আকুতি
প্রকাশিত: জানুয়ারী ১৩, ২০১৯
লেখকঃ augustmault0163

 1,763 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ augustmault0163

লেখা : সাইফুল কবির সোহাগ
,
হাওড়ের পাড়ে আজও উড়িয়ে আঁচল কবি অপেক্ষার প্রহর গুনে।
সেই ডায়েরিটা খোঁজে পাওয়ার অপেক্ষা!
জোছনা’র সময়েও নিরিবিলিতে কাঁদে কবি, তখন বাউলের একতারায় থাকে রাতের হাহাকার ভরা সুর।
কবি সেই হাহাকার ভালোবেসে বাঁচে।
ঝিলের পাশে নীরবে নিঃশব্দে বসে মাছরাঙা আর ধবল পশমওয়ালা সাদা বক।
ফড়িংয়ের ডানা, সরষে ফুলের বুকের মৌমাছি
আর সুদূর গ্রাম থেকে উড়ে আসা সুতোছেঁড়া ঘুড়ি;
সবকিছুতেই কবি খোঁজে ফিরে হারানো ডায়েরিখানা।
কবির ধূসর গ্রাম, তার পাশে নদী।
কারখানা থেকে ফেলে দেওয়া পরিত্যক্ত বজ্র বুকে নিয়ে
আজও সেই মেঘনা ধীরে বহে।
তার শরীর সাঁতরে দেয় উলঙ্গ কিশোর।
সেই কিশোরকেও কবি বলে দেয় জলের ভাঁজে খুঁজতে সেই ডায়েরিখানা।
কোথায় হারালো কবির ডায়েরিখানা! হারিয়েছে, নাকি কেউ লুকিয়েছে?
লুকোচুরি খেলছে কেউ? মাছের সঙ্গে মাছরাঙা খেলে যেমন! নাকি মাছরাঙার সাথে মাছ? তার একটি পাতায় শিউলি ফুল হয়ে সফেদ শয্যায় উবু তিনটি রহস্যময় শব্দ। আরেক পৃষ্ঠায় আস্ত এক স্তবক, সেতুর প্রথম ভিত্তি যেন এমন টেকসই রূপ তার। অপর প্রকোষ্ঠে গানের সূচনার দু’খানা চরণ ভাবের বাগান নিয়ে এক নিঃশব্দ ভাস্কর্য। না, এর কোনোটিই নয় কবিতার বীজ, কবির অনুমোদন লাভে ব্যর্থ সব। এসব শুধুই সংকেত, ইঙ্গিত, সম্ভাবনা আর স্ফুরণ। অথচ এক বজ্রবহুল রাত্রিতে খুকির ড্রয়িংবুক থেকে পেন্সিলে আঁকা গোখরা ফণা তুলেছিল ঠিক! আদর-কাতর বিড়ালও মানুষের গলায় ডেকে উঠেছিল মিঁউ!
বৃষ্টির অস্বচ্ছ পর্দা আর বিকট জন্তুর মতো অতিকায় ধূসর মেঘের আড়াল সরে গেলে সপ্রতিভ একাকী নক্ষত্র যদি হেসে উঠে, তবে নীলচে রুপোলি রং ছড়ায় যেমন আকাশে-বাতাসে; অবিকল এইরকম মলাটের ডায়েরি কোথায় লুকালো? আর তার কাগজে দেখা যায় কি ছাই-ছাই রেখারাশিকে রেললাইন ভেবে অস্ফুট শব্দেরা চলে গেল দিগন্ত অভিমুখে!
সেখানেই আছে কি শক্তিমতী কবিতার কতিপয় বীজ? আলবৎ যা থেকে গাছ হবে, ফুল ধরবে, কালবৈশাখীর আগে যারা গন্ধে উদভ্রান্ত হবে মগ্ন মন্দিরা; মন্দিরাই তো! এই নামেই বুঝি কবি ডাকতেন, যার দেহরেখা এখন অঙ্কিতই হলো না, মুদে রইলো নয়নযুগল। তবুও সে কি নয় কবির মানসী?
কালবৈশাখীর ঠিক আগে কবিতার খোয়া যাওয়া ডায়েরি নিয়ে অপচয় অপপ্রচার থাক; দু’চোখ নিভিয়ে বরং নীলিমায় উড়ে যাওয়া যাক; তারপর কবির মতোই দূর অতি উর্ধ্বস্তর হতে পরাবাস্তব পাখির মতো নিজেকে শূন্যে ভাসিয়ে দেওয়া ; তারপর তারকাবৃষ্টির মতো কবিতার ঝকমকে শব্দেরা ছড়িয়ে পড়বে কালিমালিপ্ত এই মর্ত্যে! যদিও তখন নরকতুল্য গ্রহটিতে কবিতার মতো মৌলিক আলো বিলিয়ে যাওয়ার দায় আর বোধ করবে না কোনো মানবসন্তান।

সম্পর্কিত পোস্ট

নির্বাক_পাখি

নির্বাক_পাখি

হে কবি,      শক্ত করে ধরো,       তোমার অস্ত্র। আবারো,      তোমার অস্ত্রের মধ্য দিয়ে,      রক্তে রঞ্জিত করে দাও,      এই শুভ্র ময়দান। হে কবি,     শক্ত করে ধরো,     তোমার অস্ত্র। যেভাবে,     কবি নজরুল ধরেছিল,      ইংরেজদের বিরুদ্ধে। যেভাবে,    কবি সুকান্ত চেয়েছিল,  ...

তুলসী বনের বাঘ

তুলসী বনের বাঘ --আল-মুনতাসির। চিনলে নাকো তাকে সে যে তুলসী বনের বাঘ ! ছদ্মবেশে ছড়িয়ে দিলো বিষম বিষের নাগ। ইচ্ছে করে কামড় খেলে, ভরলে হৃদয় বিষের নীলে কী করে আর দেখবে প্রিয় কৃষ্ণচুড়ার বাগ ? চিনলে নাকো তাকে সে যে তুলসী বনের বাঘ ! চোখে তোমার বিষের তেজে পর্দা এলো নেমে, জগত...

ভালোবাসা রং বদলায়

: ভালোবাসা রং বদলায় লেখা: অদ্রিতা জান্নাত ছোট মেয়েটা খুব করে কেঁদে কেঁদে অনুরোধ করেছিল আমি যেন একটি হলেও তার কাছ থেকে ফুল কিনে নেই, ঠিক যতবার আমি তাকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলাম সে যেন ঠিক ততটাই আমার পিছু ছুটতে লাগল। আচ্ছা, এই যে শিশুটা যে কিছু টাকার বিনিময়ে আমাকে...

৪ Comments

  1. Tanjina Tania

    আমার নিজের লেখা প্রবন্ধটা পড়তে এসে সাজেশনে এই কবিতাটা ভেসে উঠলো। কবিতাটা পড়তে আসার কারণ হচ্ছে এই ওয়েবসাইটে আমিও আকুতি নামে একটা কবিতা দিয়েছিলাম একবার। কবিতা আমি পারি না। নিজে কবিতা তেমন বুঝি না বলেই হয়তো লিখতে পারি না। তাই আমাকে যদি কেউ কবিা জাজমেন্ট করতে দেয় তাহলে আমার কাছে সেগুলোই সেরা মনে হয় যেগুলোর ভাষা কঠিন। কঠিন ভাষা হলে আমি কবিতার অর্থ বুঝি না। তবে আপনারটা কিছুটা বুঝেছি। একজন কবির তার কবিতা লেখার ডায়েরি খোঁজে পাওয়ার আকুতি মে বি। শব্দচয়ন ভালো ছিল খুব। শুভকামনা

    Reply
  2. আফরোজা আক্তার ইতি

    প্রথমেই স্বীকার করে নিতে হয় চকিতে মুগ্ধতার আবেশে ডুবে যাওয়ার মতো অত্যন্ত সুন্দর একটি কবিতা এটি। কিন্তু চরণের এলোমেলো সামঞ্জস্যতার জন্য কবিতাটি তার সৌন্দর্য হারিয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কাহিনীর উপস্থাপন কবিতাটিকে অনেকটাই বাস্তবরূপ দিতে সক্ষম হয়েছে কিন্তু চরণের অগোছালো হওয়ার জন্য পাঠে তৃপ্তি পেলাম না।
    তবে সর্বোপরি কবিতাটি চমৎকার! শুভ কামনা প্রিয়।

    Reply
  3. halima tus sadia

    অনেক সুন্দর লিখেছেন।
    তবে কবিতাটা গল্পের মতো মনে হয়।

    লাইনগুলো গুছিয়ে লিখতে পারেননি।
    বেশি বেশি লিখেন।চর্চা হবে।

    শুভ কামনা আপনার জন্য।

    Reply
  4. Md Rahim Miah

    শুনে-শোনে
    কবিতা বেশ ভালো ছিল। কিন্তু প্রথমে ২-৩লাইনভাবে লিখলেও বাকিগুলো এলোমেলো হয়ে গেছে লাইন, যা কবিতার সুন্দর্য্য নষ্ট করে ফেলেছে। তবে কবিতা মাঝে অনেককিছু ফুটে উঠেছে নিজের হারানো ডায়েরি আর বাংলার কিছু রূপ। যাইহোক শুভ কামনা রইল।

    Reply

Leave a Reply to Md Rahim Miah Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *