ছবি তোলা
প্রকাশিত: অগাস্ট ২১, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 1,945 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

সালমান ফারসী

বেশ কয়েকদিন থেকেই নাবিলের ঘ্যানঘ্যানের সাথে সময় কাটছে।খুবই বিরক্তিকর একটা বাক্য।মামা আয়না প্লীস।ছবি তুলবো।চলসনা।খিলগাওইতো।বেশী দূরে না।প্লীস মামা।আমার উত্তর প্রতিবারই একই এসেছে।না!না!না!তবুও বাছাধন হাল ছাড়ছিলনা।যাবেই যাবে।ছবি তোলা কি এমন আনন্দদায়ক জিনিষ আমি আজও টের পাইনি।হয়তো ঘুরতে যাওয়ার কথা বললে রাজী হয়ে যেতাম।
মনে মনে প্রচুর হাঁসছি।ছবি তোলার জন্য এতকিছু?আর আমাকেও দোস্ত থেকে মামা বানিয়ে দিল।কিছু মাথায় ধরছেনা।নাবিলতো আমায় এভাবেও বলতে পারত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছবি তোলার মাধ্যমে উপভোগ করবো।আজকালের ছেলে-মেয়েরা যে কি?আজব আজব ইচ্ছা জমিয়ে রাখে।আমি এসব বলছি কেন?আমিওতো আজকালের ছেলে।ধুর!
আমি শুধু নাবিলকে প্রশ্ন করি ছবি তুলে কি হবে?ছবি তুললে আমি ফেবুতে পোষ্ট দিতে পারব।সবাই আমার ছবিতে লাইক কমেন্ট করবে।আরতো কিছুনা?নাবিলের দিক থেকে জবাব আসে নাহ,আরো কিছু আছে।কি আছে?সবাইতো আমার ছবিতে লাভ রিয়েক্টও দিতে পারবে।আমি বলেই দিলাম হাহা রিয়েক্ট দিবেনা কেন?এমনিই তাঁর কপালের রগ দেখা যেতে শুরু করলো।কথা বাড়াতে চেষ্টা করলামনা আর।
সব জায়গায় একটা বাক্যের আওয়াজ শুনলে কেমন লাগে নিজের কাছে?খুবই বিরক্তিকর।এই আশাটা অতীত হয়ে যেতে পারতনা?ভবিষ্যতের জন্য থেকে গেলেও বা দোষ কই ছিল?আগামীকাল নাকি তাঁর ছবি তোলার তারিখ।এদলে নাইম ছাড়া আর কেউ নেই।তবে নাইম থাকবে ক্যামেরাম্যানের স্থানে।এটাও অসহ্য একটা জিনিষ।কিভাবে এত ধৈর্য নিয়ে শত শত ছবি ক্লিক করে?নাইমের সাথে আমার পরিচয় হয় তাঁর শখের ক্যামেরাখানের মাধ্যমে।ছেলেটাও বন্ধু-বান্ধবের কথার মূল্য সহজেই দিয়ে দেয়।দুবার তাঁকে এক কথা বলতে হয়না।
আইফোন ব্যবহার করতে না পারলেও আইফোনের রিংটোন ব্যবহার করছি।এটাও এক প্রকার ক্ষেত।সকাল শুরু হয়েছে কারো ফোনকলে।কে ফোন দিয়েছে জানেন?কে আর?সেই হতচ্ছাড়া নাবিল।আবারো?মনে প্রচুর সাহস জাগিয়ে ফোন রিসিভ করলাম।ওপ্রান্ত সেই একই ধ্বনি ভেসে আসছে।ভাই আমি তোকে সুন্দর করে ধীরে ধীরে বলি কোথায় কিভাবে যেতে হবে।তবুও দয়া কর আমার উপর।পারলে বাসার নীচে এসে পাঁচ টাকা নিয়ে যা।নাবিলের একটা কমন অভ্যাস আছে।যা আমারও ছিল।নিজের স্বার্থে অন্যের কাছে মাথা নত করা।আমার কাছেও ঠিক এমনই করছে।
আচ্ছা আমি তোর সাথে কিভাবো যাবো বলতো?আমার পকেটের এক কোণে দুই টাকার একটা নোট মুচড়ানো।দুই টাকা দিয়ে কি খিলগাঁ যাওয়া সম্ভব?কিন্তু তুই যে বললি তোর বাসার নীচে এলে আমাকে পাঁচ টাকা দিবি?আরে ওটা আম্মুর থেকে ভিক্ষুককে দেয়ার কথা বলে নেয়া যেত।আচ্ছা তুই এখন আসবি।আর কোনো কথা নেই।তোর ভাঁড়া সহ যাবতীয় খরচ আমি দিয়ে দেব।এগুলো বলেই ফোন কেটে দিল নাবিল।কি আর করার?আমাকেও জোরপূর্বক রাজী হতে হলো।
এক লাফে খাট থেকে নেমে সোজা ওয়াশরুমে।ব্যাগ কোনো রকম গুছিয়েই দৌড়।আম্মু জানে আমি স্কুলে যাচ্ছি।স্কুল ড্রেস পরা ছিলাম।দশম শ্রেনীতে উঠার পর এই প্রথম ক্লাশ ফাঁকি।তাও নাবিলের কারণে।নাবিলের রুমে গিয়ে দেখি নাবিল এখনো রাতে ঘুমানোর সময় পরা লুঙ্গিটাও খোলেনি।ধ্যাৎ।এত তাড়াতাড়ি এলাম কেন?এবার কতক্ষন বসে থাকতে হবে আল্লাহই ভাল জানে।ঠিক আধ ঘন্টা পর নাইমের আগমন ঘটলো।শখের ক্যামেরাখান ব্যাগে লুকিয়ে রেখেছে।যদি কেউ দেখে ফেলে?দেখেই বা কি হবে?আজতো সবাইকে দেখিয়েই ছবি তুলতে হবে।
সকাল ন’টার দিকে সবার পাঁ চলতে শুরু করলো।আমার আগে থেকেই ভাবা আছে পথে অনেকবার জুতা খুলতে হবে।ব্যাগে করে বই নিয়ে এসেছি।গাড়িতে বসে পড়া যাবে।সময়টা বৃথা যাবেনা।যাত্রাবাড়ীর উদ্দেশ্যে বাস ধরলাম।চাপাচাপি করেই উঠতে হয়েছে।বাস পুরা ফাঁকা ছিল।কিন্তু এর মাঝে চাপাচাপির প্রশ্নই উঠেনা।আমাদের সবার কাঁধ ব্যাগ গুলোই প্রশ্ন টানছে।একটা থেকে অন্যটা বেলুনের মতো।তিনজনের তিনটা ব্যাগই নাবিলের জামা কাপড়ে ভরপুর।এত জামা কাপড় নেয়ার মানেই হয়না।কিরে এগুলাকি কারো মাঝে দান করবি নাকি?একটা দোকান কিনে আনলেওতো পারতি।চুপ থাক।বই এনেছিস।এবার পড়তে থাক।
কি চিল্লাচিল্লিরে আল্লাহ।স্টাফের সাথে কখনোই নাবিলের ভাঁড়া মিটমাট হয়না।অর্ধেক ভাঁড়া দেয়া ছাড়া বাস থেকে নামাটা বোকামী।যদিও বাসের গায়ে লেখা হাফ পাশ নেই।বাসে হাফ ভাঁড়া দেয়ার ক্ষেত্রে নাবিল খুবই দক্ষ।আমি শুধু গুলিস্তান থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার সময় হাফ ভাঁড়া দিতে পেরেছি।হাফ ভাঁড়া দিতে ভয় লাগে।দেখতে ধেখতে বাস যাত্রাবাড়ী এসে থামল।নাবিল নিজের মতো অর্ধেক ভাঁড়া দিয়েই নেমেছে।আকাশ কালো হয়ে আসছিল।মেঘেদের দেখা মিলছে মাথার উপর।খিলগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে তুরাগ বাসে উঠলাম।আগে থেকেই জানা ছিল তুরাগ হাফ ভাঁড়া নিতে চায়না।নাবিলও অবিশ্যি জানে।তাই বোকামী করেনি।ফের বই পড়ায় মগ্ন আমি।
সামনের সিটে নাবিল আর নাইম ক্যামেরা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছে।ওদিকে মন দেয়ার দরকার মনে করিনা আমি।তবুও একবার বলেছি ব্যাটারীর চার্জ ফুরিয়ে গেলে বুঝবা বাছাধনরা।আরে নাহ।কিছু হবেনা।বলল নাইম।নাইমের মুখে বাক্যটা মানায়।কারণ ক্যামেরা তাঁর।ছয় থেকে সাত পৃষ্ঠায় নজর দিয়েছি মাত্র।স্টাফ শুধু চিল্লায় খিলগাঁও ফ্লাইওভারের যাত্রী নামেন।মন আমার বইয়ের দিকেই।সামনে তাকিয়ে নাবিল আর নাইম নেই।মানে নেমে পড়েছে।কিন্তু আমাকে নামার কথা ভুলেই গিয়েছে।ক্যামেরা আর ছবি তোলা এত মারাত্নক?আমাকে ফেলেই ওরা চলে যাচ্ছে।চলন্ত বাস থেকে দৌড়ে নেমে পড়লাম।ওদের ছোঁয়ার আগেই আমি হাঁপাতে শুরু করেছি।
হাঁটছি রেল লাইন ধরে।ক্ষিদায় পেট ছুঁছুঁ করছে।বাসা থেকে আনা টিফিন নাবিল রেখে দিয়েছে।সকালে এক গ্লাস পানি খাওয়ারও সুযোগ হয়নি।সামনের টং দোকান থেকে একটা বান কিনে দৌড়ে আবার ওদের ধরলাম।যদিও দুই টাকা ফেরত আনিনি।যাত্রাবাড়ী থাকতেই আকাশে মেঘ ছিল।দুএক ফোটা বৃষ্টি পড়ছে মাথার উপর।এসময়ে ক্যামেরা ভেজাতে রাজী নাবিল।ছবি তোলার স্বাদ যেন মেটেনা।বৃষ্টির টুপটাপ আওয়াজ বাড়ছে।শরীর ভিজতে শুরু করেছে সবার।দৌড়ে ফ্লাইওভারের নীচের ছাউনীতে দাড়ালাম।তুফান চলছে।সকাল এগারোটা রাত এগারোটার সমান।পুরো এলাকাই অন্ধকার।সাথে স্মার্ট ফোন থাকলে ভিডিও করে আপলোড দেয়া যায়।ছাউনীর নীচেও রেহাই নেই।বাতাসে ভেঙ্গে গেছে। ছাতাগুলোও উল্টা গেছে।এদুর্গম সময়েও নাইমের ক্যামেরার লাইট জ্বলছে।এঅবস্থায়ও নাবিলের ছবি তুলতে হবে।খুবই বিরক্তিকর।সবাই এখন আল্লাহ আল্লাহ করে।আর সে কিনা ছবি তোলায় মগ্ন।ছাউনী পুরোপুরি ভেঙ্গে আমাদের মাথায় পড়ায় স্থান ত্যাগ করতে হয়েছে।দৌড়ে গিয়ে ওপাশের দোকানে আশ্রয় নিলাম।
ক্যামেরাটাও এতক্ষনে ভিজে গেছে।সবার থেকে বেশী ভিজেছি আমি।কারণ আমার ভুলের কারণে ছাতাটা আনা হয়নি।বৃষ্টি কমতেই এলাকা পুন:রায় দিনের মতো রুপ নিল।রেল লাইন ধরে ফের সামনে এগুতে থাকলাম।কিন্তু বাধা আসল ওদিকে যাওয়া নিষেধ।কি আর করার?বিকল্প পদ্বতি অবিশ্যি খুঁজে পেয়েছি।সামনের ওভারব্রীজ পেরিয়ে ওপারে গিয়ে আবার রেললাইন ধরতে হবে।বলাই বাহুল্য এসময়ের ভেতর অনেক ছবি নেয়া হয়ে গেছে।আচ্ছা ক্যামেরাটার কি মন খারাপ হয়না?খানিকের জন্য সর্দি হলে দোষ কই ছিল?সেতো মাত্র ভিজে এল।রেল লাইনে ঢুকার বিকল্প পদ্বতিও কাজে দিলনা।কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে তারপর ঢুকতে হবে।এখন আবার কমলাপুর যেতে হবে?কিযে করি?আমি চাপ নিলামনা।কদিনের বৃষ্টিতে কমলাপুরের ড্রেনগুলোর পানি রাস্তায় উঠে বন্যায় পরিণত হয়েছে।
আমরা তিনজন একই রিকশায়।আমি খুবই রিস্কে বসে আছি।পড়ে যাব যাব অবস্থা।একহাতে নাবিলের জন্য ছাতা ধরে আছি আর অন্য হাতে আমাদের দুজনের ব্যাগ।ন্বিল ক্যামেরা অন করে তোলা ছবিগুলো দেকছিল।ক্যামেরার মন খারাপ নাই হোক।নাইমের মনটাতো অন্তত খারাপ হবে।তাঁর সামনে বৃষ্টিতে তাঁর ক্যামেরা ভিজবে এটা মেনে নেয়া যায়না।রিকশা থেকে নামার পর নাবিলের পকেটের টাকা ফুরিয়ে গেছে।বৃষ্টি না হলে এমন হতোনা।নাইমের কাছে থাকা পাঁচশ টাকাই ভরসা।যদিও ধার নিতে হবে।আমাদের ছবি তুলতে তুলতে নাইম বেশ ক্লান্ত।কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাঁর একটা ছবিও তোলা হয়নি।হাঁটু সমান পানি পার করছি।এর আগেও এমন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছি বেশ কয়েকবার।কিন্তু এখন বমি আসছে।বাস স্টাফরা পরিবেশ দুষিত করছে।কিন্তু কি আর করার?বেচে থাকার জন্য সবাই দেশের সাথে বড় ধরনের অন্যায় করেই যাচ্ছে।আমাদের ছবি তোলার কার্যক্রম হাঁটু সমান পানির উপরেও চলছে।কিযে দু:খ লাগে ক্যামেরাটার জন্য।বেচারা!
কমলাপুর এসে কাউন্টার থেকে তেত্রিশ টাকা দিয়ে তিনটা টিকেট নিলাম প্রবেশের জন্য।প্লাটফর্ম পেরুতেই সামনে পড়লো কয়েকটি স্থির ট্রেন।জানি,যেকো
নো একটা ট্রেনের রেহাই নেই আজ।পুরোনো ট্রেনটা পছন্দ হলো নাবিলের।মনে হচ্ছে বিয়ের জন্য পাত্রী পছন্দ করছে।ট্রেনে ছবি কেমন আসে এটা দেখার জন্য প্রথমবারের মতো আমাকেই ব্যবহার করা হয়েছে।একটি কথা বলে রাখাই ভাল।আমি সব জায়গায় ব্যবহার হই।ছোটকাল থেকে হয়ে আসছি।পেছনের সিটে অসহায় দুস্থ দুজন মানুষ শুয়ে আছে।হয়তো এটাই তাদের জন্য অনেক আরামের বিছানা।নাবিলের ছবি তোলায় বাধা আসল।কারণ ঝাড়ুদাররা ট্রেন পরিষ্কার করতে আসছে।বৃষ্টি এখনো চলছে।তবুও ভিজে ছবি তুলতে হবে।
গুদাম ঘর পেরুলাম ছবি তোলার জন্য ভাল একটা জায়গা পছন্দ করার জন্য।ওই জায়গাটা সুন্দর না?
জুয়াড়ীরা যেখানে বসে জুয়া খেলছে সেই জায়গা?
আরে নাহ।ভাঙ্গা ট্রেনটা যেখানে পড়ে আছে সেখানটায়।
পাশে জুয়ার আসর বসছে।খেলা জমেছে বেশ।আমাদের মতো করে আমরা ছবি তুলছি।একের পর এক ড্রেস পরছে নাবিল।এক জায়গায় অনেকক্ষন থাকায় আবারো বাধা এল।নাবিলের আজ কালির ড্রামের উপর বসে ছবি তুলতে মন চাইছে।তাইতো আমার আকাশী কালার শার্টের পশ্চাৎ দেশ কালিতে ভরে গিয়েছে।নাবিলের সাথে চুক্তি হয়েছে আমার শার্ট সে ধুয়ে দিবে।কিন্তু একমাস দুদিন পর শার্ট না ধোয়াতে আমি নিয়ে এলাম।
ছবি তোলার পর্ব শেষ প্রায়।এবার নীড়ে ফেরার পর্ব।কমলাপুর ওভার ব্রীজ পার করতেই সবার খাবারের কথা মনে পড়লো।দোকানে ঢুকে মোরগ পোলাওয়ের অর্ডার দিলাম।আমাদের সামনে খাবার হাজির।কিন্তু নাবিল বসে বসে ছবিগুলো দেখছে।আমাদের পাশের টেবিলে বসা মেয়েটাকে খুবই অসহায়ের মতো দেখাচ্ছে।বুঝতে বাকী নেই পাশে বসা ছেলেটা তাঁকে গ্রাম থেকে পালিয়ে নিয়ে এসেছে।মেয়েটার চোঁখ বেয়ে শুধু পানিই পড়ছে।ছেলেটা আমাদের দিকে এমন ভাবে চেয়ে আছে মনে হচ্ছে আমরা তাঁর গতিবিধি লক্ষ করছি।ফোনের রিং বেজে উঠল।ডিসপ্লেতে ভাসছে এনামুল ভাইয়ের নাম।জানি,এখন আচ্ছা মতো বকা খেতে হবে।কারণ কাল আমাদের সুটিং।এখনো রিহার্সেলই হয়নি আমাদের।এনামুল ভাইকে বলে দিলাম সন্ধ্যায় হাজির হবো।চেটে পুটে খেয়ে পথ ধরলাম।
যাত্রাবাড়ী থেকে লেগুনায় উঠলাম ডেমরার উদ্দেশ্যে।এখন ক্যামেরা কার হাতে সেটা আলাদা করে বুঝানোর দরকার নেই আশা করি।নাইম আমাদের নামিয়ে আরো সামনে যাবে।লেগুনায় থাকা অবস্থায় নাবিলের মাথায় একটা বুদ্ধি আসল।নামার আগে নাইমকে বলে রেখেছে যখন আমরা নামব তখন তুই আমাদের ছবি তুলতে থাকবি।যেন ব্যাপারটা ফিল্মি হয়।আমরা নামার পর নাইম নাবিলের কথা মতো কাজ শুরু করলো।ছবিগুলো আর দেখার দেখার সৌভাগ্য হলোনা।নাইমতো ক্যামেরা নিয়ে চলেই গেল।যাচ্ছি কোচিংয়ে।যদিও আমাদের সাথে বই খাতার নিশানাও নেই।হঠাৎ বলল ক্যামেরাটা বের করতে।ছবিগুলো কেমন হয়েছে দেখি!আশা করি ভালই হবে।সুটিংয়ের সময় সবাই এভাবে গাড়ি থেকে ভিডিও করে।ভিডিওগুলো সুন্দর হয়।আচ্ছা তাড়াতাড়ি ক্যামেরা বের কর।কোচিংয়ে গিয়ে বের করবো,বললাম আমি।
নাবিল মোবাইল বের করে কিসের হিসাব করছে।মোবাইল থেকে চোঁখ সরিয়ে আমাকে বলে ফেলল তোর ভাগে চারশ ঊনচল্লিশ টাকা পড়েছে।আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।কিসের টাকা?তুই বললিনা আমার যাবতীয় খরচ তুই দিবি?এখন আার টাকা খুঁজস কেন?আমি কি নিজের পকেট থেকে টাকা দিব নাকি,বলল নাবিল।কেন যে গেলাম।মাথায় ধরছেনা কিছু।
তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে কোচিংয়ে উপস্থিত হলাম।আমাদের ব্যাগ দেখে সবাই মনে করছে আমরা হয়তো বই খাতা এনে ব্যাগ ভর্তি করেছি।স্যার নামাজের বিরতিতে আছে।নাবিল ক্যামেরা চেয়ে বসল।আমি ওর ব্যাগ থেকে আয়না,চিরুনি আর ক্রীম বের করে হাতে ধরিয়ে দিলাম।এগুলো ছবি তোলার সময় চেহারা ঠিক করার জন্য নিয়েছে।সবাই ব্যাপারটা আঁচ করতে পেরে হাঁসাহাঁসি করছে।
কিরে ক্যামেরার বদলে এগুলো কেন দিলি?আমার মানইজ্জত শেষ করে দিলি।
ক্যামেরাতো নাইম যাওয়ার সময় নিয়ে গেছে।এতটুকু তোর মাথায় নেই?
ওহ!ভুলেই গিয়েছি।কিন্তু বেচে ফিরেছি।কারণ দিনটি নাকি নাবিলের পুরো বছরের ছবি একসাথে তোলার দিন।যদিও আগামীকাল শ’খানেক ছবি তোলা হবে তাঁর।কিন্তু আজকের মতো হাজারের বেশী তুলতে পারবেনা।কারণ এনামুল ভাই কাজের সময় এগুলা পছন্দ করেননা।বৃষ্টিতে ভিজে রোদে শুকিয়ে দিনটি পার করলাম।এক কথায় খুবই বিরক্তিকর একটা দিন ছিল।

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

৪ Comments

  1. HM TareQue

    গল্পটা আরো সুন্দর হতে পারতো যদি কথোপকথনগুলো বুঝা যেত।

    Reply
  2. Mahbub Alom

    শিক্ষণীয় কিছু পেলাম না।তবে এটা ঠিক বর্তমান ফেসবুক পাগল তরুণ তরুণী লাইক ও সেলিব্রিটি হওয়ার জন্য যা কিছু করতে পারে।পুরো কাহিনীতে তিনটি ছেলের যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারতো।এতো নির্বোধ কিভাবে হওয়া যায়!

    Reply
  3. Halima tus sadia

    গল্পটা কিছুই বুঝলাম না।
    শিক্ষণীয় কিছুই ছিলো না।লাইক কমেন্টের জন্য আজকাল কিছু ছেলে মেয়েরা ফেবুতে শত শত পিক আপলোড দেয়।ছবি দেওয়া মনে হয় নেশা হয়ে গেছে।
    এসব করে লাভ নেই।শুধু সময় নষ্ট করা যায়।আর কিছু না।
    শুভ কামনা।
    আরও ভালো লিখবেন আশা রাখি।

    Reply
  4. আফরোজা আক্তার ইতি

    আজকালকার সময়ের আধুনিক বাচ্চারা মোমেন্ট ক্রিয়েট করার চেয়ে মোমেন্ট ক্যাপচার করার জন্য বেশি আগ্রহী হয়। তাদের কাছে নানান ঢঙে, নানান রঙে ছবি তুলে তা সোশিয়াল সাইটে আপলোড দিয়ে লাইক কমেন্ট কুড়ানোই মূল উদ্দেশ্য হয়। আপনি গল্পে তাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। থিম আনকমন ছিল। কিন্তু কথপোকথন গুলো ” ” চিহ্নের মধ্যে না দেয়ায় পুরো কাহিনী এলোমেলো লেগেছে। এছাড়া বানানেও কিছু ভুল আছে।
    হাঁসছি- হাসছি।
    ভাঁড়া- ভাড়া।
    পাঁ- পা।
    ধেখতে- দেখতে।
    ফোটা- ফোঁটা।
    রুপ- রূপ।
    বেচে- বেঁচে।

    Reply

Leave a Reply to Mahbub Alom Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *