গল্প লেখকঃ
আমি সেই মিষ্টি মেয়ে
(ইচ্ছে গুলো চাতক পাখী)
(এপ্রিল -২০১৮)
………………
আমি ওয়াহিদ, পুরো নাম আব্দুল ওয়াহিদ। এই ইউনিভার্সিটি’তে নতুন ভর্তি হয়েছি। প্রথম দিনেই এক সিনিউর ভাইয়ার সাথে ঝামেলা হলো। অবশ্য দোষটা আমারই,আমি বেখেয়াল হয়ে চলার কারণে ভাইয়াটার সাথে ধাক্কা খাই। আর সেও খুব রাগ হয়ে আমার কর্লার ধরে বলল…..
—এই ছেলে দেখে চলতে পারোনা। কোনদিকে তাকিয়ে হাটো?
—স্যরি ভাইয়া দেখতে পাইনি। আর হবেনা।
—ঠিক আছে।
পাশ থেকে রহিদের বন্ধু তাওহিদ বলল, আরে রহিদ কি করছিস? ছাড় বলছি। )
রহিদঃ হুম আজকের মত ছেড়ে দিলাম better luck next time. (রহিদ)
তারপর ভাইয়া দুটো চলে গেলো। ওফ্ হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। প্রথম দিনেই সিনিউর’দের সাথে এমন ঝামেলায় পড়তে হবে তা ভাবতে পারিনি। পরের দিন আবার আসলাম। তবে আজ তাওহিদ ভাইয়া নিজে থেকে আমার সাথে কথা বলতে এসেছে।
তাওহিদঃ আরে ছোট ভাই যে, কেমন আছো?
আমিঃ আস্সালামু আলাইকুম ভাইয়া। জ্বী ভালো। আপনি ভালো আছেন তো?
– ওয়ালাইকুম সালাম। হুম আলহামদুলিল্লাহ। তো ভাইয়া বাসা কোথায় তোমার?
– ভাইয়া দেশের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। তবে ঢাকায় মতিঝিল মামা’র বাসায় থাকি।
– ওহ্ আচ্ছা। ভাইয়া নাম কি তোমার?
– আব্দুল ওয়াহিদ সাদ।
– ওহ্ তাই নাকি ছোট ভাই। আমার নাম আব্দুল তাওহিদ তাহাশীন।
– নাইছ নাম ভাইয়া। আমার নামের সাথে মিল আছে দেখছি, মনে হয় আমরা জমজ ভাই ছিলাম। ছোট বেলায় হয়তো মেলায় হারিয়ে গেছি। (একটু মজা করে কথা গুলো ওয়াহিদ বলল)
– হা হা হা হা, হবে হয়তো। বাসায় গিয়ে আম্মুকে জিজ্ঞেস করবো, তাওহিদও মজা করে বলল।
অল্প সময়ে তাওহিদ ভাইয়ার সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে যায়। আর কিছুক্ষণ পর রহিদ ভাইয়া অনেক রাগ হয়ে আমাদের সামনে এসে দাড়ালো। আর আমাকে যা খুশি তাই বলে লাগলো। কিন্তু আমি তার সাথে একবারও খারাপ ব্যবহার করলাম না।
– এই কি সমস্যা কি হুম? আমার বন্ধুর সাথে এত কিসের কথা? জুনিয়র আছো জুনিয়র মত থাকো। সিনিউর’দের সাথে বেশি মিশতে হবেনা। যাও নিজের ক্লাসমেডট দের সাথে যাও। যত্তসব কোথা থেকে আসে এইসব কে জানে। কাউকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে রহিদ বলতে লাগলো।
তাওহিদ – আরে রহিদ এইসব কি বলছিস হুম। জুনিয়র তো কি হয়েছে। ওয়াহিদ খুব ভালো ছেলে।
রহিদ – এই চুপ করতো তুই। আর আমাকে ছেড়ে এইখানে কি করছিস। শুন তাওহিদ আমি চাইনা তোর আর আমার মধ্যে কেউ আসুক। শুধু তুই আর আমি আর কেউ না।
আমি – আস্সালামু আলাইকুম সিনিউর ভাইয়া। আপনাদের সাথে কথা বলতে পেরে খুব ভালো লাগলো। আপনাদের বন্ধুত্ব দেখে আমি মুগ্ধ হলাম। আপনারা কেউ কাউকে ভাগ দিতে চান না সেটা দেখে খুব ভালো লাগছে। আশা করি আপনাদের বন্ধুত্ব সারাজীবন অটল থাকবে। তবে এইটা মানতে পারলাম না ভাইয়া যে জুনিয়র’রা সিনিউরদের বন্ধু হয় না। ওকে ভাইয়া ভালো থাকবেন।
রহিদ – ছেলেটা কেরে তাওহিদ?
তাওহিদ – মুন্সিগঞ্জ বাড়ি। মামা’র বাসায় থাকে।
রহিদ – ওহ্! এতগুলো কথা বললাম তারপরেও কোনো প্রতিবাদ না করে আমাদের বন্ধুত্বকে উইস্ করে গেলো। আসলে ছেলেটা খুব ভালো।
তাওহিদ – যাক বুঝতে পারলি তাহলে।
রহিদ – হুম বুঝতে পেরেছি। আর ভাবছি এমন একজনকে হাত ছাড়া করতে নেই। বন্ধুত্বটা করেই ফেলি চল।
তাওহিদ – হুম চল তাহলে।
ভার্সিটি থেকে বের হতে যাচ্ছি, এমন সময় পেছন থেকে কেউ ডেকে থামিয়ে দিলো। তাকিয়ে দেখি সিনিউর ভাইয়ারা।
তাওহিদ – ওয়াহিদ দাড়াও।
রহিদ – স্যরি।
ওয়াহিদ – ছি, ছি, স্যরি কেনো বলছেন? আপনারা তো আমার বড় তাই স্যরি বলে লজ্জা দিবেন না ভাইয়া।
রহিদ – আরে ভাই এত বড় মন তুমি পেলে কোথায়। তোমাকে সেই কাল থেকে অপমান করে আসছি। তারপরেও তুমি এখনও আমার সাথে হেসে কথা বলছো।
ওয়াহিদ – ভাইয়া আমার মা’মনি বলেছে যে তোমার সাথে যত খারাপ ব্যবহার করবে তুমি তার সাথে তত হেসে কথা বলো। দেখবে সে নিজেই তখন তার ভুল বুঝতে পারবে।
রহিদ – হুম তোমার মা’মনি তোমাকে ঠিক পথে চলাচ্ছে। আর তার প্রমান আমি। দেখো আমি আমার ভুল বুঝতে পেরে আজ তোমার সাথে বন্ধুত্ব করতে এসেছি।
ওয়াহিদ – কিন্তু ভাইয়া আমার বন্ধু হতে হলে কিছু শর্ত মানতে হবে।
তাওহিদ – কি শর্ত?
রহিদ – হ্যাঁ বলো কি শর্ত? আমরা তোমার সব শর্ত মানতে রাজি আছি।
– শর্ত গুলো হচ্ছে,
১) মন দিয়ে পড়া লেখা করতে হবে এবং রেজাল্টে জিপিএ ৫ পেতে হবে। কারণ ইচ্ছে করলেই মানুষ পারেনা এমন কোনো কাজ নেই।
২) কোনো মেয়ের দিকে অন্যভাবে তাকানো যাবেনা বা তাদেরকে অকারনণ ডির্স্টাব করা চলবেনা।
৩) কোনো নেশা দ্রব্যে ব্যবহার করা যাবেনা।
৪) সবসময় মানুষের বিপদে এগিয়ে যেতে হবে এড়িয়ে যাওয়া চলবেনা।
৫) রাগ জেদ কনট্রোল করে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে।
৬) নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহ্’র ইবাদাত করতে হবে।
ওয়াহিদ – মোট কথা পৃথিবীতে যতদিন বাঁচবো নিজেদের ভালো কাজে সব সময় নিয়োজিত রাখবো। আর খারাপ কাজ গুলোকে এড়িয়ে চলবো।
রহিদ – তোমার সব শর্ত আমরা রাজি।
তাওহিদ – সত্যি ওয়াহিদ তোমার তুলনা হয়না। তোমার মত একজনের বন্ধু হতে পেরে আমরা নিজেদেরকে লাকি মনে করছি। আগে কেনো আসোনি ভাই আমাদের জীবনে।
কিছুক্ষণ পর দুটো ছেলে আমাদের তিনজনের সামনে এসে দাড়ালো। আর বলল আমরাও তোমার বন্ধু হতে চাই। আমরাও তোমার সব শর্তে রাজি। বুঝাই যাচ্ছে পাশ থেকে তারা আমাদের কথোপকথন শুনছিলো। তখন আমরা ওদের দুজনের সাথেও পরিচয় হলাম।
—আমার নাম রায়হান ভার্সিটিতে এবার নিউ। (রায়হান)
—আমার নাম রাফিন। আমিও ভার্সিটিতে এইবার নতুন ভর্তি হয়েছি। তোমার কথা গুলো খুব ভালো লাগলো। তাই তোমাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে আসলাম। (রাফিন)
সেদিনের পর থেকে আমাদের পাঁচজনের এক সাথে পথ চলা শুরু হলো। যে আগে ভার্সিটিতে আসতো সে আমির ভাইয়ের ফুচকা দোকানে বসে থাকতো বাকি চার জনের জন্য। তারপর এক এক করে সবাই আসলে তবেই ভার্সিটির ভিতরে যেতাম আমরা। ভার্সিটির সব্বাই আমাদের নাম দিলো ফাইভ স্টার (5 Star)। আমাদের কে যে কেউ 5 Star নামেই চিনতো। অল্প সময়ে আমরা সবার প্রিয় হয়ে উঠলাম।
অনেক সুন্দর হয়ে। এরকম আরও ভালো গল্প আশা করি। পাঁচ বন্ধুর হৃদয় ছোঁয়া গল্প। অসাধারণ হয়েছে গল্পটা।
অনেক সুন্দর হয়ে। এরকম আরও ভালো গল্প আশা করি। পাঁচ বন্ধুর হৃদয় ছোঁয়া গল্প। অসাধারণ হয়েছে গল্পটা।
অনেক সুন্দর হয়েছে। এরকম আরও ভালো গল্প আশা করি। পাঁচ বন্ধুর হৃদয় ছোঁয়া গল্প। অসাধারণ হয়েছে গল্পটা।
অনেক সুন্দর হয়ে। এরকম আরও ভালো গল্প আশা করি। পাঁচ বন্ধুর হৃদয় ছোঁয়া গল্প। অসাধারণ হয়েছে গল্পটা।
অনেক অনেক সুন্দর হয়েছে।
এই জিনিস টা বাস্তবিক দেখা যায় নাহ।
তবে এটা পড়ে মনের মধ্যে একটা প্রেরণা জাগলো।
nice
অসাধারণ একটা গল্প পড়লাম
অনেক সুন্দর হয়েছে গল্প, অসাধারণ গল্প। পড়ে খুব ভালো লাগলো।
অসাধারণ একটা গল্প। অনেক সুন্দর হয়েছে গল্প।
গল্পটা কেনো জানি বারবার পড়তে ইচ্ছে অনেক।
হৃদয় ছোঁয়া গল্প।
wow..Nice..
ধন্যবাদ।। এরকম গল্গ উপহার দেওয়ার জন্য।।।