নুসরাত বিনতে সালমা
রিমি বললো, কিসের এত তাড়া তোমার অয়ন? একদম দেখা করতে চাও না? কথা বলতে চাও না? কি হয়েছে তোমার? কল দিলে বাজে কথা বলো, রাগ করো।
তুমি এখন অার ভালোবাসোনা অয়ন। অামি বুঝি অামি অার তোমার ময়নাপাখি না!
অয়ন অারো মেজাজ খারাপ করে বললো, চুপ! একদম চুপ!
অামার এত টাইম নাই অামি গেলাম বাই, বলে অয়ন চলে গেলো।
রিমি তাকিয়ে রইলো অার অাকাশের দিকে তাকিয়ে মনের কষ্টটা মিলানোর চেষ্টা করলো। তারপর বাসায় চলে গেলো।
অয়ন সেই গেলো অার ফোন দিয়ে জানলো না রিমির কথা।
ছয় নয় ভাবনা রিমিকে সারাক্ষণ বিষিয়ে রাখে। মনের মধ্যে শুধু প্রশ্ন কেনো এমন করে অয়ন?
ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও কথা বলতে হতো……
কখন কি করছি সব বলতে হতো…..
অামাকে নতুন নিয়মে সে চালাতো নিজেও চলতো তবে!
উফ্ না! অামি মানতে পারছিনা তাকে ভুলা বা তার মতো তাকে থাকতে দেয়া অামার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
তাতে কি অয়নের কিছু অাসে যায় না!
কি নিয়ে ব্যস্ত সে?
ভাবতে ভাবতে রিমি ফোন দিলো! কিন্তু কলটা ব্যস্ত বরাবরের মতো।
তাহলে অয়ন কি অন্য মেয়ের সাথে নতুন রিলেশন শুরু করেছে হয়তো!
অার হয়তো হবে কেনো? সত্যিই তো সেদিন বললো অামাকে নাকি অার ভালো লাগেনা।
এতো অবহেলা করে তবু কেনো অামি একবার ভালো কথা শুনার জন্য বারবার কল দেই!
ফেসবুকে ব্লক করে রেখেছে সেই কবে। একটাবার জানতে ইচ্ছে হয়না অামি কেমন থাকি?
ইচ্ছে কি হয়না ময়নাপাখি বলে ডাকতে! তবে কেনো এলে অামার সময় গুলো নিয়ে এভাবে খেলা করতে?
ভাবতে ভাবতে রিমি ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
পরদিন সকাল অাবার ফোন দিলো রিমি অয়নকে। এবার কলটি অয়ন তুললো অার কোনো কথা না শুনেই বলতে লাগলো, “অাচ্ছা তোমার জন্য কি শান্তিতে ঘুমাতেও পারবো না অাজব মেয়ে! তোমার কি খেয়ে কোন কাজ নেই অামাকে ডিস্টার্ব করা ছাড়া?
যত্তসব অাগল -পাগল অামার কপালে জুটছে। রাখো ফোন। রাখো। অামাকে অার ডিস্টার্ব করবা না।”
কথাগুলো রিমি কলিজায় অাঘাত করছিলো। চোখ বন্ধ করে চোখের পানি সরিয়ে দিলো।
সাহস নিয়ে বললো, অয়ন প্লিজ অামার কথাটা শুনো।
অামি কি করলে তুমি ভালো কথা বলবা ভালো হয়ে চলবা?
অয়ন অফ্ অামি কি খারাপ অাছি?
হাসালে অামায়। অার কি করতে হবে তা শুনো, অামাকে ডিস্টার্ব করবা না। তুমি তোমার পথে চলো অার অামি অামার পথে ok………
প্লিজ অয়ন তা কি করে সম্ভব অামি তোমাকে ভালোবাসি অার অামাদের সংসার করার ইচ্ছে।
দেখো তোমার দোষ অামি বলিনি। তবে তুমি অামার জীবনে.. bad time..
যার কারনে অামি ভালো কিছু করতে পারিনা সব কিছুতে হেরে যাই অামি than…
সাধারন game খেলাতেও! অফ্ অার সবচেয়ে বড় কথা অামি এমন মেয়ের সাথে রিলেশন করছি যে তোমার মত ভিখিরির বাচ্চা না। তাকে দিয়ে অামার অনেক উন্নতি হবে যা তোমার দ্বারা হয়নি। সো অামার পিছনে কুকুরের মতো ঘুরে লাভ নাই।
অয়নের মুখে কথাগুলো শুনে রিমি অাকাশ ভেঙে পড়লো মাথায় তবু বললো, তুমি শিক্ষিত ছেলে কি বলো এসব?
অয়ন কল রেখে দিলো………..!
রিমি কাঁদতে কাঁদতে ভাবলো নাহ্ এ হয়না।
যে তার খারাপ সময়গুলো কে অামার উপর চাপিয়ে দেয়, সে সত্যিই আমাকে চায় না। তবে অামি কেনো তার পথ চেয়ে থাকবো!
অামি অামাকে নিয়ে ভাববো। যার কাছে ৩ বছরের মূল্য মিথ্যার রূপে শেষ হয়ে যায়।
অামি কেনো পিছু পরে অবহেলায় থাকবো?
যার কাছে সামান্যতম মূল্য নেই রিলেশন এর যত্ন নাই সে অামার প্রেম হতে পারেনা।
সে মারা গেছে। ভালো সময়টুকুতেই কেনো অামার প্রেমকে নষ্ট বিবেকের কাছে অবহেলিত করে রাখবো।
অাজ থেকে অামার নতুন জীবন শুরু হবে।
সিমটা বদলে নতুন সিম নিয়ে রিমি শত কষ্ট মেনে নিয়ে নতুন করে বাঁচা শুরু করলো।
বাবার থেকে কিছু টাকা নিয়ে শুরু করলো নতুন ব্যবসা।
কিছু অসহায় নারীদের সাথে নিয়ে হাতের কাজের কাপড়ের কাজ।
ঠিক ৩ বছর পর…….
রিমি এখন বড় গার্মেন্টস কোম্পানির মালিক। অার এই সাফল্য কেবল মনের মধ্যে একপ্রকার সাহস, অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর নিজেকে জাগিয়ে তোলার কারণেই হয়েছে।
মালা তার সেক্রেটারি। মেডাম অাসবো।
রিমি, হা অাসো।
মেডাম অামাদের যে একজন পুরুষ লাইনচিফ দরকার ছিলো তার জন্য একজন Interview দিতে এসেছে।
অহ অাচ্ছা পাঠিও দাও।
১০ মিনিট পর।
অাসবো?
অাসুন!
জ্বী বসুন।
তুমি?
রিমি বললো, জ্বী অাপনি?
অামাকে চিনতে পারছো না? অামি অয়ন!
হ্যাঁ অাপনি অয়ন. কাজের দক্ষতা অাছে?
অয়ন মুখ কালো করে বললো হ্যাঁ ছয় মাস কাজ করেছি অন্য কোম্পানিতে।
অাচ্ছা ছেড়ে দিলেন কেনো?
না অামার বেতন কম ছিলো তাই।
হাসালেন। এখানেও বেতন কম হবে। যেমন কাজ তেমন টাকা। অাপনার অনেক বেতনের দরকার?
সরি, অাপনি যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ খুঁজুন অার তার বেতনটাও মানিয়ে নেন।
অয়ন.. রিমি অামার কিছু কথা অাছে তোমাকে বলার।
অামার নেই অাপনি অাসুন।
অার হ্যাঁ অাপনার জন্য শুভকামনা। ভালো জব পাবেন যেহেতু অামি এখানে অাপনার bad time কাটুক তা চাইনা।
অয়ন মাথা নাড়া দিয়ে বললো হুম! অাসি।
অয়নের মুখ দেখে বুঝা গেলো সেদিন সে সত্যিই ভুল করছিলো তবে অাজ সঠিকটা করার সময় নেই…..?
বেশ ভালো লিখেছেন।