একজন চিকিৎসকের আত্নকথন
প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০১৮
লেখকঃ vickycherry05

 2,669 বার দেখা হয়েছে

এই লেখক এর আরও লেখা পড়ুনঃ vickycherry05
গল্প লেখকঃ  ইসমাইল হোসেন (ভাবুক)
(এপ্রিল – ২০১৮)
………………………
বাইরে অ্যাম্বুলেস্নের আওয়াজ হচ্ছে, ভিতরে অনেকেই চিৎকার করে কাঁদছে, আবার কেউ নিস্তব্ধ হয়ে লাশের দিকে তাকিয়ে আছে, আবার কেউবা গেছে কাফনের কাপড় কিনতে। ডেডবডি বিদায় করে কিভাবে সিট খালি করা ‌যায় তা নিয়ে আমি ব্যস্ত। অপর এক রুমে দেখলাম তাদের কর্তা মিষ্টি নিয়ে এসেছে। কেননা তাদের পরিবারে আগমন ঘটেছে নতুন প্রজন্মের। জন্ম নিয়েছে নতুন শিশু। একই যায়গায় ভিন্ন মানুষের ভিন্ন অনুভুতি ভিন্ন প্রতিচ্ছবি। কিন্তু এসব অনুভূতি আমাকে আকর্ষণ করেনা। অনেকেই মৃত মানুষ দেখলে ভয় পায়, কিন্তু আমি পাইনা। আমি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি পরিবেশের সাথে। সকাল সন্ধ্যা কত মানুষকে মরতে দেখেছি।আমার হাতের উপর মাথা রেখে মৃত্যুবরন করেছে অনেকে, কিংবা আমার হাতের কেঁচির আঘাতে, অপারেশন থিয়েটারে। সেসব মৃত্যুর জন্যও নিজেকে দায়ী মনে হয়না। কিছু মানুষ সামান্য রক্ত দেখলেই ভয় পায়, আমি শুধু রক্ত নয় একটি মানুষের ভিতরকার সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দেখেছি। কখনওবা পোষ্ট মর্টেমের সময় কসাইয়ের মতো শরীর থেকে আলাদা করে নিয়ে নিয়েছি সেসব। কিন্তু নিজের কাছে আমাকে কসাই মনে হয়না, আমি ভয়ও পাইনা। কারন আমি একজন ডাক্তার। নিজেকে এসবের সাথে মানিয়ে নিয়েছি। ডাক্তারদের কি তাহলে কোনো ভয় নেই? জানিনা। সেটা এখনো আমার অজানা। তবে আমি ভয় পেয়েছি সেদিন, যেদিন এক সুঠাম দেহের অধিকারী তাগড়া জোয়ানকে মরণ যন্ত্রনায় চিৎকার করতে দেখেছি। মরণ যন্ত্রনা কতো কঠিন সেটা যদিও জানিনা, কিন্তু সেদিন কিছুটা হলেও উপলব্ধি করেছি। সে ভয় আমার আজও করে, মরণের ভয়।পরকালের ভয়। একজন সুঠাম তাগড়া জোয়ানের যদি মৃত্যু এতো কঠিন হয়, তাহলে আমার মতো নাফরমান, পাপীর মৃত্যু‌ কেমন হবে? ভাবায়,,,,,,,,,, সত্যিই ‌খুব ভাবায়,,,,,,। 

সম্পর্কিত পোস্ট

মা

মা

ইশু মণি বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে তাসবিহ্ ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ করে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে বসে আছে।টিনের চালে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ায় অনবরত শব্দ হচ্ছে, বাসার সাথে লাগানো পেয়ারা গাছটার বিশাল বড় ডালপালা গুলো চালের উপর চলে এসেছে বারবার সেগুলো বারি খাচ্ছে যার কারণে শব্দ...

শখের পাখি

শখের পাখি

লেখিকা-উম্মে কুলসুম সুবর্ণা এই তো সেদিন মেলা থেকে বাসার ছোট্ট ছেলেটা আমাকে কিনে এনেছিলো। তখন তো ছানা পাখি ছিলাম এখন বুড়ো হয়েছি। বাসায় মোট ছয়জন থাকে। আগে ভাবতাম দুই রুমের ক্ষুদ্র ফ্ল্যাট এ এত গুলো মানুষ কিভাবে থাকতে পারে। পরে বুঝলাম এই সব কিছু ছেলের বউয়ের চমৎকার। অনেক...

নীল কমলিনী

নীল কমলিনী

অনুগল্প: নীল কমলিনী লেখা: অনুষ্কা সাহা ঋতু . চন্দনের শেষ ফোঁটাটা দিয়েই মা ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন। ছোট বেলায় এমন কত সাজিয়েছেন আমাকে। তখন মুচকি মুচকি হাসতেন, আর আজ কাঁদছেন। মা টাও ভারি অদ্ভুত। আচ্ছা, তবে কি দুটো সাজের অর্থ ভিন্ন! কি জানি? . হঠাৎ শঙ্খ আর উলুধ্বনি ভেসে...

১১ Comments

  1. Ala Uddin

    আহা, আমিও তো পাপি।
    ভালো লাগলো..

    Reply
  2. সালাউদ্দিন

    ব্যস্ততার কারণে মনেই থাকেনা যে আমার মতো পাপীর একদিন মৃত্যু হবে। সত্যিই অসাধারণ ছিলো।

    Reply
  3. Riyad

    মৃত্যু খুবই ভয়ঙ্কর। ভালো লাগলো।।

    Reply
  4. Abir Tahosin

    লেখকের চিন্তাধারা প্রশংসাযোগ্য।

    Reply
  5. জুয়েল

    লেখাটা ভালো ছিলো। লেখকের ফেবু আইডি পেতে পারি??

    Reply
  6. Joy hasan

    মৃত্যুর যন্ত্রণা এত কঠিন, সইতে আমি পারিবো না…

    ভাবুক ভাই, লেখাটি অনেক ভালালো আমায়….‌ ধন্যবাদ এরকম একটা লেখা উপহার দেওয়ার জন্য।

    Reply
  7. জিনিয়া সুলতানা

    গল্পটা ছোট হলেও ভাবটা কিন্তু বিশাল।

    Reply
  8. Haider Arif

    একজন সুঠাম তাগড়া জোয়ানের যদি মৃত্যু এতো কঠিন হয়, তাহলে আমার মতো নাফরমান, পাপীর মৃত্যু কেমন হবে? ভাবায়,,,,,,,,,, সত্যিই ‌খুব ভাবায়,,,,,,।

    Reply
  9. Sadman Sabbir

    লেখা ভালো হইছে.. চালিয়ে যান।

    Reply
  10. Azim Uddin

    Valo chilo…

    Reply
  11. ইমাম

    খুব ভালো লিখছেন ভাই।

    Reply

Submit a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *