সুমনা হক
ছেলেপক্ষের সামনে নিয়ে আসা হলো হিমিকে। হিমি বারবার ঘোমটা টানছে সামনের দিকে, এমন ভাবে ঘোমটা টানছে যেন কেউ তাকে না দেখতে পারে।হিমি ঐ রাতের পর সব সময় এমনি ঘোমটা টেনে রাখে যেন বাহিরের কেউ তাকে না দেখতে পারে আর সেই সাথে আঙ্গুল দিয়ে শাড়ীর আঁচল টা টেনে ধরে রেখেছে।
এরিমধ্যে পাত্রপক্ষ থেকে একজন বলে উঠলো “হিমি তুমি কি লজ্জা পাচ্ছো?
দেখো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই, আমি রাশেদের বোন। আর এখানে তোমাকে আমরা তেমন কিছু কঠিন কাজ করতে বলবো না।তোমাকে আমরা একটু দেখবো সে সাথে তুমিও আমাদের দেখবে বিশেষ করে রাশেদ কে ভালো করে দেখবে কারণ পরে যদি আমার ভাইকে পছন্দ না হয়।
হিমিকে তার মা কানে কানে এসে কি জানি বলে গেলো তারপর হিমি ঘোমটা সরিয়ে ফেললো। হিমির গাঁয়ের রংটা শ্যামবর্ণ, চোখ গুলো অনেক মায়াবী। হিমির চোখ রাশেদের দিকে যেতেই হিমি রাশেদকে দেখে।হিমি চমকে উঠে সাথে সাথে হিমির চোখ লাল হয়ে যায়।এরিমধ্যে হিমির চোখে পানি চলে আসে আর তাই হিমি সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে চলে আসে।
সবাই খেয়াল করেনি ভেবেছে লজ্জা পেয়েছে মনে হয় কিন্তু রাশেদ ঠিকি হিমির চোখের পানি খেয়াল করেছে।
এরিমধ্যে সবাই রাশেদের মতামত জানতে চাচ্ছে হিমিকে রাশেদের পছন্দ হয়েছে কিনা।
এদিকে হিমি রুমে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওয়াশ রুমে গিয়ে সাওয়ার ছেড়ে দিয়ে কান্না করতে থাকে।এরিমধ্যে হিমির মা এসে হেসে হিমিকে বলে “কি রে হিমি কি হলো? তাড়াতাড়ি আয় না মা তোর শ্বশুরবাড়ির সবাই যে চলে যাচ্ছে।”
হিমি সেখান থেকেই তার মাকে বললো “শ্বশুরবাড়ি মানে?”
হিমির মা আবারো হেসে বললো”তোকে ওদের সবার পছন্দ হয়েছে।”
হিমি অবাক হয়ে বললো”রাশেদের ও আমাকে পছন্দ হয়েছে?”
হিমির মা হ্যাঁ বললো।
সেদিন রাতে হিমি অনেক কিছু ভাবছে বসে বসে।আচ্ছা রাশেদ কি হিমির উপর দয়া দেখাচ্ছে? নাকি হিমিকে চিনতে পারেনি?
এমন অনেক প্রশ্ন আসছে হিমির মনে।হিমি সারারাত ভেবে সিদ্ধান্ত নিলো সে রাশেদের সাথে দেখা করবে।
হিমি রাশেদকে দেখা করতে বলাতে রাশেদ অবাক হয়নি। হিমি রাশেদকে খুব নির্জন একটা জায়গায় দেখা করতে বলে।এই জায়গা টা হিমির অনেক পরিচিত, এইই জায়গাটা হিমির অনেক কষ্টের সাক্ষী।
হিমি লাল একটা ড্রেস পড়ে এসেছে আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, চোখে মোটা করে কাজল দেয়া।
ঠিক যেমন সেজেছিল ২ বছর আগে এই জায়গায় আসার সময় আজ হিমি সেই জায়গায় সেভাবেই সেজে গেছে।
হিমি সেখানে গিয়ে দেখে রাশেদ দাঁড়িয়ে আছে।হিমি রাশেদকে প্রথমেই বলে আজ সে একটা কাহানী বলতে এসেছে।
রাশেদ ও শুনতে আগ্রহ দেখায়।
হিমি বলে এখানে ঠিক ২ বছর আগে একটা মেয়ে তার প্রেমিকের সাথে বাসা থেকে পালিয়ে এসে এখানে দেখা করে।মেয়েটা বাসা থেকে আসার সময় তার সাথে করে অনেকগুলো গহনাগাটিআর টাকাপয়সা নিয়ে আসে।
মেয়েটা খুব বোকা ছিলো সে ভাবতো ছেলেটা বুঝি তাকে ঠিক তার মতোই ভালোবাসে।ছেলেটা মেয়েটার কাছ থেকে সব টাকাপয়সা গয়নাগাটি নিয়ে যায়।
তারপর কিছু বাহিরের ছেলে আসে আর তাদের কাছে মেয়েটাকে দিয়ে যায়।মেয়েটা অনেক কান্নাকাটি করে অনেক হাত জোর করে যেন ছেলেটা না যায় তাকে ছেড়ে।তাও ছেলেটা চলে যায়,মেয়েটাকে সবাই মিলে রক্তাক্ত অবস্থা করে সেখান থেকে চলে যায়।
সেখান থেকে একটা ছেলে তাকে সেই অবস্থায় দেখে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ছেলেটা মেয়েটার ব্যাগ থেকে ফোন নিয়ে মেয়েটার বাড়িতে সব ঘটনা জানায়।
পরেরদিন হাসপাতাল থেকে মেয়েটার বাবা মা লোক জানাজানির ভয়ে বাড়ি নিয়ে আসে এমনকি যে ছেলেটার কল দিয়ে জানায় তার সাথে পর্যন্ত দেখা করেনি।
ছেলেটা মেয়েটাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেছে এরপর আর তাদের দেখা হয়নি।
যদিও এই ঘটনার পর মেয়েটা অনেকবার সুইসাইড করতে চেয়েছিল কিন্তু তার বাবামা তাকে তা করতে দেয়নি।
এরপর হিমি রাশেদকে বললো “আমার কাহানী বলা শেষ।আপনার কি কিছু মনে পড়েছে? ”
রাশেদ বললো “হ্যাঁ,সেই ছেলে যে মেয়েটাকে বাঁচিয়েছে সেটা আমি আর মেয়েটা তুমি আর সেদিন আমি তোমাকে দেখেই চিনে ফেলছিলাম, আর এখানে দেখা করতে বলাতে আরো শিওর হয়েছিলাম।”
হিমি এবার প্রশ্ন করলো “আচ্ছা এখনো আপনি আমাকে বিয়ে করবেন? ”
রাশেদ এবারো হ্যাঁ বললো।
হিমি রাশেদকে বললো ” এত্ত কিছু জেনেও কেন বিয়ে করবেন? ”
রাশেদ হিমিকে বলে দেয় এই উত্তর টা সে বাসরঘরে বসে হিমিকে বলবে।
হিমি আর রাশেদের বিয়ে হয়ে যায় ধুমধাম করে।হিমি বাসরঘর বসে আছে তখনি রাশেদ আসে রুমে।
হিমি রাশেদকে সালাম করে তারপর রাশেদকে ধন্যবাদ জানায়।
রাশেদ হিমিকে বললো “ধন্যবাদ কেন?”
হিমি বললো ” সেদিন আমাকে আরেকটা নতুন জীবন দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দেওয়া হয়নি তাই আজ দিয়ে দিলাম। আচ্ছা আপনি আমাকে এটা বলেন এত্ত কিছু জানার পর বিয়ে কেন করলেন আমাকে ?
রাশেদ বললো ” তোমার ধর্ষণ হয়েছিলো আর সেটাতে তোমার অন্যায় কোথায়? তুমিতো একটা মানুষকে শুধু ভালোবেসেছিলে শুধু।আমি সেসব মানুষদের মতো না যারা সমাজ পরিবর্তনের কথা বলে কিন্তু নিজের চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন করতে পারেনা। তোমার বাবা মা যদি সেদিন সমাজের কথা না ভেবে তোমার কথা চিন্তা করে পুলিশের কাছে যেতো তাহলে তুমি এমন ভয় আর লজ্জ নিয়ে বাঁচতে হতো না।
রাশেদের কথা শুনে হিমির চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে।
রাশেদ হিমির চোখের পানি মুছতে মুছতে বলে “অনেক কান্না করেছে আর না।
হিমিকে জড়িয়ে ধরে রাশেদ বলে “এখন থেকে আর লজ্জা পাবেনা। এসব কিছুতে তোমার কোন দোষ ছিলোনা। আমরা অনেক ভালো থাকবো।
পূনর্জন্ম
জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...
good story
ধন্যবাদ
ভালো ছিলো।কমন থিম।থিমের কিছুটা পরিবর্তন হলে ভালো হতো।
রাশেদের মানুষিকতাই শ্রেষ্ঠ।ওর থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত।আমাদের খারাপ মানুষিকতার জন্য একটা মেয়ে এরকমভাবে বাঁচতে চেয়েও মৃত্যুকে বেছে নেয়।আমাদের এই মানষিকতাকে পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
বানানে কিছু ভুল আছে,
এইই-এই
এক জায়গায় শুধু শব্দটি দুবার ব্যবহার করেছেন।
তুমি-তোমাকে
ভাইয়া সময় কম ছিলো তাড়াতাড়ি লিখেছি তাই হয়তো বানানে ভুল হয়েছে একটা দুইটা। আর থিমটা আমি অন্যরকম করার চেষ্টা করেছি।আপনার কমেন্ট এর জন্য ধন্যবাদ
খুবই সুন্দর একটি গল্প। এই গল্প থেকে অনেকেই উপলব্ধি করতে পারবে যে ধর্ষিতার কোন অপরাধ নেই, দোষ ধর্ষকের। রাশেদ তার বিবেক অনুযায়ী সঠিক কাজ করেছে। মেয়েটিকে সে ২বার নতুন জীবন দিয়েছে। প্রথমত তাকে বাঁচিয়েছে এবং তাকে বিয়ে করেছে। হিমি তার বোকামির জন্য নিজের সর্বস্ব দিয়েছে কিন্তু রাশেদের উসিলায় সে একটি সুন্দর জীবন দেখতে পারছে।
কিছু বাক্যে বিরামচিহ্নের ব্যবহারগুলো সঠিকভাবে হয় নি যার জন্য বাক্যগুলো এলোমেলো লাগে। বানানে অনেক ভুল রয়েছে। সংশোধন করে দেই।
গাঁয়ের- গায়ের।
ঠিকি- ঠিকই।
এরিমধ্যে- এরই মধ্যে।
কাহানী- কাহিনী।
লজ্জ- লজ্জা।
শুভ কামনা রইল।????
সময় কম ছিলো তাড়াতাড়ি লিখেছি তাই হয়তো বানানে ভুল হয়েছে। আর থিমটা আমি অন্যরকম করার চেষ্টা করেছি।আপনার কমেন্ট এর জন্য ধন্যবাদ আপু।
সামান্য কিছু বানান ভুল আমার নজরে পড়েছে।
আঁচল টা – আঁচলটা ( “টা” সাধারণ শব্দের সাথে বসে)
কানে এসে কি জানি – কী জানি
হিমিকে রাশেদের পছন্দ হয়েছে কিনা। – হয়েছে কিনা ? ( “?” হবে বাক্যের শেষে)
গহনাগাটিআর – গহনাগাটি আর (স্পেস হবে)
টাকাপয়সা গয়নাগাটি নিয়ে যায় – উপরের অংশে গহনা লেখা হয়েছে। কিন্তু এখানে গয়না লেখা। একটু বেমানান হয়ে গেছে।
তাও ছেলেটা – তবুও ছেলেটা ( এভাবে পরিপূর্ণতা পাবে)
বাবামা – বাবা মা (স্পেস হবে)
একটা মানুষকে শুধু ভালোবেসেছিলে শুধু – “শুধু” শব্দটি দুইবার ব্যবহৃত হবে না।
তাহলে তুমি এমন ভয় আর লজ্জ নিয়ে – তাহলে তোমাকে এমন ভয় আর লজ্জা নিয়ে
ছিলোনা – ছিলো না (না আলাদা শব্দ)
চমকপ্রদ থিম ছিল। উপস্থাপন ভঙ্গি সুন্দর।
সবাই যদি রাশেদের মতো হতো তাহলে সমাজ উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতো।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
সামান্য কিছু বানান ভুল আমার নজরে পড়েছে।
আঁচল টা – আঁচলটা ( “টা” সাধারণ শব্দের সাথে বসে)
কানে এসে কি জানি – কী জানি
হিমিকে রাশেদের পছন্দ হয়েছে কিনা। – হয়েছে কিনা ? ( “?” হবে বাক্যের শেষে)
গহনাগাটিআর – গহনাগাটি আর (স্পেস হবে)
টাকাপয়সা গয়নাগাটি নিয়ে যায় – উপরের অংশে গহনা লেখা হয়েছে। কিন্তু এখানে গয়না লেখা। একটু বেমানান হয়ে গেছে।
তাও ছেলেটা – তবুও ছেলেটা ( এভাবে পরিপূর্ণতা পাবে)
বাবামা – বাবা মা (স্পেস হবে)
একটা মানুষকে শুধু ভালোবেসেছিলে শুধু – “শুধু” শব্দটি দুইবার ব্যবহৃত হবে না।
তাহলে তুমি এমন ভয় আর লজ্জ নিয়ে – তাহলে তোমাকে এমন ভয় আর লজ্জা নিয়ে
ছিলোনা – ছিলো না (না আলাদা শব্দ)
চমকপ্রদ থিম ছিল। উপস্থাপন ভঙ্গি সুন্দর।
সবাই যদি রাশেদের মতো হতো তাহলে সমাজ উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতো।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
শিক্ষনীয় গল্প ছিল। তবে আর একটু টুইষ্ট রাখলে ভাল লাগত। বিরামচিহ্নেরর ব্যবহারের প্রতি সামনে থেকে যত্নশীল হবেন।
ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।
গল্পটা অনেক ভালো লেগেছে।এখানে দুইটা বিষয় আছে সেটা হলো।হিমির মা বাবা আমার মতে ঠিক করেছে যে পুলিশ কে জানায়নি। কারণ এখনকার সময় রেপ কেসের এমন অবস্থা যে রেপ হবার লজ্জার চেয়ে পুলিশ, সাংবাদিক , মিডিয়ার ছুড়ে মারা প্রশ্ন গুলো জঘন্য। আর ২য় তো সবাই যদি রাশেদের মত সব মেনে নেই তো দুনিয়া দেশ বদলে যাবে।নেক্সট আরো ভালো লিখবেন আশা করি।
অসাধারন গল্প। আমাদেরও উচিত রাশেদের মতো নিজের চিন্তা শক্তিকে পরিবর্তন করা। অনেক শুভ কামনা রইল।
ধন্যবাদ
প্রথমেই আপুকে বলি, ভালবাসা নিবেন????
অনেক সুন্দর যুগোপযোগী একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। গল্পের মাধ্যমে স্বপ্ন দেখিয়েছেন আমাদের রাশেদ নামের, অত্যন্ত বিবেচক এক বাস্তব চরিত্রের।
তবে,আমার ব্যক্তিগত অভিমত বা আপনার জন্য পরামর্শ বলতে পারেন,আরেকটু সময় নিয়ে লিখবেন।
খেয়াল রাখবেন, কাহিনী, চরিত্র এগুলো খুব ধীরগতিতে এগিয়ে নিতে।
গল্পের নাম নির্বাচনে আরও বেশী নজর দিবেন।
আর বিরামচিহ্ন বা বানান সতর্কতা এগুলো নিয়ে প্রায় সবাই-ই কথা বলেছে।
কোনোপ্রকার অতিরঞ্জিত কিছু যেন গল্পে না আসে,এটা কিন্তু প্রত্যেক লিখকের মাথায় রাখা উচিত।
নেক্সট টাইম গল্পতে আরও বেশি টুইস্ট রাখবেন, এতো পাঠক আগ্রহ খুঁজে পাবে।
যদিও, লিখালিখি জগতে আমি নিতান্তই নতুন,তবু, পাঠক হিসেবে কিন্তু আমার ঢের অভিজ্ঞতা আছে!
আশা করি,নেক্সট টাইম আরও ভালো করবেন,আমাদের আরও ভালোকিছু উপহার দিবেন।
অনেক অনেক শুভকামনা ????
ধন্যবাদ আপনাকে ভুল গুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।আপনিও ভালোবাসা নিবেন।