লেখাঃ Mahajabin Megha Issa
(জুন – ২০১৮)
……………………
শিতল ঢাকা ভার্সিটির ছাত্র। ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিল। যথারীতি সে ঈদের পরের রাতে ঢাকার পথে রওনা হয়। বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ বাসটি এক নির্জন রাস্তায় থেমে গেলো।
“কি হয়েছে মামা?” হেল্পার কে ইংগিত করে বললো শিতল।
– বাস আর যাবেনা
– মানে? কেনো! যাবেনা মানে???
– হ্যা আপনাদের সবাইকে সামনে কিছুদূর যেয়ে হাশেম্পুর হেমিল্টন রোড এর টার্মিনাল থেকে অন্য বাসে উঠতে হবে।
চারিদিক শুনশান নিরবতা আর নিকশ কালো অন্ধকার। চাঁদ মেঘের আড়ালে থেকে মাঝে মাঝে বের হয়ে আলো আঁধারের সৃষ্টি করে পরিবেশকে ভুতুড়ে করে তুলছে। পেঁচার ডাক আর নিশাচর প্রাণীদের চিৎকারে বুকের ভিতর ঢিপ ঢিপ শুরু করে দেয় শিতলের। চিন্তিত হয়ে উঠলো শিতল। সে একা। বাসের অন্য কাউকে ও চিনে না। সবার পিছে পিছেই রওনা দিল সে। হাইওয়ের পাশ দিয়ে বাসের যাত্রিরা হেঁটে যাচ্ছে।
শিতল তাদের দলে একজন লম্বা ঘন চুল বিশিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ করলো।
লোকটি দলের পিছে পিছেই ফলো করছিল। দেখে মনে হয় বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি, পরনে কোট স্যুট।
লোকটির পাশে এসে শিতল তাকে জিজ্ঞাস করলো,
– কই যাবেন স্যার?
– আমি? হাশেমপুর যাব, লোকটি কঠিন কন্ঠে উত্তর দিলেন।
– ওহ আপনার বাড়ি সেখানেই বুঝি।
– হুম।
– আপনি একা যে? ঈদ কি একা কাটিয়ে আসলেন মশাই।
– হুম।
লোকটি খুব চুপচাপ ছিল তবুও শিতল অন্ধকার নিরিবিলি পরিবেশে ভয় দূর করার জন্য তার সাথে কথা বলেই যাচ্ছিল।
– আপনি হাশেমপুরে কি করেন?
– আই এম এন ইংলিশ টিচার। তুমি কই যাচ্ছো?
– ঢাকা!
– একা?
– জি স্যার। আসলে আমি ঢাকায় একাই থাকি।
হাঁটতে হাঁটতে তারা প্রায় কাছে এসে গিয়েছে হেমিল্টন রোডের।
– আচ্ছা রোডটার নাম হেমিল্টন কেনো স্যার?
কিছুক্ষণ চুপ থেকে লোকটি বললো “রাতে বাড়ি ফেরা পথে একটি ট্রাক দূর্ঘটনায় হেমিল্টন নামের একজন লোক মারা যায়”।
লোকটি এবার শিতল এর দিকে তাকিয়ে বলল,”রোডটায় প্রায়ই ট্রাক দূ্র্ঘটনা হয়, সো বি কেয়ারফুল”।
শিতল কেন জানি লোকটির চাহুনি তে ভয় পেয়ে গেলো।
কথা বলতে বলতে তারা দুজন দলের বাকিদের হতে পিছিয়ে গেলো।
– আমার বাড়ি এসে গিয়েছি।
– ওহ স্যার! এটা আপনার বাড়ি?
– হুম। তোমার সাথে দেখা করে ভালো লাগলো। অবশ্য সবাই আমাকে দেখতে পারে না।
– মানে?
– হুম। হাহ হাহ হাহ। হাসতে হাসতে দূরে চলে যাচ্ছে লোকটি। এবার শুধু হাসির আওয়াজ শুনা যাচ্ছে। শিতল লক্ষ্য করলো তারা হেমিল্টন রোডে এসে গিয়েছে।
রোডের উপরে ব্যানারে লিখা হেমিল্টন রোড। কিন্তু!!!
কিন্তু ওই ব্যানারে ঐ লোকটির ছবি আর লিখা সন “১৯২৯-১৯৮১।
অবাক হয়ে গেল শিতল। এতক্ষণ যা হলো তা কি স্বপ্ন নাকি বাস্তব?
মাথা ঘুরাচ্ছে শিতলের, কানে বৃদ্ধ লোকটির হাসির আওয়াজ পাচ্ছে। আর সাথে সাথে শুনতে পাছে সতর্ক বাণী বি কেয়ারফুল মাই বয়, বি কেয়াফুল!
হঠাৎ শিতল দেখতে পেল মাত্র ঘটে যাওয়া একটি এক্সিডেন্ট। ট্রাক এর ধাক্কাতে একটা ছেলে মারা গিয়েছে। দূর থেকে সে আবছা দেখছে। সে ভালোভাবে দেখার চেষ্টা করলো। পা দেখা যাচ্ছে। জুতো জোড়া এর দিক তাকালো সে। চেনা চেনা জুতো।
তার মনে পরলো ঈদে একই জুতা কিনেছে।
শিতল আস্তে আস্তে লাশটির আরও কাছে গেল।
এ কি! এটা কিভাবে সম্ভব?
শিতল নিজের লাশ নিজে দেখে অবাক।
তার কানে অট্টহাসির আওয়াজ বেড়েই যাচ্ছে।
সেই অদ্ভুত হাসির মাঝে কে যেন বলে উঠলো,
“বলেছিলাম না? বি কেয়ারফুল!
Beautiful stroy
১০/১০ ভালো লিখেছো
১০/১০ ভালো লিখেছো
ami to voyei shitol hoye gelam :V
valo likhecho
Onk valo legeche asha Kori samne aro valo kicu pabo In Sha Allah