গিরগিটি
প্রকাশিত: অগাস্ট ২২, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 2,165 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

গিরগিটি
লেখক: মোঃ নাফিম-উল-আবির
.
তিনি গিরগিটিকে ঘৃণা করেন।
না, গিরগিটি তার কোনো ক্ষতি করেনি। কোনো আসল গিরগিটির সাথে কখনোই তার মোলাকাত হয়নি। কিন্তু তিনি গিরগিটিকে ঘৃণা করেন। তিনি পুরো গিরগিটি জাতিকেই ঘৃণা করেন, কারণ তারা ক্ষণে-ক্ষণে রঙ বদলায়। তারা বহুরূপী। নিজেদের আসল চেহারা ঢাকতে তারা প্রতিনিয়তই সঙ সেজে চলেছে।
তাই গিরগিটির ওপর তার এত আক্রোশ। তিনি কাঁদেন, হু-হু করে কাঁদেন। তার বুকটা হাহাকারে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, তিনি ‘সানলাইট বার’-এ বসে মদ খাওয়াটা উপভোগ করতে পারেন না; যখন দেখতে পান একটা-একটা করে গিরগিটি ঢুকে পড়ছে সমাজে। আস্তে-আস্তে পঙ্গপালের চাইতেও বেশি হয়ে যায় তাদের সংখ্যা, তারা তাদের কাজ শুরু করে। তারা রঙ বদলায়, অন্যদের ধোঁকা দেয়। ক্রমেই ধোঁকার জালে আবিষ্ট হয়ে পড়ে সমাজ। তিনি কাঁদেন, বুক ভরে কাঁদেন; কাঁদেন এই ভঙ্গুর, গিরগিটিতে পূর্ণ সমাজের জন্য, কিন্তু কিছুই করতে পারেন না।
আজও তিনি কাঁদছিলেন। কান্নায় তার ভেতরটা জর্জরিত হচ্ছিলো, যেন চোখের প্রতিটা পানির ফোঁটার সাথে ফুসফুসটা ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে, কোনো সাইকো কিলার যেন চিবিয়ে চলেছে সেই ফুসফুসকে। সামনে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ ধরে পর্যবেক্ষণ করা লোকটা কথা বলে উঠলে তার ধ্যান ভাঙে, তিনি শুধু একটা কথাই বলেন, ‘চলো।’ লোকটার পিছু-পিছু গ্রিনরুম ছেড়ে বের হন তিনি। ক্যামেরার সামনে যান, বুক চিতিয়ে তিনবার জোরে-জোরে শ্বাস নেন। তারপর হাত মেলান গিরগিটিদের সাথে।
হ্যাঁ, গিরগিটি। সেই গিরগিটি, যারা নিজেদের জাল সর্বদা বাড়িয়েই চলেছে; বাড়াতে-বাড়াতে হয়তো পৃথিবীই হয়ে উঠবে আস্ত এক গিরগিটি; তার আক্রোশ থেকে রক্ষা করা যাবে না কাউকেই। যন্ত্রচালিতের মতো তিনজন গিরগিটির সাথে হাত মেলান তিনি, ঘৃণায় কুঁচকে উঠে তার ভ্রূজোড়া। তিনি চট করে সামলে নেন নিজেকে। তারপর পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকান সেই তিনজন মহান গিরগিটির দিকে।
একজন ক্ষমতায় থাকা দলের গিরগিটি, আরেকজন বিরোধীপক্ষের গিরগিটি, আর আরেকজন সমাজকর্মী। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে সমাজকর্মী গিরগিটি অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত বিশ্লেষণ করবেন। ‘ইয়াক থুহ!’ বুকের মাঝেই শব্দ করে থুতু ফেলেন তিনি, কেউ দেখতে পায় না সেটা।
দর্শকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে গিরগিটিদের টকশো ‘বাতচিত’ শুরু করেন তিনি। প্রথমেই ক্ষমতায় থাকা গিরগিটির কাছে যান তিনি। আফটার অল, ক্ষমতার গরম তো দেখাতেই পারে সে! ভাঙা কণ্ঠে একটানা পাঁচ মিনিট বক্তৃতা দিয়ে যায় গিরগিটিটা। দর্শক হাঁ করে সেই ভাষণ শোনে, বিরোধীপক্ষের প্রতিনিধি কিছু বলছে না কেন তা দেখে অবাক হয়। টিভিস্ক্রিনের নিচের দিকে ‘বাতচিত’-এর বিজ্ঞাপন দেখে, শুধু দেখতে পায় না ক্যামেরার ওপাশে থাকা তার মুখাবয়ব, ঘৃণাভরে তিনটি গিরগিটির দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি।
পাঁচ মিনিট পর অত্যন্ত ধৈর্যশীল ভঙ্গিতে নিজের কথা শুরু করে দ্বিতীয় গিরগিটি। তিনি ক্রমেই ধৈর্যহারা হয়ে পড়েন, একেকটা মিনিটকে তার একেকটা বছর বলে মনে হয়। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রথম গিরগিটি মাঝপথেই থামিয়ে দেয় দ্বিতীয়জনকে, নিজের পাল্টা যুক্তিগুলো আবারও বর্ণনা করতে থাকে। দ্বিতীয়জনও ছেড়ে কথা কয় না, সে-ও সমান তেজে জবাব দিতে থাকে। পরিবেশ ক্রমেই ভারী হয়ে উঠতে থাকে।
তিনি তড়িঘড়ি করে সমাজকর্মীর কাছে চলে যান। সমাজকর্মী গিরগিটি মুখে ফিচলে হাসি ঝুলিয়ে তার বক্তব্য শুরু করে। বক্তব্যের তিন মিনিটের মাথায়ই সে গিরগিটি সমাজের প্রধান তিনটা সমস্যা বের করে ফেলে, যেখানে প্রথম দু’জন গিরগিটিরই ভূমিকা আছে। দু’জনেই মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে থাকে খানিকক্ষণ। তারপর তিনি আবার প্রথম গিরগিটির কাছে ফিরে যান, প্রথম গিরগিটি হালে পানি পেয়ে আবারও কথা শুরু করেন।
তার মনে হতে থাকে তিনটা গিরগিটি কিচিরমিচির-কিচিরমিচির করছে। তার বাড়ির আশেপাশে প্রচুর পাখির বসবাস, তারা প্রতিদিন সকালবেলা একইভাবে কিচিরমিচির করে তার ঘুম হারাম করে দেয়। তিনি বিরক্ত হন, ইচ্ছে করে থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে তাদের শেষ করে দিতে। পারেন না, কারণ আরেক সুশীল গিরগিটি এসে থামায় তাকে। প্রাণীহত্যা মহাপাপ—তিনঘণ্টা ধরে টেপরেকর্ডার চালাতে থাকে। তার ইচ্ছা করে অবশিষ্ট বুলেটটা সুশীল গিরগিটির মুখ বরাবর ঢুকিয়ে দিতে।
কল্পনার জগত ছেড়ে বাস্তবে ফিরে আসেন তিনি। একটা বিজ্ঞাপন নেওয়ার সময় হয়েছে।
দর্শকরা তার মৃদুস্বরে বলা বিজ্ঞাপনের ঘোষণা শোনে। ক্যামেরা চলে যায় লাস্যময়ী এক সেলসগার্ল গিরগিটির দিকে—বিস্কুটের প্রচারণা করছে মেয়েটা।
ক্যামেরার সামনের তিনি তিন কাপ কফির অর্ডার দেন। ভদ্রতাবশতই তার নিজের জন্যও এক কাপের অর্ডার দিতে হয়। তড়িঘড়ি করে চার কাপ কফি দিয়ে যায় একজন।
তিনজন গিরগিটি প্রায় সমস্বরেই বলে, ‘এর পর কী প্রশ্ন করছেন আমাদের?’
পরবর্তী আধা মিনিট সংক্ষেপে বিজ্ঞাপনের পরে করা প্রশ্নগুলো সম্পর্কে ব্রিফ করেন তিনি। গিরগিটি তিনজন চিন্তিতমুখে কফির কাপে চুমুক দেয়, নিজেদের মনেই উত্তরগুলো সাজিয়ে রাখছে। অত্যুৎসাহী একজন গিরগিটি খাতায় টুকে রাখে সমস্ত প্রশ্ন।
কফির কাপে চুমুক দিতে গিয়েও থেমে যান তিনি। কফি? ওই কফিটাই তো, যেগুলো গিরগিটিরা খাচ্ছে? হ্যাঁ, তাই তো! একই প্রোডাক্ট—‘নেসলে’র কফি।
শান্ত ভঙ্গিতে উঠে দাঁড়ান তিনি। পচাগলা এই সমাজে গিরগিটিদের খাওয়া খাদ্য তিনি খাবেন না, তা যতই তুচ্ছ হোক না কেন। নইলে তিনিও তো গিরগিটিদেরই সমকক্ষ হয়ে যাবেন!
ভালো একটা কাজ করতে পেরে আত্মগর্বে ফুলে ওঠে তার বুক। ক্ষণিকের পুলকে তিনি ভুলে যান, গিরগিটিদের খাদ্য বাদ দিলে না খেয়ে মরতে হবে তাকে!
বিজ্ঞাপন একসময় শেষ হয়। অফিসফেরত গিরগিটিরা লাস্যময়ীর বিস্কুটের বিজ্ঞাপন ছেড়ে টকশো-তে মনোযোগ দেয়। তাদের চোখে পড়ে না, তিনজন গিরগিটির সামনে তিনটা পরিবর্তন এসেছে। তিনটা কফির পাত্র দেখা যাচ্ছে সেখানে। তার একটু দূরে আরেকটা কফির কাপ দেখা যায়। তিনটা খালি, একটা ভরা।
ময়দান আবার আগের মতো হয়ে যায়। কফি খেয়ে চাঙা হয়ে ওঠা সমাজকর্মী ক্রমেই নিজের গলা উঁচুতে ওঠাতে থাকেন। আরো নেতিয়ে যান প্রথম গিরগিটি, এবার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাতে বাগড়া দেন না তিনি। দ্বিতীয়জন এর ফায়দা ওঠায়, সমাজের প্রতিনিধি গিরগিটির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে। হাজার হোক, সমাজকর্মীর বেশিরভাগ কথাই প্রথম গিরগিটির বিপক্ষে যাচ্ছে যে!
উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই সেটা সামাল দিতে হয় তাকে। তিনি লোভী চোখে গিরগিটি তিনটের দিকে তাকান, নাইন এম এম ক্যালিবারের বুলেট কতটা গভীর ক্ষত করতে পারবে ওদের মাথায়?
একসময় ঘড়ি দেখতে হয় তাকে। আবার বিজ্ঞাপন, এবং আবার সেই পুরোনো কাসুন্দি। অবশেষে চরম পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন তিনি। আজকের মতো টকশোর ইস্তফা দেন, ধন্যবাদ জানান গিরগিটি তিনজনকে।
মাথায় প্রচণ্ড মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ে ঘরে ফিরে আসেন তিনি। ঘরের দরজা খুলেই তার আফসোস হয়, সামনে আরো একজন গিরগিটি দাঁড়িয়ে আছে। তাকে প্রলুব্ধ করতে সুন্দর পোশাক পরে এসেছে তার স্ত্রী। স্ত্রী গিরগিটিরা আবার পুরুষদের ‘কল’ দিতে রঙ বদলায় কিনা!
তিনি বিভ্রান্ত হন না। ক্লান্তিতে তার শরীর ভেঙে পড়ছে, কড়া কিছু কথা শোনান তিনি মহিলা গিরগিটিটাকে। গলার রঙ ফুলিয়ে গিরগিটিটাও সমান তেজে তর্ক করে চলে। হার মেনে একসময় ঘুমিয়ে পড়েন তিনি।
সকালবেলা পাখির কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভেঙে যায় তার। প্রতিবারের মতো পাখিগুলোকে অভিশাপ দেন, সামনাসামনি কিছু করার সাহস পান না। জানালা দিয়েই সুশীল গিরগিটিকে দেখতে পান তিনি, পাখিগুলোকে খাবার খাওয়াচ্ছে। মনে-মনে অভিশাপ দেন তাকেও।
তারপর আরো একটি কর্মব্যস্ত সকাল পার হয়। দিনভর নানারঙের, নানা ঢঙের গিরগিটির সাথে হাত মেলাতে হয় তাকে, হাসিমুখে কথার জবাব দিতে হয়। মেনে নিতে হয় ক্ষুদে গিরগিটিদের আবদার। মনে-মনে প্রত্যেককেই অভিশাপ দেন তিনি, অভিশাপ দিতে পেরে মনটা এক অর্বাচীন আনন্দে ভরে যায়।
তারপর আবার একটি রাত আসে। আবার সেই গ্রিনরুমে সমাজের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করেন তিনি, গিরগিটিদের আগ্রাসনে তার বুকটা কেঁপে ওঠে। বুকে আবারও রক্তক্ষরণ হয় তার। তারপর তাকে পর্যবেক্ষণ করা লোকটার কথায় আবারও সম্বিত ফেলে, তিনি আবারও বলেন, ‘চলো।’
ক্যামেরার সামনে বুক চিতিয়ে শ্বাস নিয়ে হাসিমুখে দু’জন গিরগিটির সাথে হাত মেলান তিনি। অন্য একজন বিরোধীপক্ষের গিরগিটি, আর অন্য একজন সমাজকর্মী। কিন্তু তৃতীয়জন? ক্ষমতাসীন দলের গিরগিটি গেলো কই? তার চোখ আতিপাতি করে লোকটাকে খুঁজতে থাকে।
ওপাশ থেকে টকশোর আয়োজক নিজেই এসে পড়েন। জানান এক ভয়ংকর দুঃসংবাদ। বিরোধীপক্ষের গিরগিটি নাকি আসতে পারবেন না। জরুরি এক কাজে তিনি আটকা পড়েছেন।
‘এখন উপায়?’ সঙ্গত প্রশ্নটাই করেন তিনি। মুখ যদিও ভার করে রেখেছেন, তবে মনে-মনে আনন্দে ফেটে পড়ছেন। যাক, একটা দিন অন্তত গিরগিটিদের সামনে পড়তে হচ্ছে না!
দ্রুত উপায় বাতলে দেন আয়োজক। তাকে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রতিনিধির আসনে বসে পড়তে। এক অ্যামেচারকে তার জায়গায় নিয়োগ দেবেন তিনি, তিনি যেন আজকের মতো টকশোটা চালিয়ে নেন।
ইতস্তত করতে থাকেন তিনি। গিরগিটিদের সাথে এক আসনে বসবেন তিনি? বাতচিত করবেন? কভি নেহি!
সাফ-সাফ নিজের বক্তব্য জানিয়ে দেন তিনি। আয়োজক তার পা প্রায় চেপে ধরে, হাতজোড় করে তাকে অনুরোধ করতে থাকে। ব্যাপার দেখে মুচকি-মুচকি হাসতে থাকে অপর দুই গিরগিটি।
অবশেষে রাজি হন তিনি, ধীরপায়ে খালি আসনটাতে বসেন। আর শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন কাল যেখানে বসে ছিলেন, সেখানটায়।
তরুণবয়সী একজন গিরগিটি প্রবেশ করে। পা ছুঁয়ে সালাম করে তিনজনকে। দুই গিরগিটি তা ভালোই উপভোগ করে, তবে বিরক্ত হন তিনি। তরুণের নামধাম জানতে চান তিনি। জানায়, এ লাইনে সে একেবারেই নতুন, টিভির সামনে আসার অভিজ্ঞতাও তার নেই। সে শুধু ভিডিও ইডিটিং করতে জানে।
টকশো শুরু হয়। তবে আগের দিনের মতো অত জমে না। ম্যাড়ম্যাড়ে এবং নার্ভাস কণ্ঠে অ্যামেচার টকশো শুরু করে। প্রথমে বিরক্ত হয় বাকি গিরগিটিগুলো, বিজ্ঞাপন বিরতির মাঝে আচ্ছা করে বকা দিয়ে দেয় তরুণকে। তরুণ গিরগিটি আবারও কাঁপা-কাঁপা হাতে প্রশ্নপত্রের স্ক্রিপটা দেখে নেয়।
বিজ্ঞাপন বিরতির পর টকশো শুরু হয়। নিছক এক খেলা হিসেবে নিয়েই নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলি উপড়ে দেন তিনি, তুলোধুনো করে ছাড়েন বাকি দু’জনকেই। বলতে গেলে, পুরো এক ঘণ্টা তিনিই মাতিয়ে রাখেন দর্শককে।
গিরগিটির আসনে বসে গিরগিটিরই সাফাই গাওয়ার লজ্জা তাকে স্পর্শ করে না। তিনি স্পষ্ট শুনতে পান দর্শকদের উল্লাস ধ্বনি, ‘মার দিয়া কেল্লা! আরে এ তো ফাটায় দিতাছে!’ তিনি পুলকিত হন, শিহরিত হন। লজ্জায় প্রায় লাল হয়ে যান, টকশো শেষে যখন আয়োজকের মুখেই শুনতে পান, ‘আপনে তো জব্বর টকশো করেন মিয়া! এরপর তুন আপনারেই পার্মানেন্টলি রাইখা দিমুনে।’
ঘাড় কাত করেন তিনি। ব্যস, সেই শুরু। তিনি একের পর এক টকশো করতে থাকেন ক্ষমতাসীনদের আসনে বসে। শীঘ্রই বাগ্মী হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি, টিভি কোম্পানিগুলো তাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে।
ক্ষমতার পরিবর্তন হয়, সেই সাথে ক্ষমতাসীনরা চলে যায় পাশের চেয়ারে। তার চেয়ার অপরিবর্তিত থাকে। তিনি ক্ষমতার পরিবর্তনকে পুঁজি করেই বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পক্ষ নেন, তুলোধুনো করতে থাকেন পূর্বের ক্ষমতাসীনদের এবং বর্তমান বিরোধীদলের।
রঙ বদলান তিনি, ক্ষণে-ক্ষণে।
ঠিক গিরগিটিদের মতো!
.
সমাপ্ত

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

৪ Comments

  1. Mahbub Alom

    চমৎকার,পড়াটায় আনন্দ পেলাম।
    গিরগিটিদের এ এক বাস্তব দুনিয়া।হ্যাঁ,গিরগিটিরা রঙ বদলায়,ক্ষণে ক্ষণে।তাইতো এদেশ প্রতারণার জালে ভরপুর।কিভাবে অনেকগুলা গিরগিটির মাঝে থেকে সময়ের পরিবর্তনে গিরিগিটি তৈরি হয়,লেখক সেটাই দেখিয়েছেন।
    কিভাবে এদেশ চলছে গিরগিটিদের চালিত আইনে?

    লেখককে ধন্যবাদ এমন একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য।

    Reply
    • Nafim Ul Abir

      অনেক অনেক ধন্যবাদ।

      Reply
  2. Halima tus sadia

    আমাদের সমাজে কতো রকমের গিরগিটি রয়েছে।
    দুনিয়াটাই গিরগিটিতে ভরপুর।সমাজে ভালোভাবে বাঁচতে হলে সবার সাথেই তাল মিলিয়ে চলতে হয়।
    প্রতিটি দলের মানুষই এক দল থেকে অন্য দলে গিরগিটির মতো সব দলের পক্ষ নিয়েই কথা বলে।
    গিরগিটিরা ক্ষণে ক্ষণে বদলায়।এ দুনিয়ায় গিরগিটির মতোই কতো মানুষ আছে ক্ষণে ক্ষণে বদলায়।
    এটা প্রতিযোগিতার গল্প না।আরও ভালো গল্প লিখবেন।
    লেখার হাত ভালো।এগিয়ে যান।

    শুভ কামনা

    Reply
  3. আফরোজা আক্তার ইতি

    বাহ! খুব সুন্দর বাস্তববাদী একটা গল্প। খুব ভালো লাগলো পড়ে। পড়েই বুঝা যাচ্ছে, একজন দক্ষ লেখকের যত্নে নেয়া লেখা এটা। লেখার ধরণ খুবি সুন্দর। “তিনি”র মত অনেক মানুষই আনাদের সমাজে বসবাস করছেন যারা ক্ষমতার বিপক্ষে থাকেন এবং ক্ষমতা হাতে আসলেই সেও গিরগিটির মত রঙ বদলাতে বাধ্য হয়। এই গিরগিটিগুলোই সমাজকে ধ্বংসের এর পথে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আমাদের ঘরেই ওঁত পেতে আছে হাজারো গিরগিটি,যারা সুযোগ পেলেই ভোল পালটে নেয়। সুন্দর লিখেছেন।বানানেও তেমন কোন ভুল নেই।
    পচাগলা- পঁচা-গলা।
    ফিচলে- ফিচকে।

    Reply

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *