মার্সেল্লাসে মার্স এর একদিন
প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০১৮
লেখকঃ vickycherry05

 2,050 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ vickycherry05

লেখাঃ
নিশাত তাসনিম
(জুন – ২০১৮)
…………

অনেক অনেক দিন আগে মার্সেল্লাস নামে এক রাজ্য ছিল। রাজ্যটি ছিল খুব ছোট। রাজ্যটিতে কোনো কিছুর অভাব ছিল না। প্রত্যক ব্যক্তি খুব খুব সুখি ছিল। এদের সুখ দেখে ট্রাটফোর্ড রাজ্যর রাজার খুব হিংসা হত। ট্রাটফোর্ড রাজ্যর রাজা একদিন তাঁর সৈন্য-সামন্ত নিয়ে মার্সেল্লাস রাজ্য যুদ্ধ শুরু করলেন। যুদ্ধে অনেক অনেক রক্ত বইলো। তাজা তরুন রক্ত। তাই দেখে মার্সেল্লাস রাজ্যের রাজা কিছু লোকজন নিয়ে অনেক দূরে চলে গেলেন। কোথায় গেলেন কেউ জানে না। কেউ কেউ বলে তারা স্বর্গে চলে গেছে। আবার কেউ কেউ বলে ট্রাটফোর্ড এর রাজা তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন। সেই থেকে মার্সেল্লাস রাজ্যে কেউ বসতি গড়েনি। এক সময় মার্সেল্লাস রাজ্য জংগলের ভেতর হারিয়ে যায়। তারপর কত শত-সহস্র বর্ষা প্রকৃতিকে উন্মাত্তাল করে ফিরে গেছে ঈশ্বরের রাজ্যে। কত নগরী তার আপন স্বত্তা মেলে ধরে হয়েছে মহিয়ান আবার হারিয়ে গেছে কালের পরিক্রমায়। কত নদী দিকচিহ্ন বদলে নতুন নাম নিয়েছে। কত হাজার বসন্তে পাপড়ি ঝরেছে অজানা ফুলের। কত নাবিক পথ ভুলে আবিষ্কার করেছে নতুন শহর। তারপর সত্যি সত্যি আড়াই হাজার বছর কেটে গেছে। আড়াই হাজার বছরেরও বেশি বয়সের যুবতি বসুধা এখনও তাঁর শস্য ভান্ডার মেলে ধরে আছে বোকা মানুষগুলোর জন্য।

এখন সায়েন্স এর যুগ। ইলেক্ট্রনিক দুনিয়ায় সায়েন্স ছাড়া কোনো কিছুর ব্যাখ্যা দেন না প্রত্নতত্তবিদ জনাব অলোক। যদিও এই প্রত্নতত্ত কাজটায় তাঁর আগ্রহ বেশি একটা নেই। তিনি চেয়েছিলেন সায়েন্টিস্ট হতে কিন্তু ভাগ্য তাকে প্রত্নতত্তবিদ বানিয়ে দিয়েছে। চীনের ইউনান এর ওল্ড টাউন অফ লিজিয়াং এর এক বাংলোর ব্যালকনিতে বসে আছেন তিনি। চোখ মুখ কুঁচকে চশমাটা নাকের ডগায় রেখে একটা প্রভাতী সংবাদপত্র পড়ছেন। হঠাৎ পেছনে একটা মৃদু পারফিউম এর গন্ধ নাকে এলো। বুঝতে পারলেন ওফেলিয়া এসেছে। এই মেয়েটার আজব একটা অভ্যাস কিছু না বলেই আচমকা পেছনে এসে দাঁড়ানো। পেছনে না তাকিয়েই অলোক বললেন,” শুভ সকাল, ওফেলিয়া।” ওফেলিয়া অবাক চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় বলল, “সুভ সকাল, আলো।” অলোক বললো, “কতবার বলেছি আমাকে আলো বলবে না। আমার শুনতে ভালো লাগে না। এনিওয়ে, আজকের আপডেট কি? সবাই তো দেখি হাত পা গুটিয়ে আছে। এরকম চলতে থাকলে আমাদের দেউলিয়া হতে বেশিদিন লাগবে না। এখন যাও। আমি কথা বলার মুড এ নেই।” এক রকম বিরক্তি নিয়ে কথাগুলো বলে নিজেই বেরিয়ে গেলেন। ওফেলিয়া হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলো। তাকে আলো বলার কারণে এতগুলা রাগ তিনি হন নি। তাঁর দিমাগে অন্য কিছু চলছে যা তাকে খুব পেইন দিচ্ছে। কি সেটা? জানতে হবে তাঁকে। ওফেলিয়া। নিউ জার্সি থেকে এসেছে। অলোক এর পার্টনার। গত দুই বছর থেকে তাঁরা প্রত্নতত্তে কাজ করছে। তাঁদের কাজের অনেক মজার মজার অভিজ্ঞতা আছে। তাঁরা একে অপরকে খুব ভালো বুঝেছে। তবুও না বোঝার অনেকখানি পাহাড় চাপা কান্না জমে আছে দুজনের মনেই। তাঁদের দুজনের পরিচিতিটাও বেশি। কাজের ব্যাপারে খুব সিরিয়াস তাঁরা। অলোক এর মনটা আজ বিশেষ ভালো নয়। খুব খারাপ একটি স্বপ্ন দেখেছে সে গতরাতে। আই মা এর কথা মনে পড়ছে। বছর তিনেক হল দেশে যাওয়া হয় না তাঁর। ভেবেছিল এ বছর যাবে। কিন্তু নতুন একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে সে আর ওফেলিয়া। কাজ শেষ না করে যেতেও পারবে না। ওফেলিয়া শব্দটা মনে হতে বুকের ভেতরটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠল। মিছেমিছি সকাল সকাল মেয়েটাকে বকে এসেছে। মেয়েটা বেশ মায়াবী সুন্দর। ঠিক অলোকনন্দা ফুলের মতই হলদেটে সুন্দর। হাবিজাবি নানান কথা ভাবতে ভাবতে অলোক হাঁটতে হাঁটতে নদীর ধারে চলে এসেছে। এই নদীটি বাংলো থেকে দেড় কিলো। নদীটা প্রস্থে বেশি নয়। খুব পছন্দ নদীটা অলোকের। নদীটায় একটা ব্রিজও আছে। একধারে বিশাল পাহাড় চোখে পড়ে। আর এক ধার দিয়ে দেখলে আকাশের সাদা মেঘের লুকোচুরি খেলা। অলোক নদীটার নাম দিয়েছে অলোকনন্দা। ওফেলিয়ার মতই নদীটা স্নিগ্ধ, সুন্দর। সকালবেলার সেই মৃদু পারফিউম এর গন্ধ নাকে এলো। অলোক বলল,”সকালের ব্যবহারের জন্য আমি দুঃখিত।” যেন কিছুই হয়নি এমন ভাব করে ওফেলিয়া বলল,”ইট’স ওকে।” এই কথা বলে ওফেলিয়া নীলচে আকাশের দিকে নিজের দৃষ্টি মেলে ধরে বলল,”লুক।” কথাহীনতার মাঝেও যেন হাজারো কথার সুর। নিরবতা ভঙ্গ করে অলোক বলল,”পাহাড় চূড়ায় উঠবে।” অলোকের অনেকদিনের ইচ্ছে এই পাহাড়ের চূড়ায় উঠবে। অগাধ বিশ্বাসে সম্মতি দিল ওফেলিয়া। তাঁরা উপরে উঠছে। যতই উপরে যাচ্ছে ততই সরু হয়ে যাচ্ছে পথ। ওফেলিয়া অলোকের শার্ট খামচে ধরেছে। কিছুক্ষন পর প্রচন্ড বাতাস শুরু হল। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ অলোক দেখলো অনেক অনেক যুগ আগের রাজকুমারের পোষাক পরিহিত এক বলশালী পুরুষ। কোমরে গোঁজা তলোয়ার। অলোক তাঁর এক হাত বাড়িয়ে দিয়ে ছাঁয়াটা ছুঁতে চাইল অমনি সে মিলিয়ে গেলো। অলোক আর ওফেলিয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।

ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকাচ্ছে অলোক। বুঝতে পারছে মাথাটা ধরেছে খুব। একটা অচেনা ঘর। ঘরময় একটা বহুদিনের ভ্যাপসা গন্ধ। ঘরটার চারিদিক বন্ধ। কোনো জানালা নেই। ঘরের দেয়ালে ছোট ছোট খাঁজ করা। প্রদীপ জ্বালানো হয়েছে সেখানে। ঘরের মেঝেতে মার্বেল পাথরের কারুকার্য। দেয়াল জুড়ে বিভিন্ন গাছ, ফুল, মানুষ, রাজপ্রাসাদ, ঘোড়া, পেয়াদা, বিশাল বাগান ইত্যাদির ছবি আঁকা। বোঝাই যায় কারুকার্যগুলো অনেক পুরনো। সে একটি খাঁটে শুয়ে আছে। খাঁটটি ঠিক রাজপ্রাসাদের কারুকার্য খচিত। ওফেলিয়া কোথায়? কিছুক্ষন পর ঘরের বিরাট লোহার কারুকার্য খচিত দরজাটা খোলার আওয়াজ হল। একজন বিশালদেহী কেউ দরজা ঠেলে ভেতরে আসল। বেশ বয়স্কা লোকটা। ধীরে ধীরে মুখটা স্পষ্ট হচ্ছে।

ঘরের সেই লোকটি,”আমার নাম লেয়ার্তেস। মার্সেল্লাসের সর্বশেষ বুড়ো। আড়াই হাজার বছর আগে ধংসপ্রাপ্ত মার্সেল্লাস রাজ্যর রাজার বংশধর। এইটা হচ্ছে আমাদের লুকানো দ্বিতীয় রাজ্য। মার্সেল্লাসের রাজা পাহাড়ের চূড়া থেকে এর সুরঙ্গপথ তৈরী করেন। এসব আমরা বইতে পড়েছি। আমাদের দাদা পরদাদারা সেসব কাহিনী লিখে রেখে গিয়েছেন।” এসব বলতে বলতে তাঁরা বাইরে চলে এসেছে। ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছেন তিনি অলোককে সব। সর্বশেষে সেই বইঘরে নিয়ে এলেন তিনি যে ঘরে বইটা আছে। অলোক সত্যি সত্যি অনেক বিস্মিত হলো বইটার সাইজ দেখে। এতো বড় বই! দৈর্ঘে-প্রস্থে সমান। লেয়ার্তেস বললো,”এই বইটাই মার্সেল্লাসের প্রাণ। এখানেই সব কাহিনী লিখিত আছে। আমাদের রাজ্য যখন আক্রান্ত হয় তখন রাজা কিছু লোকজন নিয়ে এখানে চলে আসেন।” অলোক বললো,”কিন্তু, আমি তো মার্সেল্লাসের কাহিনী পড়ছি। সেখানে তো লিখেছে সেই যুদ্ধে কেউ বাঁচেনি।” লেয়ার্তেস বললো,”ভুল। সেই কাহিনীর শেষটা ভুল। এখানে আমরা বসতি গড়েছি। আড়াই হাজার বছরও চলে গেছে। এখন শুধু আমরা তিনটি প্রাণী শুধু বেঁচে আছি এই রাজ্যর। এক হচ্ছে আমি। দ্বিতীয় হচ্ছে আমার বন্ধুর মেয়ে ফ্লোরিয়াস। আর তৃতীয় হচ্ছে আমার একমাত্র ছেলে মার্স।” অলোক এর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে লেয়ার্তেস বলল,”আর মার্স হচ্ছিস তুই। হ্যাঁ, তুই। তোর যখন সাত বছর বয়স তখন তোকে আমরা হারিয়ে ফেলি। এইটা হয়েছে আমার গাফিলতির কারনেই। যে নদীর ধার দিয়ে তুই পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছিস সেই নদীর ধারে একদিন আমি আর তোর মা গিয়েছিলাম তোকে পৃথিবী দেখাতে। আমরা একটু অন্যমনস্ক ছিলাম। সেই অন্যমনস্কতাই তোকে হারিয়ে দিয়েছে। শুনেছি তুই বাংলাদেশে মানুষ হয়েছিস। এক বাংলাদেশি নারী তোকে এখানে খুঁজে পেয়েছিল। তুই ভালোভাবেই মানুষ হয়েছিস শুনে ভালো লেগেছিল। তোকে গত তিন বছর হল খুঁজে পেয়েছি আমরা। কিন্তু তোকে এখানে আনার মত সময়-সুযোগ কোনোটাই ছিল না। আজ তুই নিজেই সেই সুযোগ করে দিয়েছিস। তুই হয়ত ভাবছিস এত কিছু কিভাবে জানলাম। আর তোকে চিনলামই বা কিভাবে। তুই হয়ত তোর পার্টনারের কথা ভুলে গিয়েছিস। ওই যে ওফেলিয়া। সেই তো আমার বন্ধুর মেয়ে। সে পড়াশোনা করতো বাইরে। থাকতো বাইরে। সুযোগ বুঝে এখানে আসতো। ওর লক্ষ্য ছিল তোকে খোঁজা। সেটা সে পেরেছে। যেদিন জানতে পারলাম তোর কথা ইচ্ছা করছিলো তোকে বুকে জড়িয়ে নিই। আজ সে ইচ্ছাটা পূরণ হয়েছে। তোকে দেখার জন্যই হয়ত গত তিন বছর বেঁচে ছিলাম আমি।” কথাগুলো বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন তিনি। হঠাৎ চুপ হয়ে গেলেন তিনি। ফ্লোরিয়াস এসেছে। তিনি উঠে চলে গেলেন। ফ্লোরিয়াসকে কত সুন্দর দেখাচ্ছে আজ। যেন স্বর্গীয় পরী। একটা রাজকুমারীর পোষাক পড়েছে সে। অলোক একটা লোহার বেদীতে বসে আছে। সামনে ছোট শানবাঁধানো পুকুর। পাশে কৃত্রিম পাহাড়ের গাঁ বেয়ে ঝর্নার জল গড়িয়ে পড়ছে। সবুজ গাছপালায় ভর্তি চারিদিক। মনে হচ্ছে একটা স্বপ্নপুরিতে এসেছে সে। অলোকের পাশে মার্সেল্লাসের সর্বশেষ সুন্দরীটি বসে আছে। ফ্লোরিয়াস। এই নামটাও মন্দ নয়। আজ সে ওফেলিয়াকে নতুন করে চিনছে। পাহাড় চূড়ায় যে ছবিটার ছায়া সে দেখেছিল ঠিক সে ছবিটাই এখানের দেয়ালে টাঙ্গানো আছে। এরকম নানান রাজকীয় ছবি আছে এখানে। ধীরে ধীরে মার্স এর ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়ছে যখনি সে বিভিন্ন যায়গা দেখছে। অলোক সেই ছায়াটার মত করে সেজেছে। ফ্লোরিয়াস সাজিয়ে দিয়েছে তাকে। গায়ে রাজবংশের চিহ্ন। কোমরে গোঁজা তলোয়ার। মাথায় পাগড়ি। তাঁর বাবা লেয়ার্তেস ঘাড়ের দিকের চিহ্নটি দেখিয়ে বললেন,” আমাদের রাজ বংশের একটি পরম্পরা হলো বাচ্চা জন্মের পর আমরা বাচ্চার ঘাড়ে তাঁর নাম খোদাই করে দেই। তোরটাও আছে। আর এটাই তোকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।” ঘাড়ের খসখসে জায়গাটিতে তাঁর হাত চলে গেলো। এতদিন সে এটাকে ক্ষত ভেবেছিল আজ যা রাজচিহ্ন। আড়াই হাজার বছর পর আবার মার্সেল্লাসের কাহিনী লেখা হবে মার্সেল্লাসের সর্বশেষ বংশের হাতে। সর্ব থেকে সর্বশেষ বংশ রক্ষা করাই এখন মার্স এর দায়িত্ব।

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

মা

মা

ইশু মণি বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে তাসবিহ্ ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ করে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে বসে আছে।টিনের চালে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ায় অনবরত শব্দ হচ্ছে, বাসার সাথে লাগানো পেয়ারা গাছটার বিশাল বড় ডালপালা গুলো চালের উপর চলে এসেছে বারবার সেগুলো বারি খাচ্ছে যার কারণে শব্দ...

০ Comments

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *