-
শাহজাদ
-
-হ্যালো আব্বু।
-হ্যা বাবা।
-কোথায় তুমি?
-আমি তো অফিসে বাবা।
-আসার সময় কাচ্চি নিয়ে আসবে। আম্মু রান্না করেছিলো জানো, একটুও মজা হয়নি।
-আচ্ছা বাবা আনবো। রাখি এখন?
-আচ্ছা তাড়াতাড়ি এসো।
কথা হচ্ছিলো শুভ্র আর তার বাবা আরিফুজ্জামান এর। আরিফুজ্জামান ছোট খাট একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করে। একমাত্র ছেলে শুভ্র তার চোখের মণি। বড় আদরের ছেলে। ছেলের সব আবদার তিনি পূরণ করার চেষ্টা করে। পৃথিবীর সব বাবা গুলোই হয়ত এমন।
.
অফিস শেষ করে ছেলের জন্যে এক কাচ্চি বিরিয়ানি হাতে রাস্তায় সিএনজির জন্যে অপেক্ষা করছেন আরিফুজ্জামান। খানিকক্ষণ এর মধ্যে একটি সিএনজিতে উঠে পরে সে। বাসার কাছাকাছি আসতেই তার ফোন বেজে ওঠে,
-হ্যালো।
-আরিফ?
-হ্যা, কে?
-আমি সুমন।
-আরে কি অবস্থা বন্ধু। তুই দেশে আসলি কবে?
-এইতো সপ্তাহখানেক হবে। তারপর কি অবস্থা তোর।
-এইতো চলছে। তোর কি অবস্থা?
-আগের মতোই। কালকে তো ফ্রাইডে তোর নিশ্চয়ই অফিস বন্ধ। চল দেখা করি আড্ডা হবে। অনেকদিন দেখা হয়না।
-আচ্ছা।
ফোনে কথা বলতে বলতেই বাসার গেটে চলে আসে আরিফুজ্জামান সাহেব। কলিং বেল চাপতেই শুভ্র এসে গেট খুলে দেয়। বাবার হাত খালি দেখে শুভ্র মন খারাপ করে জিজ্ঞেস করে, “আব্বু, কাচ্চি পাওনি?”
ছেলের প্রশ্ন শুনে আরিফুজ্জামান সাহেব এর মনে পরে, পুরোনো বন্ধুর সাথে কথা বলতে বলতে ভুলে বিরিয়ানির প্যাকেটটি সিএনজিতেই রেখে চলে আসে সে। দৌড়ে গিয়ে তিনতলা থেকে নিচে গিয়ে দেখে সিএনজিটি নেই।
.
গ্যারেজে সিএনজি রাখতে গিয়ে পেছনের সিটে একটি প্যাকেট দেখতে পায় সিএনজি চালক রাজু। প্যাকেটটি কি করবে ভেবে পায়না। তার সিএনজিতে সারাদিনে অনেক যাত্রী উঠেছে। কে ভুল করে ফেলে গেছে আন্দাজ করতে পারছে না সে। কোনো উপায় না পেয়ে প্যাকেটটি নিয়ে বাসায় চলে যায় রাজু। বাসায় ঢুকতেই ছেলে জাহিদ বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আব্বা, কি আনছো আমার লাইগা?” বলেই বাবার হাত থেকে প্যাকেটটি নিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে, “বিরানি আনছো!” রাজু বলতে চেয়েছিল এই বিরিয়ানির প্যাকেটটি তার জন্যে না। কিন্তু ছেলের হাসিমুখ দেখে আর বলতে পারেনি। পিতা-মাতার কাছে পৃথিবীতে সন্তানের হাসিমুখে চেয়ে আর কিছু অধিক মূল্যবান নেই। শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন স্যার বলেছিলেন, পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে কিন্তু একটিও খারাপ বাবা নেই। সত্যিই নেই।
জাহিদ হাসিমুখে তৃপ্তি সহকারে বিরিয়ানি খাচ্ছে। যেন, এর চেয়ে মজাদার খাবার পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। সে খাচ্ছে, পাশে বসে তার বাবা রাজু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। এর চেয়ে সুন্দর দৃশ্য জগতে নেই।
.
ওদিকে শুভ্র গাল ফুলিয়ে বসে আছে রাতে ডিনার করবে না। আরিফুজ্জামান সাহেব অনেক বুঝিয়ে শুনিয়েও কাজ হয়নি। রাতে খাবে না তো খাবেই না। অবশেষে ক্লান্ত শরীরেই বের হয়ে পড়লেন ছেলেকে নিয়ে রেস্টুরেন্টের উদ্যেশ্যে। শুভ্র খাচ্ছে আরিফুজ্জামান সাহেব তার মুখোমুখি বসে ছেলের খাওয়া দেখছে। তার সারাদিনের ক্লান্তির অবসান ঘটেছে।
পূনর্জন্ম
জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...
০ Comments