লেখা: শাহাদাত আবিন
বাবা, তুমি গত হয়েছে সে অনেক বছর হলো!
বয়সের ভারে আমার শরীরটাও হয়ে গেছে কুঁজো।
এখন আর কেউ ধরে না আঙ্গুল চেপে।
ঐ দূরে হাঁটতে নিয়ে যায় না পথঘাট মেপে।
এখন কেমন যেনো চোখে সব ঝাঁপসা দেখি,
বেঈমান চোখকে কি করে বলো দূরে রাখি।
এখন আর কেউ ডাকে না খোকা বলে,
বাবা, সুখের ফেরিওয়ালা তুমিই যে ছিলে!
সারাদিন অজস্র কষ্ট করে সুখ ফেরি করেছো ,
নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে আমাকে মানুষ করেছো।
কিন্তু আমি কি মানুষ হয়েছিলাম!!
তাহলে কি তোমায় আঁস্তাকুড়ে ফেলে দিতাম?
মানুষ হলে কি এমন করে অবজ্ঞা করতাম?
তুমি তো ফ্রেমে আটকে বোবা হয়ে ছাই,
আমি যে তোমায় অনেক কথা বলতে চাই।
বাবা,জানো!! আমার ছেলেটাও অনেক বড় হয়েছে,
আমার মতোই আমাকে সে অনুসরণ করেছে।
আমারও ঠিকানা তোমার মতোই বৃদ্ধাশ্রমে,
ছুঁড়ে ফেলা আস্তাকুঁড়ে বেঁচে আছি কোনোক্রমে।
আমি যে তোমার কাছে চিরতরে চাই যেতে,
পরপারে তোমার পাশেই চাই যে ঘুমোতে।
তুমি আমায় ঘুমপাড়ানি গল্প বলে ঘুম পাড়িয়ে দিবে।
বাবা বলো না সময় কবে হবে?
তোমার পা ছুঁয়ে ক্ষমা চাইতে চাই করার জন্য অবজ্ঞা,
বৃদ্ধাশ্রমে আমার দম বন্ধ হওয়ার শংকা।
কবে হবে সময় বাবা?
আমি যে ছুটি চাই।
এই জীবন থেকে।
বৃদ্ধাশ্রম থেকে।
অবহেলা করা ছেলের কাছ থেকে!
চিরতরে মুক্তি চাই!
মুক্তি!
কবিতায় এক নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। আমাদের সমাজে এখন এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। সন্তান তার বাবাকে কাঁধের বোঝা মনে করে, পিতামাতাকে ফেলে রেখে আসে বৃদ্ধাশ্রমে। একবারো ভেবে দেখে না এই পিতামাতাই কত যত্নে গায়ের রক্ত পানি করে তাকে মানুষ করেছে। ভেবে দেখে তখনি, যখন তার সন্তানও তার সাথে অনুরূপ কাজটাই করে। তখন আফসোস আর মৃত্যুর প্রহর গোণা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না তার।
বানানে তেমন কোনো ভুল নজরে পড়ে নি। তবে কিছু ছন্দের অন্তমিল খুবই দূর্বল লেগেছে। প্রথম দুই চরণের অন্তমিল বেশ বেমানান ছিলো।
শভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ আপু, সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।
আসলে কবিতাটিতে যাতে ভাব থাকে সেদিকে খেয়াল রেখেছি ।
চমৎকার কবিতা।সমাজের নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।এমন অনেক মানুষই আমাদের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।দোয়া করি তাদের যেন আল্লাহ হেদায়াত দেন।আপনার জন্যে শুভকামনা