এমন মায়েদের হাজার সালাম
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারী ৮, ২০১৮
emon mayeder hajar salam
লেখকঃ vickycherry05

 1,542 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ vickycherry05

গল্প লেখকঃ
কুয়াশায় চাদর
(ফেব্রুয়ারী’১৮)
…………

বাসায় টিভি দেখছিলাম, সময়টা বেজে ২:৩০ থেকে ৩ টা। হুট করেই কারেন্টা চলে গেলো। কি আর করবো আম্মু বাসা থেকেও বের হতে দিবেনা। দরজা খুলে গেইমস খেলছি, হঠাৎ একজন বৃদ্ধা মহিলা এসে ভিক্ষা চাইলো, বয়স ৫৮ এর একটু বেশি হবে। মহিলাকে দেখে প্রচুর মায়া হলো। এত বয়স্ক মহিলা এই বয়সে এসে ভিক্ষা করছে দেখতেই খারাপ লাগছে। আমার কাছে আবদার করলো কিছু টাকা দেওয়ার জন্য। পকেটে তেমন বেশি টাকা ছিলোনা আম্মুর কাছ থেকে ১০০ টাকার একটা নোট এনে দিলাম। ” বেচে থাকো বাবা ” বলে পাশের রুমে চলে যায়। পাশের রুমে নক করার পর হিকুলা আন্টি বের হয় উনাকে দেখে কিছু টাকা দিলো। মুখের ভাষা একই এলাকার মনে হওয়ার হিকুলা আন্টি মহিলার বাড়ি কোথায় জিজ্ঞাস করলে বৃদ্ধা জানায় তার বাড়ি “তারাইন”। একই এলাকার হওয়ার আন্টিটি জিজ্ঞাস করলো পরিবারে কে কে আছে? বৃদ্ধা মহিলাটি বলে ওনার ২মেয়ে ২ ছেলে,,স্বামী নেই। অনেক আগেই মরা গেছে। বড় ছেলে বিয়ে করে বউ নিয়ে আলাদা থাকে। মায়ের খবর নেয়না,মেয়েরা গার্মেন্টস এ চাকরি করে। আর ছোট ছেলে পড়াশোনা করছে ইন্টারমিডিয়েটে। একথা গুলো শুনে উনাকে জিজ্ঞাস করলাম ভিক্ষা করেন কেন? মেয়ারাতো ইনকাম করে আপনার খেয়াল রাখেনা বুঝি? তখন মহিলাটি বলে না বাবা। মেয়েরা তো তাদের টাকা দিয়ে নিজেরাই ভালো মত চলতে পারেনা। আমারতো আরো একটা ছোট ছেলে আছে। ওরে দেখার কেউনাই আমি ছাড়া। পড়াশোনাই ভালো তাই পড়াইতেছি কিন্তু অনেক খরচা ওইগুলাতো ব্যবস্থা করা লাগে। পুলা কয়েকটা ছাত্র পড়ায় কিন্তু সেইগুলা দিয়া পড়াশোনা চালাইতে অনেক কষ্ট হয়। আমি জানি কিন্তু আমায় বলেনা। পুলা না দেখার মত ভিক্ষা করে কিছু উর্পাজন করার চেষ্টা করি। আমি অবাক হয়ে থাকিয়ে তখন তিনি আরো বলেন দেখো বাবা আমিতো মইরা যাবো বেশি দিন বাচবো না।

কিন্তু আমার ছেলেতো আরো অনেক দিন থাকবে, আমার দিন না হয় কোনো মতে কাটায়া দিলাম কিন্তু আমার ছেলেতো আরো অনেক দিন বাচবে। আমি যদি ছেলেটারে পড়াশোনা করাইয়া মানুষ করতে পারি তইলে আমি মরলেও সবাই বলবে আমি একটা কাজের কাজ করে গেছি। আর আমিতো ভিক্ষা করি পড়াশোনা করিনাই বিধায়,আমার ছেলেও ভিক্ষা করুক এইটা আমি কেমনে মাইনা নিমু? আমার ছেলে যাতে ভালো করে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থা কইয়া যাইতে পারলে মইরাও শান্তি পামু। ভিক্ষা কইরা ছেলেটারে পড়াই, বয়স বেশি নইলে গার্মেন্টস করতাম। গরিব হইছি বিধায় পুলাটারে কি মানুষ করমুনা??

মাইয়াগুলা না হয় নিজের মতে কাউরে বিয়া কইরা নিবে কিন্তু আমার পুলাটাতো একা পইরা যাবে ওরে ভালা জায়গায় রাইখা মরলেও শান্তি। কথাগুলা শুনে বুঝতে পারছি উনি অশিক্ষিত হলেও দায়িত্ববান মা।উনি চলে যাওয়ার আগে আরো কিছু টাকা দিয়ে এইদিকে মাঝে মধ্যে আসতে বল্লাম।

ভালোবাসা কাকে বলে তার বাস্তব প্রমান এই মহিলাটি। আসলেই মায়ের তুলনা কারো সাথে হয়না। এই পৃথীবীতে একমাত্র মায়ের ভালোবাসায় পিউর এক বিন্দুও খাদ থাকেনা। সন্তান মাকে ভালোবাসুক বা না বাসুক মা সবসময় সন্তানকে ভালোবেসে যায় মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত।

এমন মায়েদের হাজার সালাম…..????????????????

সম্পর্কিত পোস্ট

অঘোষিত মায়া

অঘোষিত মায়া

বইয়ের প্রিভিউ ,, বই : অঘোষিত মায়া লেখক :মাহবুবা শাওলীন স্বপ্নিল . ১.প্রিয়জনের মায়ায় আটকানোর ক্ষমতা সবার থাকে না। ২.মানুষ কখনো প্রয়োজনীয় কথা অন্যদের জানাতে ভুল করে না। তবে অপ্রয়োজনীয় কথা মানুষ না জানাতে চাইলেও কীভাবে যেন কেউ না কেউ জেনে যায়। ৩. জগতে দুই ধরণের মানুষ...

আমার জামি

আমার জামি

জান্নাতুল না'ঈমা জীবনের খাতায় রোজ রোজ হাজারো গল্প জমা হয়। কিছু গল্প ব্যর্থতার,কিছু গল্প সফলতার। কিছু আনন্দের,কিছু বা হতাশার। গল্প যেমনই হোক,আমরা ইরেজার দিয়ে সেটা মুছে ফেলতে পারি না। চলার পথে ফ্ল্যাশব্যাক হয়। অতীতটা মুহূর্তেই জোনাই পরীর ডানার মতো জ্বলজ্বলিয়ে নাচতে...

ভাইয়া

ভাইয়া

ভাইয়া! আবেগের এক সিক্ত ছোঁয়া, ভালবাসার এক উদ্দীপনা, ভাইয়া! ভুলের মাঝে ভুল কে খোঁজা, আর ভালবাসার মাঝে ভাইকে খোঁজা, দুটোই এক কথা! ভুল তো ভুল ই তার মাঝে ভুল কে খোঁজা যেমন মূর্খতা বা বোকামি। ঠিক তেমনি ভালবাসার মাঝে ভাইকে খোজাও মূর্খতা! আমার কাছে ভাইয়া শব্দটাই ভালবাসার...

০ Comments

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *