গল্প লেখকঃ
সাকি সোহাগ
(এপ্রিল – ২০১৮)
……………
রাশেদা বেগম স্বামী ও দুই বছরের বাচ্চাকে নিয়ে বড় ঘরে শুয়ে আছে আর অন্য ঘরে নিজের যুবতী মেয়ে ও তার বান্ধবী। এটা ৭১ এর ২৫শে মার্চ কাল রাত্রির কথা।
হঠাৎ মধ্য রাতে অন্য ঘর থেকে মেয়ের চিৎকার ও আর্তনাদ শুনে ঘুম ভাঙ্গে বাবা মার। তাড়াহুড়া করে উঠে মেয়ের ঘরের দরজার কাছে এসে দেখে দুই মেয়ের রক্তাক্ত লাশ মেঝেতে পরে আছে। ঘরের মধ্যে তিন জন পাকিস্তানি জানোয়ার। আর আঙ্গিনায় আট দশজন। মেয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখে চিৎকার দিয়ে বুকে জড়ায়ে ধরে কাঁদার আগেই বাবা-মাকে অন্য শয়তানরা ঠাস ঠাস করে কয়েকটা গুলি মেরে রক্তাক্ত করে ফেললো।
বাহিরে গুলির শব্দ শুনে ঘুম ভাঙ্গে রাশেদার ছোট ছেলেটার। মা, মা করে কেঁদে উঠলো। লাইট নিয়ে আরেক শয়তান ঘরে ঢুকে পিচ্চিকে বিছানা থেকে তুলে আঙ্গিনায় নিয়ে আসে এবং সঙ্গে সঙ্গে রাইফেলের বাট দিয়ে পিচ্চিটাকে মেরে মাটিয়ে নুয়ে দেয়। মুখ দিয়ে রক্ত এসে মারা যায় সেও।
অতঃপর আশেপাশের ঘর বাড়ী গুলো জ্বালিয়ে দেয়। সামনে যাকে পাচ্ছে তাকেই গুলি করে মেরে ফেলছে। এই মধ্য রাতে বাংলার শান্তিময় ঘুমে কাতর মানুষগুলোকে মেরে একাকার করে ফেলে সেই শয়তানরা । সেই রাত্রে কত বাঙ্গালীকে যে মেরেছে! পরিবারের সব সদস্যকে একত্রে পেলে একত্রেই মেরে ফেলেছে। এক কথায় যেটাকে বলে গণহত্যা। যদিও ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস না।
০ Comments