিদকে ফাসিয়েছে আর এমন এক অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা করছে যেই অপরাধ নাহিদ করেই নি। নাহিদ লোকটির কাছে ক্ষমা চাইলো, বুঝিয়ে বলল যে লোকটির এই বাড়াবাড়িতে নাহিদের পুরো ভবিষ্যৎ, পুরো জীবন নস্ট হয়ে যাবে। স্বপন তার কোনো কথা কানে নিলো না!
সে থানা থেকে চলে গেল।
রবিবার নাহিদকে কোর্টে চালান করে দেওয়া হলো, তার জামিনের আপিল খারিজ করে দিয়ে তার উপর মাদক বিরোধী আইন অনুযায়ী কেইস দাখিল হলো। …..কেইস চলল কিন্তু কিছু মিথ্যে সাক্ষী আর ক্ষমতার দাপটের কাছে নাহিদ হেরে গেল! হেরে গেলো তার ভবিষ্যৎ!
তিনবছর কারাদণ্ডে দন্ডিত নাহিদ যাওয়ার আগে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলো, ” আব্বা, আমি কিছু করিনি। আমি নির্দোষ, তোমার ছেলে নির্দোষ! …
তোমারাও নির্দোষ বাবা, তাই আমার শাস্তি তোমরা ভোগ করবেনা, আজ থেকে আমাকে নিজের ছেলে বলে পরিচয় দিলে তোমাদেরকে সমাজ দোষের চোখে দেখবে, অপমানিত হতে হবে!
আব্বা ভাবেন আমি মারা গেছি, হ্যাঁ আব্বু ভাবো আমি আজ থেকে মারা গেছি, এলাকাটা ছেড়ে দিয়েন আব্বা, স্বপন আপনাদেরকেও বাঁচতে দিবেনা!
ভাবেন আমি মারা গেছি, আজ থেকে আমার আর ভালো বলে কিছু নেই, এই তিনবছরে আমি আর নাহিদ না বরং পিশাচ হয়ে ফিরবো “….নাহিদ কাঁদছে, চোখ মুচ্ছে, তার পরিবার শেষবারের মতো নাহিদকে দেখলো, এর পর তাদেরকেও আর কোনোদিন নাহিদকে দেখেনি! নাহিদ অবশ্য সবারই খোজ রেখেছে!
নাহিদ আসলেই পিশাচ হয়ে ফিরে এসেছিলো। কথায় বলে জেল অপরাধীকে অপরাধ মুক্ত করে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলে। জেলে একবার যে যায় সে সারাজীবনের অপরাধী! জেলে ভালো মানুষ হয়ে যায় পশু আর অপরাধীরা হয়ে যায় পিশাচ। কিন্তু নাহিদ পশু হতে চাইনি, তাই সে পিশাচ সাজে বেড়িয়েছে এই জেল থেকে…তাইতো ছাড়া পাওয়ার পর প্রথমে সে স্বপনের বাড়ি গিয়ে তাকে খুন করে। সেদিন থেকে নাহিদকে সবাই চিনে! সবার মুখে সেই এক নাম, পিশাচ।
এইসব ঘটনা কেউ জানেনা ..আর কেও জানতেও চায় না যে একসময়ের ভদ্র, শান্ত ছেলেটা এখন খুন করে এসে পোশাক পরিবর্তন করা ছাড়াই অনায়াসে কিভাবে ভাত খেতে বসে! দিন চলে যায়, পাপ বাড়ে! পাপটা বাড়তেই থাকে!
নাহিদ মাঝে মাঝে ভাবে সে আত্মহত্যা করবে কিন্তু তারপর ভাবে যে একদিন খুব ভালো একটা কাজ করে সেই এই পিশাচকে হত্যা করবে, সে পিশাচ হয়ে মরতে চায় না, সে নাহিদ হয়ে মরতে চায়।
সব ভালোই চলছিলো সেই বিশেষ একদিনের আগ পর্যন্ত। নাহিদের ছোটো কালো ফোনটায় একটা কল আসে। সাবের নামের কেউ একজন। নাহিদের হাতে নতুন কাজ এসেছে!
” হ্যালো, এইটা কি নাহিদের নাম্বার? ”
“নাহ, পিশাচের নাম্বার ”
” জ্বি, আমি আকরাম হোসেন, বারেক ভাই আপনার নাম্বারটা আমাকে দিয়েছেন, আপনাকে দিয়ে একটা কাজ ছিলো। ”
” মগের মল্লুক পাইসোস? আমি কারও কাজ করিনা, আমি মানুষ কোপাই। ”
” তাই করতে হবে, কাকে, কেন কোথায় সবটা আমি বলবো আপনাকে, একটা ঠিকানা দেওয়া হয়েছে মেসেজে, সেখানে ঠিক চারটা করে চলে আসবেন। ”
” আইচ্ছা ”
চারটার সময় নাহিদ গেল। বেশ ভালো বড় অফিস, একটা আলাদা রুমে মিটিং করার জন্য নাহিদকে বসানো হয়েছে, নাহিদ ভাবছে যে এই পার্টিটা খুব বড়লোক।
অবশেষে আকরাম নামের লোকটি আসলো। এসে নাহিদের সামনে বসলো, লোকটার চোখে একটা ভয়! নাহিদ এই ভয়টাকে চেনে, সে জানে লোকটা অপরাধী! খুব বড় অপরাধী!
” দেখুন আপনাকে একটা খুন করতে হবে, এক মহিলাকে। তার নাম জাহানারা! ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছি, যত চাও পাবে কিন্তু খুনটা এমন ভাবে করবে যাতে আমার নাম উঠে না আসে। পারবে? ”
” পারুম, কিন্তু জাহানারা কি করসে, ওরে মারুম কেন? ”
” ব্যক্তিগত প্রশ্ন জেনে কাজ কি? ”
“আমি নির্দোষকে মারি না। ”
” কিন্তু এইবার মারতে হবে, কারন তুমি না মারলে অন্য কেউ মারবে কিন্তু মরতে তার হবেই! ..গত একবছর এই মহিলা আমার সম্মান নিয়ে খেলে যাচ্ছে! ”
” কিন্তু শুরুটা তো আপনিই করসিলেন! ” …এটা শুনে খানিকটা বিব্রতবোধ করলো আকরাম!
” হ্যা আমিই করেছিলাম। কিন্তু ওইদিন নেশায় হুশ ছিলোনা, আমি নিজেকে আটকাতে পারিনি ”
নাহিদ ভাবছে তার আন্দাজ সঠিক …পুরো খেলাটা যে নাহিদ আন্দাজের উপর খেলছে তা আকরামকে বুঝতে না দিয়েই নাহিদ কথা বাড়ালো।
” কি করসিলেন? ধর্ষণ? ”
“হ্যাঁ! তার মেয়ে জেরিন, খুব ভালো মেয়ে ছিলো। আমার পার্সোনাল আসিসটেন্ট ছিলো, আমার তাকে খুব ভালো লাগতো! তাকে আমি ভালোবাসতাম। তাইতো ওইদিন তাকে দেখে নিজেকে আর আটকাতে পারিনি, তাই আমি আর আমার বন্ধু সাবের মিলে ওইদিন তাকে………”
“তা লাশটা কি করসেন? বাইচা আসিলোনা? ”
” হ্যাঁ! বেঁচে ছিলো। ধষর্নের পর অচেতন অবস্থায় আমি আমার গাড়ি দিয়ে চাপা দিয়েছি আর লাশটা অফিসের গার্ডেনে পুতেঁ রেখেছি। তার মা গত একবছর ধরে মেয়ের সন্ধানে আমার মান সম্মান সব নস্ট করছে! ”
নাহিদ মনে মনে একটু হাসলো! এই নাকি ভালোবাসা! ভালোবাসা রক্ষা করার নাম, বন্ধু মিলে ভোগ করার নাম নাহ, পিশাচের মনও তা জানে, কিন্তু ভদ্রসমাজের এই পশুটা জানেনা!
“গাড়িটা দেখান তো,অতিরিক্ত পেট্রাল হবে? আমার লাগবে একটু। ”
“জ্বি আসুন! ”
নাহিদ ভাবলো একটা ভালো কাজ করার সুযোগ সে পেয়ে গেছে।
“এই নিন পেট্রোল ”
“ধন্যবাদ ”
কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎই নাহিদ আকরামের গায়ে পেট্রোল ছিটাতে লাগলো, আকরাম চিৎকার করছে, লোক জড় হয়ে গেছে, কেউ আটকাচ্ছেনা নাহিদকে বরং দাড়িয়ে দাড়িয়ে তামাশা দেখছে।
একটা সময় নাহিদ তার পকেটের লাইটার বের করে আগুন ধড়িেয় দিলো আকরামের শরীরে, আর চিৎকার করে বল্লো ” এইবার আলো আসবেই ”
নাহিদ হালকা ঘুম ঘুম চোখে দেখলো তার ঘরে পুলিশ। সে হালকা হাসি দিয়ে সবাইকে সালাম দিচ্ছে।
একজন পুলিশ বলে, ” তুই নাহিদ? যে এই দুপুর সবার সামনে জিন্দা মানুষ পুড়াইসোস? ”
“জ্বে , আমি নাহিদ ,আজকে আমি আর পিশাচ না, শুধু নাহিদ ”
“কেন মারলি? তাও এইভাবে! ”
” সাহেব আলো আনতে!
গেসিলাম গত সপ্তাহে ধর্ষনের প্রতিবাদে একটা আলোক মিছিলে, রাস্তার মোড়ে হাজার হাজার মোমবাতি জ্বলসে কিন্তু আলো আসেনাই, আজকে আমি একজন ধর্ষককে এই একই রাস্তার মোড়ে জ্বালাইসি, সে যখন জ্বলতেসিলো আমি স্পষ্ট দেখসি যে, এইবার আলো আসবেই ! ”
সত্যিই পরের দিন খবরের কাগজে নাহিদের ছবি বের হয়েছে। ছবিটা দেখে তার কেন জানি খুব গর্ববোধ হচ্ছে, হয়তো তিনিও ভাবেন যে, এইবার আলো আসবেই!
০ Comments