দিনান্তের পড়ন্তে
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 2,343 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

:শেখ ইমরান
.
-“সোহানী,অ্যাঁই সোহানী!!! সকাল ছয়টা বাজে,তাড়াতাড়ি উঠে পড়।পরে কিন্তু আমি আর ডাকতে পারব না,এই বলে দিলাম!”,প্রতিদিনকার মত সোহানীকে ঘুম থেকে ডেকে দিয়ে মা চলে গেলেন।
তবে সোহানী নির্বিকার।প্রতি
দিন সকালেই সোহানীর একটা চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা থাকে।আর সেটা হচ্ছে যতক্ষণ অ্যালার্ম বাজবে না,ঠিক ততক্ষণ বিছানা ছেড়ে উঠবে না! আর এই প্রতিজ্ঞার কখনোই নড়চড় হয়নি।এমনিতেই অ্যালার্ম ঘড়ি যে লোক আবিষ্কার করেছে,তাকে মাঝে মাঝেই গলা টিপে মেরে ফেলতে ইচ্ছা করে তার।তবে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চায়না বলেই সোহানী আর সেই পথে পা বাড়ায়নি।টিং টং টিং টং…..হঠাৎ অ্যালার্মটা বেজে উঠল।তাড়াহুড়ো করে অ্যালার্মটা বন্ধ করেই আবার বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়ল সোহানী।
.
যদিও সোহানীর শারীরিক বয়স বেড়েছে,কিন্তু মনের দিক থেকে এখনো বাবা-মায়ের সেই ছোট্ট সোহানীই রয়ে গেছে! এখনো টেডি বিয়ার নিয়ে ঘুমানোটা সেটাই প্রমাণ করে।হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল,হিমাদ্রির ফোন!
ঘুমজড়ানো কণ্ঠে ফোনটা কানে তুলে ঢুলুঢুলু চোখে সোহানী বলল,”হ্যালো!”
ফোনের ওপাশ থেকে ভেসে এলো,”গুড মর্নিং পাগলি!”
সোহানী চোখ বড় বড় করে বলল,”কিহ!!! আমি পাগলি?”
হিমাদ্রি মজা করার জন্য বলল,”ওহ,স্যরি।তুই তো সাইকো!”
এবার সোহানীর চোখ মুখ রাগে লাল হয়ে গেল।
রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে বলল,”উফ্,হিমাদ্রি! এবার তুই চুপ করবি! এত সকালে কেন রিং দিয়েছিস সেটা বল?”
হিমাদ্রি বিজ্ঞের মত বলে উঠল,”তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে যে তুই খুব রাগ করেছিস।তাই তোকে আর জ্বালানোটা ঠিক হবে না”,বলেই হিমাদ্রির মুখে একটা দার্শনিক দার্শনিক ভাব ফুটে উঠল!
এবার তো সোহানীর ধৈর্য্যর বাঁধ ভেঙে গেছে,মাথা দিয়ে আগ্নেয়গিরির লাভার মত উত্তাপ বের হচ্ছে।
চোখ-মুখ লাল করে দাঁত মুখ খিচিয়ে বলল,”আচ্ছা বলতো হিমাদ্রি,তোর কি আমাকে জ্বালানো ছাড়া পৃথিবীতে আর কোন কাজ নেই? সত্যি করে বলতো?”
এদিকে হিমাদ্রি মনে মনে হাসছে।
হাসি গোপণ করে বলল,”আরে ধুর! এত রাগ করছিস কেন? এই যে আমি এত সকালে ফোন করে তোর খোঁজ নিচ্ছি,এটাও তো একটা কাজ! তোকে ভালবাসি বলেই তো এমনটা করি!”
– “থাক আর প্রেমিকপুরুষদের মত ভালবাসা দেখাতে হবে না! কেন ফোন দিয়েছিস সেটা বল!”
.
সোহানীকে চমকে দিয়ে হিমাদ্রি বলে উঠল,”আমি আধ ঘন্টার মধ্যে তোর বাড়িতে আসছি,রেডি থাক!”
সোহানী তো পুরোই আকাশ থেকে পড়ল।
-“আমার বাড়িতে আসছিস মানে? তুই পাবনায় কবে আসলি?”
– “কালকে রাতের ট্রেনে।কমলাপুর থেকে সোজা ঈশ্বরদী! তারপর সিএনজি করে এখন আমি সোজা তোর বাড়ির পথে!”
সোহানী এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না,আসলে অবিশ্বাসের ঘোরটাই কাটছে না।
-“আচ্ছা দাঁড়া দাঁড়া,তুই যেহেতু পাবনায় এসেছিস….এটার পিছনে নিশ্চয়ই কোন উদ্দেশ্য আছে!”
হিমাদ্রি হাসতে হাসতে বলল,”হুম তা তো আছেই।তবে গিয়ে সব বলব,তোর রোমাঞ্চটা এখনই নষ্ট করতে চাইছি না! বলেই হঠাৎ করে ফোনটা কেটে দিল হিমাদ্রি!
.
সোহানী তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ল।দাঁত মেজে ডাইনিং টেবিলে গেল।সোহানীর বাবা সাজেদুল ইসলাম পাবনা জেলা আদালতের অ্যাডভোকেট।বাবা উকিল হলেও তিনি চাননি মেয়ে সেই পথে যাক।তাই তাঁর ইচ্ছা ছিল মেয়েকে ডাক্তার বানানোর,আর হয়েছেও তাই।পাবনা মেডিকেল কলেজ থেকে সোহানী এমবিবিএস পাস করেছে দু বছর হল।তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল,চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণার এত ক্ষেত্র থাকা সত্ত্বেও সোহানী সাইকোলজিকেই সানন্দে বেছে নিয়েছে! তবে সোহানীর মা অতশত ইংলিশ বোঝেন না।তিনি অলরেডি সোহানীকে পাগলের ডাক্তার বলে ডাকতে শুরু করে দিয়েছেন! আর পাড়া-পড়শীরাও কেন যেন সোহানীর মায়ের সাথে গলা ছেড়ে গান গাওয়ার মত করে সুর মিলিয়েছে।মানে সোহানীর এই পেশাকে তারাও ভাল চোখে দেখেনি।
কেউ কেউ তো এমনও বলেছে,”গেল গেল সব রসাতলে গেল! এইবার মেয়েটা একেবারে গেল।এই মেয়ের বিয়ে থা কিচ্ছু হবে না।ছিঃ ছিঃ ছিঃ পাগলের ডাক্তার,তা আবার কখনো হয় নাকি!” তবে সোহানী এসব কটু কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়।তবে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হল,সোহানীর মা মানুষকে বলে বেড়ান যে তার মেয়ে নাকি গাইনোকলোজিস্ট,কিন্তু সাইকোলজিস্ট নয়! তবে সোহানীর তাতে বয়েই গেছে,সেদিকে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই!
.
-“সোহানী মা,গুড মর্নিং”,সোহানীর বাবা স্নেহজড়িত কন্ঠে বলে উঠলেন।সোহানী অবশ্য তার বাবার কাছ থেকেই সব সময় সাপোর্ট পায়।হঠাৎ কলিংবেলটা বেজে উঠল।
সোহানী দরজা খুলে হিমাদ্রিকে দেখেই চমকে উঠল।
-“কিরে,তোকে কেমন সারপ্রাইজ দিলাম বল!” হিমাদ্রির মুখে রহস্যময় হাসি।
সোহানী মুখ বাঁকিয়ে বলল,”আমাকে সারপ্রাইজ দেওয়াটা অতটা সোজা না!”
-“গুড মর্নিং আঙ্কেল!” সোহানীর বাবাকে বলল হিমাদ্রি।
-“গুড মর্নিং।কেমন আছো হিমাদ্রি?” হিমাদ্রিকে প্রশ্ন করলেন সোহানীর বাবা।
-“এই তো কোনরকম চলছে আঙ্কেল।সাংবাদিকদের লাইফ যেমন হয় আর কি! যাযাবরদের সাথে কোন তফাৎ নেই।”
.
হিমাদ্রি পেশায় সাংবাদিক।এনটিভির জুনিয়র নিউজ রিপোর্টার।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পাস করেছে গত বছর।সোহানী খেয়াল করল,আজকে হিমাদ্রিকে দেখতে পুরোদস্তুর সাংবাদিকদের মতই লাগছে।চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা,গায়ে নীল পাঞ্জাবী,উপরে কোটি! গলায় ক্যামেরা ঝুলানো।
-“তোর এখানে আসার কারণটা জানতে পারি কি?”,হিমাদ্রিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল সোহানী।
-“হুম,অবশ্যই জানবি।আমি আসলে মানসিক রোগীদের নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি ফিল্ম বানাবো! আর এই ব্যাপারে তোর একটু হেল্প লাগবে!”
সোহানী বেশ অবাক হয়ে চোখ ছোট ছোট করে বলল,”ডকুমেন্টারি!”
-“আমি তাহলে চলি হিমাদ্রি,একটু কোর্টে যেতে হবে।”সোহানীর বাবা চলে গেলেন।
-“আমি তোকে কি রকম হেল্প করতে পারি?”,হিমাদ্রিকে প্রশ্ন করল সোহানী।
-“তোকে একটু আমার সাথে হেমায়েতপুর যেতে হবে!” হিমাদ্রি বলল।
-“আচ্ছা,তা না হয় যাব।তুই সকালের নাস্তা করেছিস?” সোহানী জিজ্ঞাসা করল।
-“হুম,করেছি।তুই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে,এখনি বের হবো।”হিমাদ্রি বলল সোহানীকে।
-“আচ্ছা ঠিক আছে,দশ মিনিট বস।” বলেই চলে গেল সোহানী।
.
দশ মিনিট পর যখন সোহানী এল,হিমাদ্রি বেশ অবাক হয়ে গেল।একটা হলুদ শাড়ি পরে এসেছে সোহানী,দেখতে বেশ লাগছে! কপালে টিপ,কানে লম্বা দুল।
-“তোকে শাড়ি পরে খুব সুন্দর লাগছে!” মুগ্ধ নয়নে বলে উঠল হিমাদ্রি!
সোহানী বিরক্ত হয়ে বলল,”এখন কি আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকবি?নাকি উঠবি তাড়াতাড়ি? ”
হিমাদ্রি মুচকি হেসে বলল,”যাওয়া যাক তাহলে!”
.
সোহানীদের বাড়ি বাবলাতলা রোডে।এখান থেকে হেমায়েতপুর যেতে কমপক্ষে দুই ঘন্টা তো লাগবেই।একটা সিএনজি ভাড়া করল হিমাদ্রি।এখন মিশন হেমায়েতপুর!
কিছুদূর যাওয়ার পর হিমাদ্রি বলল,”এখানে একটা আশ্রম আছে না! কি যেন নাম?
সোহানী বলল,”হুম,অনুকূল ঠাকুর আশ্রম!”
-“কিন্তু আজ আর ওখানে যাওয়া হবে না”,একটু তাড়া আছে!”
-“আচ্ছা পাগলদের চিকিৎসা করতে তোর কেমন লাগে?” বলেই মিটমিট করে হাসতে লাগল হিমাদ্রি।
সোহানীকে একটুও বিচলিত মনে হল না।
বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে বলল,”তোর সাথে কথা বলতে যেমনটা লাগে,ঠিক তেমন!”
হিমাদ্রির বিষম খাওয়ার মত অবস্থা হল।
অবাক হয়ে বলল,”তার মানে কি আমি পাগল!”
-“নয়তো কি? তোর মত পাগল আমি দ্বিতীয়টা দেখিনি!”
– “তা অবশ্য মন্দ বলিসনি! আমি আসলেই তোর জন্য পাগল…….” বলেই বাইরে তাকাল হিমাদ্রি।
সোহানী চোখ বড় বড় করে তাকালো হিমাদ্রির দিকে।কিন্তু হিমাদ্রি সেটা টের পেল না।
.
সিএনজিটা এসে থামল একেবারে হসপিটালের গেটে।
-“স্যার,হাসপাতাল এসে গেছে”,হেসে বললেন সিএনজি ড্রাইভার।
দুজনে সিএনজি থেকে নেমে উপরে তাকালো,সাইনবোর্ডে বড় অক্ষরে লেখা,”পাবনা মানসিক হাসপাতাল।” সিএনজি ভাড়া মিটিয়ে গেটে আসতেই দারোয়ান আটকালেন,”কাকে চাই?”
-“আমরা আসলে দর্শনার্থী।একটু ঘুরে দেখব!” হিমাদ্রি বলল।
-“এই খাতায় নাম আর ফোন নম্বরটা লিখে যান”,বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিতে মাথা নেড়ে বলল দারোয়ান।
সব ফরমালিটি শেষে ভেতরে ঢোকার সুযোগ পাওয়া গেল!
.
ভেতরে ঢুকেই হিমাদ্রির চক্ষু তো পুরোই ছানাবড়া।
-“এটা তো পুরোপুরি জেলখানা”,চোখ বড় বড় করে বলল হিমাদ্রি।
-“পাগলদেরকে তো এখনো ভালমত চিনিসনি।একটু পরেই বুঝতে পারবি!” হেসে বলল সোহানী।
সোহানীর মুখে এমন কথা শুনে হিমাদ্রিকে বেশ চিন্তিত মনে হল।তার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম! হিমাদ্রির কপালে চিন্তার বলিরেখা দেখে বেশ মজা পেল সোহানী।
.
ছয়তলা বিল্ডিং এর নিচতলায় অনেকগুলো সেল্! প্রতিটিতে চারপাঁচজন করে মানসিক রোগী।তারা কি সব আবোলতাবোল বকছে,সেটার মর্মদ্ধার করতে পারলো না হিমাদ্রি।আরেকটা কক্ষে দেখল,একজন পাগল মাথা চুলকাচ্ছে আর দেয়ালে কি যেন সব হিজিবিজি আঁকছে।দামী ডিএসএলআর ক্যামেরাটা দিয়ে বেশ কয়েকটি ভিডিও নিল হিমাদ্রি।তারপর দোতলায় ওঠার পর আরো অবাক হয়ে গেল হিমাদ্রি।দেখল কয়েকজন পাগল মিলে একটা পাগলের হাত-পা ধরে চ্যাঙদোলা করে তুলে বারবার পানিতে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার ভান করছে কিন্তু আসলে ফেলছে না! আর এটা দেখে অন্য পাগলেরা আনন্দে হাততালি দিচ্ছে আর লাফালাফি করে হাতপা ছুঁড়ছে।ব্যাপারট
া দেখে বেশ মজা পেল সোহানী আর হিমাদ্রি।আরেকটা সেলে দেখল একটা পাগল জোরে জোরে চিৎকার করছে।
হিমাদ্রিকে দেখেই পাগলটি দৌড়ে এসে বলল,”তুই আইনা দিতে পারবি আমার শেফালিরে? বলনা পারবি কিনা? আমি জানি তুই পারবি!” ভয়ে পেয়ে গেল হিমাদ্রি।তাড়াতাড়ি চলে এল।
.
-“এখানে একটা বেশ বড় মেন্টাল প্লেগ্রাউন্ড আছে”,সোহানী বলল হিমাদ্রিকে।
-“প্লে গ্রাউন্ড! মানে পাগলদের খেলার মাঠ? বলিস কি সোহানী?” সিঁড়ি ধরে নিচে নেমে সোজা মাঠের দিকে গেল তারা।
পাগলরা যে এত সুন্দর ক্রিকেট খেলতে পারে,সেটা নিজের চোখে না দেখলে হিমাদ্রি কোনোদিন বিশ্বাস করতো না।মজার বিষয় হচ্ছে,আম্পায়ারটাও পাগল! কেমন অদ্ভুতভাবে সব বলেই এলবিডব্লিউ দিচ্ছে।আর সেটা নিয়ে সব পাগলেরা হইহল্লা শুরু করে দিয়েছে! কি ক্রিটিক্যাল সব ব্যাপার-স্যাপার।
কিছু পাগল আবার ফুটবল খেলছে! কেউ ফুটবলটা হাতে নিয়ে দৌড় মারছে,আবার কেউ কেউ হেড করতে পারেনি বলে মাঠে বসে কান্নাকাটি করে হাত-পা ছুঁড়ছে! খেলার মাঠের একটা ভিডিও নিল হিমাদ্রি।তবে সবকিছু দেখার পর নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে করছে হিমাদ্রি।আর এজন্য সোহানীকে একটা ধন্যবাদ দেওয়াই যায়!
.
-“তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।চল এখান থেকে বের হওয়ার পরে বলব,” কথাটা বলেই হিমাদ্রিকে চমকে দিল সোহানী।
বলেই হঠাৎ হনহন করে হাঁটতে শুরু করল! হিমাদ্রি পিছু নিল।গেটের বাইরে আসার পর একটা সিএনজি ভাড়া করলো সোহানী।
-“আরে,আমরা যাচ্ছি কোথায়?” অবাক হয়ে প্রশ্নটা করল হিমাদ্রি।
-“উঁহু,একদম চুপ।একটাও কথা বলবি না!” ভ্রু কুঁচকে বলল সোহানী।
তাই হিমাদ্রি আর কথা বলার সাহস পেল না!
.
প্রায় একঘন্টা পর সিএনজি এসে থামলো ইছামতী নদীর পাড়ে।এখন পড়ন্ত বিকেল,মিষ্টি রোদ নদীর টলমলে পানির সাথে খেলা করছে।এখানে প্রচুর জনসমাগম,ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা নদীতে জলকেলি খেলছে! নদীর ধারে কিছু ফুচকা-চটপটি আর চায়ের দোকান।হিমাদ্রির হাত ধরে সোজা নদীর কিনারে নিয়ে গেল সোহানী।
আঙুল দিয়ে নদীর দিকে দেখিয়ে বলল,”দেখেছিস নদীটা কি মায়াবী! আর নৌকাগুলো নদীর সাথে বন্ধুত্ব গড়েছে।ঠিক আমার আর তোর বন্ধুত্বের মত।”
-“হুম,তা ঠিক! কিন্তু তুই আজকে কবি হয়ে গেছিস মনে হচ্ছে।” হিমাদ্রি বলল।
-“আরে ধুর,আমি তো পাগলের ডাক্তার।আর তোর মত বদ্ধ পাগলের চিকিৎসা করাই আমার দায়িত্ব!”
-“তা যা বলেছিস।কিন্তু আমার পাগলামি তো চিরদিনের।তুই এত সহজে ভাল করতে পারবি না।” সোহানী নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,”আচ্ছা দেখা যাক!”
.
চারিদিকে মৃদু অন্ধকার নেমে এসেছে।সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্যটি কিছুক্ষণ পরেই তাদের দুজনের চোখে ধরা দিল।এই অসম্ভব সুন্দর দৃশ্যটি ক্যাপচার করল হিমাদ্রি।ইছামতী তার অপূর্ব মায়াবী সৌন্দর্য নিয়ে স্থান করে নিতে চাইছে মনের মানসে।হিমাদ্রি আর সোহানী সেখানে এক টুকরো ভালবাসার প্রতীক।
(সমাপ্ত)

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

৪ Comments

  1. আখলাকুর রহমান

    গোপণ – গোপন

    দু বছর – দু’বছর

    সুন্দর লিখেছেন। শিক্ষণীয় কিছু থাকলে ভালো লাগতো।
    ভালো লেগেছে আমার কাছে।
    শুভ কামনা রইল।

    Reply
  2. মাহফুজা সালওয়া

    গল্পটা অসম্পূর্ণ মনে হলো!
    আচ্ছা,হিমাদ্রী সাধারণত মেয়েদের নাম।অথচ সে পান্জাবী পড়েছে বা সোহানীর ভালবাসার প্রতীক, লাইনগুলো এটাই প্রমাণ করে হিমাদ্রী এই গল্পের নায়ক।
    লেখকের প্রতি অনুরোধ রইল, পরের বার কনসেপ্ট ক্লিয়ার রাখবেন,এতে পাঠক আগ্রহ খুঁজে পাবে।
    গল্পের নাম নির্বাচনে আরো দক্ষ হওয়া প্রয়োজন।
    দিনান্ত – দিনের অন্ত বা দিনের শেষে এবং পড়ন্ত – যখন পড়ে বা শেষ বেলা।
    সুতরাং অর্থ দাঁড়ায় —দিনের শেষে শেষ বেলা (?)।
    আপনার খেয়াল রাখা উচিত ছিলো শব্দদ্বয়ের অর্থের প্রতি।
    যথেষ্ট গুছিয়ে লিখেছেন, কিন্তু কিছু অস্পষ্ট জিনিস চোখে পড়েছে,পরের বার বিষয় গুলা খেয়াল রাখবেন।
    শুভকামনা ????

    Reply
  3. মাহফুজা সালওয়া

    গল্পটা অসম্পূর্ণ মনে হলো!
    আচ্ছা,হিমাদ্রী সাধারণত মেয়েদের নাম।অথচ সে পান্জাবী পড়েছে বা সোহানীর ভালবাসার প্রতীক, লাইনগুলো এটাই প্রমাণ করে হিমাদ্রী এই গল্পের নায়ক।
    লেখকের প্রতি অনুরোধ রইল, পরের বার কনসেপ্ট ক্লিয়ার রাখবেন,এতে পাঠক আগ্রহ খুঁজে পাবে।
    গল্পের নাম নির্বাচনে আরো দক্ষ হওয়া প্রয়োজন।
    দিনান্ত – দিনের অন্ত বা দিনের শেষে এবং পড়ন্ত – যখন পড়ে বা শেষ বেলা।
    সুতরাং অর্থ দাঁড়ায় —দিনের শেষে শেষ বেলা (?)।
    আপনার খেয়াল রাখা উচিত ছিলো শব্দদ্বয়ের অর্থের প্রতি।
    যথেষ্ট গুছিয়ে লিখেছেন, কিন্তু কিছু অস্পষ্ট জিনিস চোখে পড়েছে,পরের বার বিষয় গুলা খেয়াল রাখবেন।
    শুভকামনা ????

    Reply
  4. আফরোজা আক্তার ইতি

    শুরুতে গল্পটা পড়ে ভেবেছিলাম, গল্পে শিক্ষামূলক বা সচেতনতামূলক কোন বার্তা থাকবে। তেমন কিছু না থাকলেও গল্পটি চমৎকার।চাইলে গল্পটি আরো ভালোভাবে শেষ করতে পারতেন।
    শুভ কামনা।পরবর্তীতে আরো ভালো গল্প উপহার দিবেন আশা করছি।

    Reply

Leave a Reply to আফরোজা আক্তার ইতি Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *