ফাজানা নীল
…………
মেঘার রীতিমতো স্কুলে আসা আর ভালোভাবে পড়াশুনা করার একমাত্র কারন তিথি। মেঘার আর কোন বন্ধু নেই তিথি ছাড়া। তিথিই মেঘার বেস্ট ফ্রেন্ড। মেঘার কাছে তিথির স্থানটা ছিল অনেক উপরে। মেঘার খুব ছোটবেলা থেকেই কবিতা ও ছড়া লিখত। এখন সে কবিতা লিখে শুধু তিথির জন্য। তিথি সাধারণত কবিতা পছন্দ করেনা। ব্যাতিক্রম শুধু মেঘার ক্ষেত্রে। মেঘার লিখা কবিতা তার খুব ভাল লাগে। তিথিও মাঝে মাঝে গান লিখে মেঘাকে দেয়। তিথি খুব ভাল গায়তে পারে। স্কুলের প্রায় সব অনুষ্ঠানে সে অংশগ্রহণ করে আর পুরস্কারও জিতে নেয়। তাদের স্কুলের সব টিচারই ওদের দুজনকে খুব ভালোবাসত আর অনেক আদর করতেন। শুধু অংকের টিচার ছিলেন রাগী। পড়া না পারলে তিনি বেত দিয়ে শাস্তি দিতেন। একদিন তিথির শরীর খারাপ থাকায় ক্লাস এ থাকতে পারেনি। সেদিন অংকের স্যার সবাইকে বলে আগামীকাল যে জ্যামিতি বক্স না আনবে তাকে ১০ টা করে বেতের আঘাত দেওয়া হবে। পরদিন সবাই স্কুলে জ্যামিতি বক্স নিয়ে এলো। আনলো না শুধু তিথি। গায়ে জ্বর তিথি স্কুলে এসেছে। বিষয়টি লক্ষ করে মেঘা নিজের জ্যামিতি বক্সটা রেখে দিল তিথির সামনে। স্যার ভাবলেন মেঘা জ্যামিতি বক্স আনেনি। কঠিন মার খেল মেঘা। এভাবেই চলে গেল অনেকগুলো দিন।হঠাৎ করেই তিথিদের ঢাকায় চলে যেতে হয়। তিথির বাবার ট্রান্সফার হয়েছে ঢাকায়। তিথি তার বাবার ট্রান্সফারের বিষয়টা আগে থেকেই জানত কিন্তু মেঘাকে কিছু বলেনি। তিথি যাওয়ার পরদিন মেঘা স্কুলে যায় কিন্তু তিথির দেখা পায় না।,এভাবেই চলে যায় দিনের পর দিন। এক সময় বছরও পেরিয়ে যায়। মেঘা আজও অপেক্ষায় থাকে তার প্রিয় বান্ধবী তিথির জন্য। আর কিছুদিন পর মেঘার স্কুল জীবন শেষ হয়ে যাবে। সামনে শুরু হবে কলেজ জীবন। তিথি ছাড়া নতুন শিক্ষা জীবনের কথা ভাবতেই তার বুকটা ভারী হয়ে আসে। মেঘা হারিয়ে যায় তার অতীত স্মৃতিতে। তিথির সাথে কাটানো সময়ে ডুব দেয় আর ভাবে তিথিও কি আমার কথা মনে পরে।
০ Comments