আলোর পথ
প্রকাশিত: অগাস্ট ১৯, ২০১৮
লেখকঃ augustmault0163

 2,617 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

অনন্যা অনু

ভোরে মুয়াজ্জিনের আযান শুনে ঘুম ভাঙলো। আমি ওযু করে নামাজ পড়ে প্রতিদিনের মতো বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। ভোরের স্নিগ্ধ শীতল হওয়া ও পাখির কিচিরমিচির ডাক আমার খুব ভালো লাগে। আল্লাহ তা’অালার কী অপরূপ সৃষ্টি! ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়া, পাখির গান, ফুলের সুভাস, নদীর কলতান সব কিছু মিলে যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের ভাণ্ডার এই প্রকৃতি। সৃষ্টির সৌন্দর্য উপভোগ করতে আমি রোজ বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় দেখি। গাছের ফাঁক দিয়ে আলোক রশ্মি দ্রুত বেগে আমার বেলকনিতে এসে পড়ে। আর তখন আমি আমার রুমে গিয়ে পবিত্র কোরআন পাঠ করি। এভাবে সেদিনও কোরআন পাঠ করছিলাম। ঠিক তখন আমার বড় ভাবি এসে বললেন,
“আলো তোমার সাথে এক ভদ্রলোক দেখা করতে এসেছে। আমি তাকে বসার ঘরে বসিয়ে রেখে এসেছি”।
.
আমি পবিত্র কোরআন শরিফ রেখে বসার ঘরে গেলাম।
ভদ্রলোককে সালাম দিলাম। তিনি সালমের উত্তর দিয়ে আমাকে বসতে বললেন। ভদ্রলোকের মুখে বিষাদের ছায়া স্পষ্ট। আমি তাকে কিছু জিজ্ঞাস করার আগেই তিনি বলতে শুরু করলেন,
“মা আলো! আমি তোমাকে চিনি। আমি জানি তোমার মনে এখন কৌতূহল হচ্ছে এটা জানার জন্য যে, আমি তোমাকে কীভাবে চিনি? তার উত্তর আমি পরে দেবো। তার আগে আমি তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই। আমি চাই তুমি আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোনো”।
কথার মাঝখানে মাত্র একটুখানি বিরতী দিয়ে পুনরায় সে আবারও বলতে লাগলেন,
“মা আমি এক হতভাগা পিতা। আমাকে এক ব্যর্থ পিতাও বলতে পারো। আমি আমার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলাম। তারা আমাকে অনেক ভালোবাসতো; আমিও তাদের অনেক ভালোবাসতাম। মায়ের খুশির জন্য তার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করি। আমার স্ত্রী রাশেদাকে আমি আগে কোনোদিন না দেখলেও বিয়ের পর প্রচণ্ড ভালোবেসে ফেলি। রাশেদাও আমাকে খুব ভালোবাসতো। অনেক সুখেই কাটছিল দিন। বিয়ের ২ বছরের মাথায় আমার স্ত্রী আমাদের সংসারে সুখের খবর নিয়ে এলো। আমি বাবা হলাম ঠিকই কিন্তু রাশেদা মা হতে পারলো না। আমার সন্তান আমাকে বাবা বলে ডাকলেও রাশেদা মা ডাক শুনতে পেল না। আমাকে বাবা হওয়ার সুখ দিয়ে সে নিজেই এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে চলে গেল না ফেরার দেশে। রাব্বির বয়স যখন মাত্র ৬ মাস, তখন কী এক মরণব্যাধি এসে কেড়ে নিলো রাব্বির মাকে। তখন থেকেই রাব্বিকে মায়ের আদর দিয়ে আমি একাই বড় করে তুলি। রাব্বির মা নেই এটা কোনোদিন বুঝতেই দিইনি। ওর কষ্ট হবে বলে আমি আর দ্বিতীয় কোনো বিয়েও করিনি। আমার মা-বাবা অনেক বলেছে আবারও বিয়ে করতে। আমি করিনি। আমার মা গত হয়েছে আজ তের বছর। বাবাও তার ঠিক ২ বছর পর আমাকে একদম একা করে চলে গেল। আমি রান্না থেকে শুরু করে ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, রাব্বিকে স্কুলে দেওয়া, অফিস করা ইত্যাদি সব একাই করতাম। আমার যেন কোনো কষ্টই হতো না। দিন শেষে বাবা ছেলে এক সাথেই ঘুমাতাম। আমার এখনো মনে পড়ে রাব্বি আমার বুকে এক পা তুলে দিয়ে আমার গলা জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে”।
.
এটুকু বলেই ভদ্রলোক থেমে গেল। আমি তার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি চোখ দুটো পানিতে ভরে গেছে। আমি বললাম, “আঙ্কেল আপনি কাঁদছেন?” ভদ্রলোক দু’হাতে চোখ মুছে ‘না’ বলে আবারও বলতে শুরু করলো,
“আজ থেকে প্রায় ৭ বছর হলো রাব্বি আমার সাথে ঘুমায় না। ঠিক মতো কথাও বলে না। দিন রাত সারাক্ষণ বাইরে থাকে। কী করে, কোথায় থাকে প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর দেয় না। ছেলে নাকি বড় হয়েছে। পাড়ার মোড়ে বসে আড্ডা দেয়, মেয়েদের বাজে কথা বলে। তোমার মনে আছে গত সপ্তাহে তুমি একটা ছেলেকে থাপ্পড় মেরেছিলে। সে একটা মেয়েকে বাজে কথা বলেছিল বলে। সেই ছেলেটাই আমার ছেলে রাব্বি। আমি সেই দৃশ্য নিজের চোখে দেখেছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল এমন দৃশ্য দেখার আগে যদি আমি মরে যেতাম তবুও ভালো হতো। তারপর আমি তোমার ঠিকানা খুঁজে তোমার কাছে চলে এলাম। মা তোমার কাছে একটা অনুরোধ নিয়ে আমি এসেছি। মা তুমি আমার ছেলেকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও। আমি তোমার কাছে তোমাকে ভিক্ষা চাই। তুমি আমার ছেলেকে বিয়ে করো। মা আমি জানি তুমি পারবে তাই আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না মা”।
.
আমি কী বলবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। পাশে ভাবি দাঁড়িয়েছিল। ভাবি ভদ্রলোককে সান্ত্বনা দিয়ে বললো,
“আপনি কাঁদবেন না। আমি আলোর ভাইয়ের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো”।
ভদ্রলোক চলে গেল। ভাইয়া অফিসের কাজে দেশের বাইরে ছিল। ২ দিন হলো দেশে ফিরেছে। ভাবি ভাইয়াকে সব বললো। ভাইয়া জেনে শুনে এমন ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিবে না জানিয়ে দিলো। ভদ্রলোক আবার এসে ভাইয়ার কাছে অনেক কান্নাকাটি করলো। তবুও যখন ভাইয়া রাজি হচ্ছিল না তখন আমি ভাইয়াকে বললাম, “ভাইয়া আল্লাহ তা’আলা সবার ভাগ্য নির্ধারণ করেই পাঠায়। তাঁর ইশারা ছাড়া গাছের একটা পাতাও নড়ে না। তিনি হয়তো আমার পরীক্ষা নিচ্ছেন। আমি সে পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত”।
.
ভাইয়া আমার কোনো কথায় অসম্মতি দেন না। সে বিয়েতে মত দিলো। বেশি ধুমধাম না করে ঘরোয়া পরিবেশে আমার বিয়ে হয়ে গেল। শুরু হলো আমার জীবনে এক নতুন অধ্যায়। আমাদের বিয়ে হয়েছে ৪ মাস হলো কিন্তু সে এখনো আমার সাথে একটা কথাও বলেনি। কাজের মেয়ের মুখে শুনেছি, বাবা মানে আমার শ্বশুর আব্বা জোর করে তাকে বিয়েতে রাজি করিয়েছে। সেই রাগেই হয়তো বউয়ের সাথে কথা বলে না। সে রোজ ড্রিংক করে অনেক রাতে বাড়ি ফেরে। আমি না খেয়ে তার জন্য বসে থাকতে থাকতেই ঘুমিয়ে পড়ি। আমি ভোরে নামাজ পরে কোরআন পড়ি তার কাছে বসে। সে কখনো কিছুই বলে না। আমি জানি তার ঘুম ভেঙে যায় তবুও আমাকে বকে না। আমি তো তার সাথে কথা বলার সুযোগ খুঁজছিলাম। কিছুতেই সে আমাকে সুযোগ দিচ্ছিল না। কিন্তু উপর ওয়ালা আমাকে একটা সুযোগ দিয়ে দিলো। সে টুকটাক আমার সাথে কথা বলতো। হঠাৎ করেই বাবা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়লো। তাকে অপারেশন করতে হবে। অনেক রক্তও লাগবে ডাক্তার জানালো। আমি বাবাকে রক্ত দিলাম, আমার রক্তের সাথে তার রক্তের গ্রুপ মিল ছিল। রাব্বি তার বাবাকে খুব ভালোবাসতো। তাই তাকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে পাওয়াতে খুশি হয়ে আমাকে বললো,
“আজ তোমার জন্য আমার বাবা বেঁচে গেল। তুমি আজ আমার কাছে যা চাইবে তাই দেবো”। আমি তাকে বললাম, “বাঁচানোর মালিক আল্লাহ। আমি তো শুধু মাত্র উছিলা”। রাব্বি বললো, “তবুও তুমি আমার কাছে কিছু চাও”। আমি রাব্বিকে বললাম, “আপনার জীবন থেকে মাত্র চল্লিশটা দিন আমি চাই। এই চল্লিশ দিন আমি আপনাকে যা বলবো তাই করতে হবে”। সে প্রথমে রাজি না হলেও পরে ঠিকই রাজি হয়। কারণ সে আমাকে তার কাছে কিছু চাইতে বলেছে। তাই আমার চাওয়াকে সে ফিরিয়ে দেয় কী করে?
.
আমি পরের দিন ফজরে ডেকে তুললাম তাকে। সে খুব বিরক্ত হলো আমার উপর। আমি ওদিকে নজর না দিয়ে বললাম, “আজ এই মুহূর্ত থেকে আমার চল্লিশ দিন শুরু হলো। এই চল্লিশ দিন আমি যা যা বলবো আপনি তাই তাই করবেন বলে আমাকে কথা দিয়েছেন। তাই এখন আমি বলছি, আপনি এখনই ওযু করে মসজিদে যাবেন। এই চল্লিশ দিন আপনাকে নামায পড়তে হবে এবং এক ওয়াক্ত নামাযও কাজা করতে পারবেন না। আর প্রতি ওয়াক্ত নামায জামা’আতের সাথে আদায় করতে হবে”। এই কথা শুনে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। সেও উল্টো আমাকে একটা শর্ত জুড়ে দিয়ে বললো, “তাহলে এক মাস পর তুমি এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে, কথা দাও?”
হঠাৎ তার এমন শর্ত শুনে আমার পায়ের নিচে মাটি যেন সরে গেল। তবুও কষ্টটা মনে লুকিয়ে উপরওয়ার উপর বিশ্বাস রেখে তাকে কথা দিলাম। কারণ আমার বিশ্বাস ছিল, একজন মানুষ যত খারাপই হোক না কেন, এক টানা চল্লিশ দিন পুরো পাঁচ ওয়াক্ত নামজ পড়লে সে আল্লাহর রহমতে ভালো একজন আল্লাহ ওয়ালা ও নামাযি মানুষ হয়ে যায়। তার মন পরিবর্তন হয়ে যায়। সমস্ত অসৎ কাজ থেকে সরে আসে। তাই তো তার কাছে চল্লিশটা দিন চেয়ে নেওয়া। যাইহোক, তারপর সে নামায পড়তে চলে গেল। এ ছাড়াও প্রথম দিনই তাকে জানিয়ে দিয়েছিলাম, রাত ৯টার পর বাইরে থাকা যাবে না এই ক’দিন। তাকে রাতে তাহাজ্জুদের নামাজের জন্যও ডেকে তুলতাম। ফজর ও এশার নামাজের পর কোরআন পড়তে বলতাম। একদিন তাকে বললাম, “জানেন আমার খুব ইচ্ছে ছিল কোরআনের হাফেজা হওয়ার। কিন্তু ইচ্ছেটা পূরণ হলো না। তবে আপনি আর আমি দুজনে এখন থেকে রোজ কিছু সূরা মুখস্ত করার প্রতিযোগিতা করবো। আপনি আমার কথা রাখবেন তো?” উত্তরে সে মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলো।
.
এভাবে প্রায় পনের দিন পর্যন্ত রোজ সব কিছু তাকে মনে করিয়ে দিতে হতো। তারপর থেকে তাকে আর আমার কোনোকিছু মনে করাতে হতো না। কিন্তু আমার খারাপ লাগতো, সে ফজর নামায পড়ে বাড়ি ফিরে প্রতিদিন ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ দিতো। সে কেবল দিন গুনছিল আর সময় শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। আর আমি ছিলাম একটা পরিবর্তনের আশায়। এভাবে আস্তে আস্তে এক মাস শেষ হয় গেল। আর মাত্র দশ দিন বাকি। দেখতে দেখতে সে দশ দিনও শেষ হতে লাগলো। এই ক’দিন তাকে এতটা কাছে পেয়ে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। এই ভালোবাসার মানুষটির কাছে আমি আর থাকতে পারবো না এটা ভাবতেই বুকটা যেন ফেঁটে যাচ্ছিল। বাকি দিনগুলো আমার আর ঘুম হতো না। আমি সারা রাত জেগে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করতাম। কারণ আমি বিশ্বাস করি, আমাকে এই বিপদ থেকে একমাত্র আল্লাহই উদ্ধার করতে পারে।
এই ক’দিনে রাব্বি তার বাবার সাথে গল্প করা, এক সাথে আড্ডা দেওয়া, বাবার কাজে সাহায্য করা সহ ইত্যাদি বাড়ির অনেক কাজই করতো। ওর মাঝে কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেল।
.
এরপর একদম শেষ দিনটি চলে এলো। সেদিন ছিল শুক্রবার। মাঝ রাতেই হঠাৎ কারও কান্নার শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আমি চোখ মেলে দেখি রাব্বি মোনাজাত ধরে অঝোরে কাঁদছে। সে ঘুমায়নি, আর আমিও যে জেগে আছি তা তাকে বুঝতে দিইনি। কিছুক্ষণ পর ফজরের আজান হলো, রাব্বি মসজিদে চলে গেল। আমি উঠে নামাজ পড়লাম। মনটা খুব খারাপ, কিছুই ভালো লাগছিল না। রাব্বি বাড়ি ফিরে আমাকে বললো,
“আমার ৯ পারা কোরআন মুখস্থ হয়ে গেছে। তোমার কয় পারা হলো বলো? তুমি আমার কাছে হেরে গেছ। কারণ আমরা একসাথে মাত্র ৭ পারা পর্যন্ত পড়েছি। তোমাকে হারাবো বলে আমি গোপনে আরও ২ পারা মুখস্ত করেছি”।
আমি একটু মুচকি হেসে বললাম, “আমি সত্যি অনেক খুশি হয়েছি। তবে আপনার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, আসলে আমি আপনাকে একটা মিথ্যা কথা বলেছি। আমার পুরো ৩০ পারা কোরআনই মুখস্থ। আমি আপনাকে শেখানোর জন্য এই মিথ্যাটা বলেছি। রাব্বি হঠাৎ চুপ হয়ে গেল। তার চেহারা দেখে ঠিক বুঝা যাচ্ছিল না যে সে রেগে গেল নাকি খুশি হলো। কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকেয়ে থেকে হঠাৎ সে বলে উঠলো, “তোমার জামা কাপড় সব গোছাও”।
.
কথাটি বলেই সে চলে গেল। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। আমি আমার জামা কাপড় গুছিয়ে নিলাম। সকালের নাস্তা সেরে শ্বশুর আব্বার কাছে বিদায় নিয়ে বের হলাম। রাব্বি কোনো কথা বলছিল না আমার সাথে। কেমন যেন গম্ভির হয়ে বসে ছিল। আমি নীরবে কান্না করতে করতে গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়ি। এক সময় ঘুম ভাঙলে বাইরে তাকিয়ে দেখি কিছুই চিনতে পারছিলাম না। রাব্বিকে প্রশ্ন করেও কোনো উত্তর পেলাম না। তবে এটা বুঝতে পারছি যে, আমরা আমাদের বাড়ি যাচ্ছি না। কারণ রাস্তার দু’পাশে চা বাগান। তার মানে এটা অন্য কোনো জায়গা! ঠিক তার ঘণ্টা তিনেক পর আমরা একটা হোটেলে পৌঁছলাম। তখন আমি বেশ বুঝতে পারলাম আমরা সিলেট এসেছি।
গাড়ি থেকে নেমে আমরা একটা রুমে প্রবেশ করলাম। রুমটা অনেক ফুল দিয়ে সাজানো। রাব্বি আগে থেকেই রুম বুকিং দিয়ে সাজিয়ে রেখে ছিল। রাব্বি এবার সকল দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে একগুচ্ছ ফুল নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এসে বললো,
“আলো! তুমি সারা জীবন আমার পাশে থেকে এভাবেই তোমার আলোয় আমাকে রাঙিয়ে দেবে তো বলো?”
আমাকে অবাক করে দিয়ে সে এভাবে কথা বলবে তা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। হঠাৎ সে আবারও বলে উঠলো,
“জানো আলো! তুমি আমার জীবনে না এলে হয়তো আমি কোনদিন আলোর পথে আসতাম না সারাজীবন অন্ধকারেই থেকে যেতাম। হয়তো আমি কখনো জানতেই পারতাম না ভালোবাসা কী জিনিস। আজ শুধু মনে হচ্ছে, তোমাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পেয়ে আমি ধন্য। এভাবেই সারা জীবন ভালোবাসায় আগলে রাখবে তো আমায়?”
রাব্বির কথা শুনে খুশিতে যেন চোখ বেয়ে ঝর্ণার বেগে অশ্রু গড়াতে লাগলো আমার। হঠাৎ রাব্বিকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম, “হ্যাঁ, আমি এভাবেই পাশে থাকবো সারা জীবন থাকবো, অনেক ভালোবাসবো”

সম্পর্কিত পোস্ট

পূনর্জন্ম

জুয়াইরিয়া জেসমিন অর্পি . কলেজ থেকে ফিরেই পিঠের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে ফেললো অন্বেষা। তারপর পড়ার টেবিলের কাছে গিয়ে চেয়ার টেনে নিয়ে ধপ করে বসে দুই হাত দিয়ে মাথাটা চেপে ধরলো।প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ ওর। আজ ওদের সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট দিয়েছে। একদমই ভালো করেনি সে। যদিও শুরু...

অনুভূতি

অনুভূতি

লেখা: মুন্নি রহমান চারদিকে ফজরের আজানের সুমধুর ধ্বনি ভেসে আসছে। বাইরে এখনো আবছা অন্ধকার। তড়িঘড়ি করে বিছানা ছাড়লো মালা। ঘরের কাজ সেরে বের হতে হবে ফুল কিনতে। তাড়াতাড়ি না গেলে ভালো ফুল পাওয়া যায় না আর ফুল তরতাজা না হলে কেউ কিনতে চায় না। মাথার ওপরে তপ্ত রোদ যেন...

অসাধারণ বাবা

অসাধারণ বাবা

লেখক:সাজেদ আল শাফি বাসায় আসলাম প্রায় চার মাস পর। বাবা অসুস্থ খুব।তা নাহলে হয়তো আরও পরে আসতে হতো।গাড়ি ভাড়া লাগে ছয়শো পঁচিশ টাকা।এই টাকাটা রুমমেটের কাছ থেকে ধার নিয়েছি।তার কাছে এই পর্যন্ত দশ হাজার টাকা ঋণ হয়েছে।বলি চাকরি হলেই দিয়ে দিব। পড়াশোনা শেষ করে দুই বছর...

৩ Comments

  1. আফরোজা আক্তার ইতি

    বাহ! অনেক ভালো আর শিক্ষণীয় একটি গল্প। মেজাজ খারাপ ছিল। আপনার গল্প পড়ে মনটা ভালো হয়ে গেল।আসলেই আল্লাহ আমাদের অনেক সময় অনেক কিছুওই পরীক্ষা নেন। আল্লাহর রহমত ও মনে নেক নিয়ত থাকলে সব পরীক্ষায়ই সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হওয়া যায়। আজ আলোর জন্যই রাব্বি তার জীবনে আশার আলো দেখতে পেয়েছে। এরকম সবাই দ্বীনের আলোয় চললে সব গুনাহ থেকেই দূরে থাকতে পারবে। কিছু টাইপিং মিস্টেক ছাড়া বানানে তেমন কোন ভুল নেই।
    হওয়ার- হাওয়ার।
    উপরওয়ার- উপরওয়ালার।
    সালমের- সালামের।
    বিরতী- বিরতি।
    গম্ভির- গম্ভীর।
    তাকেয়ে- তাকিয়ে।
    তের- তেরো। বর্তমান সরকারি পাঠ্যবই এ এই নিয়ম সংশোধন করা হয়েছে।
    শুভ কামনা রইল।

    Reply
  2. Halima tus sadia

    চমৎকার লেখনী।ভালো লাগলো পড়ে।ইসলামিক গল্পগুলো পড়ে অনুপ্রেরণা জোগায় মনে।

    আলোর মতো মেয়েরাই পারে একজন খারাপ পথে চলা মানুষকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনতে।
    অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত থাকলে মানুষ পাপ কাজে লিপ্ত হয় বেশি।
    রাব্বি অবশেষে সৎ পথে ফিরে এসেছে।
    আলোর এতেই স্বার্থকতা রয়েছে।

    বানানে ভুল আছে
    বিরতী–বিরতি
    সালমের–সালামের
    গম্ভির–গম্ভীর
    জিজ্ঞাস –জিজ্ঞেস
    তাকেয়ে–তাকিয়ে
    অঝোরে–অঝরে
    তের–তেরো
    শুভ কামনা রইলো।

    Reply
  3. Tuhin Khan

    osadharon ekta golpo sotti golpota pore onek mulloban ekta bisoy upolobdhi korte parlam .
    eto valo ekta golpo lekhar jonno apnake osongkho dhonnobad….
    suvokamona roilo …..

    Reply

Leave a Reply to Tuhin Khan Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *