আফিয়া সিদ্দিকা রাঈসা
ক্যালেন্ডারের পাতা ঘুরে ঘুরে,
আবার দিনগুলো এলো,
মনে করিয়ে দেয়,
আমার অনভিজ্ঞতার গল্প,
বসন্তের মনমাতানো সমীরণের গল্প।
অদ্ভুত সে গল্প,
কৃষ্ণচূড়া-মাধবী
দখিনা হাওয়া বইলে যেমন
নৃত্যে মত্ত হয় গাছের পাতা আর ফুলগুলো
জীবনও হয়তো এমন।
মনে হতো, গানে গানে সুরে সুরে
কেটে যাবে জীবন।
ভারী রঙিন লাগতো সময়টা
আহা! সে কী উত্তেজনা!
বড্ড কল্পনাবিলাসী ছিল মনটা!
চোখে মুখে আলোর ছটা!
অন্ধ আবেগ, না মানতো কোন যুক্তি,
না মানতো কোন বাঁধা।
কে জানতো, জীবনটা মস্ত এক রঙ্গমঞ্চ,
ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায় গিরগিটির মতো।
ছেলেমানুষির ছলে ভাবতাম,
বিশ্বজয় করার যোগ্যতা আছে আমার
ভালোবাসার মহিমায়।
অনেক চাওয়া-পাওয়া যে হিসেব-নিকেষের
বাইরেই রয়ে যায় অজানাই ছিল।
ছোট্ট মেয়েটাকে কোনদিনই যেখানে
কোন অপূর্ণতা স্পর্শ করেনি,
যে দেখেনি বাইরের পৃথিবী
সে কীভাবে জানবে বলো
এসব জটিল সমীকরণ আর ধাঁধার সমাধান।
আচ্ছা সেদিন পাশবিক আনন্দ প্রাপ্তির নেশায়
মেতেছিলে বুঝি,একটা অবুঝ,স্বপ্নে বেঘোর
মেয়েকে ক্ষতবিক্ষত করে,
তার হৃদপিণ্ডে প্রচণ্ডভাবে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল,
অসহ যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে
একসময় নিস্তেজ হয়ে গেলো,
আদৌ তুমি দেখেছিলে কিছু?
নাকি মিথ্যা আনন্দের মোহে অন্ধ ছিলে?
জানি না উত্তর,জানতে চাইও না আর,
একটা সময় খুব জানতে চাইতাম,
আকাশ ছোঁয়া মায়ার তাড়নায়।
আজকাল অবশ্য মনে হলে,
হাসিই পায় বেশ।
বেশ বোকা ছিলাম!
তুমি কি খুব হাসতে আমার বালখিল্যপনায়?
বোকা ছিলাম বলেই ভালোবেসেছিলাম নিঃশর্তে।
এরপর অনেকটা পথ পাড়ি দিলাম,
ভালোই বুদ্ধি গজালো মাথায়,
আর তখনই তালা দিলাম অনুভূতির দুয়ারে।
এভাবে বছরের পর বছর যাবে,
কখনো মনে পড়বে ভীষণভাবে,
আবার কখনো না,
যুগ কেটে যাবে, ধুলো জমে যাবে
জীবনের নিত্যনতুন ব্যস্ততায়।
তবুও তারুণ্যের প্রথম উন্মাদনার
ভালোলাগার স্মৃতিতে,
একটা মৃদু হাসির রেখা খেলবে ঠোঁটে,
আবার পরক্ষণেই চোখে কোণে জমতে চাইবে জল।
এ দুইয়ের সম্মিলনেই প্রশমিত হয়ে যাবে সব।
০ Comments