: ভালোবাসা রং বদলায়
লেখা: অদ্রিতা জান্নাত
ছোট মেয়েটা খুব করে কেঁদে কেঁদে অনুরোধ করেছিল
আমি যেন একটি হলেও তার কাছ থেকে ফুল কিনে নেই,
ঠিক যতবার আমি তাকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিলাম
সে যেন ঠিক ততটাই আমার পিছু ছুটতে লাগল।
আচ্ছা, এই যে শিশুটা যে কিছু টাকার বিনিময়ে আমাকে ছাড়তে চাচ্ছিল না
সেই তুমি কি করে সেদিন আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে?
যেখানে তোমাকে আমি দিতে চেয়েছিলাম একটি সুন্দর জীবন!
আমাদের হয়ত ভালোলাগা, শখ আর ইচ্ছার মাঝে ছিল ভীষণ ফাঁরাক
তাই তুমি অর্থ আর প্রাচুর্যের পেছনে ছুটে চললে মরীচিকার মতো
আর আমি নিজেকে আবদ্ধ করেছিলাম নিকোটিনের ধোঁয়ায়!
তোমার আর নিকোটিনের মাঝে সে কি অদ্ভুত মিল প্রেয়সী,
তোমরা দুজনেই খুব কম সময়ের জন্য কাছে আসো, কেউই দীর্ঘস্থায়ী নয়,
অথচ তোমাদের এই ক্ষণস্থায়ী সময়ে গড়ে তোলা নেশায় যে
আমি বন্দি হয়েই কাটিয়ে দিয়েছি সহস্র যুগ!
সে খবরটুকু রাখার প্রয়োজন মনে করেছো কি কখনো?
তোমার বিশাল অট্টালিকা আর প্রাচুর্যের মাঝে এ তুচ্ছ খবর রাখার সময় কই?
শুনেছি তিন কোটি টাকা দামের এসি গাড়ি ছাড়া নাকি বেরই হতে পারো না?
তবে কি হুড তোলা রিক্সায় সেদিন মাইলের পর মাইল পাড়ি দিতে খুব কষ্ট হয়েছিল তোমার?
হুট করে আমি রিক্সার হুডটা কেনো ফেলে দিতাম জানতে চেয়েছিলে কি কখনো?
এলোমেলো বাতাসে মুগ্ধ হয়ে তোমার উড়তে থাকা চুলের সৌন্দর্যটা
এ জনমে হয়ত আর প্রকাশ করার মতো সুযোগ হয়ে উঠবে না,
তা না হয় আজ হৃদয়ের খুব গহীনেই স্মৃতির পাতায় ভাঁজ হয়ে থাক!
তবে তোমার সেই দামী তিন কোটি টাকার এসি গাড়ির মাঝে
তোমার সে সৌন্দর্য হয়ত তোমার প্রিয়তম কখনোই উপভোগ করতে পারবে না!
শুনেছি নাকি সপ্তাহে তিন-চারবার ফাইভস্টার রেস্টুরেন্টে ক্যান্ডেল লাইট ডিনারে যাও?
কখনো কি মনে পড়ে না ফুটপাতে দাঁড়িয়ে গরম চা এ মুখ পুড়িয়ে ফেলার কথা?
অনেকদিন পার্কের বেঞ্চিতে বসে বাদামের খোসা ছাড়ানো হয়না,
যদিও বাদাম খেতে আমি কখনোই পছন্দ করতাম না
তবু ভালোবেসে তোমার জন্য খোসা ছাড়িয়ে দেওয়ার মাঝে
এক অন্যরকম সুখ অনুভব করতাম।
ছেলে হয়ে জন্মেছি, একটু আধটু রোদের কষ্ট সহ্য করতে না পারলে চলে নাকি?
তবুও তোমার জন্য রোজ ছাতা নিয়ে বের হওয়াটা ভুল হতোনা কখনোই।
তুমি পাশে নেই বলে আজ হয়ত কষ্ট হচ্ছে খানিকটা,
তবু পুরনো অভ্যাসগুলো কিন্তু একেবারেই ত্যাগ করা হয়নি।
বৃষ্টির দিনগুলো আজ কেমন যেন পানসে লাগে,
অনেকবছর হলো বৃষ্টিতে ভেজা হয়না, তবু খুব করে চাই কেউ একজন আবারও শাসন করে বলুক, “একদম বৃষ্টিতে ভিজে সর্দি লাগাবে না”
সময়গুলো বাড়তে থাকে, দীর্ঘ হতে থাকে রাত
অথচ আমি শহরের জ্বলতে থাকা আলোগুলোর দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকি,
ওই জ্বলতে থাকা আলোর মাঝে আমারই মতো সহস্র গল্প তৈরি হচ্ছে,
হয়ত আমার সুখময় দিনগুলোর মতো আর নয়ত দুঃখের!
কেউ অপেক্ষা করছে এই আলো শেষে নতুন আলোর মুখ দেখার
আর কেউ বা এই আলোতেই শেষবারের মতো দেখে নিচ্ছে নিষ্ঠুর মানবদের নিয়ে গড়ে ওঠা নিষ্ঠুর এই জগৎটাকে!
সে যাই হোক, আমার বিকেলগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে
নয়ত ধুলিমাখা পথের সাথে বেশ ভালোই কেটে যাচ্ছে,
তবে এ শহরের কাছ থেকে একটা জিনিস শিখতে পেরেছি,
এ শহরের মানুষগুলো টাকার জন্য পায়ে পড়ে সম্মান বিলাতে পারে
কিন্তু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কাউকে আঁকড়ে ধরেতে চায়না
আর কেউ বুকভরে ভালোবাসা বিলিয়ে দিলে তার উপাধি হয় সস্তা!
অথচ কোনো এক বিকেলে কিংবা মধ্যরাতে প্রেয়সীরা প্রিয়তমদের হাতে হাত রেখে সারাজীবন একসাথে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়,
বোকা প্রেমিকগুলো মিথ্যে মায়ায় জড়িয়ে হাজারও স্বপ্ন বুনতে থাকে
অথচ তারা জানেনা, এ শহরের ভালোবাসাগুলো রং বদলায়
প্রিয় কবি, প্রথমেই বলতে চাই আপনি প্রায় অনেক স্থানে ‘কি’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যা দ্বারা আপনি প্রশ্ন করা বুঝিয়েছেন। অথচ কাউকে প্রশ্ন করতে হলে অবশ্যই আপনাকে ‘কী’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে। আর এটাই হচ্ছে ‘কি’ এবং ‘কী’ এর মধ্য পার্থক্য। একটা উদাহরণ দিলে হয়তো খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।
উদাহরণ নং ১) তুমি কী এখন বাইরে বের হবে?
উদাহরণ নং ২) কি সব আবল তাবল বলছো মারিয়া!
সুতরাং আশা পরের বার এদিকটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
*বন্দি-> বন্দী।
*কেনো-> কেন।
তবে বেশ ভালো লিখেছেন। আরো লিখুন। প্রতিযোগিতার জন্য শুভকামনা রইল।