মানুষ
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 1,188 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

লেখা: জুয়েল ইসলাম
.
.
.
রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া শেষ করে রাস্তার পাশে এসে দাড়িয়ে আছি।বাসের জন্য অপেক্ষা করছি সেই কখন থেকে।দাড়িয়ে থাকাও প্রায়
কষ্টকর হয়ে গেছে।পাশের এক আবর্জনার স্তূপ থেকে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছিলো।আমাদের এই
ঢাকা শহরে এরকম হাজারো বর্জের স্তূপ রয়েছে।যেখান থেকে প্রতিনিয়ত দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে আর আশেপাশের মানুষগুলো আস্তে আস্তে সেটা সহ্য করে নিচ্ছে।
আমরা মানুষরা বড়ই অদ্ভুত।সবকিছু দেখেও কেউ এগিয়ে আসি না সমস্যা সমাধানের জন্য।আবার কেউ যদি শহরের
পরিবেশটাকে সুস্থ আর সুন্দর করতে চায় তাহলে আমরা বিন্দুমাত্র উৎসাহ প্রধান করিনা।সবাই নিরব দর্শক হয়ে পরিবেশটাকে খারাপ করছি আর এর ফলস্বরূপ নিজেরাই নানান রোগে ভুগছি।
হঠাৎ করেই পেটে কেমন যেন অসহ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো।মনে হচ্ছে রেস্টুরেন্টের খাবার
খাওয়ার ফলে পেটে এসিডিটি সৃষ্টি হয়েছে।তাই পাশের
একটা দোকান থেকে সেভেন আপ কিনলাম।উদ্দেশ্যটা ঠিক এসিডিটি দূর করার জন্য।
খাওয়া শেষ হওয়ার পর বোতলটাকে আবর্জনার স্তূপের দিক ছুঁড়ে ফেলে দিই।তারপরেই একটা আশ্চর্য ঘটনা দেখতে পাই।দুটি ছেলে বোতলটাকে লক্ষ্য
করে দৌড়ে আসছে।হঠাৎ করে দুজনেই বোতলটার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে।একজন
বোতলটা নিয়ে উঠে চিল্লাতে লাগলো।অপর ছেলেটি মুখটা কালো করে পকেট থেকে পাঁচ
টাকার একটা নোট বের করে ওই ছেলেটিকে দিলো।
তাদেরকে দেখেই বুঝা যাচ্ছিলো তারা পথশিশু,টোকাই যাই বলিনা কেন তাদের বড় পরিচয় তারা রাস্তার ছেলে।অমলিন চেহেরা,রোগা শরীর,অবহেলাপূর্ণ একটা
ছাপ দুজনের মুখে ফুটে উঠেছে।একটি ছেলেকে দেখে কিছুটা ফর্সা মনে হচ্ছিলো
কিন্তু কাঠফাটা রোদের তাপে সেটা কালোতে পরিণত হয়েছে।অপর ছেলেটির গায়ের রং কালো।দুজনের গায়েই ময়লাযুক্ত ছেঁড়া একটা
শার্ট।হয়তো ভালো নতুন একটা কাপড় কেনার সামর্থ্য
নেই।তারা শুধু দুবেলা খাবারের আশায় জীবনযুদ্ধে
সৈনিক হিসেবে এ পথ বেছে নিয়েছে।চাইলেই হয়তো তারা ডাক্তার,ইঞ্জিনি
য়ার, শিক্ষক কিংবা পাইলট হতে পারবে কিন্তু সেই পথটাই অজানা।
তাই এই নোংরা আর অসচ্ছ কাজটাকেই সহজ হিসেবে
গ্রহণ করেছে।এ শহরে এরকম হাজারও পথশিশু,টোকাই
রয়েছে,যাদের স্থান বড় রাস্তার
পাশে,স্টেশনে,কিংবা কোনো পরিত্যক্ত গাছের নিচে।তবুও তারা দিব্যি দিন পার করে যাচ্ছে।অনাথ এই শিশুগুলো পথের এক প্রান্ত থেকে অন্য
প্রান্তে ছুটে বেড়ায় একটু অন্নের খোজে।
আমরা চাইলেই এই শিশুদেরকে গড়ে তুলতে পারি।
কিন্তু আজ মনুষ্যত্ববোধহীন প্রাণী হয়ে বেঁচে আছি বলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটছে না।
ভাবনার জগৎ থেকে বাস্তব চেতনায় ফিরে এলাম।
দেখলাম ছেলে দুটো প্রাণ খোলে হাসছে।কী
অদ্ভুত মায়াবী হাসি! ইচ্ছে করছে তাদের সাথে একটু নির্জন জায়গায় বসে কথা বলি।কিন্তু সেই উপায়ও নেই।কারণ বাস চলে এসেছে।অফিসে যেতে দেরি হলে খবর আছে! কারণ গত তিনদিন টানা দেরি করে অফিসে গেছি। তাই সবাই সাথে ধাক্কাধাক্কি করে বাসে উঠলাম।নতুন শার্টটার দিকে তাকিয়ে খুব মায়া লাগছে।বেচারা! মানুষের শরীরের চাপে একদম নাজেহাল অবস্থা।
অফিস শেষে সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফিরছি।হঠাৎ সেই বাসস্ট্যান্টের কাছে অনেক মানুষের ভিড় দেখে শংকা ভরা চোখে এগিয়ে যেতে লাগলাম।বুকের ভেতর হৃদস্পন্দন কেন জানি বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে। ভিড় ঠেলে গিয়ে দেখলাম সকালে যে দুজন ছেলেকে দেখলাম তাদের মধ্যে একজন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছে।মাথাটা থেঁতলে যাওয়ার কারণে চেনা যাচ্ছিলো না।এত রক্ত দেখে আমারও মাথা ঘুরছিলো।হঠাৎ ভিড়ে জমায়েত সব লোকের সামনেই বমি করে ফেললাম।
এরকম পরিস্থিতি এর আগে কখনো হয়নি।আর এমনিতেও আমি দূর্বল হার্টের মানুষ।ভয়ে আমি কখনো হরর সিনেমা দেখিনা।অল্পতেই আমি খুব ঘাবড়ে যাই আর অস্বস্তিবোধ করি।তাড়াতাড়ি জায়গা ত্যাগ করলাম।বাসায় এসে ফ্রেশ হলাম।কিন্তু ছেলেটার রক্তাক্ত মুখ এখনো আমার চোখের সামনে ভাসছে।খাওয়ার ইচ্ছেটাই মরে গেছে।কোনোভাবেই ঘটনাটা মাথা থেকে সরাতে পারছিনা।
মন ভালো করার জন্য এক কাপ চা হাতে নিয়ে ছাদে গেলাম।ভাবলাম,রাতের আকাশের তারা,নির্মল বাতাস আর সাথে এক কাপ পা আশা করি মন ভালো করে দিবে। কাজটাও হলো তাই।প্রায় ঘন্টাখানেক পর বাসায় ফিরলাম।অনেকদিন ধরে লেখালেখি করিনা।আসলে সময় হয়ে উঠেনা।আসলে এটা আমার পেশা নয়।একসময় শখের বশে লিখতাম। কয়েকটা বইও প্রকাশিত হয়েছিলো।কিন্তু চাকরিতে জয়েন করার পর আর হয়ে উঠেনি।
ডাইরিটা বের করে লেখার জন্য বসে গেলাম।শুরুটা কীভাবে করবো মাথায় আসছিলো না।পরক্ষণেই মাথা কাজ করলো।শুরুর লাইনটা ঠিক এরকম ছিলো: কোনো একদিন সকালে অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমি বাসস্ট্যান্ডে দাড়িয়ে ছিলাম।
নাহ্ আগের মত আর শব্দগুছিয়ে লিখতে পারিনা।তবুও চেষ্টা করছি কিছু লেখার।আর কিছু হোক বা না হোক স্মৃতি হয়ে তো ডাইরির পাতায় থাকবে।কয়েক পাতা লিখে সেদিনের মতো সমাপ্ত করলাম।
পরেরদিন সকালে আবারো অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।আজকেও রেস্টুরেন্টে খেতে হবে কারণ বুয়া আরও তিনদিন পর আসবে।বুয়া অসুস্থ খুব।ফোন দিয়ে শুনেছিলাম প্রচণ্ড জ্বর।একবার সময় করে গিয়ে দেখে আসার উপায়টুকুও নেই।আর নিজে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস নেই,তাই অগত্যা রেস্টুরেন্ট-ই আমার ভরসা।
যাইহোক সেদিনও বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ওই ছেলেটির জন্য অপেক্ষা করলাম।
অপেক্ষাটা ঠিক কার জন্য জানিনা।তবে তাদের মধ্যেও একজন নিশ্চয় বেঁচে আছে
আমার অপেক্ষাটাও তার জন্যই।কিন্তু সেই ছেলেটা এলো না।অগত্যা না দেখা করেই অফিসে যেতে হলো।
অফিসের কাজ দ্রুত শেষ হওয়ার জন্য বিকালেই বাসার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। ভাবলাম হাতে যেহেতু একটু সময় আছেই তাহলে একটু হাতিরঝিল দিয়ে ঘুরে আসি।বিকালবেলা এমন একটা সুন্দর পরিবেশে হাঁটলে মনটা ফ্রেশ লাগবে।
প্রায় বিশ মিনিট পর হাতিরঝিলে পোঁছালাম। আজ লেকের পাড়ে এত মানুষ দেখে কিছুটা অবাক হয়ে গেলাম।কাপলদের ভিড়ে এলাকার পরিবেশটা অন্যরকম হয়ে উঠেছে।আমি একা মানুষ এসব নিয়ে কখনো ভাবিনা।একা থাকতেই ভালো লাগে সবসময়।আসলে নিঃসঙ্গ জীবনেও একটা অলিখিত প্রাপ্তি থেকে যায়।যা শুধু সেই নিঃসঙ্গ মানুষগুলোই অনুভব করতে পারে।
হঠাৎ করেই একটু দূরে লক্ষ্য করে দেখতে পেলাম একটা ছেলে দু’গালে দু’হাত দিয়ে মন খারাপ করে বসে আছে।কাছে যেতেই স্পষ্ট বুঝতে পারলাম এটাতো সেই ছেলে যে গতকাল হেরে গিয়ে পাঁচ টাকার নোট দিয়েছিল।তারমানে অন্য ছেলেটাই…….
চুপচাপ ছেলেটির পাশে গিয়ে বসলাম।কিন্তু মনে হয়না সে আমাকে দেখেছে।অন্যমনস্ক হয়ে মনে হয় গভীর কিছু ভাবছে।
:-হ্যালো!
:-ওহ হ্যালো স্যার! কেমন আছেন?
:-ভালো।তুমি আমাকে চিনতে পেরেছো?
:-হুম।কাল আপনার ফেলে দেওয়া সেভেন-আপের বোতল নেওয়ার বাজি ধরে পাঁচ টাকা আমার বন্ধুকে দিতে হয়েছে।
:-ওহ।তারমানে ও তোমার বন্ধু ছিলো।তা তুমি এখানে কি করছো?
:-আরে স্যার, জানেন না আজকে ভালোবাসা দিবস।তাই এখানে ফুল বিক্রি করা জন্য এসেছিলাম।
:-ফুল বিক্রি করা শেষ?
:-হুম।
:-তাহলে পাশে যে কয়েকটা ফুল একসাথে বাঁধা সেটা বেচবে না?
:-নাহ।এটা গিফট দেওয়ার জন্য রেখেছি।
একটু মুচকি হেসে বললাম,
:-তা কাকে গিফট দিবে শুনি।কাউকে ভালোবাসো?
:-বাসিতো।কিন্তু কাকে ভালোবাসি সেটাই জানিনা।তাই এখানে বসে আছি।যাকে ভালো লাগবে তাকে গিফট দিবো।
:-ওহ।নিশ্চয় এখনো কাউকে পাওনি।তাহলে আমাকে গিফট দাও যদি তোমার আমাকে ভালো লাগে।
:-কিন্তু আমি কিভাবে বুঝবো আপনাকে আমার ভালো লাগে কি না?
:-তা অবশ্য ঠিক।আচ্ছা তুমি একটু সময় নাও।আমি কিছুক্ষণ আছি তোমার সাথে।
:-কিন্তু আপনি এখানে থেকে কি করবেন?
:-গল্প করবো তোমার সাথে।কি আমার সাথে গল্প করবে?
:-আচ্ছা
একটু না জানার ভান করে জিজ্ঞেস করলাম,
:-কাল যে তোমার বন্ধু তোমার সাথে ছিলো সে এখন কোথায়?
আমার কেন জানি মনে হচ্ছিলো ও তার বন্ধুর খবর জানেনা।তাই হয়তো মন খারাপ করে বসে আছে।
:-জানিনা স্যার।
:-তুমি আমাকে ভাইয়া বলবে।ঠিক আছে?
:- ঠিক আছে ভাইয়া।
পৃথিবীতে কিছু নির্মম সত্য জেনেও অনেক সময় লুকিয়ে রাখতে হয়।কারণ সেই লুকিয়ে থাকা সত্যের কারণে হয়তো দু’ফোটা চোখের জল ঝরবে।যা মূল্য হয়তো এ পৃথিবীতে দিতে পারবে না।ওর সম্পর্কে আরো অনেককিছু জানার আগ্রহ নিয়ে ওকে প্রশ্ন করলাম।
:-আচ্ছা তোমার নাম কী?
ছেলেটি অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
:-পিচ্চি
:-পিচ্চি! এটা আবার কেমন নাম।তোমার বাবা- মা তোমার কোনো নাম রাখেনি?
:-আমার বাবা-মা নেই তো।সবাই আমাকে পিচ্চি বলেই ডাকে।
কথাগুলো ও একদৃষ্টিতে বলে যাচ্ছিলো।চোখে নেই কোনো বিষণ্ণতা কিংবা একাকীত্বের ছাপ।হয়তো হারানোর নিয়মটাই তার অজানা।কষ্টগুলোও হৃদয়ে আঁচড়ে কোনো ক্ষত সৃষ্টি করতে পারেনা।ওর জন্মটাই হয়েছে যেন একরাশ মায়া জড়িয়ে।যা তাকে ভালোবাসতে যথেষ্ট। মনে হয় সব ইচ্ছা,আদর,স্নেহ সব শুধু তার জন্যই।আলতো করে ওর মাথায় হাত রাখলাম।
:-তুমি কোথায় থাকো তাহলে?
:-যেখানে মন চায় সেখানে।তবে কমলাপুর রেলস্টেশনের পাশে একটা বস্তিতে বেশি সময় থাকি।
:-ওহ।আচ্ছা তোমার বাব-মার নাম কী?
:-জানিনা তো।
অনেকটা আশ্চর্য করে দিয়ে ও আমাকে কথাটা শুনালো।
:-তাহলে তুমি কার কাছে বড় হয়েছো?
:- তাও জানিনা।তবে অনেকেই বলে আমি নাকি জারজ সন্তান। তাই আমার কোনো বাবা-মা নেই।
কথাটা শুনতেই কেন যেন চোখে পানি চলে আসলো।পৃথিবীতে আরও একটা নির্মম সত্য যা নিমিষেই জীবনকে বদলে দিতে পারে।কম বয়সী ছেলে বলে হয়তো তার কাছে এর মানেটা অজানা।তবে এ সত্যের মুখোমুখি একদিন তো হতেও হবে।তবে একজন রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ছেলে যে কিনা নাম পরিচয়হীন হয়ে এক ফাদারের নিকট বড় হয়েছে সে জানে এর নির্মমতা।হ্যাঁ আমি ওর মতোই একজন।তবে আমার মা একজন পতিতা। এক ছোট্ট একটা পরিচয় আমি জ্ঞান হবার পর থেকেই শুনে আসছি।কোনো ঝড়ো বৃষ্টির রাতে ফাদার যখন উপাসনালয়ে ফিরছিলেন হঠাৎ করে এক মহিলা এসে তার সামনে দাড়ায়।বৃষ্টিতে একাকার হয়ে গেছিলো সে।চোখেমুখে ভয়ের ছাপ,কাঁপাকাঁপা ঠোঁটে সেদিন ফাদারকে বলেছিলেন,
:-ফাদার আপনি আমার এই সন্তানটিকে দেখবেন।ওর জীবন খুবই ঝুকিতে আছে।ওকে আপনি নিজের মতো করে মানুষ করবেন।আপনার পরিচয়ে বড় করবেন।
ফাদার অনেকটা আশ্চর্য হয়ে গেছিলেন।
:-কে তুমি মা? আর এই ছেলেটা কে? তোমাকে এত অস্থির লাগছে কেন?
প্রচণ্ড ঝড়ো বৃষ্টিতে সেদিন মহিলাটি যে শব্দটা উচ্চারণ করেছিলো তা হাজারো বেগে ফাদারের কানে আঘাত করছিলো।
:-আমি একজন পতিতা।এ আমার ছেলে ফাদার।কিন্তু আমার জগৎ ওকে বাঁচতে দিবে না।আমার বিশ্বাস আপনি ওকে ভালো মানুষ করে গড়ে তুলবেন।
ফাদার সেদিন আর কিছু বলেননি। নির্বাক দর্শকের মত চেয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত সেদিনের সেই ছেলেটি আজ এখানে বসে আছি।হ্যাঁ একটা পরিচয়ে বড় হয়েছি ঠিকই কিন্তু সত্য যে খুবই কঠিন আর নির্মম হয়।প্রতিটিক্ষণেই মনে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে।কারণ এই পরিচয়ের আড়ালে আমিও একজন জারজ সন্তান।আমার মায়ের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই।আক্ষেপ শুধু নিয়তির উপর যা কখনোই আর বদলাতে পারবোনা। একজন সন্তানকে সব পিতামাতায় বড় করতে পারে কিন্তু মানুষ করতে পারে কতিপয় বাবা -মা।নিজেও জানিনা আমি মানুষ নাকি নামানুষ।
:-ভাইয়া ও ভাইয়া জারজ সন্তানরা কি খুব খারাপ হয়?
লক্ষ্য করলাম ওর চোখে পানি ছলছল করছে।ভালোবেসে আলতো করে কপালে চুমু খেলাম।কোনো উত্তর নেই আমার কাছে। দু’হাতে চোখের জল মুছে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।আশেপাশে এত ভালোবাসা আছে কিন্তু আমার জন্য কি একটুও ভালোবাসা নেই?
হঠাৎ করে মেঘের আওয়াজ শুনা যাচ্ছে।হয়তো বৃষ্টি হবে।আচ্ছা বৃষ্টির জল কি চোখের পানি মুছে দিতে পারবে?
অনেকদিন হলো ফাদারের সাথে দেখা করিনা।অসুস্থ মানুষটা বিছানায় শুয়ে শুধু এই একটি মানুষেরই অপেক্ষা করে।মৃত্যুকে তিনি পরোয়া করেননা।বাস্তবতা এই মানুষটাকেও আমার কাছ থেকে আলাদা করে দিচ্ছে।শুধু এক তিক্ত যন্ত্রণা আর কষ্টে এর অবসানের অপেক্ষায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

৩ Comments

  1. আফরোজা আক্তার ইতি

    সুন্দর লিখেছেন। জারজ সন্তানেরাও মানুষ, নিতান্তই ভাগ্যের পরিহাসে তাদের অবৈধ উপায়ে জন্ম হয়, কিন্তউ তারা নিষ্পাপ থাকে, এখানে তাদের কোন দোষ থাকে না।তবুও তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয় যেটা তাদের মোটেই প্রাপ্য নয়।
    ভামো লিখেছেন। কিন্তু বানানে প্রচুর ভুল। আর বিরামচিহ্নের পরে স্পেস হয়, আপনি একটি বাক্যেও বিরামচিহ্নের পর স্পেস দেন নি।
    দাড়িয়- দাঁড়িয়ে।
    চেহেরা- চেহারা।
    দুবেলা- দু’বেলা।
    ইঞ্জিনি য়ার- ইঞ্জিনিয়ার।
    অসচ্ছ- অস্বচ্ছ।
    খোজে- খোঁজে।
    বাসস্ট্যান্ট- বাসস্ট্যান্ড।
    ডাইরিটা- ডায়েরীটা।
    ঝুকিতে- ঝুঁকিতে।
    নামানুষ- অমানুষ।

    Reply
  2. আখলাকুর রহমান

    শিক্ষণীয় বিষয় উপস্থাপন করার সফল চেষ্টা করেছেন।
    লেখার গভীরতা ছিল।
    ভুলগুলো দেখে নিন-

    উৎসাহ প্রধান – প্রদান

    দুবেলা – দু’বেলা

    খোজে – খোঁজে

    ডাইরিটা – ডায়েরিটা

    লেখক এবং পথশিশুর কথোপকথনের বিষয়টা একটু বেমানান হয়েছে। এভাবে শুদ্ধ করে বলতে পারে? মাঝে ইংরেজিও বলেছে।

    যাইহোক, লেখা অসাধারণ। থিম মুগ্ধকর। শেষাংশে নিজেকে সামলে নিতে একটু কষ্ট হয়েছে।
    শুভ কামনা রইল।

    Reply
  3. মাহফুজা সালওয়া

    গল্পের মেসেজটা দারুণ, শিক্ষনীয়।
    তবে,কাহিনীটা সিনেমেটিক। যা বাস্তবে দেখা যায়না।
    বানানে বেশ ভূল আছে,শুধরে নিবেন।
    আর গল্প লেখার সময় সর্বদা খেয়াল রাখবেন অতিরঞ্জিত কিছু না লিখার।
    শুভকামনা রইল

    Reply

Leave a Reply to আফরোজা আক্তার ইতি Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *