বড্ড দেরি হয়ে গেল
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 1,410 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

হাফেজ আহমেদ রাশেদ

কাল আরিফ সাহেব ঢাকা থেকে আসতেছেন পথিমধ্যে দেখলেন একজন বৃদ্ধা একটি লাঠির উপর ভর করে হাটছেন আর হাপাঁচ্ছেন,বৃদ্ধা উনার কাছে এসে বললো,বাবা,আজ দু’দিন হতে কিছু খাইনি ক্ষুদার যন্ত্রণায় চলতে পারতেছিনা দু’টা টাকা দেন,আরিফ সাহেব রাগান্বিত স্বরে বৃদ্ধা মহিলাকে চলে যেতে বললে সে আবার করুনাময় আর্তনাদ করে, এবরো আরো বড় স্বরে আরিফ সাহেব মহিলাকে ধমক দিয়ে তারিয়ে দেন,অল্পক্ষণ পর বৃদ্ধা আবার এসে বলে বাবা আমার ও তোমার মতো একটা ছেলে ছিলো, কিন্তু জানিনা আজ সে আছে কি না, আজ যদি আমার ছেলেটি থাকতো তাহলে কি আর এভাবে আপনাদের কাছে হাত পেথে তাকথাম, কি করবো সবি খোদার ইচ্ছে, এদিকে এসব শুনে আরিফ সাহেবের মন কোমল না হয়ে রাগে আর হন হন করছে,আর বৃদ্ধাটি যখন আবার বললো বাবা আজ আমার জাগায় যদি আপনার মা হতো,তাহলে কি পারতেন এভাবে তারিয়ে দিতে,আমিও ত আপনার মা’য়ের বয়সি একটু দয়া দেখান,একথা যখন আরিফ সাহেবের কাছে বলছিলো তখন আরিফ সাহেব সজুরে এক ধাক্কা দিলে বৃদ্ধাটি রাস্তার পাশে পরে মাথা ফেঁটে রক্ত ঝরতে শুরু হয়,কিন্ত এদিকে আরিফ সাহেবের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,তিনি ড্রাইবারকে বললেন সামনে চলতে,আসার পথে একবার ও এই বৃদ্ধার কথা ভাবলেন না যে,বৃদ্ধাটি দু’টি টাকার জন্য এতই অনুয়- বিনয় করছিলো সে এখন কিভাবে তার ক্ষত স্থানের ডাক্তারি করাবে, কে তাকে সেবা করবে,আর এটা তিনি কি ভাবে করলেন, এটা উনার মারাত্মক পাপ হয়নি? এসব কিছুই মাথায় আসেনি, একথা ও একবার ভাবেননি যে বৃদ্ধাটির খুজ একটি বার নিবেন যে ভূল করছেন তার পাশ্চিত্য করবেন বৃদ্ধার সেবা করে!বাসায় গেলেন ফ্রেশ হয়ে ঘুমালেন। ঘুমের মধ্যে হটাৎ সপ্নে দেখলেন যে উনার মা’কে কারা যেনো কবর থেকে তুলে এনে আগুনে জ্বালিয়ে দিছে আর উনার মা চিৎকার করছেন কিন্ত কেউ সহযোগীতার হাত বারিয়ে দেয়নি!ঘুমের মধ্যে চিৎকার দিয়ে উঠলেন আরিফ সাহেব,পাশের রুম থেকে উনার বাবা চিৎকার শুনে দৌড়ে এলেন, এসে দেখেন আরিফ সাহেব হাঁপাচ্ছেন,তারপর আরিফ সাহেব সপ্নের কথা বিস্তারিত বাবাকে বললেন,আরিফ সাহেবের মা অনেক আগে মারা গিয়েছেন তিনি তখন খুব ছোট ছিলেন কিন্তু কিভাবে মারা গিয়েছেন সেটা জানতেন না,তাই বাবাকে জিগ্যেস করলেন বাবা আজ তোমায় বলতে হবে মা কি ভাবে মারা গিয়েছেন,?তিনির বাবা নানা ভাবে সান্তনা দিচ্ছেন কিন্তু আরিফ সাহেব কিছুতেই শান্ত হচ্ছেন না!অবশেষে বললেন রাত যাক,কাল সকালে সব বলবো,এটা শুনার পর আরিফ সাহেবের জানার আগ্রহ আরো বেড়ে গেলো,তিনি বললেন যে না বলা পর্যন্ত আর ঘুমাবেন না।অবশেষে তিনির বাবা বাধ্য হয়ে বলতে শুরু করলেন যে, তুমি যখন ক্লাস 2তে পড়ো তখন তুমি তোমার মা ও আমি আমরা সবাই গিয়েছিলাম এক সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম কিন্তু হটাৎ অনুষ্ঠানের মধ্যে দূর্ভিত্তরা বোমা বিস্ফুরণ করে,শত সহস্র লোকের সমাগম ছিলো সেখানে সবাই ছোটাছুটি করছিলো একপর্যায়ে তুমার মা পরে যায় আর লোকেদের ভিরে থাকে তুলতে চাচ্ছিলাম কিন্ত কোনো ভাবে সম্ভব হয়ে উটছিলোনা এদিকে একের পর এক বোমা বিস্ফোরণ করে যাচ্ছে দূর্ভিত্তরা, তাই তুমার মা বলছিলো যে তুমাকে নিয়ে আমি চলে আসতে, শত কিছুর পর তাকে না তুলতে পারলে তুমার আমাকে বলে তুমি আমার শেষ কথাটি রাখো আরিফকে নিয়ে চলে যাও,আর তাকে তুমি আমার অভাব বুঝতে দিয়োনা,কে জানে আজ সে আছে না কি সে দিনও চলে গিয়েছে না ফেরার দেশে,বলতে বলতে আরিফ সাহেবের বাবা কেঁদে চলছেন,আরিফ সাহেব ও কাঁদতেছেন আর বলতেছেন বাবা এতো দিন কেন আমায় একথা বলোনি? আমি আমার মাকে খুঁজে বের করতাম,তখন তিনির বাবা বলেন অনেক খুঁজেছি কোনো পাত্তা পাইনি! বাবা ঘুমিয়ে পর,আরিফ সাহেব বললেন কাল থেকে আমি মাকে খুঁজতে বের হবো,কিন্ত বাবা চিনবো কিভাবে,তখন তিনির বাবা বললেন যে তুমি যখন খুব ছোট ছিলে তখন একদিন সন্ধ্যায় তুমি রান্নাঘরে চুলো থেকে একটি জ্বলন্ত খড়ি বের করে খেলতে ছিলে তখন তোমার হাত থেকে এটা কেড়ে নেওয়ার সময় তোমার মায়ের গলার পাশে জ্বলন্ত খড়ি লেগে যায় আর তাতে তার গলার কিছু অংশ দগ্ধ হয়,তার চিকিৎসা করনো হলে ডাক্তার বলছেন যে এ কালো দাগ কখনো মুছবেনা,এটা দেখে দূর থেকে চেনা যেতো,এটা শুনার পর,আরিফ সাহেব নিথর হয়ে পরেন।তিনি সকালের অপেক্ষা করতেছে রাত যেনো শেষ হচ্ছেনা,এক রাত যেনো সহস্র রাতের ছেয়ে দীর্ঘ হয়েগেছে,যাই হোক ভোরের ঝিকিমিকি পাখির কলরবে পূব দিগন্তে আলোক রাশ্মী নিয়ে সুর্য উদয় হলো,সাথে সাথে আরিফ সাহেব ঘুম থেকে উঠে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পরলেন, উনার শৈশবে হাঁরিয়ে যাওয়া মায়ের খুঁজে,মাঝি পথে ভাবতে লাগলেন কেথায় খুঁজতে যাবেন ,হটাৎ তিনির মনে পরলো গতকালের বৃদ্ধা মহিলাটির কথা, তাই তিনি যে স্থানে বৃদ্ধাকে পরে থাকা অবস্থায় রেখে এসেছেন,সেখানে যাওয়ার মনস্থ করলেন,সে মহিলার কাছে ক্ষমা ছেয়ে আর কিছু দিয়ে তিনির মা বেঁচে থাকলে ফিরে পাওয়ার জন্য দোয়া চাইবেন,আবার এ ও ভাবতেছেন যে কাল রেখে এসেছিলেন আজ সেথায় গিয়ে কি আধৌ খুঁজে পাবেন বৃদ্ধাকে,তার পরেও ভাবলেন যে সেথায় গিয়ে কারো কাছ থেকে খবর নিয়ে দেখবেন যে,এই বৃদ্ধা কোথায় তাকেন কিছু জানা যায় কি।যেই ভাবা সেই কাজ সেখানেই গেলেন,আর সেথায় গিয়ে গাড়ি থেকে নেমেই আরিফ সাহেব অবাক হয়ে গেলেন যে,বৃদ্ধাটি এখনো এই জায়গায় পরে আছেন,তিনি দৌড়ে গেলেন মহিলার দিকে গিয়ে দেখলেন যে অচেতন হয়ে আছেন বৃদ্ধা মহিলা, তিনি মহিলাটিকে মাটি থেকে তুলতে যাবেন কিন্তু কোনভাবেই তুলতে পারছেননা, তাই আরিফ সাহেবের আর বুঝতে বাকি থাকেনি যে, বৃদ্ধা মহিলা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন ,তিনি গতকাল মহিলার সাথে যে দুর্ব্যবহার করেছেন তা মনে করে অনুতপ্ত হয়ে বৃদ্ধার মাথা নিজের কোলে নিয়ে বিলাপ করতে লাগলেন, আর যখন হটাৎ বৃদ্ধার চেহারার দিকে গভীর ভাবে দৃষ্ট পরলো তখনি আৎকে উটেন আরিফ সাহেব তিনির পায়ের নিচের মাটি সরে গেলো,আসমান থেকে যেনো মাথায় বাজ পরলো যে এই বৃদ্ধা মহিলার গলার মধ্যে বাবা যে কালো দাগের কথা বলছিলেন সেটা স্পর্ষ্ট দেখা যাচ্ছে, তাহলে এই বৃদ্ধা মহিলাটিই আমার মা,এভাবতেই আরিফ সাহেব সঙ্গাহীন হয়ে পরেন,স্মৃতি ফিরে পাওয়া মাত্রই মা মা! বলে চিৎকার করতে লাগলেন।কিন্ত বড্ড দেরি হয়ে গেলো।মাকে খুঁজতে এসে মা’য়ের খুনি হয়েগেলেন।হায়! নিয়তি।।

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

২ Comments

  1. Rifat

    নিয়তি কাউকে হাসায় কাউকে কাঁদায়। কিন্তু যারা ভালো কাজ করে বেশিরভাগ সময়ই নিয়তি তাদের হাসিয়ে থাকে।
    অসহার মানুষদেরকে অবহেলা করা কখনোই ভালো কাজ নয়।
    এবরো– এবারো
    আমার ও — আমারও
    তাকথাম — থাকতাম

    Reply
  2. Parvej Mosharof

    ভাই আপনার গল্প শুনে কাঁদবে। করুণার কান্না নয়, হাসতে হাসতে হাসতে যে কান্না আসে ঠিক ওটা। আপনার গল্পে একটা (া) দাড়ি পেলাম না। তাহলে পুরোটা কি এক নিঃশ্বাসে শেষ করবো? আর ভুল ধরতে গেলে সন্ধ্যা হয়ে আসবে। যাই হোক, আপনার আরো গল্প পড়ে লিখতে আসা উচিত ছিলো। সর্বোপরি শুবকামনা।

    Reply

Leave a Reply to Rifat Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *