আয়না
প্রকাশিত: জুন ১১, ২০১৮
লেখকঃ vickycherry05

 2,325 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ vickycherry05

লেখা- তাসনিম রিমি
(জুন – ২০১৮)
……………

জন্ম নিয়ে কৌতূহল সবারই থাকে, অামারও তেমন কৌতূহল ছিল নিজের জন্ম নিয়ে। স্বচ্ছ, চকচকে কাঁচের মত এই জীবনটার অাগেও অামার একটা অতীত অাছে। পোড়া, গলা, পেটানো তামা বা ব্রোঞ্জ জীবনের অতীত কখনো বা সোনা, রৌপ্যময়। সেই জীবনটাই ভাল ছিল। খুব বেশী প্রতাপশালী পরিবারে কেবল লোকদের দর্শনের জন্য তখন অামাকে রাখা হত। মুখদর্শন খুব একটা হত না বললেই চলে। এখনকার সম্পর্ক গুলোর মত এতটা ঠুনকো ছিল না সে জীবন। মাঝে মাঝে এই অবুঝ মানব সম্প্রদায়ের কৃতকর্ম বড্ড অবাক করে দেয় অামাকে। সবার যত্ত রাগ-অভিমানের সাক্ষী থাকি অামি। বর্তমানের অামি যেমন একটু অাঘাতেই চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাই, অাদি জন্মের অামি কিন্তু এমন ছিলাম না। পিটিয়ে চ্যাপ্টা করে ফেলা যেত। তবে যতটা চকচকে হত তার তত মূল্য। মোটামোটি দু’শ বছর অাগেই অাধুনিকতার ছোঁয়া লাগে। কাঁচের পিঠে পারদ লাগিয়ে চকচকে জীবন অামার। বলতে গেলে তখন থেকেই সর্বসাধারণ অামি। এর অাগে কেবল রাজপরিবারেই ঘুরে বেড়াতাম। কি অারাম অায়েশের দিনটাই না ছিল তখন! বয়সটা তো অার কম হলো না সেই অাট হাজার বছর অাগে কি কি করে যেন এক পাগলাটে বিজ্ঞানীর হাতে জন্ম। সেই থেকে নিজের মধ্যে গোটা বিশ্বের মানুষের গোপনীয়তা রক্ষা করে অাসছি। অার মানুষ কিনা নিজের কথাটাই গোপন রাখতে পারে না। এই দেখ এত কথা বলছি নিজের নামটাই বলা হল না এখনো। অামার নাম অায়না। গ্রামে কেউ কেউ অারশি কয়, বিজ্ঞানীর ভাষায় ছিলাম দর্পণ, মিরর নামও হইছে বর্তমানে। তবে এতসবের মধ্যে আয়না নামটাই আমার পছন্দের। অামারে নিয়া কত গান কবিতা লেখে লোকজন, সেখানে কেবল অায়না নামটাই থাকে, এজন্যই এ নামটা অামার বিশেষ পছন্দ। অামার নামেও মানুষের নাম অাছে। সেই মানুষগুলাও অামার পছন্দের হয়। অায়না নামের নিমতলীর যে মেয়েটা অাছে ওরেও অামার বেশ ভাল লাগে।

ছোটবেলা থেকেই অায়নার ছিল অায়নার প্রতি মানে অামার জন্য একটা অালাদা টান। ওর তখন কেবল ভ্রুন হইছে। বৌ পোয়াতি হইছে শুনে অায়নার বাপ জানতে চাইলে ‘ও বৌ অামারে তুমি এতবড় খুুশির খবর দিলা তোমার লাইগা হাট থেইকা কি অানমু কও?’ ময়নাবিবি অায়না মা লজ্জায় মাথা অবনত করে যেন কান পর্যন্ত তার লাল হয়ে অাছে। অাস্তে অাস্তে স্বামীর জামার অাস্তিন ধরে বলে, ‘কিছু অানোন লাগত না অামার লাইগা, অাপনে খুশি হইছেন এতেই অামি খুশি, তয় ঘরের লাইগা একখান অারশি হইলে ভাল হইত।’ ময়নার অনেক দিনের শখ তার ঘরেও একটা অারশি থাকব। সকাল বিকাল রহিমা যখন খোঁটা দিয়া কথা কয় ময়নার তখন ভীষণ কান্না পায়। স্টিলের বাটিতে পানি নিয়া নিজের চেহারা দ্যাখে। সেদিনের কথা শীতের বিকালে সবাই যখন একসাথে বসে পাঠখড়ি ছড়ছিল। রহিমা কেমন হেসে হেসে সবাইকে বলছিল, ‘দ্যাহ্ দ্যাহ্ তোমরা ময়না ভাবী কার হাড়ি ঠেইল্যা শালুন (তরকারি) খাইতে গিয়া কপালে কালী লাগাইয়া অাইছে।’ সবাই কেমন হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছিল রহিমার কথা শুনে। ময়না কেবল মুচকি হেসে চুপ করে ছিল। মনে মনে একটা অায়না না থাকার দুঃখ যেন তাকে গ্রাস করে নিচ্ছিল। তাই এই সুযোগে সে অায়নার কথাটা বলল। অন্তত বাইরের লোকের সামনে যাবার অাগে নিজের মুখটা পরিপাটি করে যাওয়া যাবে। বাজার থেকে মজিদ মিয়া বৌর জন্য অায়না নিয়ে এল। দুইজনে বসে একসাথে মুখ দেখে অায়নাতে। ময়নাও অনেক খুশি হইছে, ইচ্ছে হলেই এখন নিজের মুখটা অায়নায় দেখতে পারবে সে। বাটিতে পানি রেখে মুখ দেখতে হবে না, অার কষ্ট করে তার কাজল দিতে হবে না চোখে, ইচ্ছে মত অালোতে গিয়ে চুল অাচরানো যাবে। বাঁশের বেড়ার সাথে পেরেক দিয়ে সেঁটে দিয়েছে অায়নাটা। ইদানিং অায়নার সামনে টুলের উপর বসে গুন গুন করে গান গায় ময়না বিবি। বৌয়ের এই গুনগুনানি অাগে কখনো দ্যাখে নাই মজিদ মিয়া। প্রায়ই অায়নাটা পেটের কাছে নিয়ে প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে ফিস্ ফিস্ করে কি যেন বলে ময়নাবিবি। যতই দিন যাচ্ছ বৌ যেন কেমন হয়ে যাচ্ছে তার মনে হয়। রাতবিরাতে ময়নাবিবি অায়নার সামনে গিয়া অাস্তে অাস্তে কথা বলে যেন কার সাথে। বড় মসজিদের হুজুরের কাছ থেকে একটা তাবিজ এনে দেয়। শাড়ির অাঁচল কেটে একটা পর্দা টেনে দেয় অায়নাটার উপর। জ্বিন ভুতের অাছর পরবে না তাহলে।

মেয়েটার জন্মের পর অার এমন পাগলামী করতে দেখা যায় নাই ময়না বিবিরে। নিজের নামের সাথে মিল করে মেয়ের নাম রাখল আয়না। মজিদ মিয়াও অাপত্তি করে নাই। প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়ায় মজিদ মিয়া খুব খুশি। কেননা হুজুর কইছে যার পহেলা মেয়ে হয় তার জন্য বেহেস্তের রাস্তা খোলা। এ খুশিতে মজিদ মিয়া সবাইকে মিষ্টি খাওয়াইলো। হুজুরের দেয়া নাম আমেনা। আমেনা অাক্তার আয়না। দেখতে যেন পূর্নিমার চাঁদের মতন। নিজের মনের মতন সাজায়ে রাখে মেয়েটারে ময়না বিবি। তারপর অায়নার কাছে নিয়া মেয়েরে দেখায়। ‘দ্যাখ মা তুই কত্ত সোন্দর, রাজার পুতের লগে তর বিয়া হইব রাজরানীর মত থাকবি। অামগো মত কষ্টের দিন তর পার করন লাগব না’ নিজের মত করে গল্প শোনালেও তেমন একটা অায়না সামনে বসে না মেয়েকে নিয়ে। পাঁচ/ছ’ বছর বয়সের সময় বাজানের কাছে অাব্দার করে অায়না, ‘বাজান হাট থেইক্কা অামারে ছোট অারশি অাইনা দিবা, বড় অারশিতে অামি দেখতে পাই না। টুলের উপর খাড়াইয়া মাথা অাচড়াইতে অামার ডর লাগে, যদি পইড়া যাই।’ মেয়ের কথা শুনে হাসে মজিদ মিয়া, ‘আইচ্চা মা, কাইলকাই হাট থেইক্কা তোমারে একখান অারশি অাইনা দিমু।’ বাজার থেকে অায়না এনে মেয়েকে দেয় মজিদ মিয়া। অায়না নিয়ে মেয়ের সারা বেলা কাটে। নদীর ঘাটে গোসল করে এসেই মায়ের মত কাজল নিয়ে বসে। একপাশে সিঁথা কেটে চুল অাচরায় অায়না দেখে। পুরানো চৌরঙ্গীতে অায়না রেখে খেলতে যায়। কখনো কখনো সাথিদের জন্য জামার কোঁচে করে অায়নটা নিয়ে যায় দোখানোর জন্য। কত রকম ভেংচি কেটে দেখে সবাই। দেখ কি বলতে কি বলছি কল্পকথার টাইম ট্রাভেলের মত অামিও কতটা বছর পেছনে চলে গেলাম।
যা বলছিলাম মেয়েটা এখন নিমতলীতে থাকে। বছর তের বয়স তখন ওর নদী ভাঙনে সব হারাল বসত ভিটা যা ছিল। বাবা মজিদ মিয়া অাগেই মায়া ত্যাগ করছিল পৃথিবীর। মা-মেয়ে কোন রকমে সংসার চলত। রাতের বেলা ঘর ভেঙে নদীতে নিয়ে গেল সেই শোকে দু’দিন বাদে ময়নাবিবিও চলে গেলেন। বাপ-মা মরা মেয়েটাকে ছোট চাচা ঢাকা নিয়ে এল। গ্রামের সবাইত তাতেই খুশি এ দুঃসময়ে কে কার পাশে থাকে। যাক তবু মেয়েটার অাশ্রয় হইল।

হাফ ছেড়ে বাঁচল গ্রামের মানুষ। উঠতি বয়সি জোয়ান মাইয় গ্রামে একলা রাখব কে, চাচা এসে তবু একটা গতি হলো। অথচ এই গতিটাই অায়নার কাল হয়ে দাঁড়াল।

নিমতলীতে রাঙা মাসির সাথে রমজান মিয়ার ভালই খাতির ছিল। প্রায়ই টাকা পয়সা ধার- দেনা করত। শেষবার তিরিশ হাজার টাকা নিয়া অার দিতে না পারায় অনেক দিন ধরে সম্পর্কটা অার অাগের মত নাই। তাই অায়নাকে তার কাছে বিক্রি করে দেবার চিন্তায় অাছে রমজান মিয়া। অাস্তে অাস্তে বুঝিয়ে শুনিয়ে একবার দিয়ে অাসতে পারলেই হল, ভুলেও ওপথ অার মাড়াবেনা। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। সেই থেকেই রাঙা মাসির অাস্তনায় অায়না থাকে।

অায়না মোটামোটি ভাবে এখন নিমতলী বস্তির মালকিন বলা যায়। রাঙা খালা এখন ওর কাছেই থাকে। বুড়ি হয়ে যাওয়ায় কেউ পাত্তা না দিলেও অায়না রাঙা মাসিরে ছেড়ে যায় নাই। ইচ্ছে হলেই বছর পাঁচেক পর অায়না এ পাপের জীবন ছেড়ে যেত পারত। পাড়ার মৌরানী ছিল অায়না তাই ডিমান্ডটাও বেশি ছিল ওর। নিজের বন্দকির তিরিশ হাজার টাকা মিটিয়ে দিতে তাই ওর বেশি সময় লাগেনি। তিন কুলে যার কেউ নাই সে অার কার কাছে যাবে। নিজের অবস্থানটা ততদিনে বুঝতে শিখে গেছে অায়না। অন্য সবার থেকে অায়নার রুমটাও ছিল অালাদা। বিশাল একটা অায়না তার রুমে। অন্য সব সাজ সজ্জারও অন্ত ছিল না তবে বিশেষ অাকর্ষণ বা অন্যদের ঈর্ষার বস্তু ছিলাম আমি মানে অায়না। তার নিমতলী বস্তিতে অামেনা অাক্তার অায়না হয়ে গেল এ্যানি। এ্যানি নামটা যদিও রাঙা মাসির দেয়া। এখানে সবার নামেও একটু অাধুনিকতা থাকতে হয় নয়ত খদ্দেরদের মন গলে না। এ্যানির ঘরে যেদিন আমি গেলাম তারপর দুদিন পর্যন্ত ওর দরজাটা দেয়াই ছিল। অামারে মিতা বলে ডাকত মেয়েটা। ‘বুঝলি অায়না তুই হইলি অামার মিতা, তোর কাছে অামি সব কমু, অামার কথা, অামার মা অার বাজানের কথা, পাষণ্ড চাচার কথা, অামগো গেরামের কথা এক এক কইরা সব কমু।’ বোকা মেয়েটা জানে না যে অামি ওর জন্মের শুরু থেকে সবটা জানি।

অাস্তে অাস্তে নিজেকে এ পরিবেশে মানিয়ে নিলেও ভেতরে ভেতরে গুমরে গুমরে কাঁদত মেয়েটা। শোভন নামের যে ছেলেটা প্রায়ই ওর কাছে এসে বসে থাকত কেবলই গল্প করার জন্য। গল্প করতে গিয়ে অাস্তে অাস্তে তার জন্য ভালবাসার জন্ম নেয়। কিন্তু এ্যানি জানে সভ্য সমাজের বড়লোক বাবার ছেলে শোভন কখনই তার হবে না। এ্যানিদের কখনো সংসার হয় না। সভ্য সমাজ তাদের জন্য নিষিদ্ধ। অায়নার সামনে বসে প্রায়ই এসব ভাবতে ভাবতে চোখ বেয়ে নোনা জল বের হয়। শোভনের জন্য অালাদা একটা রুম নিয়েছে এ্যানি। শোভনের যেদিন যেদিন অাসার কথা থাকে তার অাগে রুমটাকে সাজিয়ে নেয় নিজের মত করে। রুমটায় ঢুকলে যে কোন কেউ বিভ্রমে পরতে বাধ্য। চারদেয়াল পুরো অায়নায় ঘেরা, মেঝে অার ছাদটাও অায়নার মত স্বচ্ছ করে নেয়া স্প্রে করে বিশেষ ভাবে বানানো। এখানো দুটো নগ্ন নারী-পুরুষ অাদিম উল্লাসে মাতে যদিও ওদের বেশির ভাগ সময় কাটে গল্প করে। শোভনের অাশার কথা থাকলে সেদিন অার কোন খদ্দের রাখে না এ্যানি। চারপাশের অায়নায় হাজার হাজার পথ হাজার হাজার এ্যানি-শোভন চারপাশে হাসে, গল্প করে অাদিমতায় মাতে।

কোন কারন ছাড়াই হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যায় শোভন। এতগুলো ধাক্কা কেটে ওঠার পর অাবার শোভনকে হারনোটা এ্যানির জন্য কষ্টের ছিল। প্রায়ই একা একা অায়না রুমে বসে থাকত। রাঙা খালা বোঝানোর চেষ্টা করেও লাভ হয় না। দিনে দিনে চেহারার অবনতির সাথে ব্যবসায়ও অবনতি হচ্ছে। অাগের মত কোন খদ্দের অাসে না। হতাশা অার এককিত্বে একদিন পুরো অায়না ঘরটা ভেঙে তছনছ করে দেয়। একটা ভাঙা অায়নার টুকরা নিয়ে বা হাতের শিরা কেটে দেয়। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছিটে লাল পারদের প্রলেপ ডেকে যায়। নিস্তেজ হয়ে পরে থাকা লাশ দু’দিন পরে উদ্ধার করে পুলিশ।

এ্যনি না অামার মিতা অায়না হ্যাঁ মিতা বলেই ডাকত মেয়েটা অামাকে। অায়নাকে নিয়ে স্মৃতি চারন করতে করতে দেখ মনটাই খারাপ হয়ে গেল। তবে অামাকে নিয়ে মজার মজার মিথ বা অন্ধ বিশ্বাস দেখে অনেক পুলকিত হই অামি। এই যে নববধূর মুখদর্শনের যে অনুষ্ঠান হয় অায়না দিয়ে ঐদিনটাও অামার জন্য রোমাঞ্চকর। অপ্রিতিকর হল হারু নাপিতের ঝোলার মধ্যে থেকে দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ান। যদিও কেউ মাথা ন্যাড়া করার পর হাত বুলাতে বুলাতে অামার সামনে যখন দাঁড়ায় কি যে হাসি পায় তা অার বলার মত নয়। বিচ্ছিরি ব্যাপর হয় যখন মুখের সামনে নাকটা এনে নাকের লোম গুলো টেনে টেনে ছিড়ে। মনে চায় শালার নাকটাই কেটে দিতে পারতাম তখন। ঘেন্নায় নাক মুখ কুঁচকে সব সহ্য করি। এজন্য হারু নাপিতকে অামার শত্রু মনে হয়। তবে ওর বৌয়ের ঠ্যাঙানি খেয় যখন অামার সাথে একা একা কথা বলে বেচারার জন্য খুব মায়া হয়। শত হোক অামার যত্নঅাত্মি করে লোকটা নিয়মিত।

তবে সব থেকে মজার বিষয় হলো প্রাচীন রোমের লোকজন মনে করত যদি বাড়ির পুরনো কোনো আয়না ভেঙ্গে ফেলে কেউ তাহলে পরবর্তী অন্তত ৭ বছর পর্যন্ত তার দুর্ভাগ্য কাটবে না। পাগলাটে রোমানরা এটাও বিশ্বাস করতো পুরনো কোনো আয়না ভেঙ্গে যাওয়া মানে তার ভেতরে থাকা পবিত্র আত্মাটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে অামার মনে হয় জিউসের কথাটাই সত্য মানুষ মরে গেলে তার অাত্মা অায়নায় ঢুকে যায় নয়ত এত এত মানুষের দুঃখ, কষ্ট, অানন্দ অামি কেমন করে জমিয়ে রাখি।

সেই যে হাজার বছর অাগে পাগলা বিজ্ঞানী জন্ম দিল তারপর কতবার কত ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে তুলে অানল অামাকে। প্রতিবারই সেই এক কাহিনী জন্ম-মৃত্যু-প্রেম-বিরহের খেলা। রানীর অন্দর মহল থেকে ভাঙা বাঁশের বেড়া সব একই সুতোয় গাঁথা। সবাই নিজের শরীরের প্রতিবিম্ব দেখে অার অামাকে দেখতে হয় প্রতিটা মানুষের জীবনের বাস্তব করুন রূপটা। স্বচ্ছ কাঁচের অায়নটা হয়ত ভেঙে দেয়া যায় কিন্তু পরক্ষণেই হাজার হাজার টুকরার প্রতিবিম্ব জীবনটাকে পূর্ণ করে দেয়। কেউ প্রলেপ দেয়া অায়না চিনতে পারে কেউবা না চিনতে পেরে হাজার দরজার গোলকধাঁধায় জীবন কাটায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

১ Comment

  1. Arnob

    কত সুন্দর লিখনি;
    চালিয়ে গেলে মন্দ হবে না

    Reply

Leave a Reply to Arnob Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *