দুই টাকার আইসক্রিম, বই সামনে নিয়ে চিৎকার করে পড়া, কলম দিয়ে এক অক্ষর বারবার লিখে হাত ব্যাথা সহ্য করতে করতেই ছোটবেলা কাটিয়ে দেওয়া।
একটু বড় হওয়ার পর ছন্নছাড়া হয়ে যাওয়া। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দেয়া কোনো এক বট তলা। যেখানে বসে আড্ডা দিত কয়েকজন স্কুল পালানো ছাত্রের সাথে সঙ্গীহীন একটা কুকুর। স্বাধীন মতো চলতে চাওয়া, ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেওয়া, পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট করা এসবের জন্য বাবা মা এর বকা, অন্যদের কটুকথা সহ্য করতে করতেই আরেকটু বড় হয়ে উঠা।
মানুষগুলোকে নতুন করে চেনা। পরিচিত মুখগুলো অপরিচিত হয়ে যাওয়া। ছন্নছাড়া নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া। কঠিন বাস্তবতা’কে খুব কাছে দেখতে পাওয়া। তবুও বাস্তবতা পেছনে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হঠাৎ হোঁচট খাওয়া। সেটা সামলে নিয়ে আরো এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন বুনতে থাকা।
একটু একটু করে বুনতে থাকা স্বপ্নগুলোকে সত্যি করার আপ্যায়ন চেষ্টা। পাঁচ দশ টাকা বাঁচাতে হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে পৌছানো। নিজেকে সময় দেওয়া হয়ে উঠেনা বিধায় অন্য কাউকে দেওয়া যায়না, এভাবে ভেঙে যায় কিছু সম্পর্ক। আবার নতুন ভাবে নিজেকে তৈরি করা। বুনতে থাকা স্বপ্নগুলো সত্যি হতে থাকা। আরেকবার বড় হওয়া, যতটুকু বড় হওয়া তার কল্পনায় ছিল।
একসময় মানুষের সবকিছু থেকে মুক্তি হয়। যেসময় সে বৃদ্ধ হয়। কিন্তু এখানে মুক্তি কোথায়? চাইলেই সহজে চলতে পারেনা। হাত পা থরথর করে কাঁপে। বৃদ্ধ বয়সে মানুষ তার ফেলে আসা হাজারও দিনরাতের গল্পের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য একজন সঙ্গী খুজেঁ। ব্যাস্ত সবাই! কেউ নেই তার অহেতুক গল্প শোনার। জানালা দিয়ে রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে মানুষটি বিড়বিড় করে কি যেন বলছে; আমি আবার ছন্নছাড়া হবো। দুই টাকার আইসক্রিম খেতে খেতে আড্ডা দিবো বন্ধুদের নিয়ে। সাথে থাকবে সেই অপলক তাকিয়ে থাকা কুকুরটা। আমি ফিরে যেতে চাই আমার শৈশবে। যে শৈশব আমাকে এখানে এনে দাড় করিয়েছে। তবুও ফিরে যেতে চাই আরেকবার।
০ Comments